রাশিকের কথা নাকি তারেকের কথা নাকি নাবিলার কথা?

একটি কালো রাত (মার্চ ২০২১)

dhrubo
  • 0
  • ৯৭
একটা বদ্ধ স্যাতস্যাতে ঘর।পচা শেওলার ভেজা আশটে গন্ধ।ঘরের কোনায় কোনায় সবুজ শ্যাওলা আর ছত্রাকে বেড়ে ওঠা।মাটির দিকে তাকালে লাল লাল ছোপ ছোপ রঙ লেগে আছে।এগুলা রঙ কিনা সেটাও বুঝতে পারছেনা রাশিক।একবার মনে হচ্ছে রক্ত আবার পরের মুহুর্তেই মনে হচ্ছে পানের পিক।পানের পিক হওয়ার কথা না।এখানে এসব গ্রাম্য নেশা চলেনা।বিশ্ববিদ্যালয় বলে কথা।ক্যাম্পাসের তরুন বলে কথা।এখানে গাজা চলে,ইয়াবা চলে।শহর থেকে দূর বিধায় মদ টা একটু কম চলে।শহুরে হওয়ার আপ্রান চেষ্টা করে পোষায় না সবসময়। জানালা দিয়ে বদ্ধ নালার ভিতরে চুইয়ে যেমন করে পানি পড়ে ঠিক তেমন করে চুইয়ে চুইয়ে একটু করে সূর্যের আলো আসছে।কিন্তু খুবই মৃয়মান সেই আলো।

ধোয়াচ্ছন্ন রুমের ভিতর তামান্না,রাশিক,রইস আর আমার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রুমমেট রাহান। রইস আর তামান্না আমার এইখানকার বন্ধু।রইস আর তামান্না জড়াজড়ি করে বসে আছে।রইসের একটা হাত তামান্নার শস্তা জামার উপর দিয়ে পোকার মত কিলবিল করে বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গা গুলোতে ঘুরে বেরাচ্ছে।রাহান দুই হাত দিয়ে গাজার স্টিক টা ধরে টানছে আর কথা বলেই যাচ্ছে। রাশিক ইয়াবা খেয়ে শক্ত হয়ে বসেই আছে।চোখ বড় বড় করে ।
রাহান হাবিজাবি বলতেছে।আমি কানটাকে আরেকটু ফোকাস করলাম,
“এই শুন না,রইস,তামান্নার দুধ পরে টিপিস।আমরা চলে গেলে চুদিস, সমস্যা নাই।তামান্না তুই না ফেমিনিস্ট?এভাবে তোকে এই যে স্ট্রেস রিলিভিং বলের মতন কথাবার্তা ছাড়া টিপে যাচ্ছে তুই কিছু বলতেছিস না? নাকি তুই শহীদ মিনারে গিয়ে হিজাবি দেখলে ফেমিনিজমের হরমোনে হর্নি হয়ে যাস? তখন খালি কথার তুবড়ি ছোটাস?তখন গলা খুব বড় হইয়া যায় আর নারীর প্রতি ইসলামের বিদ্বেষের দু পাতা লেকচার ছাড়িস?”
রইস আর তামান্না না থেমেই রাহান কে বললো “কানাইয়া এত কিছু বুঝোস কেমনে?তুই কুত্তার বাচ্চা চোখে দেখস না। কি বলবি বল না?”
রাহান আবার শুরু করে “আচ্ছা শুন না।আমি না গতরাতে একটা স্বপ্ন দেখছি। দেখি গোলটেবিলে বসে আছি আমি এক কোনায়।ঘরটা অতি সুন্দর। সবুজ মার্বেল দিয়ে পুরো ঘরটা বাধানো।মেঝের মোজাইক টা সবুজ সাদা মার্বেলের।ছাদ থেকে ঝাড়বাতি ঝুলছে দুইটা। টেবিলের উপর অপূর্ব সুন্দর গন্ধওয়ালা কাবাবের বাটি রাখা। বিশাল টেবিল বুঝছিস?বিশাল মেহগনি কাঠের টেবিল আর আমি তাকাইয়া আছি সোজা সামনের দিকে।ওইখানে দেখি তিনজন মানুষ মাথা নিচু কইরা বইসা আছে।আরেকটু খেয়াল কইরা দেখি একজন টেবিলের উপর মাথা দিয়ে রাখছে।পুরা রুমটা এত সুন্দর কিন্তু ডিপ্রেসিং। A perfect circle এর নতুন এলবামের টাইটেল ট্র্যাক Eat the Elephant বাজতেছে ব্যাকগ্রাউন্ডে।পিয়ানোটার প্রতিটা নোট দুঃখ ভরা সাগরের ঢেউয়ের এসে আমাদের কে এলোমেলো করে দিচ্ছে। আমি চিন্তা করার চেষ্টা করতেছি কিন্তু প্রতিটা নোট আমার চিন্তার সুতা চড়কির পার্ফেক্ট গতিপথ কে এলোমেলো করে দিচ্ছে। নতুন করে আবার চিন্তার চাকাটাকে ঠিকভাবে বসাই কিন্তু আবার মায়নার্ডের অদ্ভুত মায়াবী ভূতুড়ে গলার কাছে হার মানি। লোকটার গাওয়া শুনলে মনে হয় চারিদিকে কুয়াশা আর কোন ভাংগা জমিদার বাড়ির সিড়িতে আমি দাঁড়ায় আছি আর কুয়াশার ভিতর দাঁড়ায় কেউ গান গাচ্ছে।
হঠাত করে দরজা খোলার আওয়াজ শুনলাম।দেখি স্টিভেন হকিংস আর রিচার্ড ডকিংস ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু স্টিভেন হকিংস উনার জাদুর চেয়ার দিয়ে রিচার্ড ডকিংসের হাটুতে ঠুসা মাইরা ঢুইকা গেলেন ঘরে আর উনার ভয়েস প্রম্পটার এ শোনা যাইতেছে “ফাক ইউ ডকিংস”।আমি কাছে গেলাম মানুষ গুলার একজন লম্বা চুলের শ্যামলা লোক বসা, আরেকজন উলটা ঘুরে টেবিলে মাথা দিয়ে আছেন,সেই সাথে টাক মাথার সানগ্লাস পড়া এক ভদ্রলোক বসে আছেন।শ্যামলা লম্বা চুলের লোকটা টাক মাথা ওয়ালার তুমুল তর্কে লিপ্ত “তো কি হইছে?আমাদের পাদ্রীরা কি কাউকে খুন করছে recently?তোর পুরুত রা রোহিংগা মেরে সাফ করে ফেলতেছে”। টাক ভদ্রলোকের উত্তর “ তো কি? এখন ৬-৭ বছরের বাচ্চার প্যান্টের নিচে তো হাত ঢুকায় দেয় নি তোর নাম নিয়ে”।
স্টিভেন হকিংস এসে বললেন “এইজন্য ধর্ম কর্ম উঠায় দেওয়া উচিত”।
দুইজন মিলে খেকায় উঠে “স্তালিন তো ধর্ম ছাড়াই সবাইরে মেরে চামড়া উঠায় দিছে। গুলাগে যাবি শালার পুত।বড় দের কথার ভিতর বাম হাত ঢুকাস”।টেবিলে মাথা দেওয়া লোক টাকে দেখায় শ্যামলা লম্বা চুলের লোকটা বলে “জুনিয়র তো আইসিস এর প্রথম এটাকের পর থেকে যে মাথা টেবিলে দিছে আর উঠার নাম নাই”।
টাক ভদ্রলোক বলে উঠেন “ওই ১০০ দেবদেবী নিয়ে রাম কৃষ্ণ, থর,জিউস রাই ভালো আছে। মদ খায়,নাচ গান করে ।পার্টি আর ফুর্তির উপর চলে যাচ্ছে প্রতিদিন।”
“ওই রাহান,থাম।বালের আলাপ কতগুলা করোস।”রাশিক চিতকার করে উঠলো।
