আব্বাজান

বাবা (জুন ২০২২)

মামুন ইকবাল
  • ১৫
  • ৫৩৯
এক
রিফাত পাহাড়ের ঢালুতে বসে তাদের জুম চাষ ক্ষেত্রের সামনে যেখানে ফল ফললি লিচু আম ড্রাগনে মালটা ফলের বাগান রয়েছে, সেখানে একটি আম গাছে হেলান দিয়ে পাঁচ মাস পূর্বে তার আব্বাজান হারিয়ে যাওয়ার শোকে এই কবিতাটি আবৃত্তি করছিল।

বাবা আমার বাবা,
হারিয়ে গেলে কোথা।
কত খুজি তোমায় আমি,
পাহাড় পর্বতে,
পাই না তবু দেখা।
বাবা আমার বাবা।
কোথায় তুমি হারালে,
আমায় কেন কাঁদালে।
কোন অজানায় আছো তুমি,
জানিনা আজ যে আমি।
বেঁচে আছে কি মরে গেছ
কিছুই বুঝিনা,
তোমার বিরহে আমার মন যে মানে না।
বাবা ওগো আমার বাবা,
কি করে কোন কারনে চলে গেলে,
আমাদের একা ফেলে,
কত যে খুঁজি তোমার,
হৃদয় কাঁদে আমার।
আরজে তোমার ডাক শুনি না,
আর কি ফিরে আসবে না,
ওগো বাবা আমার বাবা।
কোথায় তোমার খুজে পাব,
কোনদিকে আজ আমি যাব।
এত ডাকি তবু তুমি দাওনা কেন সাড়া,
ওগো বাবা আমার বাবা বাবা আমার বাবা।
কোন সে তেপান্তরে দুর্গম পর্বতে,
তোমারে কি কেউ রেখেছেন লুকায়ে,
এমন কেন সন্দেহ হয়,
মনে লাগে বড় ভয়।
আমার হৃদয়টা করে হাহাকার,
কেউকে কেড়ে নিল তোমার বাঁচার অধিকার।
বাবা আমার বাবা,
চলে গেলে কোথা,
কত খুজি তোমায় আমি,
পাহাড় পর্বতে,
পাই না তবু দেখা।
ঠিক ওই মুহূর্তে পাহাড়ের ঢাল ঘেঁষে সাদা একটি ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে অপরূপ সুন্দরী এক যুবতী মেয়ে রিফাতের কবিতা আবৃত্তির শব্দ শুনে এগিয়ে এল। পঁচিশ বছর বয়স হবে। মেয়েটির বেশভূষা পোশাক আশাক দেখে যেন মনে হয় কোন এক রাজকুমারী। রোদ থেকে বাঁচার জন্য তার মাথায় ক্যাপ রয়েছে। চোখে রয়েছে কালো সানগ্লাস। রিফাত এমন নির্জন পাহাড়ি স্থানে এই যুবতীকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল। যুবতীটি ঘোড়ার পিঠে রিফাতের থেকে আরো পঞ্চাশ ফুট নিচে দাঁড়িয়ে আছে। এবং তার দিকে তাকিয়ে আছে। রিফাতের মনের ভিতর কেমন যেন একটা আলোড়ন সৃষ্টি হল, সে বলে উঠলো ম্যাম উপরে উঠে আসুন। রিফাতের আহবানে সাড়া দিয়ে মেয়েটির ঘোড়া থেকে নেমে সত্য সত্যই উপরের দিকে উঠে এল। এবং ঘোড়াটি নিচের ঘাস খেতে থাকলো। উপরে উঠে সেই মেয়েটি রিফাতের উদ্দেশ্যে সালাম বিনিময় করলো এবং কুশলাদি জিজ্ঞেস করল কেমন আছেন? আপনি সুন্দর একটা কবিতা আবৃত্তি করছিলেন, আমি শুনতে পেরেছি। খুব দুঃখের একটা কবিতা আপনি লেখেন নাকি? রিফাতের শ্রমিকরা তখন জুম ক্ষেত্রে আম, মাল্টা, লিচু, পাড়তে ব্যস্ত। এদিকে তাদের কোনো দৃষ্টি নেই।
রিফাত সালামের উত্তর নিল, এবং বলল দয়া করে আপনার পরিচয়টা যদি দিতেন আগে কখনো তো আপনাকে দেখিনি কে আপনি ঘোড়ায় চড়ে ভ্রমণ করতে বেরিয়েছেন। আমিতো ভাবলাম আপনি কোন রাজকুমারী। ফারিন ঈষৎ হাসলো বলল, কি যে বলেন সত্যিই আমি লজ্জা পেয়েছি,আমার নাম ফারিন। পিতার নাম অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আসলাম মির্জা। আমি বিদেশে লেখাপড়া শিখেছি, এখন শহরে থাকি গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। বহু বছর পর এই গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এলাম। আপনার পরিচয়?
রিফাত বলল আমার নাম রিফাত খাঁন
এই পাহাড়ের উপর যে বাড়িটা দেখছেন ওটাই আমার আর এই যে জুমচাষ সামনে ক্ষেত-খামার দেখছেন এসবই আমার।ঐ দেখুন শ্রমিকরা আমার বাগানের লিচু, আম, মাল্টা, পাড়ছে। আমি ওদের কাজ দেখাশোনা করছি। আর কবিতা আবৃত্তির কথা বললেন না! ওটা কবিতা ছিল না ওটা আমার বাস্তব জীবনের নির্মম দুঃখজনক কাহিনী।
ফারিন বলল, আপনার কথা সঠিক ভাবে বুঝতে পারলাম না এত নির্মম কাহিনী কেন? দয়াকরে ব্যাপারটা খুলে বলবেন কি। অবশ্যই শুনবেন
আপনি হয়তো জানেন না কিংবা পত্র-পত্রিকা টেলিভিশন দেখেছেন কিনা তাও জানিনা। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, সর্বত্র আমি আমার আব্বাজানের নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করেছি আজ পাঁচ মাস যাবত তিনি নিখোঁজ। কোথায় গেছেন কিভাবে গেছেন কারা নিয়ে গেছে তিনি কি কিডন্যাপ হয়েছেন কোন চক্রান্তের শিকার হয়ে আমরা কিছুই জানিনা। আব্বাজান বেঁচে আছেন কি মৃত্যুবরণ করেছেন কিছুই বুঝতে পারছিনা। শুধু বুকের দুঃখ টা নিয়েই বেঁচে আছি। কত যে খুঁজেছি আব্বাজান কে পাহাড়-পর্বতে শহর-বন্দরে নদীতে বিভিন্ন স্থানে কোন সন্ধান মেলেনি কেউ কোনো সন্ধান দিতে পারিনি।
ফারিন রিফাতের মুখে তার পিতার নিখোঁজের সংবাদে দুঃখ প্রকাশ করল। বলল I am really shocked by the news of your father's disappearance.
ওদের কথাবার্তা আর মাঝে রিফাতে আট বছর বয়সী পুত্র নুর একটি টিফিন ক্যারিয়ারে করে আব্বাজানের জন্য কিছু নাস্তা নিয়ে এল। নিচেই অপরূপ সুন্দর একটি ঘোড়া এবং এবং উপরে আব্বাজানের সাথে বাক্য রত সুন্দরী কে দেখে নুর কৌতুহলী হয়ে উঠলো বলল- আব্বাজান দাদিমা তোমার জন্য বন মোরগের গোস আর পরোটা পাঠিয়ে দিয়েছে। এবং তাড়াতাড়ি খেয়ে নিতে বলেছে। আব্বাজান ওই ম্যাম কে? ফারিনের দিকে লক্ষ্য করে বললো। রিফাত নুরের কথা বুঝতে পারল। বলল আব্বাজান ওই ম্যাম আমাদের এই পাহাড়ে বেড়াতে এসেছেন। উনি আমাদের মেহমান। ম্যাম কে লিচু এনে খেতে দাও।
নুর বলল উনি আমাদের মেহমান আচ্ছা ঠিক আছে আমি এখনো লিচু এনে দিচ্ছি। আপনি খাবেন তো? ম্যাম। একটি লিচু গাছ লক্ষ্য করে নুর সেদিকে এগিয়ে গেল।
ফারিন বুঝতে পারল এই ছেলেটির রিফাতের পুত্র। সে বলল সাহেব আমি অবশ্যই আপনাদের লিচু খাব।
আপনার পুত্র? ফারিন প্রশ্ন করল।
রিফাত দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বলল, আমার একমাত্র পুত্র ওর মা পৃথিবীতে বেঁচে নেই এক বছর আগেই এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
ফারিন বলল,। দুঃখজনক ঘটনা। আমি বিদেশে ছিলাম। আপনার করুন কাহিনী আমাকে খুব মর্মাহত করেছে। বাহিরে অবস্থানের কারণে আমি কোন কিছুই অবগত নয়। Tell the truth, you will not be saddened by my words
রিফাত বলল mam you didn't say anything to get sad just wanted to know.
