পৃথিবী সুস্থ অবস্থায় নিজে রে সুস্থ রাখা সম্ভব।কিন্তু যখন ধরাধাম অসুস্থকর পরিবেশে আছে তখন কি আর ভালো থাকা যায়?অসুস্থ স্বপ্ন পেরেশানী ছাড়া কিছু দিতে পারে না।গেল দু'বছর পুর্বে রাহির বোনের বিবাহ হয়। তার বোন নিপা অত্যন্ত নম্র ভদ্র মার্জিত মেয়ে, পড়ালেখাতেও অসাধারণ, প্রত্যেক বার পরীক্ষায় সে ভালো ফল-ই পায়। যদিচ এই অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষায় সে A+ পেলো।তবুও গ্রামের সকলে তাকে চেনে না, সে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা যে দিন শেষ করে বাড়ি ফেরল। সে রাতে তাকে দেখতে আসে শশুর বাড়ির লোকেরা।তারপরের দিবসে অনাড়ম্বরভাবে বিয়ে হয়ে গেল । যদিও বহু সমারোহে পাণিপীড়নের ইচ্ছা ছিল, তার পরিবারের। পরিবার গরীব হলে ও তাদের ছিল মস্ত বড় মন। কিন্তু হল না,এক দিকে ভালো-ই হলো গরীব পরিবারটি কিঞ্চিৎ বেঁচে গেল।বিবাহের পর,এমনটার সুযোগ সন্ধানী সাফিয়ার মা। দিন যায় রাত যায় কিন্তু এমন পাণিগ্রহনের কোনো ইয়ত্তা নেই,খরচ হন্তে মুক্তি দেবে এমন কোনো বর মিলান দায়।বছর কেটে গেল এমনকালে বিশ্ব জুড়ে বৈশ্বিক মহামারী করোনার আক্রমণে উত্তাল বিশ্ব স্তব্ধ হয়েছে।মানুষেরা ঘর বন্ধি হতে শুরু করছে।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বন্ধ ঘোষিত হলো, বাকি রয় নি বিপনি যানবাহন অবধি, এর মধ্যে লকডাউন ঘোষণা । তখন একগোল মানুষ তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলে সন্ধানে নেমেছে।অবশ্যি এমতাবস্থায় সাফিয়ার মা মেয়েকে বিবাহ দেয়ার চিন্তা ঝেড়ে ফেলেছেন।
দেয়ালের বাসিন্দা তাহিন খুব বখাটে না বলা যায় না, চেহারা যতটা খারাপ নয় মানুষটা তার চেয়ে বেশী খারাপ ভাবা গেলেও সে তাই।ইতিপূর্বে দুটি বিবাহ করছে।প্রথম স্ত্রী চলে গেছেন না ফেরার দেশে।দ্বিতীয় জন বাপের দেশে গিয়ে আর ফিরতে চান না। তিনি জানেন তাহিনের আসল চেহেরা। এবার মনে মনে তাহিন চিন্তা করছে ইষৎ খরচা বিহীন গোলাটে পরিস্থিতি কালে সব্বার অজান্তে, এমনকি তার দ্বিতীয়া বউও না, আর আরেকটা বিবাহ করবে।শুরু হলো কনে খুঁজা। প্রত্যহ অন্বেষণ করতে করতে আজ যে দুয়ারে হাজির।
সেটা সাফিয়ার আগার, অবশ্যি এই অনুসন্ধান করার মধ্যস্থে ঘটক ধনা মিয়া আছে।বিবাহের প্রস্তাবে সাফিয়ার মা প্রথমে এই ভয়াবহ অবস্থায় বিয়ে দেওয়াতে অসম্মতি জানালেন,কিন্তু পরে চিন্তা করেন যে অল্প আয়োজনে বিয়ের এ সুযোগ। তা হাত ছাড়া করলে ভুল হবে।অকুস্থলে সাফিয়ার বাবা ছিলেন।বেচারা একদম সাদাসিধে লোক। কিছু বলে ও লাভ নেই তার,কারণ সে কথা উড়িয়ে দিবে সাফিয়ার মায়ে। এই মহিলা পরিবার কর্তা বললে চলে না।বলতে গেলে তিনি-ই সর্বেসর্বা।যদিচ মনে হয় যে মহাজ্ঞানী আসলে জ্ঞানের লেশমাত্র নেই। তার হেতু যাচাই বাচাঁই না করে রাজি হলেন হঠাৎ একটি অতিশয় গুরুত্ববহ কর্মে। বিয়ে হয়ে গেল দিনের ভিতরে।সাফিয়া ওর মা কে এতই বেশী ভয় করে যে,মুখ ফুটে কোনো কথা না বলে সব সহ্য করে নেয়।
