অভিমানের কাঁটা

অভিমান (এপ্রিল ২০২১)

মোঃ মাইদুল সরকার
  • 0
  • ৩১
উত্তরার দুই নং সেক্টরের সাথেই সানমুন স্কুল তার বিপরীত পাশের পাঁচ তলা ভবনের তৃতীয় তলার পুরোটাই ‘দিশা এ্যাপারেলস’ বায়িং হাউজের অফিস। সোহান আর তাঁর বন্ধু রেজা দুজনেই ‘দিশা এ্যাপারেলস’ –এ চাকরি করছে বছরখানেক ধরে। মিরপুর থেকে বেড়িবাধ হয়ে আব্দুল্লাহপুর যায় নির্দিষ্ট গনপরিবহন। আব্দুল্লাহপুরের আগে কামারপাড়া দুই বন্ধু নেমে যেত এবং তারপর হেটেই সকাল দশ ঘটিকার মধ্যে অফিসে পৌঁছে যেত। মাঝে মাঝে ফিরতে পথে বেশি রাত হয়ে গেলে গাড়ি পেতে সমস্যা হতো তার উপর রান্না বান্নার ঝামেলাতো আছেই। প্রতি রাতে মেসে ফিরে নিজেদের রান্না করতে হতো। রেজা আবার রান্নায় এক্সপার্ট। যেদিন দেরি হয়ে যেত ফিরতে ফিরতে ভাতের সাথে সটকার্টে একটা দুটো তরকারির পদ করে ফেলতো। রাতের খাবার খেয়ে হয়তো নামাজ নয়তো আড্ডা তারপর কম্পিউটারে একটু বিনোদন বা দরকারি কাজ শেষে ঘুম। নিয়মে বাধা জীবনে যখন অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছিল তখনই রেজার সরকারি চাকরিটা হয়ে গেল।

শের-ই-বাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এরই মধ্যে জয়েন করেছে রেজা। সোহানও চেষ্টা করছে সরকারি চাকরির জন্য। টাকা জোড় ও লবিং ছাড়া এখন সরকারি চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন। তবু চেষ্টা আর ভাগ্যই একদিন বদলে দিবে সোহানের জীবন।

সোহান তখন একলা পাখির মত নিত্য আসা-যাওয়া উত্তরা টু মিরপুর আর মিরপুর টু উত্তরা। একলা আসা যাওয়া ভাল লাগেনা। আগে যেখানে কথায়, গল্পে পথ ফুরিয়ে যেত এখন একলা শূণ্যতায় পথ যেন দ্বিগুন মনে হয়। একদিন হুট করে দুবন্ধু আলাদা হয়ে গেল। রেজা থেকে গেল মিরপুর আর সোহান চলে এলো উত্তরা। প্রতিদিন প্যান্ট আর পাঞ্জাবী পড়েই অফিস করে সোহান এটা নিয়েও অফিসে কলিগরা ফিসফিস করে। সোহান বিষয়টা জানে যদিও সরাসরি তাকে কেউ কিছু বলেনি। কে কি ধরনের পোষাক পড়বে এটা যার যার ব্যাপার। কিন্তু কিছু মানুষ এগুলো নিয়েও ফিসফাস করে হাস্য কর।

‘দিশা এ্যাপারেলস’ এর ফ্যাক্টরি হচ্ছে তুরাগ থানার ভিতরে গ্রাম্য এলাকার কাছে। সোহানকে মাঝে মাঝে কাজের খাতিরে ফ্যাক্টরিতে যেতে হয়। বিশাল ফ্যাক্টরিতে প্রতি তলায় শত শত নারী পুরুষ কাজ করছে। দ্বিতীয় তলায় হিসাব শাখার কাচে ঘেরা রুম। এখানে তিনটি টেবিলে দুটি লেপটপ। হিসাবের কাজ করেন সোহেল। একা তার পক্ষে কুলিয়ে উঠা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। তাই এমডি স্যার একদিন সোহানকে ডেকে বললেন- কি খবর সোহান সাহেব কাজ কর্ম কেমন চলছে ?

