অভিশপ্ত জীবন

কষ্ট (জুলাই ২০২১)

Dipok Kumar Bhadra
  • 0
  • ৩১
আর পারছি না।তৃষ্ণায় প্রাণ যায় যায় অবস্থা। এ আমার কি দশা হল,কেনোই বা হলো।এখন আমি কি করব।মা আমার জন্য অপেক্ষা করছে যে।হায় স্রষ্টা! আমায় বাঁচিয়ে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দাও। মা যে আমার খুব কষ্ট পাচ্ছে । বিমানটা যখন বিধ্বস্থ হতে যাচ্ছে,তখন সৈকত বুঝতে পেরে একা একাই প্রলাব বকছে।
সৈকতের বাবা জহির মন্ডল একটি ছোট্ট গ্রামে বসবাস করেন। সাংসারিক অবস্থা খুই খারাপ। দোচালা একটি টিনের থাকার ঘর এবং খড়ের তৈরী একটা রান্না ঘর ছাড়া তাদের জমিজমা কিছুই নেই।একটা গরু বড়গা নিয়ে পালিত গাভী থেকে একটা বকনা বাছুর হয় ,তার থেকে এখন সেই বাছুরটি বড় গাভী হয়েছে। গাভীর দুধ বিক্রি করে যা হয় তাই দিয়ে জহির মন্ডল কোন রকমে সংসার চালায়।তাছাড়া নিজেও অন্যের বাড়ীতে কাজ করেন।খুবই কষ্টে সংসার টা চলে।
তাঁর একমাত্র ছেলে সৈকত । সৈকত বড় হতে লাগল এই কষ্টের মধ্য দিয়ে। সৈকতকে স্কুলে ভর্তি করে দিলেন তার বাবা।স্কুলে লেখাপড়ায় খুবই ভাল করতে লাগল। শিক্ষকগণ খুবই ভালবাসতেন সৈকতকে। প্রত্যেক ক্লাসে সৈকত ১ম স্থান অধিকার করতে লাগল। বৃত্তিও পেল। এসএসসি কৃতিত্বের সাথে পাশ করল সৈকত।
এখন কলেজে ভর্তি হতে হবে। আশেপাশে কোন কলেজ নাই। কলেজে পড়তে হলে শহরে গিয়ে পড়তে হবে।শহরে গিয়ে পড়াশুনা করানোর টাকা জহির মন্ডল যোগার করতে পারবে না বিধায় জহির মন্ডল ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়ার করার কথা ভাবলেন।
জহির মন্ডল ছেলেকে বলে আমি তোমাকে শহরে গিয়ে লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারবো না।তার থেকে দু‘জনে মিলে মাঠে কাজ করলে সংসারটা ভাল চলবে।
কিন্তু সৈকতের মা তা রজি হয় না। সৈকতের মা বলেন,প্রয়োজনে আমি অন্যের বাড়ীতে কাজ করব,তবুও ছেলেটা লেখাপড়া করুক।
অবশেষে সৈকতের গ্রামের এক স্কুল শিক্ষকের সহায়তায় শহরে লেখাপড়ার জন্য একটি জায়গীরের ব্যবস্থা হয়। সৈকত ঐ বাসায় থেকেই লেখাপড়া করে।শর্ত বাসার মালিকের দুইজন ছেলেমেয়েকে পড়াতে হবে ।
এইভাবে কষ্ট করে সৈকত নিজের লেখাপড়া চালিয়ে যায়।কলেজে আইএসসি পরীক্ষায় সে কৃতীত্বের সাথে কৃতকার্য হয়। তারপর উচ্চশিক্ষার আশায় লেখাপড়া করে।জীবনে তার ডাক্তারী পড়ার খুবই সখ। কিন্তু গরীবের আবার সখ?