বিয়ে হয়ে গেল,মাসদিন সাফিয়ার সাথে খুব ভালো ব্যবহার করলো তাহিন।কিন্তু তারপর শুরু হলো অমানবিক নির্যাতন।সাফিয়ার বই পড়ার খুব শখ ছিল।একদিন সে একটা বই পড়তে বসলো,আকস্মাৎ তাহিন এসে বইটা ফেল দিল, বললো এই ঘরে কোনো পড়ালেখা চলবে না,এত পণ্ডিতির স্থান এটা নয়।শুধু কাজ আর কাজ করতে হবে।সাফিয়া শুধু বলছিল যে আমি ত কাজ করি অবসরে একটু বই পড়তে আপনার সমস্যা কোনঠে।একথা বলতেই তাহিন ক্ষেপে গিয়ে অত্যাচার করে।সেই হলো শুরু অতঃপর তরকারিতে নুন অল্প হলে,সকালে তাহিন কে ডাকিতে দেরি হওয়া বা আগে হওয়া, জামাকাপড় কাঁচাতে সাবান বেশী ব্যবহার,তরকারিতে ঝাল হওয়া ,এই ছোটখাটো হেতুতে অত্যাচার সহিতে হয় সীমাহীন, খেতে হয় মারধর দৈনন্দিন , সাফিয়া সহ্য করতে পারে নি।মাকে জানালো,মায়ের জবাব দেখে ত সে আবিষ্ট।মায়ের কথা-
মা গো বুঝেছি, তোমার ব্যথা। কষ্ট হয় তোমার, ধৈর্য ধর, ঠিক হবে ।বাড়ির মতোন কি সব কিছু হবে একটু উলট-পালট হবে ত, তুমি ভেঙে পড়ো না, মা।সংসারে এসব একটু সইতে হয়।সাফিয়া কত বুঝাতে আকিঞ্চন করে মাকে , মা বুঝেনা।মুহুর্মুহু বিনাকারণে অত্যাচারের কোনো নিমিত্ত খুঁজে না পেয়ে সাফিয়া হতভম্ব।একদা দিপা তাকে বললো তাহিন মদখোর ছিল একদিন সে তার স্ত্রী কে হত্যা করে।তাকে লোকজন ধরে খুব মারপিট করে, প্রহারে মরার অবস্থা হয় তার। তারপর সেখান থেকে কিভাবে বেঁচে যায় সে, তারপর দেখালো সে ভালো হয়ে গেল কিন্তু না সে আরেকটা বিয়ে করে আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেল।স্ত্রী বুঝতে পেরে চলে গেছে, এখন আসতে চায় না।সাফিয়া ত শুনে আঁ। কি করবে ভেবে আবার মাকে জানালো, এবার ও মা বিষয়টা উড়িয়ে দিল।তাহিন মদ খেয়ে আবার তার মনুষ্যৎ হারিয়ে ফেলে বাজে কাজে মেতে উঠে যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। সাফিয়া দিপার কাছ থেকে সত্য জেনে চিন্তা করে কি করবে এখন? মা কে জানালে আর লাভ নেই। কারণ মার কিছু করার সাধ্য নেই, মাও ভাবে কি করবে? কি করে পারা যাবে ওর সাথে। সাফিয়া বারংবার এমন পাষণ্ডের হাতে মার খেয়ে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে, মনে হচ্ছে বেচেঁ থাকার মানে নেই।সাফিয়া কি করবে খুঁজে পাচ্ছে না।আর তাই নিশুতি রাত্রিতে সে কোথায় চলে যায় কেউ জানেনা।তাহিন পরদিন সাফিয়ার বাপের বাড়ি খুঁজে,তা ছাড়া আরো অনেক জায়গায় অনুসন্ধান চালায়।পায় নি কোনঠে সাফিয়াকে।মা মাথা মারে আর কাঁদে কেন এমন হলো? বাবা শুধু চোঁখের জল ফেলে আর মায়ের অসুস্থ স্বপ্নের কথা ভাবে।
২২ এপ্রিল - ২০২০
গল্প/কবিতা:
২ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