ফারিন প্রশ্ন করল- অন্য কি কাজ করেন?
রিফাত বলে নদীতে আমার কিছু ট্রলারে' স্টিমার' লঞ্চ' আছে এবং কয়েকটি স্পিডবোর্ড' আছে।
ফারিন মূল প্রসঙ্গে গেল, আপনার পিতা কি করতেন কিডন্যাপ বা হারিয়ে যাওয়ার হওয়ার ব্যাপারে আপনি কাউকে সন্দেহ করেন। আমারতো মনে হয় আপনি সর্বপ্রকার চেষ্টা করেছেন।
রিফাত বলে শুধু আমি নয় সরকারি-বেসরকারি সর্বপ্রকারের মিডিয়া এই ঘটনা প্রকাশ করেছে সরকারিভাবে আব্বাজান কে উদ্ধার করার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এবং হেলিকপ্টারে করে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে পাহাড়-পর্বতে আব্বাজানের সন্ধানে। আমার আব্বাজান সিআইডি উচ্চ পদস্থ অফিসার ছিলেন। আমার আব্বাজানের নাম 'নুর ইসলাম'। এখন ও তার দুই বছর চাকরি বর্তমান রয়েছে। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি না কি হতে কি হয়ে গেল এবং কেন হল?
ফারিন যেন কি ভাবছিল এমন মুহূর্তে অনেকগুলি লিচু হাতে নুর এলো। নুরকে দেখে ফারিনের খুব মায়া হল এমন একটি সুদর্শন বাচ্চার মা নেই নিজের অজান্তেই ফারিন মনে কষ্ট পেল। এবার সে বলল নিশ্চয়ই এতবড় একটা ঘটনা আমার আব্বাজান জানেন, আমি আব্বাজানের সাথে পরামর্শ করব যদি আপনার কোন উপকার করতে পারি।

রিফাত বলল, আপনার আব্বাজানের নাম আসলাম মির্জা বললেন না! নদীর ওপারে পারে দ্বিতল বিশিষ্ট বাড়িটি পাহাড়ের ঢালুতে।
জী- আপনি ঠিকই ধরেছেন ফারিন বলে।
আমার আব্বাজান কে আপনি চেনেন?
নুর কিছুটা দৃঢ়তার সাথে বলে আপনার আব্বাকে চিনবো না কেন উনি তো আমার আব্বার খুব নিকট বন্ধু ছিলেন। উনিই মিডিয়াতে আমার আব্বার নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করেন। আপনি তো জানেন না আপনার আব্বজান আমাকে সর্বপ্রকার সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
ফারিন খুবই আশ্চর্য হয়ে বলেIn fact, I know nothing Nice to meet you।
রিফাত দাওয়াতের সুরে বলে বসুন ম্যাম বন মোরগের গোশ আর পরোটা আমার আম্মাজান পাঠিয়েছেন, একসাথে খাওয়া যায়। আর আমি লিচু সংগ্রহ করে দিচ্ছি আপনি ঘোড়ার পিঠে করে বেশি করে লিচু নিয়ে যাবেন। আর চাচা-চাচিজান কে আমার সালাম জানাবেন।
ফারিন মিষ্টি মিষ্টি হাসি বলে, বন মোরগের
গোশ। সত্যই খেতে খুব ইচ্ছে করে কিন্তু আজ আর নয়, আর লিচু নিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন, আমাদের গ্রামের ঐ বাড়িতে দুইশত লিচু গাছ রয়েছে। কাজেই কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। নুরের দিকে তাকিয়ে বললেন তোমার নাম কি সাহেব?
নুর লজ্জা পেয়ে বলে, আমি আবার সাহেব হলাম কবে, আমার নাম আমার আম্মাজান রেখেছিল নুর। আপনার ঘোড়াটা খুব সুন্দর মনে হচ্ছে আপনার ঘোড়ার পিঠে একটু বেড়াতে পারতাম।
রিফাত এবং ফারিন নূরের কথায় হাসে ।
ফারিন আদরের কন্ঠে বলে অবশ্যই চলো আমি এখনই তোমাকে অনেক দূরে ঘোড়াই নিয়ে বেড়াবো, আবার তোমার আব্বুর কাছে দিয়ে যাব। যাবে আমার সাথে? নুর আব্বুর দিকে চেয়ে থাকে।
রিফাত পুত্রের ইচ্ছা বুঝতে পারে ঘোড়ার পিঠে উঠার খুব শখ তার। ম্যাম আমার নুরকে একটু বেড়িয়ে নিয়ে আসুন। যদিও আপনার একটু কষ্ট হবে এবং সময় নষ্ট হবে।
না না আমার কোন সমস্যা হবে না চলেন সাহেব। নুরকে ফারিন সাহেব বলে অভিহিত করছে প্রকৃতপক্ষে সাহেবের মত দেখতে নুর।
নুর বলল আব্বাজান যাব? নুর পিতার কাছে অনুমতি চাইছে।
যাও উনার সাথে দুষ্টুমি করবে না যা প্রশ্ন করে সঠিক উত্তর দিবে এবং দ্রুত ফিরে আসবে ঠিক আছে?
ঠিক আছে আব্বাজান। রিফাত ফারিনের উদ্দেশে বলেন ম্যাম নুর কখনো ঘোড়াই উঠেনি। ওকে সাবধানে রাখবেন।
ঠিক আছে আপনি চিন্তা করবেন না এরপর ফারিন নুরকে নিয়ে ঘোড়ার কাছে এলো এবং নূরকে উঁচু করে ঘোড়ার উপরে বসিয়ে দিল। এবং নিজে উঠে বসল খুবই চালাক চতুর শিকারি ঘোড়া। ফারিনের ঘোড়া চলতে শুরু করল। চলতে চলতে ফারিন রিফাতের দিকে দৃষ্টি ছুড়লো। রিফাত তাদের দিকে চেয়ে আছে। ঘোড়া চলছে সমুখের পাহাড়ি রাস্তা ধরে ফারিন আদর করে নূরকে বলে
তোমার আব্বু কি আর বিবাহ করেছে?
নুর বলে না ম্যাম। দাদু হারিয়ে যাওয়ার আগে খুব বলতো এখন দাদি মা বলে আব্বুকে বিবাহ করতে, কিন্তু আব্বু বিবাহ করতে চাইনা। আমার মা নাই কত যে কষ্ট হয়।
নূরের কথায় ফারিন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে।
ফারিন চলতে থাকে ঘোড়া নিয়ে তাদের বাড়ীর দিকেই অর্থাৎ নূরকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। হয়তো কোন এক সময় নুরকে পৌঁছে দিয়ে যাবে তার আব্বার কাছে।
ফারিন বাসায় এসে তার আব্বার মুখে সব কিছু শুনল রিফাতের আব্বার হারানোর ঘটনা।ফারিন তার আব্বাকে বলে আব্বু আমি বেড়াতে বেরিয়েছিলাম এবং তোমার বন্ধুর ছেলে রিফাতের সাথে পরিচয় এবং কথা হয়েছে। রিফাতের ছেলে নুর কে আমার বাড়িতে নিয়ে এসেছি নুরকে কাছে এনে আব্বুকে দেখালে আসলাম মির্জা নূর কে দেখেই চিনতে পারল নুরকে কোলে টেনে নিলেন। খুব আদর করলেন বললেন কেমন আছো দাদু তুমি? নুর বলল ভালোআছি দাদু এই ম্যাম আপনার মেয়ে? মিজা আসলাম সাহেব বললেন হাঁ দাদু উনি আমার মেয়ে। দুঃখ প্রকাশ করলেন তার মায়ের মৃত্যুতে। বললেন নূরের মায়ের জানাযায় আমিও অংশগ্রহণ করেছিলাম। এর দাদা নুর ইসলাম ও আমি বাল্যবন্ধু ছিলাম। একইসাথে লেখাপড়া করেছি একই সাথে খেলাধুলা করেছি। ওর দাদা এখন যে কোথায় কিভাবে আছে কিছুই বুঝতে পারছিনা। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখুন এবং সুস্থ-সুন্দর ভাবে আবার বাড়িতে ফেরত এনে দিন এই দোয়াই করি। ফারিন বলল, আব্বু আমার একটা বিষয় মনে হচ্ছে। তোমার বন্ধু তো সিআইডি অফিসার ছিলেন, আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে তিনি অনেকগুলি ক্রিমিনাল কেস তদন্ত করতেন। হয়তো কোন চক্র তাদের বিপদ বুঝতে পেরে তোমার বন্ধুকে কিডন্যাপ করেছে অথবা পৃথিবী থেকে চিরতরে সরিয়ে দিয়েছে। বিষয়টা কি তুমি ভেবেছো।
ইসলাম মির্জা মেয়ের কথায় হাসলেন মা মনি তোমার ধারণা সত্য হতে পারে। বিষয়টি আমরা সবাই ভেবেছি এবং পুলিশ প্রশাসন সিআইডি অফিসার এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করছে।
পুলিশি তদন্ত কাজ দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে ইনশাআল্লাহ নুর ইসলাম আবার বাসায় ফেরত আসবে। আমার মনে হচ্ছে আমার বন্ধু বেশি আছেন এবং তিন অচিরেই ফেরত আসবেন ইনশাআল্লাহ।
তাই যেন হয় আব্বু তোমার খবরটা শুনে আমি একটু আশ্বস্ত হলাম দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ রাখেন। আমি এখন নূর কে ওর আব্বুর কাছে রেখে আসি। দেরি হলে আবার চিন্তা করবে।
নুরকে নিয়ে ফারিন বাইরে ঘোড়ায় চড়ে বসলো। এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই রিফাতের কাছে নুরকে পৌঁছে দিল।
ফারিন বলল, রিফাত সাহেব নুরকে রেখে যাচ্ছি। যদি অনুমতি দেন আপনার বাসাতে মাঝে মাঝে বেড়াতে আসবো আর খুব বেশি দুশ্চিন্তা আপনি এবং চাচি মা যেন না করেন। দোয়া করি আল্লাহ আপনার আব্বাকে যেন সুস্থ রাখেন এবং আবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসেন। রিফাত ভাই,
অবশ্যই আমাদের বাসায় আসবেন ম্যাম। নূরের হাত ধরে রিফাত ফারিনকে কথাটি বলে।
ফারিন বলে তাহলে অনুমতি দিন এখনকার মতো আমি আসি।
রিফাত বলে Of course, good luck to you.