ডাক্তারী পড়ার সুযোগ পেলেও কিভাবে পড়বে সে ডাক্তারী? পড়াশুনার জন্য অর্থ যোগান দেয়া তার বাবা মায়ের পক্ষে সম্ভব না।এতো কিছু প্রতিকুলতার মধ্যেও সে তার সিদ্ধান্তে অটল।
অবশেষে সৈকত ডাক্তারী ভর্তি হওয়ার সুয়োগ পেল।
বাড়ীতে তার ডাক্তারী ভর্তির সুযোগ পাওয়ার কথা শুনে বাবা মা আনন্দে আত্মহারা।কিন্তু কিভাবে পড়াবে তারা ডাক্তারী।কোন মতে জীবিকা নির্বাহ করছে সৈকতের বাবা মা।
জায়গীরদারের মেয়েটা ক্লাস নাইনে পড়ে। দেখতেও মন্দ না।তাছাড়া লেখাপড়ায়ও ভাল। জায়গীরদার মনে মনে ভাবছে,যদি তাঁর মেয়ে শেলীকে সৈকত বিয়ে করতে রাজী থাকে লেখাপড়া শেষ করার পর ,তাহলে সৈকতের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ তিনি চালাবেন।
এ ব্যাপারে গ্রামের সেই স্কুল শিক্ষককে একদিন ডেকে নিয়ে বললেন,শেলীর বাবা।
“এব্যা পারে সৈকতের বাবা মার সঙ্গে আলাপ করতে হবে।“বললেন স্কুল শিক্ষক।
তারপর স্কুলশিক্ষক বাড়ী এসে সৈকতের বাবা মার সঙ্গে আলাপ করলেন।সৈকতের বাবা কিছুটা রাজি থাকলেও সৈকতের মা একেবারেই রাজি না।
প্রয়োজনে আমরা আরও অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে কষ্ট করে টাকা রোজগার করে ছেলেকে পড়াব।তবুও ছেলেকে বিক্রি করব না।বললেন সৈকতের মা।
“জীবনে তো অনেক কষ্ট করলাম। আর কত?ছেলের লেখাপড়ার জন্য বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হলেই তো আর কষ্ট করতে হবে না।“ বললেন সৈকতের বাবা।
“ও তুমি বুঝবে না।এরকম বিয়েতে রাজি হলেই ছেলেটা আমাদের পর হয়ে যাবে। আর কোনদিন তাকে কাছে পাব না।ওর শশুর বাড়ীর লোকজনই তখন হবে আপন। আমাদের দু:খের সীমা থাকবে না।“ বললেন সৈকতের মা।
এদিকে জায়গীরদারের মেয়ে শেলী মনে মনে ভালবেশে ফেলেছে সৈকতকে।কিন্তু সৈকত তা জানে না।
“বাড়ীঘর বিক্রি করেও আমরা ছেলেকে পড়াব। তবুও বিয়ের শর্তে ছেলেকে পড়াব না।“ বললেন সৈকতের মা।
অবশেষে ছেলে মেডিক্যালে ভর্তি হল।তবে বিয়ের শর্তে নয়।ছেলের স্টাইফেন্টের টাকা, অবসর সময়ে অনেক কষ্ট করে পড়ানো প্রাইভেটের টাকা এবং বাড়ী থেকে বাবা মা শারীরিক পরিশ্রমের কষ্টের টাকায় সৈকত লেখাপড়া চালিয়ে যেতে লাগল।
সৈকত কৃতীত্বের সাথে মেডিক্যাল পড়া শেষ করল।সৈকতের আশা ছিল খুব উচ্চ।সে বিদেশ থেকে ডিগ্রী অর্জন করতে চায়। কিন্তু বাবা মায়ের পক্ষে তো তা সম্ভব নয়।তাঁরা ছেলের বিয়ের শর্তেও পড়াবে না।
বেশ কিছুদিন হল সৈকত ডাক্তারী লেখাপড়া শেষে বাড়ীতে বাবা মার কাছে এসেছে।এদিকে শেলীও এখন অনেক বড় হয়েছে।শেলী এখন ইংরেজীতে অনার্স পড়ে। শেলী যেন সৈকতকে ভুলতেই পারছে না। শেলীর বাবা এখনও সৈকতের সাথে তাঁর মেয়ের বিয়ের কথা ভাবে ।কিন্তু কি করবেন,এ ব্যপারে প্রস্তাব দেওয়ার সাহস তো আর নেই।একসময় বিয়ের প্রস্তাব তো ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সৈকতের বাবা-মা।
একদিন সৈকতের সেই স্কুল শিক্ষককে ডেকে পাঠালেন তার বাবা-মা।সৈকতও বাড়ীতে ছিল।
“সৈকতকে তো অনেক কষ্টে ডাক্তারী পড়ালাম। ভাল রেজাল্ট করেছে সৈকত । সে এখন বিদেশে লেখাপড়া করতে যেতে চায়। আমাদের তো আর সে রকম কোন অর্থ নেই যে ছেলেকে বিদেশে ডাক্তারী পড়াব।এখন কি করা যায়? “স্কুল শিক্ষককে বললেন সৈকতের বাবা।
“অনেকের অর্থ আছে কিন্তু ছেলে মানুষ হয় না। আবার যাদের অর্থ নেই তাদের ছেলেমেয়েদের মেধা থাকলেও সামর্থ্য থাকে না।এটাই প্রকৃতির নিয়ম।“ বললেন স্কুল শিক্ষক।