-জ্বী স্যার ভাল।

-তুমিতো বেশ একটিভ। কিন্তু ফ্যাক্টরির অবস্থা ভাল নয়। ওখানের হিসাবটা আরও আপডেট হওয়া প্রযোজন। এখন থেকে তুমি সপ্তাহে দুই দিন ফ্যাক্টরিতে বসবে হিসাব দেখবে সোহেল সাহেবের সাথে।

-কিন্তু স্যার…


-কোন কিন্তু নয়। মন দিয়ে কাজ করো। স্যালারী বেড়ে যাবে।

আর কোন কথা বলার সুযোগ না পেয়ে মন ভার করে সে বেরিয়ে আসে এমডি স্যারের রুম থেকে। বাকিটা দিন সে আর কাজে মনোযোগ দিতে পারেনি সেভাবে। সত্যি সত্যি পরের মাস থেকে সোহান এর স্যালারী বেড়ে গেলো। তবুও সোহান খুশি নয়। একটা চাপা অভিমান সে পুষে রাখে বুকের ভিতর। ফ্যাক্টরীর পরিবেশ তার পছন্দ নয়। এখানে নাস্তার ব্যবস্থা নেই। ওয়াশ রুমও দূরে। কাছে কোথাও মসজিদ নেই। নীচ তলায় কয়েকজন মিলে একত্রে নামজ পড়ে নিতে হয়। রাস্তা ভালো নয় বিধায় যাতায়াতেও অসুবিধা। বৃষ্টি হলে যাচ্ছে তাই অবস্থা হয় । রাস্তায় পানি জমে যায় আর কাঁদাতো আছেই।

ফ্যাক্টরীতে ওয়ার্কাররা সকল সাতটার মধ্যে চলে আসে আর সোহানকে যেতে হয় আটটার মধ্যে। দ্বিতীয় তলার ফ্লোরের শেষ মাথায় ম্যানেজারের রুম। এ মাথা থেকে ও মাথা হেটে যাওয়ার সময় অনেক মেয়েই আড় চোখে তাকায় সোহানের দিকে। না বুঝার ভান করে সে চলে যায় বুক টান করে। ম্যানেজার মাঝে মাঝে নতুন কারো সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় বলে-মায়াবী চেহারার এই সোহান সাহেব কিন্তু আমাদের একাউন্স দেখেন।

দুই মাস না যেতেই আবারও এমডি স্যার তলব করেন সোহানকে। এবার সরাসরি জানিয়ে দেন যে এখন থেকে প্রতিদিন ফ্যাক্টরীতেই বসতে হবে সোহানকে। ওখানের সম্পূর্ণ হিসাবের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। এবার সোহানের অভিমানটা আরও বেড়ে যায়। সে আগের মতই দু’জায়গায় অফিস করছে।

তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর বায়িং হাউজের প্রধান হিসাব রক্ষক আমজাদ সাহেব একদিন বিকেলে চা খেতে খেতে বললেন- সোহান আপনাকে আমার কিছু কথা না বললেই নয়। আপনি মানুষ হিসেবে ভাল তাই আপনাকে আমার ভাললাগে। আপনার কাজ ও ব্যবহার দুটোই ভাল। আমরাতো ভাই পরের অধীনে চাকরি করি। আপনি যে ওখানে মানে ফ্যাক্টরীতে যেতে চাননা সেটা যেমন আমি বুঝ তেমনি এমডি স্যারও বুঝেন কিন্তু কোন উপায় নেই। আপনাকে যেতেই হবে। তা না হলে আমাকে কথা শুনতে হবে প্রতিদিন।

এমডি স্যার আপনার পরিচিত তাই হয়তো এতদিন ধরে চুপ করে আছেন। অন্য কেউ হলে চাকরি চলে যেত। কিন্তু আপনার জন্য সবারই অনুভূতিটা অন্যরকম। আশা করি আপনি ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন।

-না আমার জন্য আপনাকে কথা শুনতে হবেনা। আমি আগামীকাল থেকেই ফেক্টরীতে নিয়মিত ডিউটি করবো। ভেবেছিলাম হয়তো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে।

-সেটাই ভাল ওখানে কাজ করতে থাকেন। নতুন কাউকে ফ্যাক্টরীতে নিয়োগ দিলে আপনাকে আবার এখানে নিয়ে আসবো।

-ধন্যবাদ। যদি ভাগ্যে থাকে আর আসবো।

সোহান এতদিন ইচ্ছে করেই যায়নি ফ্যাক্টরীতে সে বিষয়টা পর্য়বেক্ষণ করেছে । আশায় থেকেছে যদি তাকে এখানেই রেখে দেয়। সে জানে তাকে অফিসের বস্ ল্যাবেলের সবাই পছন্দ করে। তার কাজের সুনাম আছে তাই হয়তো এত দিন মেনে নিয়েছে অন্য কেউ হলে হয়তো চাকরীই চলে যেতে।

