সামির,
অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তোমাকে আর প্রিয় তুমি সম্বন্ধ করতে পারলাম না। তুমি যখন এই পত্রটি পাবে, তখন তোমার আর আমার মধ্যে কোন সম্পর্ক থাকবে না ।আমরা তখন আর স্বামী স্ত্রী নই । আমরা তখন দুজন দুজনার জন্য অন্য নারী পুরুষ। তখন আমাদের পরিচয় তুমি আমার এক্স হাজবেন্ড আর আমি তোমার ডিভোর্সি স্ত্রী।
অনেক অনেক স্বপ্ন আর আশা নেই তোমার সাথে সংসার শুরু করেছিলাম ।ভালোই চলছিল আমাদের দিনগুলো । তারপর বছর স্বপ্নের মত একটি বছর কেটে গেরো। আমরা বাবা-মা হয়ে গেলাম । আমাদের সংসারে নতুন যে সদস্য এসেছে ফাহিম সে আমাদের নয়নের মধ্যমনি হয়ে উঠল । একটু একটু করে সে হাসি আনন্দ আর ভালোবাসায় বড় হতে লাগলো । কিন্তু আমি লক্ষ্য করলাম এর মধ্যেই একটু একটু করে তুমি বদলাতে শুরু করলে।
তোমার অচেনা রূপটি ধীরে ধীরে আমার নিকট প্রকাশ করে থাকলো তু। মি ঠিক মত অফিস করো না । বেতন তুলনা, ঠিকমতো বাজার ঘাট করো না। দুধের বাচ্চা নিয়ে আমি না খেয়ে থাকি তবু তোমার কোন যায় আসে না । তোমার কাছে টাকা থাকলেও তুমি বাচ্চার জন্য দুধ আনো না। আমি অবাক হই তুমি কেমন বাবা ? সন্তানের ক্ষুধার কান্না তোমায় বিগলিত ও বিচলিত করেনা !
কোন কোন দিন চুলায় আগুন জ্বলে না । একদিন নাস্তা খাই তো তিন দিন সকালে নাস্তা খাওয়ার কিছু থাকেনা । তুমি চাল ডাল আনবে বলে সেই যে সাত সকালে বেড়িয়ে যাও ফির আস রাত্রে। আমি শুধু পানি খেয়ে দিন পার করি। তবু আমি কাউকে অভিযোগ করিনি। সয়ে নিয়েছিলাম । ভেবেছিলাম একদিন সুসময় আসবে কিন্তু দিন যত যেতে লাগলো দুর্দিন তত বাড়তে লাগলো । আমাদের সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার জন্য একমাত্র তুমি দায়ী।
তুমি ঋণ নিতে নিতে এখন ঋণে জর্জরিত হয়ে গেলে অথচ কেন তুমি ঋণ নিচ্ছ সেটা আমি জানি না, ঋণ নিয়ে টাকা কাকে দিচ্ছ সেটাও জানিনা। তোমার টাকা কোথায় কিভাবে খরচ হচ্ছে সেটা জানতে চাওয়া আমার অধিকার আছে কিন্তু কিছু বলতে গেলেই তুমি ঝগড়া করতে। এমনকি আমাকে মারতে আসতে। আমি খবর পাই তুমি নেশা করো। তুমি বাহিরে রাত কাটাও। তোমাকে সুপথে ফিরাতে কত রাত কেঁদেছি, খোদার দরবারে কত দোয়া করেছি।
কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। আচ্ছা বলতো একটা মানুষের কতটা ধৈর্যের বাধ থাকে। কত দিন না খেয়ে পড়ে থাকতে পারে। তোমার বাবা মাকে জানিয়ে ও কোন কাজ হলোনা তারা উল্টো আমাকেই দোষারোপ করে। আমি সব কিছু মানতে পারবো কিন্তু একজন বিপথগামী গাজুরু, নেশারুকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবনা।
আমি আমার ভাগ্যকে মেনে নিয়ে চিরতরে তোমার থেকে দূরে চলে গেলাম। ফাহিমকে আমি নেয়ে গেলাম। তুমি আইনি লড়াই করেও সাবালক না হওয়া পর্যন্ত ফাহিমকে পাবেনা।
তুমি যেমন পিতৃস্নেহ পাওনি তেমনি আমার সন্তানও বাবা থাকতে বাবার স্নেহ ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হলো, এর দায় ভার তোমার। আমি তোমাকে কখনো ক্ষমা করবোনা। তুমি আমাকে ডির্ভোস দিতে বাধ্য করেছো। আমি এই কলঙ্ক নিয়ে বাবা-মার কাছে ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি কারো বোঝা হয়ে থাকবোনা। আমি আমার ভাগ্যকে নিজ হাতে গড়বো এক কাপড়ে বেড়িয়ে গেলাম।
তুমি তোমার পৃথিবী ভালো থেকো আমার আমার নাম পরিচয় তোমার মন থেকে মুছে ফেলো।
ইতি
তোমার ঝরে যাওয়া ফুল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মাহাবুব হাসান
এক চিঠিতেই পুরো গল্প- সংসার, অভিমান, বিচ্ছেদ! ব্যতিক্রমী উপস্থাপনা। পড়তে ভালো লাগছিল। পড়া শেষে মনে হলো আরেকটু পড়তে পারলে আরো ভালো লাগত! শুভকামনা।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
একটি ভাঙ্গা সংসার ও একটি নীল চিঠি। যে চিঠির মধ্য ফুটে উঠে কেন একটি সংসার ভেঙ্গে গেলো।
২৪ আগষ্ট - ২০২০
গল্প/কবিতা:
১০৬ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।