ফারিন ইসৎ হাস্য সহকারে বলে I wish you all the best and bestow the gift of patience
ফারিন ঘোড়ায় চড়ে চলে গেল।

দুই
গল্পটির কাহিনী আরো অগ্রসর হওয়ার পূর্বে এরি মাঝে কিছু প্রাকৃতিক দৃশ্য ও অবকাঠামো, অবস্থানের, বর্ণনা দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসতে থাকবে এবং গল্পটি হৃদয়গ্রাহী হবে।
স্থান-পার্বত্য অঞ্চল, দুর্গম পার্বত্য গ্রাম
গ্রামের নাম রিংশা। চতুর্দিকে ঘন উঁচু উঁচু পাহাড় বেষ্টিত। প্রতিটি পাহাড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিরাজমান ও পশু-পাখিতে পরিপূর্ণ। বিভিন্ন প্রকারের হাজার হাজার ছোট-বড় চেনা অচেনা নাম না জানা পাখি এসমস্ত পাহাড়ে বসবাস করে। তাদের কুজনে কলরবে চিৎকার-চেঁচামেচিতে সমস্ত অঞ্চল গুলি পরিপূর্ণ হয়ে থাকে। অনেক সময় তারা পাখিশিকারির কবলে পড়ে। বিশেষ করে বনমোরগ শিকারের লোভ অনেকেই সামলাতে পারেনা।
পাহাড়ে দাঁড়ালে মেঘ স্পর্শ করা যায় । একেবারেই প্রধান শহরের নিকটবর্তী গ্রামটি এই গ্রামের পাশ দিয়েই খরস্রোতা ক্যারল উপসাগরের শাখা থেকে উৎপন্ন হয়ে 'মারমা নদী' উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে 'রিফ্সাগরে' মিশে গেছে। ।মারমা নদীর একটি বৈশিষ্ট্য এই নদীর মাঝে মাঝে খাড়া পাথুরেপাহাড় দন্ডায়মান রয়েছে এবং দুই তীর ঘেঁষে ছোট-বড় বিভিন্ন রকমের রঙিন রঙিন পাথর বিরাজমান করছে। ছোট-বড় ঢেউগুলো পাথরের উপর আছড়ে পড়ে। এই নদীতে দক্ষিণ প্রান্তে পঞ্চাশ কিলোমিটার গেলেই পাথরের দ্বীপের দেখা মেলে। নদীর মাঝে শতশত বিভিন্ন প্রকারের পাথরের খাড়া পর্বত দাঁড়িয়ে আছে। এখানে জলযান গুলোর খুব সাবধানের সাথে চলাচল করতে হয় নয়। যে কোন মুহূর্তে বিপদের সম্ভাবনা। ব্রিজের পাঁচশো মিটার সামনেই একটি বিশাল পাহাড় যার নাম "মেঘদুত" মাঝ দিয়ে ছয়শত মিটার সুড়ঙ্গ এবং এই সুড়ঙ্গের উচ্চতা প্রায় পঞ্চাশ মিটার এবং এর প্রশস্ততা একশত মিটার। এর ভেতর দিয়ে লঞ্চ, স্টিমার, নৌকা চলাচল করে । এ পাহাড়ের উপরে ওঠার অনেক ব্যবস্থা আছে। চতুর প্রান্ত থেকে বৃত্ত আকারে কেটে কেটে ধাপে ধাপে উপরের দিকে উঠানো হয়েছে সিঁড়ি। পাশ দিয়ে লোহার রেলিং গেঁথে দেওয়া হয়েছে। এবং ওপরে ক্রেন মেশিন আছে নিচে নামিয়ে পর্যটকদের উপরে উঠানো হয়। নিচে আছে শিপবোর্ড। ঠিক যেমন করে বহুতল ভবনের ওপর থেকে সিমেন্ট-বালি নেওয়ার জন্য ক্রেন মেশিনে করে উপরে উঠানো হয়। পর্যটকরা এর উপর উঠে ভ্রমণ করেন এবং হাত দিয়ে মেঘ স্পর্শ করেন। একারণেই এর নাম 'মেঘদুত'। মনে হয় 'মেঘদুত পর্বত' দুই পা দুই পাশে ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাহাড়ের উপরে কিছু অংশে একটি ক্যাম্প মত করা আছে এবং পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য একটি রেস্টুরেন্ট সবসময় সেবাদান করে থাকে এবং চতুর্দিক থেকে মোটা লোহার বেড়ি দিয়ে ঘেরাও করা আছে যাতে করে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। সূর্য ডোবার পর এখানে ভ্রমণ নিষিদ্ধ।এখানে একটি স্টিমার, লঞ্চ, ঘাট রয়েছে।আছে টিকিট কাউন্টার। এই নদীতে স্পিড বোর্ড, স্টিমার, লঞ্চ, ট্রলার, নৌকা, ইঞ্জিন চালিত নৌকা সবকিছুই সর্ব মুহূর্তে চলাচল করে। নদীর দুপারে শুধু পাহাড় আর পাহাড় আর গভীর অরণ্য। এখান থেকে প্রধান শহর 'মিরাল' শুধুমাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে। শহর কেন্দ্রিক গ্রাম। শহরের সমস্ত সুবিধা ভোগ করা যায় এখান থেকে। এখানকার অধিবাসীরা জুমচাষে অভ্যস্ত। এছাড়া বিভিন্ন প্রকার ফল আম, জাম, কাঁঠাল, ড্রাগন, লিচু, জাম, মাল্টা, ভুট্টা, চাষ করে থাকে। পাহাড় কেটে পাহাড়ের ঢালের উপরে এসমস্ত আবাদ করে থাকেন। মাঝে মাঝে কিছু সমানতরাল জমিতে বোরো ও আমন ধানের চাষ হয়। এবং বিভিন্ন প্রকারের শাকসবজির তরিতরকারির, আবাদ করে থাকেন পাহাড়িরা।এই গ্রামে মুসলিম এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বী লোক বসবাস করে থাকে সবার মাঝে ভালো সম্পর্ক আছে। মারমা নদীর উপর দিয়ে চারশত মিটার লম্বা ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। আগে এই ব্রিজ ছিল না নৌকায়, ট্রলারে করে পারাপার হতে হতো। এই ব্রিজের নাম মারমা ব্রিজ। ঠিক লালনশাহ সেতুর মতোই অবকাঠামো করে ব্রীজটি তৈরি করা হয়েছে।
এর পূর্ব প্রান্তে খুব বড় আকারের বাজার। এ বাজারের সর্বপ্রকার দ্রব্যাদি কিনতে পাওয়া যায়। তাছাড়া বড় শপিং মল রিসোর্স সেন্টার ছোট ছোট ক্যাসেল হোটেল, মোটেল, এশিয়াব্যাংক ডাচ বাংলা، ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, স্কুল-কলেজ সব কিছু এখানে আছে। যদিও এটি গ্রাম কিন্তু প্রধান শহরের একটি অংশবিশেষ। আশেপাশের দশ-বারোটি গ্রামের অধিবাসীরা এখান থেকে বাজার সোওদা করে। এ বাজার থেকে অনেকগুলি ইটের রাস্তা এবং ছোট ছোট পাকা রাস্তা চারিদিকে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে এঁকে বেঁকে বিভিন্ন জনপদে চলে গেছে। রিংশার দক্ষিণ প্রান্তে মাত্র একশত মিটার দুরে 'নীলা পাহাড়ের' অপরূপ সৌন্দর্য ঝর্ণা ধারা প্রবাহমান। যা মারমা নদীতে নেমে গেছে। পাথুরে এই পাহাড়ের ঝর্ণাধারা দেখতে হাজারো লোক প্রতিনিয়ত ভিড় করে।