“তোর এই স্বপ্নের কথা তিনবার বলছিস আর ভাল্লাগেনা।প্রথমবারও খেত লাগছিলো। রইস-তামান্না তোরা বের হ।এখুনি এখান থেকে বের হ। তোদের দুর্বল ছেসড়া সেক্স দেখে আমার মাস্টারবেশনের ইচ্ছাও মরে যাচ্ছে।নিজের রুমে গিয়ে কর।”
রইস আর তামান্না এতক্ষনে থামলো।রাহান চুপ করে থাকলো।ঘরের কোনায় কনডম,তামান্নার ব্রা, রইস এর ময়লা আন্ডারওয়্যার, দেয়ালে বীর্য এইগুলা দেখে রাশিক বললো “যাওয়ার আগে ঘর পরিষ্কার করে দিয়ে যাবি”।
“না করলে? না করলে কি করবি?” তামান্না উদ্ধত গলায় বলে উঠে।রাশিক দুই হাত পকেটে ঢুকায়।দাড়ানো থেকে হালকা করে নিচু হয় আর তামান্নার মুখোমুখি হয়।
“দেখ,তামান্না তুই এই ঘরে রইসের আনা প্রথম মেয়ে না,শেষ মেয়েও হবিনা।এই চিন্তাটা মাথায় রেখে কথা বলবি।তুই নিজের ভোদায় আংগুল ঢুকায় ফেসবুকে র‍্যান্টেজের ছেলেদের ছোট পুরুষাংগ রিলেটেড লেম জোক পোস্ট করে নিজের দিকে এটেনশন আনতে চাচ্ছিস সেটা আমি জানি।তোর আগের রিলেশন কেমনে ভাংসে সেটা আমি জানি। তুই ছেলেটাকে পছন্দ করতি কিন্তু ছেলেটা স্রেফ খেয়ে ছেড়ে দিছে কারন কি জানিস?তোর বুক দুইটা ছোট এইজন্যে।ফেসবুক একটিভিস্ট ভুয়া ফেমিনিজম আমার সাথে এবং আমার সামনে চোদানো বন্ধ কর। ফাইনালি ঘর পরিষ্কার না করলে তোদের সবাইকে গুলি করে মারবো।”
এই বলে রাশিক রুম থেকে বের হয়ে গেল। রাশিকের বাবার সুইসাইডের পর থেকে রাশিক আসলে মুখ খারাপ করে গেলে বেশী। জানাজা হয় নি তার বাবার। সুইসাইডের মৃত্যুর নাকি জানাজা হয় না। বাবাকে সে ঘৃনা করে। সুইসাইড হওয়ার পরে ঘৃনার পরিমান দশ গুন বাড়ায় দিছে। এখন বাবার প্রতি ফিলিংস টাই নষ্ট করে দিছে ভিতর থেকে সে নিজের হাতে।
“বাপ, আমার মাগীবাজ।কচি মেয়ে পেয়ে পরিবার কে ভুলে গেছে। আর আমি আটকা পড়ছি এই বালের জায়গা তে।হালায় মরছে ভালো হইছে”।
রাশিক মনে মনে গজগজ করতে করতে দরজার কাছাকাছি আসে।
দরজার কাছাকাছি আসতেই আবার রাহানের গলা “দোস্ত,ইয়ে মানে আমি তো তোর রুমমেট আমাকেও তুই বের হয়ে যেতে বলতেছিস?আমি তো বুঝোসই কানা,একটু সমস্যা”।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাশিক বের হলো।
খুব বেশি হয়ে গেলো কি?তামান্নাকে এগুলো বলা ঠিক হলো কি?এইভাবে করে কেন?এগুলো কি করছি?বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে বুঝিনা কেন কি করি,কার জন্য করি। ঢাকার ওকে ফোন করা উচিত।তাই না?
অন্ধকার হয়ে আসছে।চোখ থেকে পানি বের হওয়া শুরু হয়েছে।বুকের ভিতর ইটের বাহী পাটাতনের মতন ভাড়।নিজের ভেতরটা যেন পলকা শরীরওয়ালা ইটবাহা শ্রমিকের মতন হয়ে গেছে। কাঠের পাটাতনে ৩০ টা ভারী ভারী ইট নিয়ে হেটে যাওয়ার সময় যেমন টা লাগে ঠিক তেমন ভার লাগছে ভিতর থেকে।প্রতিটা স্টেপে নিজের বুকের ভিতরের ভাড় যেন বেড়েই চলেছে। ঢাকায় কথা হয় না অনেকদিন।ফোন হাতে নিয়ে রেখে দেওয়াই হয়েছে শুধু। ওইদিক থেকে পুরোনো বন্ধুদের,আত্মীয় স্বজন দের ফোন ক্রমাগত আসছিলো বাবা মারা যাওয়ার পর কিন্তু তখন ওর ড্রামা সহ্য করার ক্ষমতা আমার ছিল না।মস্তিষ্কের নিউরনের হরতালের ডাকে সাড়া দিয়ে গ্রাম্য জায়গাটাতে চলে আসি।
নায়লা কি করছে কে জানে? বিকাল -সন্ধ্যার সময়। হয়তো টিউশনিতে নাহয় সব ফ্রেন্ডরা মিলে কোথাও গিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। কন্সট্রাকটিভ আড্ডা অবশ্যই।শর্ট লিভড কন্সট্রাকটিভ আড্ডা আর নাহয় ল্যাবে আছে। ওর লাইফ টা অনেক কন্সট্রাকটিভ।গঠনমূলক কাজে প্রচুর সময় দেয়।
হঠাত করে পিছন থেকে কে জানি ডাক দিল।
সন্ধ্যার আলোতে গ্রামটাকে অদ্ভুত সুন্দর লাগে।আকাশটা বদলে যায়।আস্তে আস্তে অন্ধকার নামে।পরের দিনের নতুন আকাশ কে স্বাগত জানানোর জন্য সারারাত ধরে যেন প্রস্তুতি নেয়।ধুর বাল,ফিজিক্স এ পড়ে এসব কি আজেবাজে কথাবার্তা ছাড়ি।পিছনে তাকালাম আলো আধারীর ভিতর দিয়ে দেখলাম তারেক ভাই। তারেক ভাই রাশিকের দিকে আসতেছে। তারেক ভাই বেশ সিনিয়র।রাশিক দের মেসেই থাকেন। ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র নেতা।বেশ প্রতাপশালী ছিলেন।গত মাস পর্যন্ত।গত মাস পর্যন্ত একেকদিন একেক মেয়েকে নিয়ে এসে রাত ভর ফুর্তি চালাতেন।গান আর চোদাচুদির আওয়াজে টেকা যেতো না।গত এক মাস সব ঠান্ডা। উনার দলের নতুন কমিটি হওয়ার কথা আগামী মাসে। তার আগেই উনার পদের প্রতিদ্বন্দীরা উনাকে খোলা রাস্তায় দিনের আলোয় চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে পুলিশের সামনেই। বেশি না,১০০টার মতন স্টিচ লেগেছিল। রাশিকের কাছে অদ্ভুত লাগলো তারেক ভাই কেন তাকেই ডাকতেছে। দুইজন সম্পূর্ন দুই মেরুর মানুষ।কিন্তু ভদ্রলোক এত দ্রুত কেমনে ক্রাচ এত দ্রুত ফেলে দিতে পারছে সেটা দেখে সে অবাক হলো।
“রাশিক চা খাবো,চল”
এই প্রথমবার এরকম কোন কথা শুনলাম ভাইয়ের মুখে।তারেক ভাই মেয়ে নিয়ে আসতো আর সেক্স করতো আর মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করত আছি কেমন।এতটুকুই সম্পর্ক ছিল।মেয়েরা আর পাত্তা দিচ্ছেনা বলেই আমার কাছে?
