একাকীত্বের অন্ধকার

একাকীত্ব (জুন ২০২১)

মোঃ মাইদুল সরকার
মোট ভোট ১০ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.১
  • 0
  • ২৩৭
ব্রাজিলের পান্তানাল রেইন ফরেস্টে এর নির্জন জায়গায় পাশাপাশি বসে আছে ম্যারিনা ও মুহিব। পৃথিবীর অন্যতম এই বন রোমাঞ্চপ্রিয় পর্যটকদের কাছে অসম্ভব শিহরন জাগানিয়া। অনেক অনেক মানুষের ভীরে ম্যারিনা আর মুহবি এখানে এসেছে প্রেম কিংবা রোমাঞ্চর জন্য নয় বরং নিজেদের একাকীত্বের কথা উগরে দিতে। আজ প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে তারা একে অপরকে জানে। বহুদূরের নাম না জানা বন্য ফুলের দিকে তাকিয়ে থেকে ম্যারিনা কথা শুরু করল, জান মুহিব-এই পান্তানালা কত মানুষের প্রেমের স্বাক্ষী ? কত মানুষ তাদের মনের কাঙ্খিত কথাটি বলেছে এই রেইন ফরেস্টে। শত শত প্রেমিক যুগলের প্রেমের স্বাক্ষী এই পান্তানালা। কথা শুনে মুহিব স্মৃত হেসে বলল- অগনিত মানুষের। কিন্তু সঠিক সংখ্যাটা মনে হয় তুমি নিজেও জানোনা ম্যারিনা। যদিও তুমি এই ব্রাজিলেরই মেয়ে।

কথা শুনে ম্যারিনা মুখ খোলার আগইে দুটি ম্যাকাও পাখি ওদেও উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে অদূরে একটি গাছের মগ ডালে বসল। ম্যারিনা উচ্ছাসিত হয়ে বলল- জানো, এই প্রথম বনের ভিতর ম্যাকাও দেখলাম এত কাছ থেকে। প্রেমিক প্রেমিকারা দেখলে ওদের সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করতো। আমিও আমার রুমমেট আদ্রিয়ানোর কাছ থেকে এমটাই শুনেছি বলল মুহিব।

আঙ্গুলের ডগায় বুনো ঘাস জড়াতে জড়াতে ম্যারিনা বলল- আচ্ছা পাঁচ বছরের অধিক সময় তুমি রিও ডি জেনিরোতে পড়ে আছো দেশে যাচ্ছ না কেন ? হাহাকার যেন ভর করলো কথাটা শুনে মুহিবের বুকের ভিতর।
-দেশে যাব ? কার কাছে যাব, কে আছে আমার ?
-কেন তোমার বউ আর পরিবারের কাছে যাবে।
- কিছু কিছু মানুষ এমন ভাগ্য নিয়ে জন্মায় যাদের একটা সময় আপন জন বলে কেউ থাকে না ।
-আসলে আমার জানা ছিল না এখন তোমার কেউ নেই। ওহ দুখি:ত । আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি।
মুহিব দ্রুত আনমনা ভাব দূর করে বলে-না না দু:খ দেওয়ার কি আছে। জীবন এখন একাকীত্বের গভীর অন্ধরে মোড়া এটাই সময়ের বাস্তব সত্য। আর সত্য মেনে নেওয়াতে দু:খ কিংবা কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই।
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ম্যারিনা বলল-একাকীত্বের অন্ধকার! সুন্দর বলেছেতো। তুমি কি কবি নাকি ? কবিতা-টবিতা লিখ নাকি ?
একটা সময় টুকটাক লিখতাম। এখন আর হয়ে উঠে না। ব্যবসার ব্যস্ততা, মানুষিক যন্ত্রনা সব মিলিয়ে কবিতারা পালিয়ে গেছে মনের জমিন ছেড়ে। মনে সুখ নেই কবিতা লিখে কি হবে বলো?
-কেন লিখবে না ? কেউ কেউতো বিরহে আরও বেশি কবি হয়ে উঠে। তোমার ভিতরের সাহিত্যগুন হেলায় নষ্ট করা উচিৎ নয়।
-আরে ওটা সিরিয়াস কিছুনা। শখ করে লিখতাম। এখন শখ শেষ তাই কবিতাও শেষ।
-আবার শুরু করো।
-তুুমি বললে করতে পারি কিংবা তোমার মত এমন একজন পাশে থাকলে।

