আমরা কি সত্যিই ভালো মানুষ? বারবার এই প্রশ্নটা মনের মধ্যে ঘুরপাক করে,
আসলে আমরা কেউই ভালো মানুষ না। সবাই স্বার্থপর। একে,ওকে,তাকে দিয়ে কি ভাবে ভালো কাজটা হাসিল করা যায়,এই আমাদের মনোভাবনা?এই দুনিযায় আমরা ভালো হয়ে অভিনয় করে যাই। এই ভাবেই ভাল থাকার সুখানুভুতি পাবার চেষ্টা করি।
আমাদের মনে অহংকার, রাগ, হিংসা বস্তা বস্তা ভর্তি। পৃথিবীর সমস্ত কিছু গলে যায়, তবে আমাদের মনের মধ্যে সর্বনাশ অনুভূতি বর্জিত করতে পারিনা। তবুও বলাবলি করি মানুষ ধর্ম শ্রেষ্ঠ ধর্ম। মানুষ প্রানীর মত বুদ্ধিমান সহৃদয় এই দুনিয়ায় আর নেই।
আসলে কি আমরা ভালো মানুষ? এ প্রশ্ন সর্বদা পালকের মতো উড়তে থাকে,এই ভেবে নিত্য আমার মনিকোঠা পুড়তে থাকে।
মনে হয় মানুষ জেগে থাকা বোধ, বুদ্ধিহীন হিংস্র উলঙ্গ পশুর মত, নিজের ভুল কখনো আমরা স্বীকার করতে চাই না।
আমরা প্রতিদিন প্রায় ভবঘুরে কত পাগলা, পাগলি রাস্তায় দেখি উলঙ্গ অবস্থায়।
ছেঁড়াফাটা জামা ,অনেকদিন ধরে ময়লা জমেছে শরীরে, ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চুল, কোনোদিন তারা স্নান করে না।
তবে বৃষ্টির জলে ভেজে, রোদে তারা পুড়ে যায়,রাতে ফুটপাতেই ঘুমিয়ে যায়।
ডাস্টবিনে এঁটো খাবার খেয়ে থাকে।
তাদের কোনো অভিযোগ নেই।
আমরা ভাবি তারা পাগল,
পাগল বলে হেসে উড়িয়ে দিই আমরা বলি তাদের মায়া মমতা নেই ,পিছুডাক নেই, সংসার নেই, কিচ্ছু নেই।
এই পুরো জগৎ তার
আমরা বলি, আমরা এমন হতাম যদি কি ভালো হত! আমরা ভুল বলি, তাদেরও মায়া আছে, অজস্র মায়া আছে। তবে এই দুনিয়ায় প্রিয়জনদের কুকীর্তি দেখে, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পাগল বেশে ঘুরে বেড়ায় রাস্তায় রাস্তায়।
আজই দেখলাম এক পাগলী। তার কাপড়চোপড়ে ময়লা ছেঁড়াফাটা, জটলা চুল,
না খেয়ে খেয়ে হাড়গোড় গুলো বেরিয়ে গেছে।
তার এই বুদ্ধিমত্তা দেখে আমি হতভম্ব ,আমি পুরো তাজ্জব হয়ে গেলাম।
আচমকাই একটা শালিক পাখি কারেন্টের শক খেয়ে ধপ করে যখন মাটিতে পড়ল,
পাগলীটির চোখে পড়তেই তৎক্ষণাৎ দৌড়ে গেল–
হাতে তুলে নিয়েই এক দোকানে গিয়ে বলছে– বাবু একটু জল দাও
না হলে পাখিটি মরে যাবে
দোকানি দাদা অতি নম্রতার সঙ্গে একটা বোতল বের করে পাখিটির মুখে জল দিল।
পাগলী মহিলাটি পাখিটির সারা শরীরে হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।
পাখিটি যখন একটু সুস্থ হলো, পাখিটিকে উড়িয়ে দিল।
তার গলা থেকে একটা অস্পষ্ট একটা কথা শোনা গেল যা পাখি যা
আবার দেখা হবে!
পাগলীটি এই গোটা আকাশে, হাওয়াতে তার হাসি ছড়িয়ে দিল,
তবে তার হাসি এতদিন ছিল মরীচিকা, তবে এই সমাজের অসভ্য মানুষ, তার হাসিতে যে অনুপম সত্যতা লুকিয়ে আছে
কণামাত্র টের পাইনি
সে আমিই পরোক্ষভাবে দেখতে পেলাম।
আমিও এক চিলতে হাসি নিয়ে আমার গন্তব্যে যেতে লাগলাম,
আর মনে মনে বলতে লাগলাম আমরা কি সত্যিই ভালো মানুষ?
তবে এই পাগলীটি কি করে জানলো পাখিটির প্রাণের মূল্য?
ঈশ্বর মনে হয় এই দায়িত্ব তাকেই যেন দিয়ে রেখেছে।
আমাদের মনে অহংকার,
অসহায়, বিপদগ্রস্ত মানুষের দিকে হাত বাড়িয়ে দেই না।
তবু আমরা অবলীলায় বলাবলি করি আমি খুব ভালো মানুষ,আমার মত মানুষ দুনিয়াতে পাবেন না।
রচনা–বিপ্লব দাস(রাহুল)
১৫জুলাই ২০২১
ছবি–গুগোল
১৬ সেপ্টেম্বর - ২০২১
গল্প/কবিতা:
১ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