“চলেন ভাই।ওই যে কাদের ভাইয়ের দোকান খোলা আছে”।
“নাহ,কাদেরের দোকানের চা এর স্বাদ পেশাবের মতন।বিশ্রি।এই বালের ক্যাম্পাসের সোহাগ ভাই ছাড়া কেউ চা বানাতে পারেনা।রিকশা নে।লেডিস হলের ওইখানে সোহাগ ভাইয়ের দোকানে যাবো।”
রিকশা নেওয়া হল। মোটরের রিকশা।শরীরে সুন্দর বাতাস লাগছে। মোটর রিকশা গুলাতে অসুস্থ অপরাধবোধের জায়গা নাই। খুব আরাম করে চালিয়ে যাচ্ছে রিকশাওয়ালা। যেন রিকশা চালানোর মতন আনন্দের কাজ আর নেই। কিন্তু রিকশা দুইজন মানুষ একদম চুপ করে বসে থাকার মতন আনকমফর্টেবল কাজ পৃথিবীতে আর নাই।
এই অস্বস্তিভাব কাটানোর জন্য রাশিক আগে কথা বলে উঠল “কি ব্যাপার তারেক ভাই?আপনি আমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছেন হঠাত?”
“কেন বাম হইছিস বলে কি সরকারি দলের ছেলেপেলের সাথে কথা বলা যায় না?”
“নাহ,আবার মেরে রাস্তায় ফেলে রাখলে?আর আমি তো ভুয়া বাম”
চুপ হয়ে গেল তারেক। ঝুপড়ির সামনে রিকশা এসে গেছে। ধীরে ধীরে নেমে ভাড়া দিল তারেক।
গম্ভীর গলায় ডাক দিল “রাশিক,এদিকে আয়।এখানে এসে বস আমার সাথে।”
দোকানির দিকে গলা বাড়িয়ে হাক দিয়ে বলে উঠে “দুইটা চা দিও এই টেবিলে”।
রাশিক দাঁড়িয়ে রইলো।বসতে গিয়ে বসলো না। তারেক ভাই এর বন্ধুত্বপূর্ন ভাবভংগি একদমই ভাল্লাগতেছেনা।কেন ? এখানে কিভাবে আমরা একইসাথে এসেছি? কি চাইতেছেন উনি? এর আগে তারেক ভাই ক্যাম্পাসের এক কমেডিয়ান কে পিটিয়েছিলেন। বংগবন্ধুর স্বপ্ন নিয়ে কমেডি করার জন্য। কমেডিয়ানের কি অবস্থা আজকাল কে জানে?সুইসাইড করতে চেষ্টা করছিল শুনছিলাম।
তারেক ভাই আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
“কি রে বসবি না?”
রাশিক চিন্তা করলো কি বলবে।কোন উত্তর দিবে কিনা?
নাহ,চুপচাপ বসেই গেল রাশিক।
তারেক ভাই “বয়,তোর সাথে কথা আছে”। তারেক ভাই ক্রাচ টা বেঞ্চের উপর রাখলেন। অন্ধকার হয়ে আসতেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের চিরচেনা লোডশেডিং এর কারনে টিমটিমে মোমের আলোয় বসে আছে সবাই। গরম এসেছে। আশেপাশে সবাই খালি গায়ে বসে আছে।তারেক ভাই শার্টের বোতাম গুলো খুলে দিলেন। সবখানে কাটা দাগ। রাশিক এর তাকিয়ে থাকা দেখে তারেক বলে উঠে “তুই কি গে নাকি?এইভাবে তাকায় আছোস?”
“নাহ,আপনারে ভালোমতন পিটছে”
“হুম”
চা এ চুমুক দিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে তারেক।
“আমি জানি তোরা কি করতেছিস।”
“কি করতেছি?”
“সবই জানি”
“বলেন দেখি?”
“তোর ভার্সিটি লাইফের পুরোটার হিসেব আমার কাছে আছে। শুরু করছিলি স্যার দের কাছে গাজা বেচে, এরপর আবার কাস্টোমারদের কে বন্দুক দেখিয়ে থ্রেট দিছিস । বন্দুক কি চালাতে পারিস?শহুরে ইদুর এখানে এসে বড় বড় কাজ করার ধান্দা করতেছিস?”
সিগারেটের ধোয়ায় তারেক ভাইয়ের মুখ ঢেকে গেছে। চারিদিকে একটা কুয়াশা আর সেই সাথে সিগারেটের ধোয়া আর মোমবাতি কমলা ধোয়ায় ছেয়ে থাকা রহস্যের একটা চাদর এসে রাশিক আর তারেক কে জড়িয়ে ধরেছে। দুনিয়াতে যেন এই দুইজন ছাড়া আর কেউ নেই এখন। যদিও আশেপাশে স্বাভাবিক পোলাপান রা বসে চা, বিড়ি, সিংগারা চিবিয়ে যাচ্ছে।
তারেক আবার জিজ্ঞেস করে, “কি কিছু বলবি না?”
রাশিক বলে, “কি বলবো? আপনি যতটুকু জানেন অতটুকুই ব্যাপার। গাজা পাই আর বেচি। স্যার বাটপারি করতে চাইছে আমি আমার ব্যবসা বাচাইছি। এইখানে কথা পেচাইবার কি আছে এতো?
তারেক হাসে “এইটা কি ব্যবসার জায়গা?”