এদিকে পশ্চিম প্রান্তে ব্রিজের সন্নিকটে 'মিলং পাহাড়' অবস্থিত গভীর বনে ঘেরা। এই মিলং পাহাড়ের ঝর্ণাধারা একটি গভীর খাল দ্বারা প্রবাহিত হয়ে নদীতে পড়েছে। এই ঝর্ণা ধারার পানি কখনো কমেনা। স্বল্প এরিয়ার ভিতরে এই দুটি পাহাড়ের ঝর্ণা ধারা ও মেঘদুত পর্বত,কে কেন্দ্র করে এখানে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠেছে। যার সৌন্দর্য না দেখলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, এরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিশিষ্ট একটি গ্রাম এখানে অবস্থান করছে। মারমা নদীতে প্রচুর পরিমাণে ছোট-বড় বিভিন্ন হাজার প্রকারের মাছ প্রতিনিয়ত মৎস্যজীবীরা শিকার করে। তা এই রিংসা বাজারে বিক্রয় হয় শহর থেকে লোকেরা এখানকার মাছ কিনতে আসে। প্রতিনিয়তই মারমা ব্রীজের উপরে হাজার দর্শনার্থীর ভীড় হয়। এ বাজারটি দর্শনার্থীদের ভীড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে। ঠিক তদ্রুপ হোটেল-মোটেলে শপিংমলে দোকানে কেনাবেচা হয় খুব বেশি। বাজারের প্রথমেই অপরূপ সৌন্দর্য মন্ডিত বড় মসজিদ। মসজিদের নাম রাখা হয়েছে 'বাইতুল নূর' পর্যটক এবং ব্যবসায়ীরা গ্রামের অধিবাসীরা এই মসজিদে নামাজ পড়ে। বাজারের মধ্যে স্থান থেকেই তিনটি সড়ক তিন দিকে চলে গেছে। প্রধান সড়কটি চলে গেছে বিখ্যাত 'মিরাল'শহর কেন্দ্রে। আরেকটি সড়ক 'নীটো' শহরের দিকে।ওপার টি ইজরালের‌ শহর'পারিম' সীমান্তের দিকে । সারা দিন রাত্রি বাস, ট্রাক, বিভিন্ন প্রকার যানবাহন এবং এমন কি ঘোড়ার গাড়ি মোষের গাড়ি চলাচল করে। এই অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ঘোড়া পাওয়া যায় দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে ঘোড়ার সাহায্যে চলাফেরা করা হয়।তাছাড়া বাইক, টেম্পু, ভ্যান, রিক্সা, সবি চলে। রিংশা বাজারে ‌ সবচেয়ে বড় অত্যাধুনিক রিসোর্স সেন্টারের নাম 'আল আদনান রিসোর্স সেন্টার'। আটশত টাকা থেকে শুরু করে এখানে দুইহাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি রাতের জন্য কক্ষ ভাড়া পাওয়া যায়। সাথে সাথে খাবার এবং পানিওর ব্যবস্থা আছে। এই রিসোর্স সেন্টার সবসময় পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে থাকে। এই গ্রামে ধনী-গরীব সবারই মিলেমিশে বসবাস করে এই বাজারে একটি সরকারি হাসপাতাল আছে। এবং সর্বপ্রকার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এখানে পর্যটনকেন্দ্র 'মেঘদুত পর্বত' ও মিলং পাহাড়'নীলা পাহাড়ের ঝর্ণাধারা দেখার জন্য একটি পর্যটন টিকিট কেন্দ্র আছে। 'রিংশা টুরিস্ট কাউন্টার'নামে এ টিকিট কেন্দ্রটি রিসোর্স সেন্টারের পাশে পাহাড়ের সামান্য উপরে অবস্থিত। এখান থেকেই টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। প্রতিটি দর্শনীয় স্থানের টিকিট মূল্য ৫০ টাকা করে। রিংশা গ্রামের পূর্বে শেষ প্রান্তে 'পার্কহিল ' পাদদেশে আর্মিদের ক্যাম্প রয়েছে। পাহাড়টি পার্কের মতো দেখতে সুন্দর তাই এর নামকরণ করা হয়েছে 'পার্কহিল'তবে এখানে সাধারণ জনগনের প্রবেশাধীকার নেই।
তিন
পাহাড়ের ঢালুতে রিফাতের বাসা। সেখানে রাতের বেলায় কথা হচ্ছে মার সাথে পাশে নুর বসে আছে। রিফাতের মা বলেন আমার জন্য কেমন মনে হচ্ছে এতদিন পর তোর আব্বাজান প্রকৃতপক্ষে কিডন্যাপ হয়েছে। তোর আব্বাজান যদি সামনের পরে থাকতেন রোগে শোকে মারা যেতেন তবুও সান্ত্বনা দিতে পারতাম। কিন্তু এখন তিনি নিখোঁজ কিভাবে আছেন কেমন আছেন বেঁচে আছেন কি আছেন মৃত্যুবরণ করেছেন, কিছুই বোঝার উপায় নেই‌। আর এই মানষিক কষ্ট দুঃখ কেইবা সহ্য করতে পারে। তোর অবস্থাও তো আমি বুঝতে পারছি নুর সারাক্ষণ দাদু কবে আসবে দাদা কবে আসবে করে কাঁদে। আমার যেন মনে হচ্ছে
কোন এক ক্রিমিনাল চক্র এ কাজটি করেছে। তিনি একজন জ্ঞানী বুদ্ধিমান মানুষ কখনোই হারিয়ে যেতে পারেন না।
রিফাত বলে মা এ ধারণাটা আমারও কিন্তু প্রকাশ করতে পারছিনা। কিন্তু এ ক্রিমিনাল শক্তি কারা? আব্বাজান কোন ক্রিমিনালি কার্যক্রম তদন্ত করছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে কি এমন ঘটনা ঘটলো।
দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লো।
বিকাল বেলায়
রিসোর্স সেন্টারের পাশে রিফাতের অফিস ,
.ইসলাম এন্টারপ্রাইজ=দামি থাইগ্লাসের দরজা ও জানালা মেঝেতে কার্পেটে ও সোফা সেট রাখা। অফিসে বসে রিফাত তার ব্যবসায়িক হিসাব কিতাব করেছে একটি কম্পিউটার স্ক্রিনে।পাসা রাখা তার মোবাইল।অফিস রূমের বাহিরে মেঝেতে লিচু, মালটা, আম, তরমুজ, থরে থরে বড় বড় কার্টুনে সাজানো রয়েছে। কয়েক টন হবে। এখানে একজন পিয়ন টুলের উপর বসে আছে। এমন মুহূর্তে ফারিন তার সেই সাদা ঘোড়ায় করে এসে নামলো। চতুর্দিক থেকে বাজারের লোকজন দোকানপাটের লোকজন ফারিন এবং তার ঘোড়ার দিকে চেয়ে রইল। এখানকার লোকজন তাকে কখনো দেখিনি। তাই এই সুন্দরী যুবতী কে? কৌতুহলী হয়ে উঠলো। অফিসের বারান্দায় উঠার সাথে সাথে পিয়ন সালাম দিল। যদিও সে তাকে চেনেনা। পিয়ন ঘরের দরজা খুলে দিল। ফারিন অফিসে প্রবেশের আগে বলল Sir can I enter?
রিফাত মাথা উঁচু করে দেখল ফারিন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে এবং তার ঘোড়াটিও বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।সে বলল Surely Mam you come ।
ফারিন অফিসের ভিতরে সোফাসেটে বসলো। খুব বড় মনে করে এসেছেন আমি খুব খুশি হয়েছি। তবে এমনটা আশা করিনি। বলুন কি খাবেন কফি চা?