ম্যারিনা লজ্জা পেয়ে কথা ঘুরিয়ে অন্য প্রশংগ তুললো। অনেক দিন বলি বলি করেও মুহিব যে কথাটা ম্যারিনাকে বলেনি সেই কথাটাই আজ বলে ফেললো। আচ্ছা তুমিওতো একা। বিয়ে থা করোনি। কি এমন ঘটেছে যে এই ভরা যৌবনেও একা রয়ে গেলে। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে ম্যারিনা। অবশ্য যদি তোমার ইচ্ছে না থাকে তবে বলনা।
মুহিব ঐ যে তুমি বললে- একাকীত্বের অন্ধকার। সেই অন্ধকারের যে আমিও একটা অংশ। একেক করে পরিবারের সবাই চলে গেছে আমায় ছেড়ে, এই পৃথিবীতে আমাকে ফেলে তারপর যাকে ভালোবেসেছিলাম সেই দিয়েছে ফাঁকি, সেও অন্যের হয়ে গেছে। তাই জীবনের প্রতি ঘাটে ঘাটে ঠকে গিয়ে একাকীত্বকেই অবলম্বন করেছি বেঁচে থাকার জন্য আর একাকীত্বই এখন আমার নিত্য দিনের সঙ্গী। অন্য একদিন জীবনের সাতকাহন বলবো তোমাকে। বিষাদে ছেয়ে গেল দুজনের মত। আসলে একেকটা মানুষের একেক রকম দু:খ। চির সুখী বলতে দুনিয়াতে কেউ নেই কিছু নেই।

মুহিব ব্রাজিলে এসেছিল ভাগ্য ফেরাতে। তারপর ব্যবসায় জড়িয়ে পরে। বাংলাদেশে তার মা আর স্ত্রী থাকে চট্টগ্রামে। বাবা মা গেছে আগেই। ভাগ্য তার ঠিকই ফিরেছে । চট্টগ্রামে ফø্যাট কিনেছে, গ্রামের বাড়িতে পাকা ঘর করেছে। বছর কয়েক আগে যখন সে মনস্থির করেছে একেবারে দেশে চলে যাবে এখানকার পাঠ গুটিয়ে ঠিক তখনই তার কাছে খবর এলো তার বিবাহিত স্ত্রী পালিয়ে গেছে অন্য যুবকের হাত ধরে। ঠিক যেন খোলা মাঠে বজ্রপাত হলো তার উপর। সে রাত ছিল জ্যোস্নারাত। জ্যোস্নার আলোয় ভেসে গেছে রিও ডি জেনিরোর অলি গলি। শত শত স্মৃতি বুকের এ্যালভামে ভেসে উঠছে আর বুকের ভিতরটা তলিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে।

‘‘তুমি ফিরে এলে আমরা আনবো এই পৃতিবীতে আমাদের নতুন অতিথি । আমাদের মিলনের ফসল যে হবে আমাদের অ¯িত্বের অংশ’’। বউয়ের এই কথাগুলো মনে বড় বাজে মুহিবের। প্রতিক্ষার দিন আর শেষ হলোনা আর তার আগেই উড়াল দিয়েছে দিকভ্রান্ত প্রজাপতি। সে আর ফিরবেনা। তাকেও দেশে ফিরতে দিলনা ছলনাময়ী নারী।

‘‘বিদেশ গিয়ে আমায় ভুলে যাবেনাতো’’। না মুহিব ভুলে যায়নি । কথা রেখেছে কিন্তু কথা রাখেনি তার সুন্দরী প্রিয়তমা। না এমন নারী কারো প্রিয়তমা হতে পারেনা। এরা কালনাগিনী শুধু সুযোগের সন্ধানে থাকে আর ছোবল দিয়ে যায় জীবনভর।
কত আশা ছিল ছেলে হলে নাম রাখেিব-মৃদুল আর মেয়ে হলে নাম রাখবে -মালিহা। কিন্তু সব শেষ করে দিল সেই কালনাগিনী। নাগিনী আমাকে যে একাকিত্বেও আগুনে পোড়ালে সে আগুন তোমাকেও ক্ষমা করবে না। একদিন সে আগুন জ্বালিয়ে দিবে তোম স্বপ্ন সুখের মোহ। আমি সেদিনের অপেক্ষায় থাকলাম - কথগুলো বলে যেন মুহিব নিজেই নিজেকে প্রবোধ দিচ্ছে।