রাশিক বলে “কেন? এইযে চা খাইতেছেন, থাকতেছেন,সবই তো ব্যবসা।”
“একটা বড় অংশ তো করের টাকা খাচ্ছিস,রাশিক। এই এলাকার একটা ট্রাডিশন আছে রীতি নীতি আছে।তোদের এইসব বালছাল এনার্কিজম এঁর ভাত নাই এইখানে।তুই একটা লাইন ক্রস কইরা ফেলছিস।এইবার হিসাব গুলো ভিন্ন হবে।ছাত্রদের কাছ পর্যন্ত বেচবি ব্যাস।”
এবার আরো দুইজন এসে পাশে বসে তারেকের। তাদের হাতে চা আর সিগারেট। আশেপাশের দুই টেবিলের ছেলেরা ঘুরে আমাদের দিকে তাকালো। একজন উঠে গিয়ে বললো “এখুনি এইখান থেকে উইঠা যান সবাই।” প্রথমে আস্তে বললো এরপর চিতকার দিয়ে বললো। তখন সবাই উঠে গেলো কিন্তু একজন গাইগুই করতে গেলে দুই তিনজন মিলে কলার ধরে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিয়ে বের করে দিল। দোকানদার কাদের ভাই একবার তাকায় আবার চা বানাতে লাগলেন নির্লিপ্ত ভাবে। ভাবখানা এমন যে এ আর নতুন কি। একটু দীর্ঘশ্বাস ফেললেন অবশ্য চাপা ভাবে।কিন্তু কেউ সেটা শুনার প্রয়োজন বোধ করলো না।
একজন এসে এইবার রাশিক এঁর ঘাড় পেচায় ধরলো হাত দিয়ে। রাশিক বুঝার আগেই তার ঘাড় বেকা হয়ে গেল। তারেক উঠে দাঁড়ায় জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে একদম রাশিকের কাছে নিয়ে আসে।রাশিক তার আটককারীর হাতে আটকে থেকেই চোখমুখ দূরে সরানোর চেষ্টা করতে থাকে। এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেক গভীর কিছু হয়তো লেখা যেতে পারে কিন্তু রাশিকের মন টা একেবারে আতংক দ্বারা গ্রাস হয়ে আছে। অন্ধ হয়ে যাওয়ার আতংক। তারেক তার সিগারেট রাশিকের চোখের ১ ইঞ্চি দূর থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে হাসতে থাকে। আশপাশে সবাই হোহো করে হেসে দেয় মাটির দিকে আংগুল দেখিয়ে। টপটপ করে পানি পড়া শুরু করছে রাশিকের প্যান্টের নিচে।
“মুতে দিছে, মুতে দিছে” বলে সবাই হাসা শুরু করে দিছে।
রাশিক বুঝতে পারলো ওর মন পুরোপুরি না বুঝলেও শরীর ঠিকই বুঝে গেছে। সে কি পরিমান একটা ভয়ংকর সিচুয়েশনে আছে। এত দিন শহুরে জীবন কাটিয়ে এসে ব্যাংকের চাকমা লুকিং আংকেল দের কাছ থেকে আর ঝুপড়ির দোকানদার দের কাছ থেকে গাঞ্জা কিনে এনে ভাই বেরাদর দের কাছে বিক্রি করা, শহুরে গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করে থাপ্পড়ের ভয় দেখিয়ে , পুরানা পিস্তল দিয়ে ভার্সিটির শিক্ষক দের ভয় দেখিয়ে ফলস কনফিডেন্স তৈরি করে খুব কুউল, ডার্ক আর ডিপ্রেসড ভাব চোদানোর ভ্যালু আজকে বের করে দিলো তারেক ভাই আর সরকারী দলের কর্মীরা। তার জীবন টা আসলে ফেইক ম্যাচোইজম এঁর ভিতরেই আটকা। বাপের সুইসাইডের পর তার এই এতদিনে মনে হইলো পায়ের নিচের মাটি সরে গেল। সত্যিকারের ভয় কে মুখোমুখি করার কলিজা টা এখনো হয় নি।
রাশিকের লম্বা চুল ধরে মাটিতে ফেলে দিলো একজন। নিজের মুতের উপর রাশিক শুয়ে আছে। তার পিঠে পাড়া দিয়ে তারেক বলে “এই অবস্থা? ইউনিয়নের পোলাপান এঁর থেকে তোকে আরো সাহসী ভাবছিলাম।কিন্তু এখন তো দেখি অবস্থা খুবই খারাপ”।
এটা বলে তারেক বেশ শব্দ করে রাশিকের মুখে থুতু ফেলে।
“চল তোর বিচি শক্ত করাবো আজকে।”
এইটা বলে তারেক একজন কে বললো “এই ওরে ধর। নিয়ে চল পাহাড়ে।”
“চল,শালার পুত।বেডা হাফ লেডিস গাঞ্জা বিক্রি কইরা ফাপড় লস? উঠ।”
এরপর রাশিক কে টেনে ধরে মাটি থেকে উঠানো হল। এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি, চড়-থাপ্পড় ও কিছু দেওয়া হলো।
সামনে একটা পাহাড়। ছোটোখাটো পাহাড়। টিলার মতো। টেনে ধরে রাশিক্ কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পাহাড়ের দিকে। সবার সামনে তারেক ভাই। সিগ্রেট ফুকতে ফুকতে তারেক ভাই ডান বামে তাকাচ্ছেন। আর সবাই উনাকে ফলো করতেছে। সবাই হাটতে হাটতে এগুচ্ছে সামনের দিকে। চারিদিকে খুব সুন্দর মোলায়েম একটা আলো আধারীর একটা খেলা চলছে। ভার্সিটির লিটারেচার বিভাগের আর সায়েন্সে পড়া ওয়ানাবি বেকার কবি রা এই আলোটা দেখলে হয়তোবা কবিতা চুদে ফেলতো একটা। রাশিকের সেইসব হচ্ছেনা। পিশাবের কারনে জিন্সের প্যান্ট টা ভিজে হয়ে গেছে ভারী। এটা পড়ে হাটাহাটি করতে খবর হয়ে যাচ্ছে।এছাড়া সারা গায়ে হয়ে গেছে ব্যথা। ঠোট কেটে রক্ত বের হচ্ছে। মুখে একটা লোহা লোহা স্বাদ পাচ্ছে। কিন্তু এখন থামা যাবেনা। এখান থেকে বের হতে হবে। দ্রুত।
রাশিক একটু করে দাঁড়ায়। ওরা সবাই এখন পাহাড়ের উপরে। নিচ টা দেখা যাচ্ছে। দৌড় দিবে কিনে ভাবে। ভাবতে ভাবতে চটাস করে একটা চড় খেয়ে ফেলে।
“এই,চল।এইখানে দাঁড়ায় থেকে কি ভাবিস?হাট,শালার পুত”।
রাশিক আশেপাশে আরেকবার তাকালো। চারিদিকে তাকে ঘিরে ৮-১০ জন দাঁড়ায় আছে। ওর হাটার জন্য অপেক্ষা করছে। রাশিক দীর্ঘশ্বাস ফেলে মুতে ভেজা প্যান্ট পড়া অবস্থায় হাটা ধরলো। পা টেনে টেনে সে আগাতে থাকলো। অন্ধকার হয়ে আসছে। আরেকটু আগানোর পর পিছন থেকে আর কিছু দেখা যাচ্ছেনা। আশেপাশে তাকায় তারেক ভাই আর তার সাংগোপাংগো ছাড়া আর কেউ নাই। ঘন জংগল দিয়ে ঢাকা আশপাশ দিয়ে। তারেক ভাই দাঁড়ায়। সে দুই তিন পা আগায় যায়।
তারেক বলে “রাশিক এইদিকে দেখ।”
রাশিক এঁর তখন মাথা ব্যাথা শুরু হচ্ছে। মাথা নিচু করে ছিলো। মাথার উপর মনে হচ্ছে তার ডিপার্টমেন্টের আলুর সিংগারা খাওয়া মোটকা পোলাগুলা বসে আছে।
তারেক আবার চিতকার দিয়ে বলে “এই রাশিক কুত্তার বাচ্চা এইদিকে তাকা।”
রাশিক মাথা উঠালো।
পুরোপুরি অন্ধকার হচ্ছে।গাছপালার ভিতর দিয়ে অল্পস্বল্প আলো আসতেছে। তবে আলোটা ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে। অন্ধকার দ্রুত গ্রাস করছে। গাছের নিচে অন্ধকার এ একটা ছায়া ছায়া অবয়ব দেখা যাচ্ছে।তারেক ভাই ওই ছায়া অবয়বের পাশে দাঁড়ায় আছে। রাশিক ফোলা চোখ দিয়ে তাকায় বুঝার চেষ্টা করতে থাকে। কয়েক সেকেন্ড তাকানোর পর রাশিকের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেলো। ভয়ে হাটু ভেংগে আসতে লাগলো। ঠান্ডা ঘাম আসা শুরু করলো কপাল দিয়ে। হার্টবিট ও বেড়ে গেলো।
তারেক ভাই, এঁর হাতে লম্বা চাকু। ক্যাটস আই এঁর শার্ট পড়া জিনস পড়া পরিপাটি জামাকাপড় পড়া। কিন্তু সারা মুখে আর গলায় রক্ত।
“এরে চিনিস?”