ফারিন বলল I don't know if I bothered you. I can have coffee।
রিফাত হাসে বলে I'm glad you came ও ফোন করল হোটেলে ইমরানের কাছে বলল ইমরান আমার ভিআইপি গেস্ট এসেছে দুই কপি পাঠিয়ে দে । রিফাত কলিংবেল টিপলো এবং পিয়ন ভেতরে এলে রিফাত বলল স্টোরের ভিতরে ঝুড়িতে ফল আছে, ওগুলো মেম সাহেবের ঘোড়াকে দাও। ঘোড়াটি ও আমার মেহমান। জি স্যার বলে পিয়ন বাইরে এসে স্টোর রুমে প্রবেশ করল, এবং এক ঝুড়ি ফল মেম সাহেবের ঘোড়ার সামনে দিল মাল্টা, তরমুজ, ঘোড়াটা খেতে লাগলো প্রাণ ভরে।
ফারিন উচ্চস্বরে হেসে উঠলো, আপনি যে কি বলেন ঘোড়া আপনার মেহমান You are a wonderful person.
ওপাশ থেকে ইমরান উত্তর দিল তোর ভিআইপি গেস্ট ঠিক এসেছে? কপি পৌঁছে যাচ্ছে আমি কি আসতে পারি
রিফাত বলল সিওর চলে আয়। কিছুক্ষণ পর ওয়েটার দুই কাপ কফি নিয়ে এলো ট্রেতে করে। সাথে সাথে ইমরান ও এলো। ওইটার কপি রেখে চলে গেল। রিফাত বলল ম্যাম কপি নিন। ইমরান বস ম্যাম কে চিনতে পারিস? ইমরান সোপাসেটে বসতে বসতে বলল। না দেখেছি বলে মনে হয় না কে উনি? দুলদুল ঘোড়া ঠিকই ম্যামের।ইতিমধ্যে রিফাত এবং ফারিন কফি খেতে শুরু করেছে। রিফাত বলল হ্যাঁ ঘোড়াটা ওনার ঘোড়ায় চড়তে খুব পছন্দ করেন।
শোনেন ম্যাম আসলাম চাচার মেয়ে লন্ডন থেকে লেখাপড়া করেছেন। দেশের বাইরে ছিলেন বহু বছর এখন দেশে এসেছেন এবং গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন। আমিও উনি পরিচয় না দিলে চিনতাম না। ইমরান আশ্চর্য হয়ে বলে আর্মি কর্নেল আসলাম চাচার মেয়ে?
ফারিন মিষ্টি হাসি দেই এতক্ষণে সে কথা বলে।I am Mr. Aslam's daughter, your nearest neighbor
এবার ইমরান বলে By now I understand that you have finished your studies on any subject
ফারিন বলে Masters in Geography in English Medium What you do is your identity
ইমরান বলে আমি রিফাতের বন্ধু আর আমার ব্যবসা পাশে যে হোটেল আছে ওটাই আমার Memsaheb must not think that I do hotel business
ফারিন বলে না না আমি কী মনে করবো।
ওদের কথা বলার মাঝে নুর প্রবেশ করল।
এবং নুর কে প্রবেশ করতে দেখি ফারিন সাথে সাথে তাকে কোলে তুলে নিল। নুর ফারিনের কাছে বসে দুষ্টুমি করে বলল ম্যাম আজো কিন্তু আমাকে ঘোড়ায় চড়ে নিয়ে বেড়াতে হবে।
ফারিন হেসে বলে অবশ্যই তোমাকে আমি নিয়ে বেড়াবো।
নুর রিফাতকে বলে আব্বাজান ও দাদি ওষুধ কিনে দিতে বলেছে দাদির ব্যাথাটা আবার বেড়েছে।
ঠিক এমন হতে রিফাতের ফোন বেজে ওঠে মা ফোন করেছেন। ওপাস থেকে মা বলছেন, রিফাত একটা খবর শুনলাম শহরে নাকি নদীতে একটা লাশ পাওয়া গেছে ঠিক তোর আব্বার মতো দেখতে আমার খুব ভয় হচ্ছে রে তোর আব্বা নেই তো?
রিফাত মায়ের মুখে কথাটি শুনে হতভম্ব হয়ে যায় বলে, তুমি এমন গুজব খবর কোথা থেকে শুনেছ ইমরান শহর গিয়েছিল ও লাশটি দেখে এসেছে ইমরানের সাথে কথা বল ইমরান ফোন নে তোর চাচির সাথে কথা বল ইমরান ফোন নিল এবং চাচিকে বলল চাচি আমি শহরে নিজে দেখে এসেছি ওটা অন্য এক ব্যক্তির লাশ। পুলিশে উদ্ধার করে হাসপাতালে মর্গে রেখেছে। আপনি কোন চিন্তা করবেন না।
রিফাতের মা বলল, তাই যেন হয় বাবা আমার খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে। রিফাতের কাছে ইমরান ফোন দিয়ে দিলো রিফাত বলল আম্মা তোমার ওষুধ পাঠিয়ে দিচ্ছি। আসাম চাচার মেয়ে এসেছে অফিসে। উনি নুর কে একটু ঘুরে বেড়াবে এবং বাসায় ফেরার পথে নূরকে রেখে যাবে।
রিফাতের মা বললেন ঠিক আছে আসলাম ভাই-এর মেয়েকে তো বহু বছর দেখিনি। পাঠিয়ে দে ওর সাথে কথা বললে কিছুটা ভালো লাগবে। আচ্ছা এখন রাখছি ফোন রেখে দিল।
রিফাত ফারিনের উদ্দেশ্যে বলল, ম্যাম আপনি নূরকে কিছুটা ঘুরিয়ে আমাদের বাসায় আমার মার সাথে আলাপ করে যাবেন সান্ত্বনা দিয়ে যাবেন।It will not bother you at all
ফারিন বলে It would be nice to meet Auntie Maar, but I would love to
রিফাত কলিং বেল টিপল ঘরে প্রবেশ করল পিয়ন টাকা এবং প্রেসক্রিপশনে কাগজ দিয়ে বলল ওষুধ কোন কিনে আনো। পিয়ন ঘরে এসে টাকা প্রেসক্রিপশন নিলো স্যার আমি কিনে আনছি পিয়ন চলে গেল। ইমরান উঠে দাঁড়ালো রিফাত চললাম তোরা কথা বল হোটেলে কোন ম্যানেজার নেই ম্যাম আমার অফিসে আসবেন শিক কাবাব এবং পরোটা খাওয়ার দাওয়াত রইলো
ফারিন বলে I will try to come to your hotel and eat parota shik kebab
হাসতে হাসতে ইমরান প্রস্থান করলো।
রিফাতের উদ্দেশ্যে বলে স্যার সামনে এত গুলি ফল ক্রয় করলেন না বিক্রয় করবেন।
রিফাত হাসতে থাকে পরক্ষনে বলে না না এগুলো বিক্রয় হবে অর্ডারি মাল এডভান্স টাকা দিয়ে গেছে। রাত আটটার দিকে ট্রাক আসবে।

ইতিমধ্যে পিয়ন ওষুধ নিয়ে এলো। রিফাত ওষুধের প্যাকেট নুরের কাছে দিল বলল তোমাদের দাদির কাছে দেবে। ওষুধের প্যাক নুর নিল।
এবার ফারিন বলল স্যার তাহলে আসি চলো নুর আমরা কিছুটা বেড়িয়ে তোমাদের বাড়ি যাব। ওরা বেরিয়ে গেল।
নুরকে ঘোড়ায় চড়িয়ে নিয়ে ফারিন এদিক-ওদিক বাজারের আশেপাশে এবং ব্রিজের ওপারে কিছুটা বেড়িয়ে একটি শপিং মলে যেয়ে নূরের জন্য টুকটাক কয়েকটা জিনিস কিনে দিল। নুর খুব খুশি হলো। এরপর তারা নুরদের বাড়ির সামনে চলে এলো।
ওরা ঘোড়া থেকে নামল। সামনে নূরের মায়ের কবর। নুর বলল ম্যাম এটাই আমার মার কবর।
ফারিন কবরের পাশে এসে দাঁড়ালো। কিছুক্ষণ নীরব রইল মনে মনে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করল নূরের মায়ের জন্য।
এরপর নুরের সাথে পাহাড়ি সিঁড়ি বেয়ে ওদের বাসার ভেতর প্রবেশ করল। তখন ড্রয়িং রুমে নুরের দাদী বসে আছে। তা দেখতে পেরে ফারিন আসসালামুয়ালাইকুম বলে সালাম দিল।
নূরের দাদি এগিয়ে এলো। তিনি বুঝতে পারলেন আসলাম সাহেবের মেয়ে বললেন, এস মা এস, আমি তোমার অপেক্ষায় বসে আছি। রিফাত ফোন করেছিল তখন থেকেই।ফারিন কে নি্য়ে সোফা সেটের নিজের পাশে বসালেন। ছোট্ট কালে তোমাকে দেখেছি এখন তুমি কত সুন্দরী হয়েছো কত বড় হয়েছো। তোমার সম্পর্কে রিফাত আমাকে অনেক কথা বলেছে।