সোহান যদিও রাজি হয়েছে তবুও গভীর গোপন অভিমানে ভরে গেছে মনের জমিন। কাউকে বলে বা বুঝিয়েও কোন লাভ নেই আর। এখানের পাট তুলে তাকে চলে যেতে হবে ফেক্টুরীতে। নিয়তি বুঝি এমনই আয়োজন সাজিয়ে রেখেছিল তার জন্য।

ফেক্টুরীতে কাজে যোগদানের পর আস্তে আস্তে সে মানিয়ে নিচ্ছে পরিবেশের সঙ্গে। মন খারাপ হলে জানালাটা খুলে দিলে চোখে পড়ে বিশাল আকাশ। আর খোলা জায়গা হওয়ায় ঝড়ের মত বাতাস হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে ভিতরে। বাতাস আনে শরীরে প্রশান্তি আর আকাশ আনে মনের সতেজতা। তারপর নিয়মের বেড়াজালে আবারও ঢুকে পড়ে সোহান। এমন করেই দিন, মাস কেটে যাচ্ছে।

সোহানের সামনে মেশিনের সারিটা হলো সুইং সেকশন। পুরো ফ্লোর জুড়েই মেশিনের সারি। সেলাইয়ের শব্দ যেন ছন্দ তুলে আর তালে তালে কাজ করে যাচ্ছে নারী-পুরুষ সকলে। সুইং সেকশনের একেবারে প্রথমে যে মেয়েটা কাজ করে তার নাম আয়শা। গায়ের রং ফর্সা কিন্তু নিখুঁত সুন্দরী নয়। সে আড় চোখে মাঝে মাঝে সোহানের দিকে তাকায়। একটা কথা জিজ্ঞেস করবে বলে কদিন থেকে ভাবছে কিন্তু কিছুতেই বলতে পারছেনা।


আজকে যে করেই হোক বলবে বলে ঠিক করেছে আয়শা। সোহান জানালা খুলে বাহিরে তাকিয়ে আছে। আয়েশা আস্তে করে ভিতরে ঢুকে সালাম দিল।

সালামের জবাব দিয়ে সোহান জানতে চাইল তার কি প্রয়োজন।

আয়েশা বলল- আসলে অফিসিয়াল কোন প্রয়োজন আমার নেই। আমি কি আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি ? মাথা নেড়ে সোহান বলল-হ্যা। অবশ্যই।

মেয়েদের এখানে কোন নামাজ পড়ার ব্যবস্থা নেই। আমি কি এমন খোলা জায়গায় কোন এক কোনে নামাজ পড়তে পারবো ?

না খোলা জায়গায় নারীদের নামাজ পড়া ঠিক হবেনা। তারচেয়ে বরং বেবি কেয়ার রুমে পড়তে পাড়েন। সেখানে যেহেতু কোন পুরুষ নেই তাই নামাজ পড়তে কোন অসুবিধা হবেনা। তার পর আয়েশার বাড়ি কোথায়, পরিবারে কে কে আছে সব জেনে নিল সোহান।


সোহানের কথা শুনে আয়েশার ভাললাগলো। সে বলল- আমিও তাই ভাবছিলাম। আসলে আমি মোল্লা বাড়ির মেয়েতো মোটামুটি জানি ধর্ম-কর্মের ব্যাপারে। কপাল দোষে আজকে গার্মেন্টস -এ কাজ করি।

সোহান বলল-ও তাই, জানা থাকাটা ভাল। আপনার যদি আরও কিছু জানার থাকে তাহলে জেনে নিতে পারেন বা পরে অন্য কোন সময়ে আসতে পারেন। আর কাজতো কোনটাই ছোট নয়। ছোট থেকেই বড়। ছোট ছোট কাজের সাফল্যেই একদিন মানুষ উন্নতীর শিখরে পৌঁছে যায়।

ঠিকা আছে পরে আবার কোন ব্যাপারে খটকা লাগলে আপনারে জিজ্ঞেস করবো। আবারও সালাম দিয়ে আয়েশা চলে যায় তার জায়গায়।