মায়ের সাথে যোগাযোগ থাকলেও বয়সের ভাওে ন্যুজ্ব মা ছেরের বউয়ের এহেন কান্ড মেনে নিতে পারেননি। আর পারেনি বলেই তিনিও সংসারের মায়া ত্যাগ করে পৃথিবী থেকে মুক্তি নিলেন। মায়ের মৃত্যু সংবাদে একেবারে দিশেহারা হয়ে গলো মুহিব। যাও মনে একটু আশা ছিল, দেশে ফিরার একটা শেকড় ছিল তাও ছিন্ন হয়ে গেল। দুমড়ে মুচড়ে গেল তার সাজানো জীবন আর সুখের সংসার।
দেশে কার কাছে ফিরে যাবে মা নেই ওপারে দিয়েছে পাড়ি। বউ থেকেও নেই পর পুরুষের হাত ধরে দিয়েছে অজানায় পাড়ি। তীব্র অভিমানে দেশে না ফেরার সংকল্প বাসা বাধে মনে।

ব্যসায়ের সূত্র ধরেই পরিচয় ম্যারিনার সাথে। তারপর একটু একটু করে ঘনিষ্টতা বাড়ে। বন্ধু হয়ে যায় দুই দেশের দুই নারী-পুরুষ। মুহিব একদিন বলে আচ্ছা এই ফ্রি সেক্সের দেশে তোমার বয়ফ্রেন্ড নেই, প্রেমিক নেই এটা কি করে সম্ভব ? তুমি কি চিরকুমারী থাকবে নাকি?

বলবো বলবো সব বলবো তোমকে একদিন আমার মনের কথা, আমার দু:খ গাথা। কিন্তু সে দিনটা আর আসেনা। মুহিব অপেক্ষায় থাকে। অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে।

ম্যারিনা একদিন প্রপোজ করে তার ফ্ল্যাটে থাকার জন্য। দোনোমনা করে শেষ পর্যন্ত রাজি হয় মুহিব। মুহিবদেও কোম্পানীর ইন্টরিয়র ডিজাইন কারা ম্যারিনার ফ্ল্যাট যেন সৌন্দর্যে স্বপ্নের আবেশ সৃষ্টি করে। ম্যারিনার খুব ভাললেগেছে তাদেও কাজ আর বেশি ভাললেগেছে মুহিবের কথা ও ব্যক্তিত্ব। সেই থেকে বন্ধুত্বেও বাধনে জড়িয়েছে দুজন। রাতে বেশ আয়োজন করে ম্যারিনা সবই ব্রাজিলিয়ান ডিস। ম্যারিনা রাধেও বেশ ভাল। একটা ডিশ আলাদা করে রাখা ছিল। মুহিব যখন রান্নাটা বেশ চমৎকার হয়েছে বলে প্রশংসা করে তখন দক্ষিন বারান্দায় ম্যারিনা পরিবেশন করে চট্টগ্রামের ফিন্নি।
মুহিব অবাক হয়ে বলল- কি করে সম্ভব ?
-ইউটিউবের যুগে অসম্ভবের কি আছে। জান এই ডেজার্টটা আমারও বেশ পছন্দের।
খেতে খেতে ম্যারিনা খুলে বসে তার মনের দুয়ার। পাথরের মত একাকীত্বের বোঝা হালকা করতেই জীবনের নানা ঘটনা খুলে বলে মুহিবকে।
আমি রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে। যদিও এখন আমি শিক্ষকতা করে নিজেই বেশ স্বাধীনভাবে থাকছি কিন্তু একটা সময় আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিলনা। বাবা-মা দুই ভাইকে উদয় অস্ত খাটতে হতো। সংসারের গরীবি হাল ফেরাতে বড় ভাই-ভিদাল বেছে নেয় মাদকের পথ। মাদক চোরাচালানীদেও সাথে জড়িয়ে পড়ে গভীরভাবে তার পর একদিন গোলাগুলিতে লাশ হয়ে ফিরে। কিন্তু ততদিনে তার অবৈধ উপার্জনে পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালর দিকে। আমার লেখাপড়াও তাই বন্ধ হয়নি। ছোট ভাই-দিয়াগো চেইন শপের বিক্রয়কর্মী। কেনাকাটা করতে আশা বড়লোকের আদুরে কন্যা-শ্যারনের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। কিন্তু শ্যারনের পরিবার তা মেনে নেয়না। ওরা দুজন যখন প্রেমে উথান পাথাল তখন একদিন শ্যারন পালিয়ে আসে সুদর্শন দিয়াগোর সাথে। তারপর সিনেমার গল্পর মত ঘটতে থাকে একের পর এক ঘটনা।