কি বলেছে চাচি মা খারাপ কিছু নয় তো? ফারিন বলে।
না না খুব ভালো কথা বলেছে তোমার খুব প্রশংসা করছিল তুমি নুর কে খুব আদর করেছ।
আর বর্তমান আমাদের বিপদের কথা তো তুমি সবই জানো তোমার আব্বার কাছ থেকে জেনেছ।
ফারিন বলে জি, আব্বাজান অনেকে অনেক কিছু বলেছেন। চাচি মা ধৈর্য ধরুন আল্লাহকে স্মরণ করুন আমার আত্মবিশ্বাস তিনি একদিন আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসবেন।
নূরের দাদি বলেন হ্যাঁ মা তাই যেন হয়। তা বলো তুমি কী খাবে।
না চাচিমা এখন আর কিছুই খাবো না সন্ধ্যার পূর্বে বাসায় ফিরতে হবে ঘোড়াটা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
তুমি ঘোড়ায় এসেছো ঘোড়ায় চড়তে খুব ভালো লাগে তোমার। নুরের দাদি এ কথা বলেন
জি ঘোড়া আমার খুব প্রিয়। ফারিন বলে
তাহলে এক গ্লাস লেবুর শরবত খেয়ে যাও
কিছু না খেয়ে কিভাবে যাবে। এক গ্লাস লেবুর শরবত বানিয়ে ফারিনকে খেতে দিলেন। শরবত খেয়ে ফারিন উঠে দাঁড়ালো।
বলল চাচি মা এখন আসি দোয়া করবেন আমার জন্য।
আচ্ছা এস এরপর ফারিন আর দেরি করলো না ঘোড়ায় চড়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হল।
চার
পারিম ইজরাল দেশের পার্বত্য সিমান্ত অঞ্চল।এটি *ফারজিলের*কোন অংশ নই। রিংসা বাজার থেকে চারশত কিলোমিটার দূরে দুই হাজার ফুট উপরে সিরন পর্বতের চূড়ায় একটি স্থানে
ছোট্ট একটি বাসায় সিআইডি অফিসার নুর ইসলাম আটক হয়ে আছেন।বিদেশের জমিনে।ইজরালে থেকে ফারজিলের উপর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।কুখ্যাত
এমপিসি ক্রিমিনাল গ্রুপ। নুর ইসলাম সাহেবকে কিডন্যাপ করে অফিস থেকে ফেরার পথে। তিনি রাত্র বারোটার দিকে প্রাইভেট গাড়িতে করে ফিরছিলেন। এবং নিজেই ড্রাইভ করছিলেন। তার সাথে কোনো সঙ্গী ছিল না। তার প্রাইভেট কারটি গোয়েন্দা অফিসের সংরক্ষিত করা আছে। তার মোবাইলটাও ছিনিয়ে নেয়। এই এমপিসি গ্রুপ একটি দেশ দ্রোহী সংগঠন এরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর হত্যার ষড়যন্ত্র করছিল। গোয়েন্দা বিভাগ তা জানতে পেরে একাজের তদন্ত সিআইডি অফিসার নুর ইসলামের দায়িত্বে অর্পণ করেন। আর এ কারণেই এমপিসি গ্রুপ সিআইডি অফিসার নুর ইসলামকে কিডন্যাপ করে। পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও তার পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব দের সাথে এবং অফিসের সাথে মোবাইলে কথা বলার সুযোগ দেয়নি। তাকে রীতিমত খাবার-দাবারে ব্যবস্থা করে। ওই ঘরে নামাজ কালাম পড়েন এবং রাত্রিযাপন করেন। পাসে একটি বাথরুম আছে। গোসলের জন্য সামান্য একটু নিচে সিরন ঝর্না নিচে নেমে গেছে। এই ঝর্ণাধারায় তিনি গোসল সারেন।তখন তার সাথে মেয়ে দুটি থাকে। এটা খুবই দুঃসাহসী এবং বিপদজনক যেকোনো মুহুর্তে একজন মানুষকে হত্যা করতে পারে কোন কারন ছাড়াই। তাকে সর্ব মুহূর্তে এমপিসি গ্রুপের সদস্যরা নজরে নজরে রাখে। একটি আশ্চর্য ব্যাপার হল তাকে যে সমস্ত লোকেরা তত্ত্বাবধান করে থাকে তারা বয়সে যুবক।
এবং দুটি মেয়েও আছে পঁচিশ বছর বয়সের। এরা কখনো নুর ইসলামের সাথে খারাপ আচরণ করিনি। এরা অধিকাংশই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। প্রত্যেকেই খুব অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে এবং সবসময় সাথে রাখে। এমন রঙিন ও রং-বেরংয়ের পোশাক ব্যবহার করে যা পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে মিশে যায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে দূর থেকে বোঝা যায় না এখানে কোনো মানব আছে। নুর ইসলাম সাহেব গোসল করার জন্য ঝর্নায় গেলেন তার সাথে অস্ত্রধারী মেয়ে দুটি আছে। গোসল করার পর তিনি মেয়ে দুটিকে লক্ষ্য করে বললেন মা তোমরা আমাকে আর কতদিন আটকে রাখবে আমার পরিবারের সাথে তোমরা যোগাযোগ করতে দিচ্ছ না তারা কেমন আছে আমার জন্য তারা চিন্তায় অস্থির আছে আমিতো এমন কোন অপরাধ করিনি। আমার মোবাইলটা ফিরিয়ে দিয়ে আমার পরিবারে সাথে একটু যোগাযোগ করতে দাও। আমিতো সরকারের একজন কর্মচারী মাত্র।
আশেপাশে আজ আর কোন এমপিসি গ্রুপের সদস্যদের দেখা গেল না আজ খ্রিস্টানদের বড়দিন। খুবই জাকজমকের সাথে এরা বড়দিন পালন করে থাকে। সামনেই ঐ গির্জার ভেতর। আজ রাতে ওরা সবাই আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে যাবে।
এখনই আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। গির্জা কে ফুল এবং আলোর বাতিতে সাজিয়েছে। মেয়ে দুটি নুর ইসলাম সাহেব এর কোনো প্রতি উত্তর দিল না। ওরা মা শব্দে শুনে অনেকটা দুর্বল হয়ে গেল। তারা এই এমপিসি গ্রুপে এসেছে তাদের পিতা-মাতা ভাই-বোন সবাইকে তোদের বেতনের টাকা ধরা আর্থিক সহযোগিতা করে এবং প্রয়োজনে পরিবারের সবার সাথে দুই একদিনের জন্য সাক্ষাৎ করে আসে। ওদের বস সেও একজন নারী। তিনি আজ বড় দিনে গির্জায় আসবেন। তবে অনেক পুরুষ সদস্য আছে যারা সারা দেশকে নিয়ন্ত্রণ করে। সারাদেশের নেটওয়ার্ক তাদের আয়ত্তে কোথায় কি করতে হবে কখন করতে হবে সবকিছু নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নির্দিষ্ট হয়। ওরা কড সংকেতের এর মাধ্যমে কথাবাত্রা আদান প্রদান করে।

এই লেডি বসের নাম ক্যাটরিনা। ক্যাটরিনা ইজরালের নাগরিক। তার আদেশ-নির্দেশ অমান্য করার সাহস কারো নেই। কেউ তার মতের বিপক্ষে গেলে তিনি তাকে বাঁচিয়ে রাখেন না। অধিকাংশ সময় তিনি ছদ্মবেশ ধরে বিভিন্ন রুপে নানা কৌশল অবলম্বন করে মিশন চালান। তাকে সার্বিক সহযোগিতা দেই সরকার বিরোধী দুইটি রাজনৈতিক দল। এই দুটি রাজনৈতিক দল সরকার থেকে নিবন্ধিত নয়। এবং নিবন্ধন পায়নি এ কারণেই তাদের আক্রোশ বেড়ে গেছে। । সারাদেশে উক্ত দল দুটির লক্ষ লক্ষ সমর্থক রয়েছে।ওরাই সরকারের পতন চাই। ওরাই ক্যাটরিনাকে লেডি বস বানিয়েছে। এখন বুঝে নিন কত ভয়ংকর।