আয়েশাও ভাবে ঠিকই কইছে মানুষটায়। আমিও একদিন এই সুইং সেকশনের ইনচায³ হবো। সে কাজে মন দেয়। সোহানকে দেখলেই তার বাবার কথা মনে পড়ে। বাবা বলেছিল-পরহেযগার একটা ছেলে হবে তোমার স্বামী। যেমন আধুনিক তেমনি ধার্মীক। ধৈর্য ধর মা। ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয়। আমি ভাল একটা পোলার সন্ধান পাইছি।

আয়েশা ভাবে সেই ভাল পোলা হয়তো সোহানের মতই হতো। তবু তার দুঃখ নাই। ভালবাসার মানুষটির সাথে সে সংসার করতে পারছে, এক জীবনে এটাই বা ক’জন মেয়ে পারে।

সোহান ভাবে আসলেই ভাগ্য কাকে কোথায় নিয়ে যায় তা কেউ বলতে পারেনা। তার নিজেরও কি এখানে আসার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্য তাকে এখানে নিয়ে এসেছে।

এইচ আর সেকশনের প্রধান শাকের সাহেবের সহকারী হানিফ এখানকার স্থানীয় ছেলে। আয়েশার স্বামী সজলকে সে চিনে। একসময় এই ফ্যাক্টরিতেই সজল কাজ করতো। এখন উত্তরা দশ নং সেক্টরে অন্য একটি কোম্পানীতে চাকরি করে।

হানিফের সাথে একদিন চা খেতে খেতে কথার ছলে জিজ্ঞেস করেছিল আয়েশার স্বামী সজলকে হানিফ চিনে কিনা। হানিফ বলেছে –চিনিতো। কোন তথ্য লাগবো।

-না কোন তথ্যের জন্য নয়। এমনি বলেছি। আয়েশা মেয়েটাকে দেখে ও কথা বলে মনে হয়েছে মেয়েটা ভাল। ভাগ্যে আর অভিমানেই নাকি সে আজ এখানে। তাই জানার আগ্রহ বোধ করছি তার স্বামীটা ভাল মানুষ কিনা ?


-শোনেন ভাই গার্ন্টস ভাল জায়গা না। এখানে সুন্দরী মাইয়ারা টিকতে পারেনা। হয় প্রেম নয় বিয়ে। দুটোর একটা
করতেই হয়। ছেলেরা সহজে মেয়েদের পিছু ছাড়ানে।

-হুম। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েরা ঝুলে পড়ে ছেলেদের গলায় । নয়তো চাকরি ছেড়ে চলে যায় তাই না ?

-হ ঠিক কইছেন সোহান ভাই। দেহেন না কয়দিন পর পর নতুন নতুন মাইয়া আসে আবার চইলাও যায়। তয় আয়শারে এই লাইনে আনছে সজল।

-বলেনতো ওদের কাহিনিটা। আমার একটু জানা দরকার। কেমন করে পাল্টে যায় তরুনীর জীবন হয়ে উঠে গার্মেন্টস কর্মী ?

হানিফ বলতে থাকে- সজল আমার বাসার পাশেই ভাড়া থাকে। সেই সুবাধে ওর সাথে বন্ধুর মত সম্পর্ক আমার। আয়েশা আর সজলের জীবনের টুকিটাকি নানান কথা উঠে আসে হানিফের বয়ানে। সজল আর আয়শার বাড়ি একই গ্রামে। সজল আমাগো এহানে চাকরি করতো। আর বাড়িতে গিয়া ভাব নিত শহরে ভাল মানের জব করে। আয়েশা তো আর ভিতরের খবর জানেনা। সজলরে দেইখা টাশকি খায়। সজলও আয়েশারে ভালবাসে। দজনের ঘারতর প্রেম হয়। কিন্তু মোল্লা বাড়ির মাইয়া আয়শা। গ্রাম দেশ ঘটনা জানাজানি হতে সময় লাগেনা।

জানেনইতো কুকথা বাতাসের আগে ছড়ায়। টের পেয়ে আয়েশার পরিবার গোপনে বিয়ে ঠিক করে আয়েশার। আয়েশাও কম চালাক নয়। সে সবই বুঝতে পারে। সে তার ভাইকে সজলের কথা বলে। কিন্তু ভাই বলে দেয়- কোন গার্মেন্টএ কাজ করা গোলার লগে তার বোনকে বিয়া দিবেনা।