রাশিক কি বলবে বুঝে উঠতে পারেনা কি বলবে। তারেক ভাই তার দলের যে মাথা তার গলাতে ছুরি ধরে রাখছে। যার কারনে তারেক ভাই দলে তার কাংখিত পজিশন পায় নাই তার গলাতেই ছুরি ধরে দাঁড়ায় আছে।
নীরবতা আরো শক্ত করে সবাইকে জড়িয়ে ধরে ফেলতেছে। বাতাস শুরু হয়। শো শো করে না। কিন্তু ধীরে ধীরে বাতাস শুরু হয়। একটু দূরে কিছুটা শো শো আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। রাশিক মাথা তুলে তারেক ভাইয়ের চোখের দিকে তাকায় থাকে। তারেক ভাইয়ের চোখের মাঝে খুনী ঠান্ডা ভাব নেই কিন্তু তার চোখে একটা আনন্দ এবং এক্সাইটমেন্ট খেলা করতেছে। তারেক ভাই এঁর চোখে রাশিক একটা অন্ধকার মাখা স্বপ্ন দেখে।রাশিক যেখানে বড় হয়েছে সেইখানে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন টিনএজার পোলাপান দের গায়ে হাত দিতেন। টিন এজার দের দেখে ওই ভদ্রলোকের চোখ যেমন জ্বলজ্বল করে উঠতো ঠিক সেভাবে তারেক ভাই তাকায় আছে। অল্প অল্প করে হাসতেছে।
“কিরে চুপ মেরে গেলি?”
রাশিক এঁর গলা তে আটকে গেলো কথা। “কি বলবো?”
“এরে চিনিস কিনা বল?”
“হা”
“কে এটা?”
“ইয়াসির ভাই;আপনার সভাপতি”
“চিনিস দেখি”।
“এটার কি দরকার ছিল” এটা বলতে গিয়ে রাশিকের গলা শুকায় গিয়ে ঘরঘর আওয়াজ ছাড়া কিছু বের হলো না।
হঠাত করে ইয়াসির ভাই নড়েচড়ে উঠে। ঘরঘর আওয়াজ করে একগাদা রক্ত বমি করে দেয় ইয়াসির ভাই।
“তারেক আমারে ছেড়ে দে। আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাবো। তুই যা ইচ্ছে করিস। আমি তোকে সব ক্ষমতা দিয়ে যাবো। তুই আমাকে জানে মারিস না।পায়ে পড়ি” এটা বলে তারেক ভাইয়ের পায়ের উপর পড়তে গেল ইয়াসির ভাই। কিন্তু আটকে গেল। রাশিক আবার খেয়াল করে দেখে ইয়াসির ভাইয়ের গলায় দড়ি দেওয়া আর সেই দড়ি গাছের ডালের সাথে উচুতে বাধা।
তারেক ভাই ঘুরে বলে “নাহ,ইয়াসির তোরে ছাড়া যাবেনা। তোকে নিয়ে আমার অনেক প্ল্যান।এতদিন ধরে জাতীয় তে দল ক্ষমতায় আর এখনো এইখানে পোলাপান রাস্তায় ঘুরে ঘুরে মেসে মেসে থাকে। কোনোভাবেই আমরা ক্ষমতায় যাইতেই পারতেছি না।তোর মতন বলদ চোদা দিয়ে কিছু হবেনা”।
ইয়াসির ভাই এঁর মুখে একটা ঘুসি পড়ে। ইয়াসির ভাই তখন বলে “ কিন্তু তুই আমাকে কেন মারতেছিস?”
তারেক ভাই হাসে।
“হো হো হো হো।কি বলিস রে? কিরে কি বলে?”
এটা বলে তারেক ভাই বাকি সবার দিকে তাকায় বলে “দেখছিস এই বলদ টা বুঝতেছে না। কি হচ্ছে?”
বাকিরাও হাসতে থাকে।
“ইয়াসির, তোর লাশের দাম তোর থেইকা যে বেশী,এটা বুঝতেছিস?”
ইয়াসির ভাই কাশতে কাশতে জোরে রক্তমাখা কফ মাটিতে থুতু দিয়ে ফেলে। উনার শরীরের শেষ শক্তিটা একসাথে করে চিতকার করার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত ঘরঘর করে বললেন “কেউ মানবে না। আমারে দলের সবাই মিলে ভোট দিয়ে বানাইছে সভাপতি। তুই ভোটে হারছিস। তুই প্রথমেই বাটপারি করতে গেছিলি তখন তো তোরে ছেচা দিছে মনে নাই? কেউ মানবো না তোকে”।
তারেক ভাই চাকুটা নিয়ে ইয়াসির ভাই এঁর গলায় আবার চালায় দেয়। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটতে থাকে ঢাকা হাতিরপুলের পানির ফোয়ারা গুলার মতো। নাকি সংসদ ভবনের মতো পানির ফোয়ারার মতো? সংসদ ভবনে পানির ফোয়ারা কি আছে? কে জানে। তবে এটা বুঝি, সংসদ ভবনে ইয়াসির ভাইয়ের গলার মতন করেই গনতন্ত্রের গলা কাটা হয়। ওইটাই হোক।
তারেক ভাই চাকুটা নিয়ে সংসদ ভবনে যেভাবে গনতন্ত্রের গলা কাটা হয় ঠিক সেভাবে করে ইয়াসির ভাইয়ের গলাটা কেটে ফালিফালি করে দিলেন। ইয়াসির ভাই অবাক দৃষ্টিতে তাকায় থাকলেন তারেক ভাইয়ের দিকে। কিছু বলতে গিয়ে যেন আটকে গিয়েছেন।
মাথাটা ঝুলে গেল। সিনেমাতে যেরকম দেখায় কিংবা বই প্ত্রে যেমন পড়ি ঠিক তেমন রোমান্টিক কিছু ছিল না উনার মৃত্যুতে। খালি চট করে মাথাটা ঝুলে গেল। কোনো বালের মনোলোগ, মন্টাজ, আত্মা চলে যাওয়ার বাতাস এসব কিছু হয়নাই। রাশিক তাকায় থাকলো আর ভাবতে লাগলো এইবার কি আমার পালা? চাকু কি আমার গলায় যাবে?