দিয়াগোকে দোকানের পন্য ও টাকা চুরির দায়ে জেলে দেওয়া হয় । সবই করে শ্যারনের বাবা। মেয়েকে বিয়ে দেয় এক ধনকুবের সাথে। কিন্তু শ্যারন সুখী হতে পারেনি। সে পালিয়ে যায় সেই ধনকুরের সৎ পুত্রের সাথে কিন্তু সেই ছেলে যে উভয়কামী সেটা বুঝতে পেরে সেখান থেকেও উধাও হয়ে যায় শ্যারণ তারপর তার আর খোঁজ পাওয়া যায় না। এদিকে জেলে বসে শ্যারনের এই পরিনতির কথা জানতে পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় দিয়াগো। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি পুলিশি নির্যাতনেই মৃত্যু হযেছে দিয়াগোর। আর এর নেপথ্যের নায়ক শ্যারনের বাবা। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে উন্মাদ হয়ে সে একান্ড করেছে।

এত ঘটনা আর ছেলে হারানোর বেদনার চাপ নিতে পারেনা আমার সহজ সরল মা। একদিন ঘুম থেকে জেগে দেখি মরে পরে আছে শোবার ঘরের ফ্লোরে। হয়তো মৃত্যু কালে প্রবল তৃষ্ণা পেয়েছিল টেবিলে থাকা গ্লাসের জল হাতরাতে গিয়ে পড়ে যায়। একা অনন্তের পথে যাত্রী হন আমার প্রিয় মা। হয়তো স্বর্গে গিয়ে পুত্রদের কাছে পেয়ে পুত্র শোক ভুলেছেন। পুত্র ও স্ত্রী বিয়োগে বাবা নিশ্চুপ হয়ে যান। পাগলের মত হয়ে যান তিনি। হঠাৎ হঠাৎ কি যে মনে হতো দৌড়ে রাস্তায় চলে যেতেন। একদিন রোড এ্যাকসিডেন্টে তিনিও জীবন যন্ত্রনা থেকে মুক্তি নিয়ে পাড়ি জমান পড়পাড়ে। সম্পূর্ন একা হয়ে যাই আমি। প্রথম দিকে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। তখন পাশে এসে দাড়িয়েছিল এক আরব যুবক। পরবর্তীতে ভালবেসেছিলাম সেই সিরিয়ান যুবক-ইদ্রিস দাউদকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে তার পরিবারের মতের বাহিরে বিয়ে করবেনা বলে আমাকে এড়িয়ে চলতে থাকে। বিধর্মী কোন মেয়েকে বউ হিসেবে চায় না ইদ্রিসের পরিবার। ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসে ভালবাসার রং। তারপর যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। একদিন জানতে পারি তারা স্বপরিবারে ব্রাজিল ছেড়ে সিরিয়া চলে গেছে। অথচ ওর সানিধ্য পেয়ে আমি মুসলিম হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম। সব ছেড়ে ছুড়ে সুখী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম।

তারপর এই একাকীত্বকেই বেছে নিলাম। অনেকেই কাছে আসতে চেয়েছে কিন্তু তাদের চোখে দেখেছি কামনা আর লোভ। প্রচলিত প্রেম ভালবাসা কিংবা শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে আমার তীব্র ঘৃনার জন্ম হলো। আমি স্রোতের বিপরীতে সাতরাতে লাগলাম। বিতৃষ্ণা লাগতে লাগলো জগৎ ও জীবন। আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু আমার মত শিক্ষিত ও শিক্ষিকাই যদি আত্মহত্যা করে তবে সমাজের অন্য মেয়ে গুলোর কি গতি হবে ?

