সময়টা ছিল জানুয়ারি ২০১৭-এর মাঝামাঝি। মা বাবার সাথে বেশ কিছুদিন যাবত কিছুটা মনোমালিন্য কিছুটা রাগ-গোশা চলছিলো। যেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটে ২৪ জানুয়ারি। ঢাকা-গাজিপুরের কাজ শেষে ২৪ জানুয়ারি, মঙ্গলবার বাসায় এসে মা-বাবার সাথে কথা বলা প্রায় বন্ধ করে দিলাম। খাওয়া-দাওয়া সেটাও গরিমশি ভাবে। মা বারংবার এসে আমাকে বলছে খাওয়ার জন্য, কি কারনে রাগ, কিন্তু আমি আরো রেগে যাই আর মার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে থাকি। বাবা-মা খুবই চিন্তিত। বাবা আমার বোনদের ফোনে সব কিছু খুলে বলে আর আমার বোনরাও আমাকে ফোনে বোঝানর ব্যর্থ চেচ্ছটা করে। আমি বুঝছি যে কাজ গুলো আমি করছি তা ঠিক না তবে মন তা সায় দিচ্ছেনা। এই সব কিছু চলল প্রায় ৩-৪ দিন। শনিবার ২৮ জানুয়ারি, বাবা খুব সখ করে সবজি আর মুরগির মাংস দিয়ে খিচুরি রাধলো। মা বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ ছিলেন। বাবা সকালে আমাকে ডাকতে থাকে, বাবারে উঠ দেখ তোর জন্য মঝার খিচুরি রেঁধেছি। ঘুম থেকে উঠলাম ঠিকি কিন্তু খেতে গেলাম মুড়ি আর গুর! রাগ তখন চেরে বসেছে আমাদের দুইজনের মাথায়। মাতো বিশন চিন্তিত! বাবা রেগে দিলো মুরি আর গুরের বয়ম ভেঙে, সাথে চলল দীর্ঘ কথাকাটাকাটি। মা-বাবার সাথে এমন আচরন করা ঠিক নয় কিন্তু মনের অজান্তে, ইচ্ছা, অনিচ্ছায় হয়ে গেল। মা ছিল আমাদের পাশেই। বাবা তারপর আমাকে কিছুটা শাসন করল যার ফলে আমি কেঁদে দেই! রাগ-গোশার এই মাঝখানে বিস্ফোরনটা ঘটল তখন, যখন বাবা বৃষ্টির মত অঝর ধারায় কেঁদে বসলেন! বাবার এই কান্না ভরা মুখখানা দেখে আমি আর বসে থাকতে পারিনি। বাবার বুকটা জড়িয়ে কাদতে লাগলাম! তারপর বাবা বলল, বাবারে রাগ-গোশা বন্ধ কর, তুই না খেলে এইভাবে থাকলে আমার যে বরো কষ্ট হয়। আয় বাবা চল তুই, আমি আর তোর মা মিলে খিচুড়ি খাই। রাগ-গোশা তখন হাওয়ায় মিলিয়ে দিয়ে এক প্রশান্তির খাবার খেলাম!
রাগটা কি কারনে ছিল সেটা নাই বা বললাম, কিন্তু বাবার এই কান্নামাখা আদর আর স্নেহ যে কত মধুর আর মহান তা বলে বুঝাতে পারবো না। হোকনা সে আদর কিছুটা রাগে কিছুটা খোবে! হোকনা সে আদর কিছুটা কষ্ট থেকে! তবুও সেই আদর আমার কাছে সোনা -রুপার চেয়েও দামি। বাবাকে কখন এই ভাবে অবুঝ শিশুর মতো কাঁদতে দেখিনি। বাবা যে এই ভাবে রাগের মাঝে কেঁদে দিবেন তা আমার মাথায়ই আসেনি! হয়তো এটাই সন্তানের প্রতি বাবার ভালবাসা। হয়তো এটাই সন্তানের প্রতি বাবা-মার স্নেহ-মমতা। যা করি বাবা (সন্তান) সব তোর জন্যই করি। শত কষ্ট হোক এর মাঝেই আমরা সুখ খুজে নেই। আমি গর্বিত এমন বা-মায়ের সন্তান হয়ে।
মাকেতো সব সময় মুখফুটে বলা যায় তোমাকে ভালবাসি কিন্তু বাবাকে কি বলা যায়! কিন্তু আজ খুব বলতে ইচ্ছে করচ্ছে বাবা তোমাকে খুব খুব ভালবাসি, তুমি যেখানে আছো সৃষ্টির্কতা তোমাকে ভালোই রেখেছেন, সুখেই রেখেছেন। ভালো থেক বাবা!!!!!