আমার প্রত্যাশা ৷

প্রত্যাশা (আগষ্ট ২০২০)

masud
  • ২৬
রাকিব তোমার চাকুরীর খবর কি? না দোস্ত আমার চাকুরি হবেনা, কেন রাকিব? কি কারণে হবেনা? দোস্ত চাকুরি নিতে প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন, কেন কি কারণে এত টাকার প্রয়োজন? দোস্ত বর্তমান চাকুরির প্লাটফর্ম এমন এক পর্যায়ে দাড়িয়েছে, সমাজে চাকুরী যেন সোনার হরিণ হয়ে গেছে, ঘুষ ছাড়া চাকুরী কিছুতেই হয়না, বর্তমান চাকুরী ঘুষের প্রতিযোগিতায় চলে, ঘুষ ছাড়া চাকুরীর কথা কল্পনা করাও অসম্ভব ব্যাপার, তাই আমার ঘুষ দেওয়ার মতো ১০ লাখ টাকা নেই, তাই আমার চাকুরি হবেনা, দোস্ত তুমি তো জানো আমার আব্বু আমাদের দুই ভাইকে লেখা পড়া করাতে অনেক টাকা ব্যায় করেছে, আবার আমার বড় আপুকে, আব্বু অনেক দিন ধরে বিয়ে দিতে চায়, কিন্তু বিয়ের সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যায়, শুধু যৌতুকের কারণে বিয়ে ভেঙে যায়, এইতো গত দু-মাস আগে আব্বু আমার বড় বোনের বিয়ে দিয়েছে অন্যের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা সুদের উপর নিয়ে৷

দোস্ত বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা এমন হয়ে গেছে যৌতুক ছাড়া মেয়েদের বিয়ে দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে, তাই আব্বু অপারগ হয়ে অন্যের কাছ থেকে সুদের উপর টাকা নিয়ে বোনের বিয়ে দিয়েছে। তাহলে দোস্ত বলো আমার আব্বু আমার চাকুরির ঘুষের জন্য ১০ লাখ টাকা কোথায় পাবে? ১০ লাখ টাকা কি চাট্টিখানি কথা? আমাদের যা সম্পত্তি আছে তা বিক্রি করলেও হবেনা, তাহলে আমার আব্বু আমার চাকুরির জন্য ১০ লাখ টাকা কোথায় পাবে?

আবার আমার আম্মু, আব্বুর ২ লাখ টাকা সুদের উপর নেওয়ার কথা শুনে আম্মু ব্রেন স্টক করে মেডিকেল আছে, ডাক্তার বলতেছে আমার আম্মুর চিকিৎসা করতে অনেক টাকা লাগবে, আব্বু এখন এত টাকা কোথায় পাবে ভেবে কোন কূল কিনারা পাইতেছে না, আজ যদি আমার একটা চাকুরি থাকতো তাহলে আজ আমি আব্বুর কঠিন বিপদের সময় পাশে দাড়াতে পারতাম, আব্বুর মানুষিক যন্ত্রণা হয়তো কিছুটা কমে যেত৷

কিন্তু হায় আমার দুর্ভাগ্য জীবন! আব্বুর বিপদের পাশে আমি দাড়াতে পারলাম না, আব্বু আমাকে এত টাকা পয়সা খরচ করে লেখা পড়া করে তার কি মুল্য হলো? যদি আমি তার বিপদের পাশে দাড়াতে না পারি? যদি আমি তার সেবা যত্ন নিতে না পারি, যদি আমার মা মেডিকেলের বেডে অসুস্থ অবস্থায় কাতরে কাতরে মরে টাকা পয়সার অভাবে চিকিৎসার কারণে, যদি আমার বাবা সুদের টাকার শোকে মানুষিক ভাবে অসুস্থ হয়ে থাকে প্রতি নিয়তে, যদি আমি তাদের মানুষিক যন্ত্রণা দুরীভূত করে দিতে না পারি, তাহলে আমি তাদের কিসের সন্তান? আর তাদের বা কি লাভ হলো এত পরিশ্রম করে ঘাম ঝরিয়ে আমাকে লেখা পড়া করিয়ে? যদি আমি তাদের বিপদের সময় পাশে দাড়াতে না পারি?

আজ আমার অন্তরে বড় প্রত্যাশা কামনা আকাঙ্ক্ষা যাগে, কবে এ সমাজ ব্যবস্থা ভালো হবে? কবে এ সমাজ থেকে সুদ ঘুষ দুর্নীতি দুরীভূত হবে? কবে আমার মতো হাজারো গরীব অসহায় বেকারত্ব যুবক ঘুষ ছাড়া চাকুরী পাবে? কবে তারা তাদের পরিবারের নূন্যতম চাহিদা মিঠা-তে পারবে? কবে এ সমাজ থেকে যৌতুক প্রথা দুরীভূত হবে? কবে আমার বোনের মতো হাজারো গরীব অসহায় বোনের যৌতুক ছাড়া বিয়ে হবে? কবে সমাজের গরীব অসহায় অসুস্থ ব্যক্তিরা সরকারি বেসরকারী মেডিকেল হাসপাতালে বিনামূল্যে সু-উচ্চ চিকিৎসা পাবে? কবে এ সমাজ থেকে গরীব অসহায় অসুস্থ ব্যক্তিরা চিকিৎসার অভাবে মারা না যাবে? কবে এ সমাজ থেকে রাহাজানি চাঁদাবাজি রংবাজি ছিনতাই ধর্ষণ জুলুম নির্যাতন খুন গুম হত্যা বন্ধ হবে? কবে এ দেশের মানুষ গুলো সুখ শান্তিতে প্রতিটি প্রহর কাটাতে পারবে? কবে এ দেশের মানুষ গুলো সুখ শান্তিতে একটু ঘুমাতে পারবে? কবে এ দেশের মানুষের মাঝে সুখের হাসি ফুটবে? এই আমার প্রত্যাশা কামনা আকাঙ্ক্ষা সমাজের সকল জনতা ও মহোদয় গনের কাছে৷
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
masud ধন্যবাদ
রুহুল আমীন রাজু সুন্দর প্রকাশ, শুভকামনা।
ফয়জুল মহী অসাধারণ  দারুণ প্রকাশ । বাহ নিপুণ  রচনাশৈলী ভীষণ ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ
আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন ভালো লেখতে পারি

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

সমাজে যৌতুক প্রথা একটি মারাত্মক ব্যাধি, সমাজে চাকুরীর বিনিময়ে ঘুষ প্রথা একটি মারাত্মক ব্যাধি, সমাজে চিকিৎসা নিয়ে দুর্নীতি এ একটি মারাত্মক ব্যাধি, এ ব্যাধি গুলো নিধন করা আমাদের সবার একান্ত প্রয়োজন, এ ব্যাধি গুলো সমাজ থেকে নিধন না হলে সমাজ আরো ধ্বংসের দিকে চলে যাবে, বিশেষ করে তারাই এ ব্যাধি গুলো সমাজ থেকে নিধন করতে পারবে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে, অথবা যাদের হাতে সমাজের নেতৃত্ব আছে, তারাই শুধু এ ব্যাধি গুলো সমাজ থেকে নিধন করতে পারবে, তাই আমি তাদের প্রতি আবেদন করি তারা যেন এ ব্যাধি গুলো নিধনে আগ্রহী ভূমিকা পালন করে ৷

২২ জুন - ২০২০ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