গভীর রাত খ্রিস্টান গির্জায় অনুষ্ঠান চলছে। লেডি কিলার ক্যাটরিনা ছদ্মবেশ নিয়ে অংশগ্রহণ করছে। ক্যাটরিনার সুঠাম দেহের অধিকারী সুন্দরী এবং 45 বছর বয়স্কা মেয়ে এবং সে আনমেরিড। এই দুঃসাহসিক জীবন বেছে নেওয়ার অনেক করুণ ইতিহাস আছে কিন্তু সেটা এখানে বর্ণিত হচ্ছে না। এবং এমপিসির প্রত্যেকটি সদস্য সাধারণ পোশাকে ভদ্রবেশে আজ বড়দিন পালন করতে এসেছে। ঠিক এমন মুহূর্তে এমপিসি গ্রুপের প্রধান ক্যাটরিনার মোবাইল ফোনে একটি মেসেজ এল। মেসেজটি পাঠিয়েছেন সিক্রেট কোড পদ্ধতিতে । এবং মেসেজটি একটি মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে এসেছে। এই পদ্ধতিতে যাদের জ্ঞান নেয় তারা কখনো মেসেজ এর অর্থ অনুবাধন করতে পারবে না। ক্যাটরিনা মেসেজ মনোযোগ সহকারে পড়ল। বেশ লম্বা একটা মেসেজ। মেসেজটি পাঠিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা মরিসান সাহেব।উনি খ্রিষ্টান ধর্মালম্বী।এই নেতার দলের নাম 'ফেডারেল ইউনিয়ন'দলটি এখনো সরকার থেকে নিবন্ধিত হয়নি।
মেসেজটিতে যা লেখা আছে তার সারসংক্ষেপ নিম্নরূপ -সরকারি প্রশাসন পুলিশ আমার দলের অনেক নেতা কর্মীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে। এবং তারা অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে যা আমার দলের জন্য হুমকিস্বরূপ। অফিসারের চাকরি থেকে ইস্তফা গ্রহণের সম্মতি গ্রহণ করে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে তাতে করে আপনার কার্যক্রমের কোন সমস্যা হবে না। তবে কোনো প্রকারেই অফিসার চাকরিতে বহাল থাকতে পারবেন না। চাকরিতে বহাল থাকলে উনি ওনার নীতি বোধকে কখনোই বিসর্জন দিবেন না। অফিসারের নৈতিক চরিত্র দায়িত্ব জ্ঞান সম্পর্কে আমি খুব ভালোভাবে অবগত আছি।উনি সৎ আদর্শ থেকে তিনি কখনোই ফিরে আসবেন না আমার কথা কি বুঝতে পেরেছেন।
Happy Christmas.
ক্যাটরিনা হল রুম থেকে বেরিয়ে এলো সাথে সাথে তার এজেন্টরাও। এভাবে বসকে বেরিয়ে আসতে দেখতে একজন লেডিস এজেন্ট বলল ম্যাডাম এনিথিং রং
ক্যাটরিনা চলতে চলতে বলল অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ করতে চাই দ্রুত চল। ওরা নূর ইসলাম সাহেবের উদ্দেশ্যে রওনা হলো
এ দিকে নুর ইসলাম সাহেব গভীর রাতে জায়নামাজে বসে তাহাজ্জ্বত নামাজ পড়ছেন। এবং নামাজ শেষে প্রার্থনা করছেন আল্লাহর দরবারে করুন সুরে ক্রন্দিত কন্ঠে।
এমন মুহূর্তে কয়েকজন এমপিসির এজেন্ট সহ ক্যাটরিনা প্রবেশ করলো। মুখে তার কালো কাপড় বাঁধা। চতুর্দিকে এজেন্টরা সশস্ত্র দন্ডায়মান। নুর ইসলামের প্রার্থনা ক্যাটরিনার কানে গেল।
দরজার বাইরে থেকে দেওয়া ছিল লেডি এজেন্টরা দরজা খুলল এবং ভিতরে প্রবেশ করলো। নুর ইসলাম সাহেব বুঝতে পারলেন ভিতরে লোক প্রবেশ করেছে অনেকগুলি। তিনি মনোযোগ শেষ করে উঠে বিছানায় বসলেন।
ক্যাটরিনার ইশারায় সকলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। ঘরে একটি লাইট জ্বলছিল সিলিং ফ্যান চলছিল এটা করে বোঝা যায় নুর ইসলাম সাহেব কে খুব একটা কষ্টে থাকতে হয়নি। যা যা প্রয়োজন সবই ঘরের ভিতরে ক্যাটরিনা দেখতে পেল।
এবার ক্যাটরিনা বলল I am the leader of MPC group. You have been kidnapped at my behest. You stood in the way of all my activities One of my conditions is that you can be released।অফিসার আমি এমপিসির গ্রুপের নেত্রী। আমার নির্দেশেই আপনাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে। আমার সমস্ত কার্যক্রমের আপনি বাধা হয়ে দাড়িয়ে ছিলেন। আমার একটা শর্ত মানলে আপনি মুক্তি পেতে পারেন।
নুর ইসলাম সাহেব কিছুক্ষণ ভাবলেন মনে মনে শুকরিয়া আদায় করলেন আল্লাহর দরবারে তার মুক্তি সম্মুখে।
নুর ইসলাম সাহেব বললেন আপনার কি শর্ত Mr. Nur Islam said what is your condition
ক্যাটরিনা এবার বললYou must resign if you agree to this condition. I can release you or you will have to give your life.
আপনাকে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে হবে এই শর্তে যদি আপনি রাজি হন তাহলে আমি আপনাকে মুক্তি দিতে পারি। নইলে আপনার জীবন দিতে হবে।
নুর ইসলাম সাহেব বেশ কিছুক্ষণ চিন্তা ভাবনা করলেন তার অনেক সম্পদ আছে চাকরি না করলেও কিছু আসে যায় না কিন্তু জীবনটা অনেক বড় আগামীতে হজ্ব করার নিয়ত আছে। চাকরি না করলেও পরিবারের লোকজন নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করা যাবে।

পাশের পানির পাত্র থেকে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলেন ভাবলেন বাঁচতে হলে এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে এদের কন্ডিশন মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
এবার নুর ইসলাম সাহেব বললেন-I am willing to accept your hundred. If you can get me home safelyআপনার শর্ত আমি মেনে নিতে রাজি আছি। যদি আমাকে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করেন।

ক্যাটরিনা বলল Officer, you saved the intelligent life tomorrow morningঅফিসার আপনি বুদ্ধিমান জীবনটা বাঁচিয়ে নিলেন। Officer you saved the intelligent life you can go home tomorrow but my condition is that you rememberঅফিসার আগামীকাল আপনি বাসার উদ্দেশ্যে যেতে পারবেন তবে আমার শর্তটি যেন আপনার মনে থাকে।
নুর ইসলাম সাহেব মনে মনে বললেন জীবন বাঁচানোর মালিক আল্লাহ তুমি নাও।
ক্যাটরিনা এজেন্টের সাংস্কৃতিক নির্দেশ প্রদান করে এখান থেকে চলে গেল।
মেয়ে এজেন্ট দুটি এসে বলল Make mental preparations to meet with the family in order for the officer to go home tomorrow night
নুর ইসলাম সাহেব বললেন I'm glad I'm back. Thank you very much.