তারেক ভাই এইবার আমার দিকে তাকালো।
“কিরে রাশিক, কি অবস্থা তোর? কেমন লাগতেছে? আবার মুতে দিছিস?”
রাশিক কিছু বলেনা। চুপ করে থাকে।
“তোকে আজকে মারবো না। চিন্তা করিস না। তোকে আমার লাগবে। তুই হবি আমার সাইড বিজনেস। অং চং দের কাছ থেকে নিয়ে গাজা বিক্রি করে টাকা যা পাবি তার ভাগ আমাকে দিবি।অং চং মানে বুঝছিস তো?”
রাশিক বুঝতে পারছে। অং চং বেসিকালি বর্নবাদী স্ল্যাং। পাহাড়ি দের কে বুঝানোর জন্য অনেকেই ব্যবহার করে। রাশিক সেটা জানে। রাশিক আস্তে করে মাথা নাড়ে।
“এত আস্তে মাথা নাড়ছিস কেন?ওই হলুদ মাইয়া দের বডি খুব দারুন লাগে। দেখলেই খেয়ে দিতে ইচ্ছে করে। দুই টাকে খাইছি অলরেডি।খুবই সেরা মাল। আমি আবার ওদের এত শত গ্রুপ কে আলাদা করে দেখিনা। সবগুলো উপজাতিরে এক সাথে করে অং বং চং ডাকি। কি? সিস্টেম ঠিক আছে না?”
রাশিক আবার মাথা নাড়ে। তারেক ভাই এক পা এগিয়ে এসে থাপ্পড় লাগায় দিয়ে বলে “বল ঠিক আছে না?”
“জি ভাই”
তারেক আশেপাশে তাকালো। একটা চেংড়া দেখতে ছেলেকে কাছে ডাকলো।
“এই তুই ফার্স্ট ইয়ার না?”
মোচ গজাচ্ছে সদ্য। ফর্সা সুন্দর মত শুকনা করে একটা ছেলেকে উত্তর দিলো
“জি ভাই”।
ছেলের চোখ গুলো এখনো মরে যায় নি। জ্বলজ্বল করছে অপাড় সম্ভাবনা নিয়ে। মাত্র তো ফার্স্ট ইয়ার। আত্মার মৃত্যুর প্রসেস টা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুরু হয় ২ বছর পর। শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সমাজ ব্যবস্থার সব মিথ্যে গালগল্প গুলো চোখে পড়া শুরু করে। প্রথমে সায়েন্স পড়তে হবে,এরপর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হবে নাহয় ডাক্তার হতে হবে। আবার যাদের কে স্কুল কলেজে আর্টস কমার্সের যেসব পোলাপান কে চুতমারানীদের মতো ট্রিট করছো তাদের সাব্জেক্ট এম বি এ পড়তে হবে নাহয় তাদের চাকরী গুলো খেয়ে দেওয়ার জন্য বিসিএস প্রস্তুতি নিতে হবে। এরপর দেখা যাবে যেসব গাঞ্জাখোর,সিগারেট খোর, মদ খাওয়া মানুষ দের থেকে মা-বাবারা মেয়েদের কে দূরে রাখতো তাদের একটু সফল ভার্সন দের সাথে ক্লাসমেট ক্রাশ আর প্রেমিকাদের একের পর এক বিয়া হইতে থাকবে। আর এই ছেলে ইসলামের ইতিহাস পড়ে মাস্টার্বেশন করে মাথার চুল পাকিয়ে ফেলে ধ্বজভংগ হয়ে ঘুষ দিয়ে কলেজের শিক্ষক হবে। যেখানে পোলাপান তাকে নিয়ে হাসাহাসি করা ছাড়া আর কিছু করবেনা।

তারেক ভাই ছেলেটাকে কাছে টেনে নিয়ে। কানে কানে কি যেন বলতে লাগলো। গাছের পাশে ইয়াসির ভাইয়ের লাশের কাছে নিয়ে গিয়ে দাড় করালো।
ছেলেটা হঠাত চিতকার করে দৌড় দিতে গেলে পিছন থেকে তারেক ভাই জোরে আটকে ধরে গলায় পোচ দিয়ে দেয়। ছেলেটা ডাংগায় আনা মাছের মতো তড়পাতে থাকে। একদম একই রকম মোশনে। স্রেফ মাছের আশটে গন্ধটা নাই। সবাই এইবার একটু অবাক হয়। কি ব্যাপার, এটা কি হলো? এটা কেমনে হইলো? রাশিকের আশপাশে সাংগোপাংগো রা এইবার একটু নড়ে চড়ে দাঁড়ায়। কি ব্যাপার? কেন হইলো? ওই ফ্রেশার ছেলের কি দোষ?
তারেক ভাই ছেলেটাকে মাটিতে শোয়ায় দেয়। তারপর আরেকটা দড়ি বের করে। ছেলেটার চোখ এঁর পাতি গুলো বন্ধ করে দেয় তারেক ভাই। এরপর আশপাশে তাকায় আর বলে
“কিরে স্ট্যাচু মেরে গেছিস কেন? এইটাতো প্ল্যানে ছিল। ইয়াসির ভাই এঁর ব্যাপার টা তে তো নর্মাল ছিলি।এইডা কেন এমন লাগতেছে? আয়, এরে বান্ধি।গাছের সাথে ঝুলাইতে হবে তো। আয় তো”।
রাশিক এঁর বমি আসা শুরু করতেছে।মাথা ঘুরাচ্ছে। পা ভেংগে বসে পড়ে রাশিক। পোলাপান গুলো তারেক ভাইকে সাহায্য করতে থাকে। ইয়াসির ভাই কে আর অন্য ছেলেটাকে ওরা গাছের ডালের সাথে বেধে ঝুলিয়ে দিচ্ছে।
রাশিক এটা দেখে শুয়েই পড়ছে মাটিতে। আর দাড়াতে পারতেছেনা।
তারেক ভাই এবং তার দলের লোকজন ওই দুইজন কে গাছে উঠাচ্ছে। মট মট করে গাছের ডালে লাশের ওজনের কারনে চাপ থেকে আওয়াজ হচ্ছে। দড়ির সাথে গাছের ডালের ঘর্ষনের চড় চড় করে আওয়াজ আসছে।
বাধাবাধি ঝুলাঝুলি শেষ করে তারেক ভাই বলে
“ফেসবুকে লিখ ইয়াসির আর এই ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছেনা।অপোজিশনের লোকজন গুম করছে বলে শুনা যাচ্ছে।তারপর আলতু ফালতু স্লোগান লিখে দে একটা। ইয়াসির কে না পেলে জ্বলবে আগুন হলে হলে। এইটাইপ বাল ছাল লিখে সবাই মিলে শেয়ার দে।”
এরপর রাশিক তার ভাড় হয়ে থাকা মাথা একটু উঠিয়ে দেখে তারেক ভাই ফ্রেশার ছেলেটার মানিব্যাগ থেকে কয়েকটা টাকা বের করলো। এরপর নিজের মানিব্যাগ থেকে আরো কিছু টাকা নিয়ে একজনের হাতে দিয়ে বলে “এই টাকা গুলো ওর পরিবারে পাঠানোর ব্যবস্থা কর”
টাকা টা যার হাতে দিলো তারেক ভাই সে বলে উঠলো “ভাই, এটা তো আবার বেশী গরু মেরে জুতা দান হয়া গেলো না?”