ছেলে বিদেশে যেন পড়তে যেতে পারে,সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে ছেলেটার ইচ্ছা পূরণের কিছু একটা ব্যবস্থা করেন স্যার।“ বললেন সৈকতের মা।
“ বিদেশে পড়াতে চাইলে প্রচুর টাকার দরকার। যা আপনাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।আচ্ছা চিন্তা করে দেখি কি করা যায়।“ বললেন স্কুল শিক্ষক।
“ দেখ বাবা ছেলেটা যেন বিক্রি করে দিয়ে বিদেশে পড়ানোর টাকা জোগারের ব্যবস্থা করো না।তাহলে আমাদের এই দীর্ঘদিনের কষ্ট কষ্টই থেকে যাবে।“ বললেন সৈকতের মা।
“ আচ্ছা, শেলী নামের ঐ মেয়েটির সাথে সম্পর্কের কথা ভাবলে কেমন হয়।ওদের তো অনেক টাকা। এর আগেও তো বলেছিলেন শেলীর বাবা।“ বললেন সৈকতের বাবা।
“ আবারও তুমি ছেলের বিয়ের কথা ভাবছো? টাকার জন্য ছেলেকে বিক্রি করতে চাও?ছেলেকে লেখাপড়া করাতে অনেক কষ্ট করেছি।ঐ কষ্টের কোন মূল্য থাকবে না। ভবিষ্যতে আমাদের কষ্ট আরও বেড়ে যাবে।“ বললেন সৈকতের মা।
“আমরা তো চিরদিন বেঁচে থাকব না। ছেলের সুখেই তো আমাদের সুখ।আমরা রোজগারের জন্য যত কষ্টই করি না কেন , ছেলের মনের ইচ্ছা বিদেশে পড়বে,তা কিন্তু পূরণ করতে পারব না।“ বললেন সৈকতের বাবা।
সৈকতের শিক্ষক বললেন, “দেখি কি করা যায় একটু চিন্তা করিতে হবে।“
বেশ কিছুদিন কেটে গেল। সৈকত বিদেশে পড়াশুনার জন্য আবেদন করে ইন্টারভিউ দিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেল।
সৈকতের শিক্ষক শেলীর বাবার সংগে কথা বলে বিয়ের শর্তে বিদেশে লেখাপড়ার খরচ চালানোর ব্যাপারে সম্মত করলেন।তবে লেখাপড়া শেষে দেশে আসার পর বিয়ে হবে।
অবশেষে সৈকতের বাবা মা-ও রাজি হলেন।
সৈকত বিদেশে লেখাপড়া করার জন্য গেল। শেলীর বাবাই পড়াশুনার খরচ চালাতেন।শেলী সবসময় সৈকতের কথা ভাবত এবং সৈকতের পড়াশুনা শেষে দেশে ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনত।
সৈকতের বাবা মা খুবই কষ্ট করে দিনাতিপাত করছেন। আর ভাবতেন আমাদের ছেলে কবে বড় ডাক্তার হয়ে দেশে ফিরবে,তখন কষ্টের লাঘব হবে।
সৈকতের লেখাপড়া শেষ হলো।আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দেশে ফিরবে সৈকত।
এখন বুঝি দু:খ লাঘব হবে সৈকতের বাবা মার।
শেলীর মনোকষ্টও লাঘব হবে।সবাই আনন্দে আত্মহারা , সৈকতের দেশে ফেরার কথা শুনে।
সৈকত বিমানে আসবে আগামী পরশু।টিকেট কনফার্ম করে জানিয়েছে সৈকত।
“শেলী আমি আসছি। তুমি খুসি হওনি?“ফোনে বলল সৈকত।
সৈকত বিদেশ থেকে স্কুল শিক্ষকের কাছেই বাবা মা-র খবর নিত।বিমানে উঠার আগেও স্যারকে টেলিফোনে সৈকত বলেছিলো,“ স্যার আপনি কেমন আছেন? আমার বাবা মা ভাল তো?আমি আসছি স্যার।“সৈকতের এই কথাগুলোই শেষ কথা ছিল।
সবাই প্রতিক্ষায় আছে সৈকতের আসার জন্য। কিন্তু একটা খবরে শেলীর বাবা অস্থির হয়ে যায়।
শেলীর বাবা টেলিভিশনের খবরে দেখতে পায়, যে বিমানটিতে আগামী পরশু সৈকত দেশে ফিরছে,সেই বিমানটি পথিমধ্যে বিধ্বস্থ হয়েছে। বিমানের যাত্রীরা কেও বেঁচে আছে কি না তা নিশ্চিত নয়।
খবরটি শুনার পর শেলী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।শেলীর বুক যেন ভেঙ্গে গেল। নি:স্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারছে না শেলী।
এদিকে সৈকতের বাবা মা আশায় বুক বেঁধে বসে আছে,ছেলে কখন ফিরবে।ছেলে এলেই তাঁদের সাড়া জীবনের কষ্টের অবসান হবে।হায়রে নিয়তি!
