কষ্ট তুমি কি অতল সায়র?
যে সায়রে ডুবে জলে পেট পূরলেও
তরী খুঁজে না পাওয়ার আকুলতা।
নাকি মেঘের আড়ালে ঢেকে থাকা চাঁদ?
যে চাঁদের আলো থাকা স্বত্ত্বেও
পৃথিবীকে আলোকিত করতে না পারার ব্যার্থতা।
কষ্ট তুমি কি ধারালো ছুরি?
যে ছুরিতে গলা না কাঁটলেও
গলাকাটা জন্তুর মত তরপাতে হয়,
নাকি বিষাক্ত তীর?
যে তীর বুকে না বিধলেও
বিষের যন্ত্রনায় ছটফট করতে হয়।
কষ্ট তুমি কি আগ্নেয়গিরির লেলিহান শিখা?
যে শিখার আচড়ে বাহিরটা ফিটফাট থাকলেও
ভেতরটা জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হয়।
নাকি সর্বনেশে দাবানল
যে দাবানল শুধু পুড়াতে জানলেও
পৃথিবীর কোনো জলে শান্ত হবার নয়।
কষ্ট তুমি কি বৃদ্ধাশ্রমের চার দেয়াল?
যে দেয়াল বেধ করে- হাজারও কান্না থাকলেও
কুলাঙ্গার সন্তানের কানে পৌঁছায় না।
নাকি অভুক্ত পথশিশু?
যে পেটের জ্বালা নিবারণে হাত পাতলেও
ডাস্টবিনের পচা খাবার ছাড়া কিছুই পায় না।
কষ্ট তুমি কি ছলনার ভালোবাসা?
যে ভালোবাসায় নষ্ট চরিত্রের অভিনয় থাকলেও
বার বার ন্যাড়া বেল তলায় যায়।
নাকি পরকীয়ার অভিশপ্ত গুহা?
যে গুহায় অনায়াসে প্রবেশ করলেও
প্রতিনিয়ত ভয় নামক সাপের দংশন পায়।
কষ্ট তুমি কি অসীম আশার ভেলা?
যে ভেলায় আশা পূরনে নানা ছলাকলা থাকলেও
আশা পূরন না হওয়ার অন্তর্জ্বালায় তছনছ।
নাকি আপনজনের চাহিদা পূরনের ব্যার্থতা?
যে ব্যার্থতার দায় কাঁধে নিয়ে মনমরা থাকলেও
শান্তনার পরিবর্তে দিবানিশি গজগজ।
কষ্ট তুমি কি গায়ের জামা?
যে জামা জড়িয়ে লজ্জা নিবারন করলেও
সাড়া গায়ে অসহ্য চুলকানী বাড়ায়,
নাকি মানবের স্পন্দন?
যতদিন জীবন সচল ততদিন না চাইলেও
রয়ে যাবে অবিরাম ধারায়।
কষ্ট তুমি কি বরফের হিমালয়?
যে হিমালয় মাথা উচু করে থাকলেও
তুষার ঝড়ে সব কিছু লন্ডভন্ড করে দেয়।
নাকি কঠিন শিলা?
যার আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করলেও
আকুতি আর আহাজারি করে ক্ষততে প্রলেপ নেয়।
গরীবের হাড়িতে, রোগীর বাড়িতে
অকাল মৃত্যুর মিছিলে, হতাশার নিশ্বাসে
বিরহের গলিতে, না পাওয়ার দলেতে
পেয়েছি তোমায়।
তোমাকে কেউ বাসেনি ভালো,
কষ্ট- কি সুখ পেলে তুমি,
কাঁধিয়ে আমায়।
কষ্ট একটি মনস্তাত্তিক বিষয় । যার যতবেশি ধৈর্য সে তত বেশি আত্মতৃপ্তিতে থাকলে পারে। কষ্ট জীবন ধারার একটি অবিচ্ছেদ্দ অংশ। কেউ চাইলেই এটা থেকে শতভাগ মুক্ত থাকতে পারে না। তাই কষ্ট কে জয় করাই হলো প্রকৃত সুখ।