তারেক ভাই তখন বলে “তো কি টাকা টা মাইরা দিলে ভালো হবে,খানকির পোলা? আমাদের একটা ইজ্জত আছেনা?একটা নীতির ব্যাপার আছে না? যাহ, বেশী কথা বলিস ন এখন।”
“একে কি করা যায়?এরেও কি কতল কইরা দিবো?কথা বললে?” আরেকটা গলা পাশ থেকে বলে।
তারেক ভাই রাশিকের দিকে আসে।
“এটাকে নিয়ে চল।মেসের সামনে ফেলে রাখবো।সবাই ভাববে গাঞ্জা খেয়ে পড়ে আছে।বাইকের পোলাপান রা আসছে নাহ?”
“জী ভাই। আর রহিম ভাই ভার্সিটির এম্বুলেন্স নিয়ে আসতেছে।”
“আচ্ছা,চল”।
রাশিক কে চ্যাংদোলা করে উঠানো হইলো।এরপর আর রাশিকের কিছু মনে নাই আর।


“এইযে ভাই উঠেন, উঠেন তো।এইভাবে মাডিতে পইড়া থাইকেন না তো। গায়ে থেকে গন্ধ আইতাছে আপনার।কি খাইছেন কন তো?বাপ-মা এগুলির জন্য আপনাদের কে এইখানে পাঠাইছে? দেখি উঠেন।”
রাশিক চোখ খুলতে গিয়ে আবার বন্ধ করে ফেলে। এতো আলো কোত্থেকে আসতেছে? সকাল হয়ে গেছে? গতকালকের সবকিছু কি দুঃস্বপ্ন ছিল? সবকিছু কি আগের মতোই আছে? একটু খুশী হতে গিয়ে রাশিক ভাবলো নাহ, এত আনন্দ কপালে নাই। গতকাল রাতের সবকিছুই আসলে সত্য। এরপর নিজের দিকে তাকায় দেখে ওহ,হ্যা তাইতো। সেই মুতের কাপড়। ময়লা শরীর, মুখে রক্ত,মাথা ভাড় আর ঘাড়ে ব্যথা নিয়ে রাশিক উঠে দাঁড়ায়। খুব বাজে একটা দুস্বপ্ন যেন ফিরে ফিরে ঘুরে ঘুরে আসতেছে। আমড়া বিক্রির একটা ভ্যানওয়ালা এসে উঠাইছে রাশিককে।
রাশিক পাত্তা না দিয়ে উঠে মেসের ভিতর ঢুকলো। গোসল দরকার গায়ের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য। রাশিকের পিছনে রাস্তা দিয়ে আস্তে আস্তে দলে মানুষ জন ভার্সিটির দিকে যাচ্ছে মিছিল করতে করতে। তারেক ভাইয়ের প্ল্যান আস্তে আস্তে মনে হয় বাস্তবতা পাচ্ছে। মানবতা আর সামাজিকতা আসলে দিনশেষে একটা বুলশিট। নোংরা পৃথিবীর নিয়ম এটাই যে নিজের স্বার্থ হলো এক নাম্বার। হুদাই আসলে মানবতা কে হাইলি রেইট করা হয়। জেনোসাইডের উপর জেনোসাইড,খুনের উপর খুন,ধর্ষনের উপর ধর্ষন এঁর পাহাড়ে ঠেলে দিয়ে মানুষ একটু একটু করে আগানোর চেষ্টা করে এবং আবার একই জায়গায় এসেই পৌছায়। একই কাজ গুলোই করতে থাকে। সেইখানে আবার নতুন নতুন ক্রাইম করবে সবাই নতুন নতুন টেকনোলজি ব্যবহার করে। মানুষ আসলে বদলায় না।

রাশিক এভাবে করে একটু নিহিলিস্ট ভাব ধরতে গিয়ে ভিতর থেকে নিজের পুরোনো মানবিক অংশ টাকে ফেলে দিতে ব্যর্থ হয়। মাথা ঘুরিয়ে মাটিতে পড়ে যেতে থাকে আবার। দুইজন মানুষ কে রাশিকের সামনে এভাবে মিনিংলেস ভাবে মেরে ফেললো আরেকটা মানুষ। তাও কিসের জন্য? এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওয়ার স্ট্রাগলে জেতার জন্য?
কিন্তু রাশিক নিজে কি করতেছে?
বালের টেকা পয়সার নাই অভাব তারপরেও আমি পুরান জং ধরা পিস্তল নিয়ে ভাব চোদায় গাঞ্জার ব্যবসা করতেছে। নাহ কোনো কিছু তেই আসলে কোনো ভিন্নতা নেই। রাশিক নিজেও চায় পাওয়ার স্ট্রাগলের পুরো কেক টার এক কানা কঞ্চি । সবাই একটু ইম্পর্টেন্স দিবে। এটাকি রাশিকের বাবা মা নিজেদের গেঞ্জামের কারনে ওকে যে সময় দিতে পারে নি সেটার কারনে তৈরি হওয়া এটেনশন এঁর ইনসিকিউরিটির কারনে করতেছে?
নাহ, চেটের বালের ক্লিশের মতো সবকিছুর দোষ বাবা মা এঁর উপর চাপায় দেওয়া হইতেছে।
রাশিক দীর্ঘশ্বাস ফেলে মেসে ঢুকে। কানাইয়া রাহান ঘুমাচ্ছে বেঘোরে। রুমে ব্যবহৃত কনডম গুলো পড়ে আছে। সারা রুমে বীর্যের গন্ধ। রাশিক এইসব অগ্রাহ্য করে গামছা নিয়ে গোসলে ঢুকে। গা সাবান দিতে দিতে গা চুলকাচ্ছে। সেই সাবান দিয়ে কালো কালো ময়লা পানি ধুয়ে গা বেয়ে পড়তেছে। আবার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রাশিক। ভয় দুঃখে কান্না চলে আসে। তার মনে হইতে থাকে কোনোভাবে কিছুই যেন আর মিলাতে পারছেনা সে। এভাবে মেরে ফেললো? এভাবে?
