সেইবার যখন ছোডো ভাইটা জন্মের সময় মইরা গেলো,সবাই মারে কইলো অলক্ষুইন্না।কেউ না দ্যাখলেও আমি দ্যাখছিলাম নয় মাইস ধইরা মায়ের কষ্টডা।দিনরাত মা আমার খাটতো।আমার বাপের এতো মাইর খাইয়াও ক্যান জানি মা বাপরে ভালোবাসতো।কতো পাড়াপড়শি আইলো।ভালা মাইনষ্যের নাটক কইরা মারে বুঝায়লো,মাইয়া মাইনষ্যের জামাইর ঘর ছাড়তে নাই।রাগ ই যদি না থাকলো ওইডা আবার কিসের পুরুষ মানুষ!মা যখন মাথা ব্যাথার যন্ত্রণায় কাঁতরায়তো,বাপ তখন চ্যালাকাঠ নিয়া পিডায়তো।অথচ আমার পোয়াতি মা টার কতো ভালোমন্দ খাওনের দরকার আছিলো।পেডে বাইচ্চা নিয়া,পিঠে চ্যালাকাঠের বাড়ি নিয়া,মাথায় জুতার আঘাত নিয়া আমার মা কেমনে নয় মাস কাটায়লো সেইডাই আশ্চর্যের বিষয়।ভীষনরকম চাইতাম,মা আমার মইরা যাক।এই পুরুষ মাইনষ্যেরে বিপদে ফালাইয়া খোদার কাছে গিয়া বইয়া থাক।খোদায় আমার কথা হুনলো।মা আমার চইলা গেছে।এখন আর মা রে জুতার পাড়া খাওন লাগেনা।মা আমার ভাইরে নিয়া ভালাই আছে।
এহন বাপ আমার বিয়া দিবার চায়।আবারো আরেক পোয়াতি মাইয়া জামাইর চ্যালাকাঠের বাড়ি খাইয়া কবরে গিয়া শান্তি পাইবো।তাই মায়ের লগে দ্যাখা হওনের অপেক্ষায় থাহি.....
আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে গল্পের চিত্রটি খুবই পরিচিত।পরিসংখ্যানে দেখতে গেলে,বেশিরভাগ নারীই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার।এই নারী বা মা রা-ই এসবে অভ্যস্ত হয়ে দিনের পর দিন সংসার করেই যাচ্ছে।তাদের কেবল কষ্ট পাওয়া সাজে,ক্ষোভ বা প্রতিবাদ মানায় না।