স্বপ্নার কোল জুরে সারা পৃথিবী আলো করে উত্তর দিগলদী গ্রামের মতলব থানার সলেমানের বাড়ীতে এক নতুন অতিথি এসেছে। যার আগমনে সলেমানের চোখে মুখে আনন্দের বন্যা বইছে,চোখের কোনে আনন্দ অশ্রু দেখা যাচ্ছে অনেকের। অনেক শখ করে নতুন অতিথির নাম রাখা হলো "সজীব" তাকে নিয়ে স্বপ্না নতুন স্বপ্ন সাজাচ্ছে।এই স্বপ্ন তার নতুন জীবনের সূচনা করে দিলো,তাকে নতুন করে ভাবতে শিখালো। এ ভাবে করে "সজীব" ছয় মাসে পা দিলো। ঢাকায় বড় খালা ও নানুর বাড়ীতে বেড়াতে এলো "সজীব"তার বাবা মায়ের সঙে,ও দিকে নানুর আনন্দের শেষ নেই এতো সুন্দর একটি ফুটফুটে শিশু যার চেহারায় রয়েছে মায়া ভরা হাঁসি,চোখে রয়েছে ভালোবাসার অনুভূতি। তাকে যে কেউ দেখবে মায়ভরা চেহারার কাছে হার মানবেই। আজ হটাৎ বিকালের আকাশে কালো মেঘ,স্বপ্না ও সলেমানের পৃথিবীকে যেন অন্ধকার করে দিলো,কি যেন এক ব্যাধি "সজীবের" জীবন প্রদীপ কে দুর্বল করে দিলো ,আর তাই তাকে ঢাকার এক হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো। সবাই ডাক্তারের কাছে প্রশ্ন করে কি হয়েছে তার?উত্তর এলো তাকে এক্ষনি জরুরী ভাবে ভর্তি করাতে হবে। ফুট ফুটে শিশুটি কয়দিন আগেও হাসতো,খেলত,আজ সে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। তার অপারেশন হলো,পুরো সুস্থ না হতেই আবার দেখা দিলো নতুন করে সমস্যা,ঐ অপারেশনে পচন ধরেছে,এ ভাবে এক মাস হলো খাওয়া বন্ধ,অক্সিজেন চলছে,নাকে পাইপ,প্রস্রাবের রাস্তায় পাইপ,পেটে অপারেশনের কাটা জায়গার পাসে দিয়ে দুটি পাইপ যা দিয়ে একটি স্যালাইন চলছে অন্যটি দিয়ে রক্ত চলছে।ওহ্!!! কি ভয়ংকর পরিস্থিতি এতোটুকুন শিশুর ভাগ্যে এ কেমন কষ্ট রেখেছেন আল্লাহ? হাসপাতালে যেই একবার শিশুটিকে দেখেছে সে কিছুতেই তার চেখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। যখনি শিশুটির জ্ঞান ফিরে আসে তখনি "ক্ষুধার" জালায় ছটপট করছে। ওকে খাবার দেওয়া নিষেধ,স্যালাইন হলো ওর খাবার,এমনকি একফোঁটা মায়ের দুধ তার জন্য হারাম হয়ে গেছে,কারণ সে অপারেশন এর রোগী একমাসের "ক্ষুধায়"শিশুটির এমন অবস্থা যা নিজে চোখে না দেখে বিশ্বাস করা যায়না। তার সামনে যখন কেউ আসে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে তার ঐ মনকাড়া চোখ দুটো দিয়ে। আর "ক্ষুধার" যন্ত্রণায় তার নিজের হাত খাওয়ার চেষ্টা করে আর মুখ টিকে জিহ্বার সাথে এমন ভাবে নাড়াচাড়া করছে যেন সারা পৃথিবীর সব কিছু সে খেয়ে ফেলতে পারবে । এমন সময় ডাক্তার বলল তার রক্ত লাগবে আবার অপারেশন করতে হবে এবি+ রক্ত খোজ হচ্ছে কোথাও নেই এবি+ রক্ত ঠিক তখনি হাসপাতালের পাসের ক্যাবিনের এক মেয়ে শিলা (ছদ্মনাম) এসে তার রক্তের জন্য বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান করলো। অনলাইনেও চেষ্টা করলো কোথাও রক্ত মিলল না। কয়েক ঘণ্টা পর বাহির থেকে রক্ত আনা হলো এর মধ্যে দুই এক জায়গা থেকে ফোন এলো এবি+ রক্ত পাওয়া গিয়েছে,কিন্তু কি হবে রক্ত দিয়ে।"সজীবের" অবস্থা আরো করুণ কান্নাকাটির ভিড় পরে গেল ,তখনি আবার ২য় অপারেশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হলো "সজিব" কে এখন আবার অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক। আবার "সজিব" এর বাবা-মা আবার স্বপ্ন দেখে তাদের ছেলে "সজিব" আবার ফিরে আসবে হাসবে,দুষ্টুমি করবে,কতো আশা তাদের মনে কিন্তু নিঠুর নিয়তি তাদের স্বপ্নকে আর জাগরিত করতে দিলোনা। মৃত্যু "ক্ষুধা" তাকে গ্রাস করলো,"সজিব"এর জীবন প্রদীপকে মৃত্যু নামের "ক্ষুধা" টি অকালে ঝড়িয়ে দিলো,শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো "সজিব"হাসপাতালে তার জীবন প্রদীপ নিভে গেলো চিরতরে। আর কোনদিন ফিরবেনা মায়ের কোলে,আর হাসবেনা,আর "ক্ষুধার"যন্ত্রণায় ছটপট করে হাত খাবেনা "সজিব", "ক্ষুধা" নামের সয়তানটি আর তাকে তাড়া করবেনা,খাওয়ার জন্য ময়ের দিকে আর তাকাবেনা। "ক্ষুধা" কেন এতো নিষ্ঠুর কেউ বলতে পারো কি?কেন সে মানুষ কে এভাবে কেরে নিয়ে তার "ক্ষুধা" মেটায়?
কেন? কেন? কেন?
বিঃদ্রঃ আমার প্রিয় সম্মানিত লেখক,পাঠক এই লিখাটি কোন বানানো নয়,না কোন মনগড়া কাহিনী। এটা একটি শিশুর জীবনের বাস্তব ঘটনা যা আমি নিজেই ছিলাম শিশুটির মায়ের পাশে এবং আমার জীবনে প্রথম একটি গল্প লিখা এটি আমি মূলত কবিতা লিখে থাকি। আপনাদের যদি ভাল লাগে আমার লিখা সার্থক হবে এবং আগামীতে আমাকে আরো গল্প লিখার প্রেরণা যোগাবে ইনশাল্লাহ।
২০ জানুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
২৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