তার জীবনের মানে কি দাড়ালো? ফ্রেশার ছেলে মারা গেলো স্রেফ একটা পাওয়ার প্লট কে আরো শক্ত করার জন্য? এটা কিভাবে একটা কারন হয়? এভাবে করে একটা মানুষের জীবন এভাবে শেষ হয়ে গেল? এতদিনের এত সিনেমা,সিরিজ,ভিডিও গেমস আর পর্নের সবরকমের ভায়োলেন্স আসলেই কোনোরকমের সত্যিকারের জীবনের ভায়োলেন্সের জন্য মোটেও প্রস্তুত করে না। মোটেও না।রাশিক উঠে দাঁড়ায়। গোসল শেষ করে। ওকে ব্যাক করতে হবে। নাবিলার কথা ঠিকই ছিল।
গা মুছে কাপড় চোপড় পড়ে মেসের ভিতরে খাটের উপর গিয়ে বসে রাশিক ফোন চেক করে। অন্ধকার হয়ে গেছে। চার্জে লাগায় রাশিক ফোন অন করে । এরপর নাবিলা কে কল দেয়। নাবিলা কল কেটে দেয়। আবার দেয় কল রাশিক। আবার নাবিলা কেটে দেয়। আবার রাশিক কল দেয়। নাবিলা আবার কেটে দেয়।
নাবিলার টেক্সট আসে,
কল দিবানা
কেন?
দিবানা বলছি।কোনোদিন দিবানা আর। সব শেষ। আমি তোমার নাম্বার ব্লক করবো
কেন? কেন? কেন?
...চুপ
কেন?কেন?কেন?
কথা বলবানা
কেন?কেন?কেন?
চুপ করো
কথা বলো প্লিজ
আমি ব্যস্ত আছি।
কি নিয়ে? আমার কথা বলার দরকার এখন
কথা আর হবে না। আমরা শেষ। আমি এখন নতুন একজনের সাথে।
কি?
হ্যা
আমি এখন বেড়াতে আসছি নতুন মানুষের সাথে
কি??কি বলো?কেমনে বলো?কিভাবে পারো? এগুলো কি বলো?
হ্যা
মিথ্যা বলতেছো?
নাহ
মিথ্যা বলতেছো
নাহ
আমি বিশ্বাস করি না
নাহ,সত্যি বলতেছি
আমি বিশ্বাস করি না। তুমি আমাকে জাস্ট টর্চার করার জন্য এগুলো বলতেছো।
একটা সেলফি আসে যেখানে নাবিলা সাদা ব্রা আর প্যান্টি পড়া বেডে শুয়ে আছে। ঠোটে ঠোট লাগায় কালো আন্ডারওয়্যার পড়া একটা ছেলে ওকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছে এবং ওর দুধ গুলো টিপতেছে।
রাশিক ছুড়ে ফেলে দেয় ফোনটা। রাশিক একবার চুমু খেতে চেয়েছিল দেখে চড় থাপ্পড় খেয়েছিল। আর এখন। এই অবস্থা। দূরে ঠেলে দিতে চেয়েছিল ফোন টা রাশিক। কিন্তু রাশিক আবার উঠে ফোন টা দেখে।
রাশিক, এই ছেলে টা তুমি যা নও তাই। সাক্সেস্ফুল, স্মার্ট,ক্যারিয়ার ইজ অন দা রাইট ওয়ে। আমি এটাই চাই,এরকমই চাই। এরকমই কাউকে আমি আমার ভিতরে রেখে দিতে চাই। ভালো থাকো। ছবি নিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে চাইলে করতে পারো।কিছু আসে যায় না। ভ্যালুলেস কাজ কারবারে আমার কিছু আর আসে যায় না। আমি তোমার থেকে মুক্তি পেয়েছি তাতেই খুশি।

রাশিক ফোন হাতে নেয়। আবার টাইপিং শুরু করে। তারপর কেটে দেয়। আবার লিখে আবার কেটে দেয়। ৩০মিনিট এইটা করতে থাকে রাশিক। কি বলবে?
গাঞ্জা ডিলার? গ্রামের গাঞ্জার ডিলার এঁর সাথে নাবিলার কি মিলবে?মেধা ছিল কিন্তু সবাই তো বালের মেধাবী।
কোন মরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমেধাবী ছিল। আজকের দুইজন ও তো মেধাবীই। রাশিক উঠে দাঁড়ায়। আর হচ্ছে না। না,আর হচ্ছে না। এখান থেকে বের হতে হবে। আর হচ্ছে না। বের হয়ে যেতে হবে। একাকীত্বের ভাড়ে কোনোরকমে মাথা তুলে দাড়াতে কষ্ট হচ্ছে রাশিকের। রুমের দিকে তাকায় রাহান কে দেখে। রাহান মাদারচোদ খেচতেছে ঘুমের ভিতরে। বাল। এগুলো কাকে রাশিক নিজের আশেপাশে এনেছে?
দুই চোখ যেদিকে যায় সেইদিকে চলে যেতে হবে। তারেক ভাইয়ের গাঞ্জার ডিলার হওয়ার শখ আর নাই। ডিগ্রি এঁর মারে চুদি। রাশিক হাতের কাছে যা পেয়েছিল তা ব্যাগে ভরে ফেললো। মেসের দরজা খুলে সে ভয় পেয়ে যায়। এইটা কি হচ্ছে এইখানে? বিশাল মিছিল হচ্ছে।দুইটা লাশ নিয়ে শত শত মানুষ মিছিল করতে করতে যাচ্ছে। তারেক ভাই লাশ ধরে ধরে কাদতে কাদতে যাচ্ছে। অনেকেই উনাকে স্বান্তনা দিচ্ছে। মানুষজন মিছিল করে হল গুলোর দিকে যাচ্ছে। সবার হাতেই কিছু না কিছু অস্ত্র। হকিস্টিক, রাম দা,চাকু এগুলো সবকিছু নিয়ে ক্রুদ্ধ চোখ মুখ নিয়ে শত শত ছেলেমেয়ে হেটে যাচ্ছে হল গুলোর দিকে।
রাশিক কিছু না বলে উলটো হাটা দিয়ে সিএনজি তে উঠে।
“কোথায় যাবেন ভাই?”
“জানি না”
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী অনবদ্য  লিখনী, অসম্ভব আত্মস্পর্শী কথনের নানন্দিক  চয়ন , সাবলীল ভাবে সাজানো লেখাটি ।
Dipok Kumar Bhadra ভাল লিখেছেন। ভোট দিলাম।
মোঃ মাইদুল সরকার আগুনঝড়া শব্দ আর গল্পের কাহিনিতে++++++

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

একটি কালো রাত বলতে যেকোনো একটা রাতের কথা বুঝানো হচ্ছে বলে মনে করছি। এখন আমার এই গল্প টাতে মূল চরিত্রটির একটা রাতের ভয়াল অভিজ্ঞতা নিয়ে গল্প টা লেখা।

১৬ ফেব্রুয়ারী - ২০২১ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