সৈকতের বাবা মা বিমান বিধ্বস্তের কথা জানে না।শেলীর বাবা সৈকতের স্কুল শিক্ষককে খবরটি ফোনের মাধ্যমে জানান।স্কুল শিক্ষক শুনে দৌড়ে যান সৈকতের বাড়ী।
“ বাবা তুমি এসেছো, ভাল করেছো? আজই তো আসবে সৈকত তাই না? “ স্কুল শিক্ষককে বললেন সৈকতের মা ।
সৈকতের শিক্ষক বুঝতে পেরেছে যে,তাঁরা এই দূর্ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানে না।
চাপাকান্না স্বরে স্কুল শিক্ষক বললেন,হু।
“কি স্যার তোমার গলা এতো ভারী কেন।তোমান ছাত্র আজ বড় ডাক্তার হয়ে দেশে ফিরছে, তোমার মনে খুসি লাগছে না?“ বললেন সৈকতের বাবা।
“আজ ছেলে বাড়ী আসবে তাই আমি কিন্তু অনেক আয়োজন করেছি।ছেলে আসলে সবাইকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াইব।কি যে আনন্দ লাগছে আমার, যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।এতোদিনে আমাদের কষ্টের অবসান হবে।“ বললেন সৈকতের বাবা।
স্যার চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন, বাড়ীর এক কোনায়। আর ভাবছেন সৈকতের এ্যাকসিডেন্টের কথা ওর বাবা মা কে বলবে কিভাবে।
এমন সময় শিক্ষকের কাছে একটি ফোন আসে,যা শেলীর বাবা করছিলেন।
“ স্যার সবই তো শেষ হয়ে গেল।সৈকতের লাশ সনাক্ত করতে পেরেছে এবং লাশ দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আগামীকাল লাশ আসবে।ওর বাবা মা কে বলবেন।“শেলীর বাবা বললেন মোবাইলে।
একটু পর সৈকতের মা শিক্ষককে বললেন, “কে ফোন করেছে? কখন আসবে আমাদের প্রাণের সৈকত?আমরা যে অধীর অপেক্ষায় বসে আছি।“
“আগামীকাল আসবে। তবে...................।“ স্যার বললেন।
“ তবে কি স্যার?“ বললেন সৈকতের বাবা।
“অপেক্ষা করেন।আর চিন্তা করিয়েন না। সব কিছুই তো আল্লাহ্র হাত।“বললেন সৈকতের শিক্ষক।
সৈকতের বাবা কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে,কিছু একটা ঘটেছে,যা স্যার আমাদের বলছেন না।
আচ্ছা কি এমন ঘটতে পারে যা,স্যার আমাদের বলছেন না?ভাবছেন সৈকতের বাবা।
চিন্তায় চিন্তায় রাতটা কাটল। যেন রাত আর পোহাতে চাচ্ছে না।
সকাল হলো। সৈকতের বাবা মা আবারও অপেক্ষার পালা, ছেলে আসার অপেক্ষা। এই অপেক্ষা যে কত কষ্টের তা ভাবাই যায় না।
ছেলের কোন বিপদ হলে বাবা মায়ের মনে খটকা লাগে। সে রকমটাই হচ্ছে আজ সৈকতের বাবা মা-র।
সকাল তখন দশটা । স্যারও এসেছে সৈকতদের বাড়ী। দূর থেকে এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন ভেসে আসছে।সৈকতের বাবা মা-র বুকটা যেন কেমন ধুক ধুক করছে।কিন্তু কেন এমন হচ্ছে?ছেলে বাড়ী আসবে এতো আনন্দের বিষয়।
এক গাড়ীতে শেলী,ওর বাবা আর মা ।গাড়ীটি এসে সৈকতের বাড়ীর সামনে ঠেকল। তারপর একটা পুলিশের গাড়ী। তারপর সৈকতের লাশবাহী গাড়ী।
গাড়ী থেকে নেমেই শেলীর বাবা, সৈকতের বাবাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। সৈকতের বাবা তো হতভম্ব।
“ কি হয়েছে? কার কি হয়েছে?“ বলতে বলতে ঘর থেকে বেরুয়ে আসল সৈকতের মা।
এমন সময় সৈকতের লাশবাহী গাড়ী এসে বাড়ীর সামনে দাঁড়াল।
সৈকতের বাবার আর বুঝতে বাকী রইল না যে কি বিপদ হয়েছে।
যখন সৈকতের লাশ গাড়ী থেকে বের করল,তখন সৈকতের মা দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন।
সৈকতের বাবার আর মুখের ভাষা নেই। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে সবাইকে। আর তাদের মাঝে তাঁর ছেলেকে যেন খুঁজছে।
নিয়তির খেলা। এমন কষ্ট কি মানুষের হয়? গ্রামের সবাই হায় হায় করতে লাগল। এ কেমন আল্লাহ্র বিচার।
অনেকেই বলছে, যে ছেলের জন্য এই গরীব বাবা মা জীবনে অনেক কষ্ট সহ্য করেছে, ভবিষ্যতে কষ্ট লাঘবের আশায় সেই আজ চলে গেল?