ওরা ঘর থেকে চলে গেল নুর ইসলাম সাহেব আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে শুয়ে পড়লেন।
পাঁচ
রাত দশটার পরে আসলাম সাহেবের ফোন বেজে উঠল ওপার থেকে কথা বললেন এসপি সাহেব বললেন আসলাম সাহেব আপনার বন্ধু নুর ইসলাম সাহেব কে অজানা কোন ব্যক্তি আমার তত্ত্বাবধানে রেখে চলে গেছেন। তিনি ভাল আছেন। আপাতত ব্যাপারটা কাউকে জানানোর প্রয়োজন নেই। আমরাও কাউকে জানাইনি। কারণ এতে জনগণের ভিড় হবে এবং সাংবাদিকদের উৎপাত হবে যা সামলানো পুলিশের পক্ষে খুব কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। আপনি আপনার বন্ধুর ফ্যামিলিতে ব্যাপারটা জানিয়ে দিন। আমরা রওনা হয়ে গেছি নুর ইসলাম সাহেব কে নিয়ে দুজন সিআইডি অফিসার সহ পুলিশ ফোর্স নিয়ে আসছি।
এপার থেকে আসলাম সাহেব খুব খুশির আতিশয্যে কথা বলতে পারছিলেন না বলেন স্যার ঠিক আছে আমি এখনই খবরটা পৌঁছে দিচ্ছি। আর আপনি যেভাবে বলেছেন সেভাবে করছি। এরপর এসপি সাহেব ফোন রেখে দিলেন।
পরক্ষণেই আসলাম সে চিৎকার করে উঠলেন ফারিন ফারিন ছুটে এলো কি ব্যাপার এত চিৎকার করছো কেন। আসলাম সাহেব বলেন আমার বন্ধু নূর ইসলাম ফিরে আসছেন। এসপি সাহেব আমাকে এইমাত্র জানালেন। এর পর তিনি দ্রুততার সাথে রিফাত কে কল করলেন। বলেন- এবার তোমার আব্বাজান ফিরে আসছে, এসপি সাহেব রওনা হয়েছেন তুমি যেখানে থাকো বাসায় চলে এসো।
রিফাত আশ্চর্য হয়ে যাই বলে কি বলছেন চাচাজান ব্যাপারটি কি সত্যি।
প্রতিউত্তরে আসলাম সাহেব বললেন হাঁ বাবা সত্যি কিছুক্ষণের মধ্যে তোমার আব্বাজান এসে যাবেন। এসপি সাহেব কাউকে ব্যাপারটি আপাতত জানাতে নিষেধ করেছেন। তুমি বাসাতে তোমার আম্মুর কাছে চলে যাও, আমরা আসছি এখন রাখছি ফোন কেটে দিলেন।
রিফাতের অবস্থা তখন আবেগপূর্ণ এতদিন পরে তার আব্বাজান কে ফিরে পাচ্ছেন। ইমরান কে ফোন করল বলল তুই যেখানে থাকিস আমার বাসায় চলে আয় আব্বা ফিরে আসছে এসপি সাহেব নিয়ে আসছে। এই মুহূর্তে বেশি কিছু বলতে পারছিনা
ইমরান আবেগে কি বলবে বুঝতে পারছিল না শুধু বললো ঠিক আছে আমি আসছি।
ফারিন আসলাম সাহেব রিফাত ইমরান সকলে বাসায় এসে পৌঁছল। রিফাতের মা ক্রন্দন করছে ফারিন তাকে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছে।তখনো এসপি সাহেব নুর ইসলাম সাহেব কে নিয়ে পৌঁছাননি। নুর শুধু বলতে লাগল দাদু ফিরে আসছে দাদু সে দাদু ফিরে আসছে রিফাতের আম্মা আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করতে লাগলেন। সবাই অপেক্ষা করছেন।
সবাই আবেগে আপ্লুত কেউ কোন কথা বলতে পারছেন না।
একটু পরে নিচে গাড়ির শব্দ হলো ওরা সকলেই দ্রুত নিচে নেমে এলো বুঝতে পারল তাদের উনারা এসেছেন।
সত্য সত্যই এসপি সাহেব এবং দুইজন সিআইডি অফিসার পুলিশ ফোর্স নুর ইসলাম সাহেব কে নিয়ে হাজির। ওরা সবাই গাড়ি থেকে অবতরণ করল। নূর ইসালাম সাহেব পরিবারের সবাইকে বন্ধুকে দেখতে পেলেন। নুর ও রিফাত ছূটে এল জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল করুণ দৃশ্য। রিফাতের মা কাঁদতে কাঁদতে স্বামীকে জড়িয়ে ধরলেন।
ইমরান চাচাজান বলে হাত ধরে কাঁদতে থাকলো। বন্ধু আসলাম গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন। এই অবস্থায় কাঁদতে কাঁদতে সকলে বাসার ভিতর প্রবেশ করলেন। এসপি সাহেব এবং সিআইডি অফিসার দুজন উপরে উঠে এলেন। আসলাম সাহেব বন্ধুকে সোফা সেটের উপরে বসে নিলেন। নুর ইসলাম সাহেব নূর কে তুলে ধরে বলেন আমার দাদু কলিজার টুকরা তোরে আমি কখনোই ভুলতে পারিনি গালে মুখে অনর্গল চুমু খেতে লাগলেন আমার জান আমার কলিজার টুকরা আমার দাদু। নুর ওই মুহূর্তে দাদুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল দাদা তোমার মারে নিত তোমার ঠিকমত খেতে দিয়েছো তো? নুর ইসলাম সাহেব বললেন নূরের প্রতিউত্তরে মাদারীপুর আমাকে মারিনি আমাকে চিঠি দিয়েছে আমার কোন কষ্ট দেয়নি
সবাইকে কাঁদতে দেখে বলেন, তোমরা শান্ত হও, আমি তো ফিরে এসেছি আল্লার রহমতে ওরা আমার উপর কোন অত্যাচার নির্যাতন করিনি, ওরা একটা শর্ত দিয়েছে আমাকে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে হবে আমি সেই শর্তের বিনিময়ে মুক্তি পেয়েছি। তোমরা কেঁদোনা।
এসপি সাহেব বললেন নুর ইসলাম সাহেব আল্লাহ আপনার হেফাজত করেছেন। আমরা সকলে আপনাকে ফিরে প্রিয় সৌভাগ্য মনে করছি We're all glad to have you back. আপনি ধৈর্য ধরুন প্রশাসন যা ভাল হয় তাই করবে আর আপনাদের সবার প্রতি আমার অনুরোধ আপাতত ব্যাপারটা কাউকে জানানোর দরকার নেই।
একজন সিআইডি অফিসার বললেন স্যার কে এমপিসি গ্রুপ ইজরাল নিয়ে আটকে রেখেছিল। দেশের বাইরে থাকার কারনে আমরা স্যার এর সন্ধান করতে পারিনি এর জন্য আমরা দুঃখিত।Sir, with the cooperation of the government, I will uproot the roots of the MPC group from this country, Inshallah
এসপি সাহেব বললেন নুর ইসলাম সাহেব
আপনি অনেক ক্লান্ত পরিশ্রান্ত আপনার কমপ্লিট বিশ্রামের প্রয়োজন আমরা এখন আসছি ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন সর্বখন আপনার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হবে
May Allah protect you
এরপর এসপি এবং সিআইডি অফিসারগন আর অপেক্ষা করলেন না প্রস্থান করলেন।
ফারিন ক্রন্দনরত রিফাতকে সান্তনা দেই বলে আব্বাজান তো ফেরত এসেছেন এখন আর কান্নাকাটি করবেন না। ধৈর্য ধরুন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করুন।
নুর কোনভাবেই দাদুকে ছাড়ছেনা রিফাত
পাগলের মত চিৎকার করে ওঠে- ফিরে এসেছে ফিরে এসেছে আমার আব্বাজান আমার আব্বাজান। (সমাপ্ত)
বিশেষ দ্রব্যষ্ট-এই গল্পে দেশ, শহর, বন্দর,বাজার, গ্রাম ,পাহাড়, পর্বত, নদীর, কাল্পনিক নামকরণ করা হয়েছে। বাস্তবের সাথে এর কোন সংমিশ্রণ নেই। লেখক
মামুন ইকবাল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Dalim Khan গল্পটি আমার খুব ভালো লাগছে।
Tarun Paul গল্পটি আমার কাছে ভালো লেগেছে৷ তাই ভোট দিলাম
mafujur Rahman গল্প টি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। এ জন্য আমি লেখক কে উৎসাহ করার জন্য ভোট দিলাম
আমাকে উৎসব প্রদানের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
Ariba Afrin অনেক অনেক ভালো হয়েছে
ম্যাম আপনাদের ভাল লাগলে আমার পরিশ্রম সার্থক আমার জন্য দোয়া করবেন আরো ভালো লিখতে পারি
Sohan Hossain ভালো লেগেছে
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ রইল
Md Soheb খুব ভালো লিখছে
অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ
MM Asib UR Rahman খুব ভালো লেগেছে
ভালো লিখতে পারি এ জন্য দোয়া করবেন
Salman Hossain ভালো লেগেছে।
আপনাদের আমার গল্পটি ভাল লাগলে আমার পরিশ্রম সার্থক

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

বাবা সন্তানের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ বাবা সন্তানের মহীরুহ বট বৃক্ষের সমান। রোদ-বৃষ্টিতে ছাতি স্বরূপ। যে সন্তানের বাবা নেই বাবা হারানোর কত কষ্ট সেই একমাত্র জানে। বাবা চোখের সামনে মৃত্যুবরণ করলেও সান্ত্বনা পাওয়া যায়। কিন্তু জীবিত থেকে যদি নিখোঁজ হয়ে যায় এ কষ্টের কোন সীমা থাকেনা। তিনি কেমন আছেন জীবিত আছেন কি মৃত্যুবরণ করেছেন এ চিন্তায় সবার শান্তি বিনষ্ট হয়ে যায়। এই গল্পে উক্ত কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।

১১ এপ্রিল - ২০২২ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী