যোগাযোগটা দুজনের মধ্যে সেভাবে কখনো ছিলনা। বেড়াতে গেলে দেখা হতো, সৌজন্যমূলক কিছু কথা হতো। তারপর আবার যেই সেই আগের মতই দেখা নেই, কথা নেই। এভাবে চলছিল জীবন।
শিমু আর শাহেদ খালাতো ভাই বোন । শিমু থাকে মুন্সীগঞ্জ আর শাহেদ ঢাকায়। শাহেদের পরিবারের সবাই শিমুদের গ্রামের বাড়িতে ঘটা করে বেড়াতে এলেও শাহেদ এসেছে কালে-ভদ্রে। গ্রাম তার ভালোলাগেনা। তাই বাসার সবাই বেড়াতে চলে এলেও সে একলা ঢাকায় থেকে যেতো।
শিমুর মাদ্রাসায় পড়া শেষ আরও উচ্চতর পড়াশোনা করতে হলে তাকে শহরে গিয়ে পড়তে হবে। কিন্তু তার বাবা -মা রাজি নয়, মেয়ে একা একা শহরে থাকবে তার উপর সুন্দরী বিয়ের লায়েক মেয়ে বলে কথা। অখন্ড অবসরকে উপভোগ করার জন্য শিমু তার ভাইকে নিয়ে ঢাকায় খালার বাসায় বেড়াতে গেলো।
শাহেদ বাসায় ছিলনা। অফিস করে ফিরেছে রাত্রে। শিমুকে দেখেতো সে পুরাই টাসকি খেলো। আরে সেদিনের ছোট্ট মেয়েটি দেখছি রূপবতী-গুনবতী তরুণী। শিমু সালাম দিয়ে কথা শুরু করল-
-ভাইজানের তো দেখাই পাওয়া যায়না। কখন এসেছি আপনাদের বাসায় আর এখন রাত বাজে নটা। এতক্ষনে দেখা হলো।
-আরে বলিসনা। নতুন চাকরি। একটু বেশি সময় দিতে হয় অফিসে। কাজ-কর্ম শিখে নিচ্ছি। তা তোর খবর কি, ভালোতো ?
-কে আর কার খবর রাখে? এইতো আছি আর কি খালে-ডালে।
-ওরে বাবা। ভালোই তো কথা শিখেছিল তুই শিমু!
-আচ্ছা আর কথা বলতে হবেনা। ফ্রেশ হয়ে আসেন এক সাথে রাতের খাবার খাবো তারপর না হয় কে কথা জানে আর কে জানেনা তার পরীক্ষা হবে।
শাহেদ মুচকি হেসে ওর রুমে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে বসলো সবাই। শাহেদের মা আর বড় ভাবী বেশ কয়েক পদের তরকারি রান্না করেছে। ছোট মাছের ”রচরি দেখে শাহেদ বলল-এই মাছ তো শহরে পাওয়া যায়না । এটা কোথা থেকে এলো ?
শাহেদের মা বলল-শিমু গ্রাম থেকে এনেছে। আহা! কত দিন এই লুন্দি বাইলা মাছ খাইনা। ছোট ছোট লাল লাল(কিছুটা কালচে) বেলে মাছ পেয়ে শিমুর খালা মহা খুশি। তিনি শুধু এই বেলে মাছের চরচরি দিয়েই রাতে একমুঠো ভাত খেলেন। অন্য মাছ মাংস আর ছুঁয়েও দেখলেন না।
রাতের অন্ধকার তেমন গাঢ় নয় শাহেদদের ছাদে। আশে পাশের উচু দালানের আলো আসাতে আলো আধারীর একটা খেলা যেন চলছে পুরো ছাদ জুড়ে।
শাহেদ ছাদের রেলিং ধরি দাড়িয়ে কথা বলছে-
-তুইতো বড় হয়ে গেছোত শিমু ?
-হ্যা ভাই। আপনেতো আরও বড় হয়েছেন, চাকরি করছেন। এখনতো বিয়ের আয়োজন করতে হবে।
-আরে আমার আগে তোকে বিয়ে দিতে হবে। তারপর আমি বিয়ে করবো।
-বিয়ে যে করবেন তা মাইয়া কি আগেই দেইখা রাখছেন নাকি মনের মানুষ আছে কেউ ?
-নারে কেউ নাই। আর এইডাইতো দুঃখ। কেউ আমার প্রেমে পড়লনা আমিও কারো সাথে প্রেম করলামনা। জীবনটা হুদা মাটি মাটি লাগে।
-না না বউ এলে জীবন মধুর মনে হবে। হা হা হা.............
শিমুর মন খোলা হাসিতে রাতের নির্জণতা যেন খান খান হয়ে ভাঙ্গা কাচের মত ভেঙ্গে পড়ে। শাহেদের ভাল লাগে শিমুর প্রান খোলা হাসি। সে আড় চোখে দেখে রাতের রহস্যময়ী নারীকে। এতকাল যাকে দেখে এসেছে বোন হিসেবে আজকে তাকে বোন নয়, অন্য কিছু ভাবতেই ভালোলাগছে।
রুমে ফেরার সময় শাহেদ জিজ্ঞেস করে-তোর ফেসবুক আইডি নেই। না ভাইয়া। ভাবছি একটা আইডি খুলবো। কি বলিস ফেসবুক ছাড়া আজকাল চলা যায় নাকি ? জীবনের সব খবরতো এখন মানুষ ফেসবুকেই ছেড়ে দেয়। দাড়া তোকে এখনই একটা আইডি খুলে দেই। তার পর দেখবি মজা।
শিসুর নামে আইডি খোলা হলে সে আস্তে আস্তে ফেসবুকের সাথে পরিচিত হয়ে উঠে। ধীরে ধীরে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট বাড়তে থাকে। শাহেদের সাথে এড হতে দেরি হয়না। শিমু নিজের ছবি দিয়ে কখনো পোস্ট দেয়না। কারণ সে দেখেছে মেয়েদের ছবি দেখলেই কিছু ছেলে পাগলের মত কিসব কমেন্ট করে। শাহেদও বলেছে- প্রয়োজন ছাড়া ছবি পোস্ট দিবি না। জানছতো আজকালকার পোলাপান মাইয়া মানুষ বলতে অজ্ঞান।
খালার বাড়িতে প্রায় বিশ দিনের মত ছিল শিমু। শাহেদ তাকে শপিং এ নিয়ে গেছে, বোটানিকাল গার্ডেন, হাতির ঝিল, যমুনা ফিউচার পার্কসহ আরও নানা জায়গায় ঘুড়তে নিয়ে গেছে। ভালই কেটে দিনগুলো। শিমু খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে শাহেদের কোন প্রেমিকা আছে কিনা। আজকাল কার ছেলেদের বিশ্বাস করা কঠিন।
কিন্তু কোন আলামত খুজে পায়নি। আর তাতেই শিমুর মনে যেন গভীর এক বোধ কাঁটার মত বিধে থাকে।
বাড়িতে ফিরে আসার পর প্রায় প্রতি রাতেই শাহেদ ম্যাসেঞ্জারে নক করে শিমুকে। প্রথম দিকে হায়-হ্যালো, কি করে, কি খায়, কেমন যাচ্ছে দিনকাল নিয়ে কথা বললেও আস্তে আস্তে ব্যাক্তিগত বিষয় নিয়েই দুজনে বেশ রাত পর্যন্ত চ্যাট করতে থাকে আবার ফোনেও কথা হতে থাকে।
বিষয়টা শিমুর বড় ভাই ভালভাবে নেয় না। সে শিমুকে শাসায় রাত জেগে কিসের এত কথা। বেশি অতিরিক্ত করলে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে। কে শোনে কার কথা। শিমু সাবধানে লুকিয়ে শাহেদের সাথে কথা বলা চালিয়ে যায়।
একদিন রাতে আচমকা শাহেদ জিজ্ঞেস করে-আচ্ছা আমাকে তোর কেমন লাগে? অনেক পরও শিমু যখন এই প্রশ্নের প্রতিউত্তর দেয়না তখন শাহেদ আবার নক করে । বলে-কিরে প্রশ্ন শুনে কি তব্দা খাইয়া গেলি নাকি ?
এদিকে শিমু কেবল ভেবে চলে আর তার চোখে ভাসে শ্যামলা বর্ণের ব্যাম করা পিটানো শরীরের ছবি, পাথরে খোদাই করা এক বলিষ্ট যুবকের মুখ। যাকে ইচ্ছে করলেই ফিরিয়ে দেওয়া যায়না।
শাহেদের খোচাখুচিতে সে বলে দেয়-ভালো।
শাহেদ আবার জানতে চায় কেমন ভালো? শিমু বলে-যে ভালোর কথা মুখে বলা যায়না। অন্তর দিয়ে বুঝে নিতে হয়।
সে রকম অন্তর কি আমার জন্য কারো আছে ? শিমু বলে-জানিনা। থাকলে থাকতেও পারে।
এভাবে দুজনে দুজনার প্রেমে পড়ে। রাত জাগে। কথা বাড়ে। দু’এক জনের নজর পড়ে। তবুও চলতে থাকে আলাপন। কথোপকথন। কিন্তু সরাসরি কেউ কাউকে প্রেম নিবেদন করেনা।
শিমু বুঝে ফেলে শাহেদ তার জন্য পাগল। সে জানিয়ে দেয় এভাবে গোপনে আর কত কথা বলাবলি করবো তারচেয়ে আপনি আপনার পরিবারকে জানিয়ে দেন, বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। তাছাড়া লোকে জানলে মান সম্মান নিয়ে টানাটানি হবে। শহরে এগুলো সমস্যা নয় কিন্তু গ্রামে এসব বিষয় মানুষ ভাল চোখে দেখে না।
শাহেদ ধানাই পানাই করে। সে আরও সময় চায়। প্রেমের দিনগুলোকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে চায়। কিন্তু সেটি হবার জো নেই, শিমুর চাপে একদিন তার বড় বোনকে বলে বিয়ের জন্য এদিক ওদিক পাত্রী না খুজেই শিমুর ব্যাপারে বাবা-মার সাথে আলাপ করতে।
কবিতা শাহেদের বোন। কবিতা বেশ ফুরফুরে মেজাজে তার মাকে জানায়। শাহেদ শিমুকে পছন্দ করে। শিমুকে ভালোলাগে শাহেদের মা ও বোনের কিন্তু তারা সংকিত শাহেদের বাবাকে নিয়ে। তিনি কি মেনে নেবেন এই সম্পর্ক, এই বিয়ে।
শিমুর কথা শুনেই শাহেদের বাবা গেলেন চটে। তিনি হুংকার দিয়ে বললেন- এ্যা, আর কোন মাইয়া নাই দুনিয়াতে। শেষকালে কিনা শিমুরেই পছন্দ হইল। আত্মীয় মধ্যে বিয়া করণ ভালা? একটু থেকে একটু টের বেটর হলেই এক সম্পর্ক ইতি টেনে নিয়ে আসবো দুই সম্পর্কের।
না না এমন ভুল কিছুতেই করন যাইবনা। ব্যস। সব শেষ । তিনি এক কথার মানুষ। যেটা না করেছেন তো সেটা নাই। সেটা আর হ্যা হবেনা।
দুই পরিবারে এটা নিয়ে এক ধরনের টানাপোড়ন সৃষ্টি হলো। বিশেষ করে শাহেদের পরিবারের সদস্যরা কেউ শিমুর পক্ষে কেউ বিপক্ষে। শাহেদ কিছুতেই আর বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে পারলোনা শিমুদের বাড়িতে।
শিমু ফোনে শাহেদকে বলল-যা শুরু হয়েছে এসব কথা আত্মীয় স্বজনের মধ্যে জানাজানি হলে মুখ দেখানোর আর জো থাকবেনা। বাদ দেন এ বিষয়টা। আপনার বাবা যেখানে বিয়ে ঠিক করবে আপনি সেখানে বিয়ে করবেন। আমি আর আপনার বা আপনার পরিবারে যেতে আগ্রহী নই।
শাহেদ রেগে গিয়ে বলল- তোর ভাই তো রাজিনা আমাদের বিয়েতে। দেখবো তোকে কোথায় বিয়ে দেয়। তোর আগে আমি বিয়ে করবোই তোকে চেলেঞ্জ দিলাম।
শিমুও রেগে গিয়ে বলল- আপনি ছেলে মানুষ যেখানে ইচ্ছে সেখানে বিয়ে করবেন, এখানে আমাকে চেলেঞ্জ জানানোর কি আছে। পরিবারের সাথে হেডম দেখাতো পারেননা, আমার সাথে সাহস দেখাতে আসছেন। আপনে আর আমাকে ফোন দিবেন না, নক করবেন না। আপনার যা ইচ্ছে তা করেন। তাতে আমার কিছু যায় আসেনা।
ওরে বাবা তোকে ফোন না দিলে কি আমার দিন কাটবেনা, রাত সকাল হবেনা। যা যা তোকে আর কল দিবনা। দেখি তুই কোন রাজপুত্রের গলায় মালা পড়াস।
হঠাৎ মাঝ দড়িয়ায় ঝড় উঠে যেন এলোমেলো করে দিল শিমু আর শাহেদের ডিজিটাল প্রেমের রাজ্যে। এরপর শিমু আর শাহেদের কথা হয়না বহিুদিন, দেখা হয়না এমনিকি কেউ কারো খোঁজ পর্যন্ত নেয়না।
হঠাৎ একদিন শিমু জানতে পারে শাহেদের বিয়ে ঠিক হয়েছে। খবরটা শুনে শিমু ঠিক খুশি হতে পারলোনা আবার কোন দুঃখবোধও তাকে জড়িয়ে ধরলনা। বিয়েতে শিমুর পরিবারের সবাই গেলেও শিমু যায়নি। বিয়ের পর বউ নিয়ে শাহেদ বেশ মাতামাতি করেছে। শিমু ওর খালাতো বোন থেকে শাহেদের বউয়ের ছবি সংগ্রহ করি দেখে মুখ সিটকে বলেছে- শেষ পর্যন্ত একটা পাটকাঠিকে পছন্দ হলো। না আছে শরীর না আছে রূপ। অতি চালাকের গলায় দড়ি।
ফেসবুকে শাহেদের ছবি ও বউয়ের ছবি দেখে শিমু বলতো-এত বাড়াবাড়ি ভালো নয়, সুখ কপালে সইলেই হয়। শিমুর অনেক প্রস্তাব আসছে বিয়ের জন্য কিন্তু কাউকে তার মনে ধরেনা। তাই বিয়ে করাও হচ্ছেনা। আসলে সে চায় প্রতিষ্টিত কোন ছেলের সাথে তার বিয়ে হোক। যাতে সে বলতে পারে-শাহেদকে না পাওয়ায় তার কোন দুঃখ নেই এবং সে ভালো আছে, ভালো বর আর ঘর পেয়েছে। তাই সে অপেক্ষা করছে সুদিনের জন্য।
ছয় মাস না যেতেই শাহেদের সাথে সাহেদের বউ এর ঝামেলা শুরু হলো। শাহেদের অভিযোগ বউ এর যক্ষা আছে এবং সে অত্যন্ত শীতল।
বউ এর অভিযোগ-শাহেদ বাহিরে বাহিরে ঘুড়ে বেড়ায় তার কোন খোঁজ খবর নেয়না, কেয়ার করেনা।
শিমুকে বিয়ে করতে না পারার যন্ত্রনাতো ছিলই তার উপর বউটা ইদানিং একরোখা মনোভাব দেখাচ্ছে। এভাবে দূরত্ব বেড়েই চলেছে নব দম্পত্তির মধ্যে। প্রথমে কথা বলা বন্ধ হলো। মুখোমুখি দেখা হলে না দেখার ভান করা। তারপর এক রুমে শোয়া বন্ধ হলো।
বউকে ভালোবেসে সুখি হতে চেয়েছিল শাহেদ কিন্তু সিুখ বুঝি তার কপালে লেখা নেই। দিনকে দিন শাহেদ নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে। অসুস্থ্য একটা মেয়ের সাথে কি সংসার করা যায় ? শাহেদের বউ আরও পড়াশোনা করতে চায়, চাকরি করতে চায়। শাহেদ না করে দিয়েছে। শাহেদের না করা শুনে বউ মনে মনে ফন্দি আটে। তোমাকে দেখাচ্ছি মজা-কত ধানে কত চাল বাছাধন। একদিন বাবার বাড়ি যাবে বলে শাশুরীর দেয়া সমস্ত গহনা নিয়ে বউ চম্পট। তার পর তার আর ফিরে আসার নাম গন্ধ নেই।
শাহেদের মা তার পুত্র বধুকে আনতে গেলে সে বেকে বসে। সে সাফ জানিয়ে দেয়- সে আর ফিরে আসবেনা। পড়াশুনা করে নিজের পায়ে নিজে দাড়াবে। অবস্থা বেগতিক দেখে শাহেদের বাবা রেগে গিয়ে বলল- ‘সোনার গহনা নিয়ে পলাইছে, এমন চোরা বউ আর আনুম না। যত টাকা লাগে লাগুক এই ঝামেলা চুকিয়ে ফেলুম’। ব্যস সব শেষ হয়ে গেলো। অনেক ঝামেলার পর শাহেদের সাথে বউ এর ডিভোর্স হয়ে গেলো।
শাহেদ এখন অনলাইনে নেই, ফেস বুকে নেই, ডিজিটাল প্লাটফর্মে কোথাও নেই। বছর খানেক উদাশীন ছিল নিজের জগৎ, জীবন সম্পর্কে। বেঁচে থাকার জন্য বেঁচে থাকা । এর বাহিরে জীবন থেকে কোন প্রকার প্রাপ্তি সে ছড়েই দিয়েছে। জীবন এখন শুধুই ঝড়া পাতার পতন রোধ, এই ভাবনাই কাজ করে শাহেদের মনে অষ্টপ্রহর।
শিমুর মোবাইলে একদিন অজানা নাম্বার থেকে ফোন আসে। শাহেদ বলে-পাগলামী করে জীবনটাকে নষ্ট করে ফেললাম। খবরদার তুই কিন্তু আমার মত এমন ভুল করিসনা। তাহলে সারা জীবন অনুতাপ করবি।
শিমু বলল- ভাই, আপনি ছেলে মানুষ । যেটা ঘটেছে ওটা সামলে নতুন করে শুরু করবেন। জীবন তো থেমে থাকবেনা। সাবধানে পা ফেলবেন এখন থেকে। যা করবেন বুঝে শুনে করবেন।
দুজনে নিজেদের আগের তিক্ততা ভুলে গিয়ে সুখ-দুঃখের কথা সুগন্ধি ¯œানের মত বলাবলি করলো। শিমু এর দুদিন পরই দেখলো তার ফেসবুকে ‘নীরব রাত্রি’-নামক আইডি থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এসেছে। বেশ কিছুদিন ঝুলিয়ে রাখার পর একসেপ্ট করলো।
একসেপ্ট করে সে বেশ অবাক হলো। এই নীরব রাত্রি আর কেউ নয় শাহেদের নয়া ফেসবুক আইডি। তবে কি শাহেদ আবার জড়াতে চাচ্ছে সম্পর্কে এবার শিমু বেশ সাবধানী। সে প্রয়োজন ছাড়া বা গুরুত্বপূর্ণ কোন কারণ ছাড়া শাহেদের সাথে যোগাযোগ করেনা। রেসপন্সও করেনা।
কিন্তু শাহেদের মনে শিমুকে পাওয়ার সুপ্ত বাসনা এখন বিদ্যমান। অতীতকে ভুলে যায়নি শিমু তাই নীরব রাত্রির সাথে রাতের নির্জনে কথায় মেতে উঠেনা। সে চায়না পুরাতন বিপদ আবার নতুন করে তার ঘাড়ে এসে চাপুক।
শিমু ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চায়। আসলে বাস্তব আর ডিজিটাল দুনিয়া আকাশ-পাতাল ব্যবধান। সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে সুখী হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। মানুষ চাইলেই সব কিছু সাজানো ফুলের মত হয়না। আর হয়না বলেই শাহেদ আর শিমুর পরিণতি কি হবে তা অন্তর্যামি ছাড়া আর কেউ জানেনা।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
খালাতো ভাই-বোন যখন অনলাইনে প্রেম করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় তখন ডিজিটাল দুনিয়াটা যেন বাস্তবের মত নয় সেটা উপলব্দি করে।
শেষ পর্যন্ত তাদের প্রেম ভালোবাসায় যে ঝড় উঠে সেটা গল্পে তুলে ধরা হয়েছে।
২৪ আগষ্ট - ২০২০
গল্প/কবিতা:
৯৮ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