অনেক বুঝানোর পর ব্যর্থ হয়ে আয়েশা অভিমানে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। বিয়ে যদি করতেই হয় তবে সে-সজলকেই করবে।

একদিন রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে গেছে বাহিরে কেবল গাছের পাতা বাতাসে নড়ার শব্দ। আয়েশা জেগে আছে, তার চোখে ঘুম নেই। একটা বিশেষ শব্দ শোনার জন্য সে অধীর হয়ে অপেক্ষা করছে।

বাহিরে প্যাঁচার ডাকের শব্দ হলো। পর পর তিন বার। খুশিতে ভরে গেলে আয়েশার মন। তাহলে তার ভালবাসার মানুষটি এসেছে। অতি সন্তর্পনে আয়েশা ঘর থেকে বেড়িয়ে উত্তর দিকের ঘন গাছ-পালার আড়ালে হারিয়ে গেল।

সজলও অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে। আর চারদিকে নজর রাখছে কেউ দেখে ফেলে কিনা। কোথাও কোন শব্দ হলেই ধক করছে উঠছে হার হৃদপিন্ড।

অবশেষে আয়েশার পা আওয়াজ পেয়ে সংকামুক্ত হলো পলাতক প্রেমিক। সেই আঁধার রাতে প্রেমিক প্রেমিকা হাত ধরে মংমনসিংহ থেকে চলে আসে রাজধানী ঢাকায়।

তারপর বিয়ে করে সংসার শুরু করে। কিন্তু শহরে একজনের ইনকাম দিয়ে সংসার চালোনো কঠিন বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের।

আয়েশা বুদ্ধিমতী মেয়ে। সুযোগ বুঝে একদিন সজলকে বলে-সে ও কাজ করতে চায়। মেশিন চালানো জানে-তাকেও যদি সজলদের ফ্যাক্টরীতে কাজ ঢুকিয়ে দিতে পারে তবে সে অনায়েসে কাজ করতে পারবে। কিন্তু সজল রাজি হয়না।

দিন দিন যখন পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে তখন সজল বাধ্য হয়ে আয়েশাকে গার্মেন্টস-এ নিয়ে আসে। আর সজল অন্য একটা গার্মেন্টস চলে যায় বেশি বেতন ও সুযোগ সুবিধার আশায়।

আয়েশার সাথে তার পরিবার আর কখনো যোগাযোগ করেনি। তাদের এক কথা যে মেয়ে রাতের আঁধারে পর পরুষের সাথে পালিয়ে যেতে পারে সে মেয়ে আমাদের কেউ নয়। রাগে, অভিমানে আর কখনো আয়েশার মুখ তার দেখেনি। আয়েশাও ফিরে যায়নি। অভিমানের কাঁটা বিধলে অন্তরে সহজে তা সরানো যায় না।

আর যায় না বলেই সাজানো জীবন হয়ে যায় এলোমেলো।

কাহিনি শুনে সোহান বলল-ঠিকই বলেছেন ভাই। অভিমানের কাঁটায় সৃস্ট ক্ষত থেকে অবিরাম ঝড়তে থাকে রক্তের ঝর্নাধারা। খকনো তা শুকিয়ে যায় প্রিয়জনের মিলনে আবার কখনো তা শুকায়না কেবল বিরামহীন রক্তক্ষরণ।

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আসে মনে পড়ে সোহানার পান পাতার মত মুখ। অভিমান নিয়ে গেছে দুজনারে দুপ্রান্তে হরণ করেছে সুখ। কেন হৃদয় থেকে তুলে ফেলা যায়না চিরতরে অবিমানের কাঁটা। চোখের সামনে যেন খেলা করে শত শত কেন নামের বুদ্ বুদ্। যা ইচ্ছে করলেই সরিয়ে দেওয়া যায় না।

কে জানে অভিমান ভুলে ফিরে গেলে সোহানাকে পেয়ে জীবন হতো অন্যরকম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Dipok Kumar Bhadra খুব সুন্দর লিখেছেন।
অনুপ্রাণিত করলেন দাদা। ধন্যবাদ।
ফয়জুল মহী খুবই ভালো লাগলো সত্যি মনোমুগ্ধকর উপস্থাপন
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

অভিমান মানুষ কোথায় নিয়ে যায় গল্পে তা তুলে ধরা হয়েছে।

২৪ আগষ্ট - ২০২০ গল্প/কবিতা: ৯৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