এদিকে শেলীও মুর্চা গেল । শেলীর বাবা মা সৈকতের বাবাকে বুঝাতে লাগলেন। কিন্তু না, সৈকতের বাবা নিশ্চুপ। কারো সাথে কথাও বলছেন না আবার কাঁদছেনও না। গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এলো ।
এ দু:খ তো শুধু সৈকতের বাবা মা-র না,এ যেন সকলেরই কষ্ট।
এমন কষ্ট যেন কারো না হয়।কথায় আছে কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। কিন্তু এ কেমন কেষ্ট মিলল?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
D K খুব সুন্দর ????
সজল কুমার মাইতি কল্পনার সুখ হয়তো সকল ক্ষেত্রে বাস্তবে ঘটে না। আপনি সেই কঠিন চিত্র সুন্দর ভাবে চিত্রায়িত করেছেন। ঐশিকার বানান সম্বন্ধীয় মন্তব্যের সঙ্গে আমি সহমত। ভাল থাকবেন।
আমি একজন বিজ্ঞানের ছাত্র। পেশাদার লেখক/কবি নই । গত বছর করোনাকালীন অবসর সময় কাটানোর জন্য গল্প-কবিতা লেখা শুরু। প্রকাশিত বই“নশ্বর পৃথিবীতে।” সময় পেলে পড়বেন। এবছরেও গল্প-কবিতার বই ছাপা হতে পারে।বানান ভুলের জন্য দু:খিত। শুধরে নিবেন। ধন্যবাদ।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী গল্পটার ভিতরে আলাদা একটা রেশ পেলাম। দৈননিন্দন জীবনে অহরহ এ ঘটনা হয়ে থাকে। বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মুহূর্তের মাঝে ভেঙ্গে দিলো মা বাবার স্বপ্ন, ভেঙ্গে দিলো শেলীর স্বপ্ন। অই যে বলে না, জীবনের একটি দুর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না। বাহির থেকে এসে মা বাবার কষ্ট দূর করবে, অথচ সেখানে আরও বাড়লো। ভীষণ ভালো লেগেছে গল্প। শুভ কামনা রইল।।
ঐশিকা বসু গল্পটি ভালো হয়েছে। একজন গরীব মেধাবী ছেলের উত্থান এবং তারপর তার মর্মান্তিক পরিণতি। মায়ের চরিত্রটা বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়েছে আমার। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বানানের ভুল নজরে এল। যেমন, ভালবেশে, কৃতীত্ব, মুর্চা - ইত্যাদি। তবে গল্পটা পড়ে ভালো লেগেছে। আরো লিখুন, অনেক শুভেচ্ছা রইল। আর অনুরোধ রইল সময় পেলে আমার গল্পটাও পড়ে দেখবেন। ধন্যবাদ।
আপনার গল্পটি পড়েছি। পড়ে মনে হয়েছে আপনি একজন পেশাদার লেখক। তা কি করেন আপনি?গল্পটা ভাল লেগেছে। জীবনে এগিয়ে যান।
hrchowdhury ভালো লাগলো।
Dipok Kumar Bhadra গল্পটা পড়ে মন্তব্য করলে খুসি হব।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের কষ্ট থাকে।কারো কষ্টের অবসান হয় আবার কারো হয় না। গল্পে সৈকতের বাবা-মা এর কষ্ট অসহনীয়।আবার শেলীর জীবনেও নেমে আসে কষ্ট । এমনি দুনিয়াতে চলে কষ্টের খেলা। গল্পটিতে সৈকত ও শেলীর পরিবারের কষ্টের কাহিনী কষ্ট সংখ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন।

২০ মে - ২০২০ গল্প/কবিতা: ৪৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