সময়ের স্রোতে একাকীত্বের নৌকা ভাগিয়ে ভেসে চলেছি আমি তাই বিয়েথা করিনি একা আছি আজ অবধি।
কফির কাপ হাতে নিয়ে উঠে চলে গেলো ম্যারিনা। তারপর দুজন ঘুমাতে চলে গেলো ভিন্ন ভিন্ন কামরায়। মুহিব শুয়ে ভাবতে লাগলো ভাগ্য পৃথিবীর দুই দেশের দুটি নর-নারীকে একাকীত্বর পথে ঠেলে দিলেও সেই অসহনীয় একাকীত্বের গল্প শেয়ার কারার জন্য আবার একই ছাদের নীচে মুখোমুখি করেছে। আসলেই জীবন বড় বিচিত্র আর নিয়তির উপর তো কারো হাত নেই। তাই জীবনের রঙ্গ মঞ্চে নিজেদের ব্যর্থ অভিনেতা -অভিনেত্রী মনে হতে লাগলো।

বেশ কিছু দিন পর আবার যখন শূণ্যতা ভর করে মনে, ক্লান্তি নামে প্রত্যাহিক জীবনে, ভাল না লাগার চোরা স্রোত বয়ে যায় তনু -মনে তখন আবারও দেখা করে দুজন কথা বলে যায় যাপিত জীবনের। ম্যারিনা বলে- স্কুলে যতক্ষন থাকি সেসময়টাই ভাল যায়। শত শত ছেলে মেয়ের মুখ দেখি, কথা বলি, কথা শুনি। দিন শেষে বিহঙ্গের মত নিড়ে ফিরি ঠিকই কিন্তু দুদন্ড শান্তি পাইনা। মাঝে মাঝে রাত জাগি আর জেগে থাকে আমার সাথে আকাশের চাঁদ। তখন ভাবি অন্য আট-দশটা মেয়ের মত কেন আমার জীবনটা স্বাভাবিক হলনা। কেন একাকীত্বের অভিশাপ নিয়ে কাটাতে হচ্ছে অনন্ত দিন রাত্রি।
মুহিব বলে- তুমি সব হারিয়েছো, আমিও সব হারিয়েছি। এই পৃথিবীতে একাকী থাকার জন্যই হয়তো আমরা এসেছি। চারদিকে এত মানুষ তবুও আমরা একা। হাজার মানুষের ভিতরেও কেউ কেউ একা। স্মৃতির ধ্বংসনে নীল হই প্রতিদিন। যদি তোমার সাথে পরিচয় না হতো তবে তো মনের ভিতর জমে থাকা কথাও বলতে পারতামনা অন্য কারো সাথে।তখন আরও বেশি কষ্ট হতো, দু:খের বোঝা বাড়তো বই কমতোনা।

এমনি করেই দিন মাস বছর যায়। ম্যারিনা ভাবে মুহিবের সাথে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে চলে যাবে ঘুচিয়ে নিবে তার এক জীবনের একাকীত্ব। মুহিবও স্বপ্ন দেখে ম্যারিনাকে সাথী করে ব্রাজিলেই থেকে যাবে আমরন কিংবা মাতৃভূমিতে পাড়ি জমাবে।
কে জানে কার স্বপ্ন সত্যি হয়। ভবিষ্যতই বলে দবে ওরা একাকীত্বের অন্ধকার ঘুচিয়ে আলোর পথিক হবে নাকি আরও একাকীত্বে সাগরে ডুবে যাবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
doel paki অভিনন্দন।
doel paki what a nice story. very good.
ধন্যবাদ আপনাকে পাশে থাকার জন্য।
hrchowdhury গল্পুটায় আলাদা একটা বৈচিত্র আছে। সুন্দর লিখন।
ফয়জুল মহী চমৎকার উপস্থাপন করেছেন বেশ ভাল লাগলো।
সর্ব প্রথম আপনার উপস্থিতি ভালোলাগা বাড়িয়ে দিলো। ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।
Dipok Kumar Bhadra সুন্দর লিখেছেন।
ধন্যবাদ দাদা। শুভকামনা জানবেন।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

দুই দেশের দুই তরুণ তরুণী যারা ডুবে আছে একাকীত্বের অন্ধকারে নিয়তি তাদের মুখোমুখি করে দেয় গল্পে সেই কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে।

২৪ আগষ্ট - ২০২০ গল্প/কবিতা: ৮৭ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.১

বিচারক স্কোরঃ ২.১ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ৩ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