টেলিফোনে বিয়ে

একটি বিয়ে (আগষ্ট ২০১৯)

সালমান আজিজ
  • ৩২৯
বেলা তখন তিনটার কাছাকাছি!
বাবার সঙ্গে মাত্রই দুপুরের খাবার খেতে বসেছি। দ্বিতীয় গাল ভাত মুখে দেবার ঠিক সেই মূহুর্তেই কে যেন সজোরে আমাদের বাড়ির মেইন গেট ঝাকাচ্ছে অমনিই প্লেটের মাখানো ভাত রেখে এঁটো হাতে দরজা খুলতে চলে গেলাম।
"কে?"
"আমাকে তুমি চিনবে না, বাবা! আমি তোমার বাবার সঙ্গে কথা বলতে চাই। দরজা খুলো।"
দরজা খোলা মাত্রই একজন বোরখা পড়া স্বাস্থ্যবান মাঝবয়সী মহিলা ঢুকে পরলো।
"তোমার বাবাকে ডাকবে?"
"বাবাতো ভাত খাচ্ছেন। আপনি এখানে দাঁড়ান, আমি বাবাকে বলছি!"
আমি বাবাকে গিয়ে বললাম, "বাবা, একজন মহিলা তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই।"
বাবা, "তোর মাকে বল উনার সঙ্গে কথা বলতে। আমি পরে কথা বলবো।"
"আচ্ছা!"
মা পাশের রুমেই ছিলেন।
"মা, বারান্দায় একজন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। বাবা বললো উনার সঙ্গে কথা বলতে।"
মা উনাকে ডেকে নিয়ে বসার ঘরে বসতে দিলেন।
আন্টি : "সালামালাইকুম আপা, আমাকে বন্ধুদা পাঠিয়েছেন।"
মা : "আলাইকুম! জ্বি আপা বলুন।"
আন্টি : "আসলে আপা, আমি আমার ভাগ্নের জন্য সুন্দরী পাত্রী খুজচ্ছি। তাই বন্ধুদা আমাকে আপনাদের বাড়ি দেখিয়ে দিলো। আপনার নাকি এক মেয়ে আছে?"
বন্ধু কাকু আমাদের দুই বাডি পরেই থাকতো। বলতে গেলে আমার বাবার একজন কাছের মানুষ। অনেক কাজেই বাবাকে সাহায্য করতো। মা: "জ্বি আপা। কিন্তু আমাদের মেয়েতো অনেক ছোট। মাত্র সাড়ে চৌদ্দ বছর বয়স! এই বছরে মেট্রিক পরীক্ষা দিবে। এখনোতো ওর বিয়ের বয়সই হয়নি।"
আন্টি : "জ্বি আপা! আসলে কি আপা, আমরা কম বয়সী মেযেই খুজছিলাম। মেয়েকে আমরা নিজের মেয়ের মতো করে গড়ে তুলবতো তাই।..."
এরকম অনেক কথা।
অনেকক্ষণ ধরে আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন আন্টি। কিছুক্ষন পর বাবা এলেন। আমিও তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে জানালার পর্দার পিছনে দাঁড়িয়ে কথা শুনতে লাগলাম। তখনও আমি বুজতে পারিনি যে, এই আন্টি আমার বড় বোনের জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিযেসেছে।
আন্টি : "সালামালাইকুম ভাই, আসলে আমি আপনার মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি।..."
বাবারও সেই একই কথা। তারপরেও বাবা কেন জানি ছেলের বিষয়ে প্রশ্ন করা শুরু করলেন, যেখানে আমার মায়ের শুরু থেকেই বিয়ের বিষয়ে আপত্তি!
বাবা; "ছেলে কি করে?"
আন্টি : "ছেলে পরিবার সহ আমেরিকাতে থাকে। ছেলে অনেক শিক্ষিত। ওই দেশেই পড়াশোনা করেছে। বিএ পাশ ! আমেরিকাতেই চাকরি করে।..."
বাবা : "ছেলের বয়স কত?"
আন্টি : "এই তো, এই বছর ২৭ এ পা দিবে।"
বাবা : "বীথির আম্মু, তুমি উনাকে বল নাই মেয়ের বয়স?"
মা : "হ্যাঁ, বলেছিতো!"
আন্টি : "দেখেন ভাই, মেয়েকে তো আজ না হয় কাল বিয়ে দিয়েই দিতে হবে! আর আগে বিয়ে দিলে তো কোনো সমস্যা নেই। ছেলে পরিবার সহ আমেরিকাতে থাকে, মেয়েকে বিয়ে করে ওই দেশে নিয়ে যাবে। ওই খানেই আপনার মেয়েকে পড়াশোনা করবে। তাছাড়াও ছেলে কিন্তু আপনাদের সবাইকে বিদেশ নিয়ে যাবে। আপনার ছোট ছেলেকেও আমেরিকাতে নিয়ে পড়াবে। এমনকি আপনার সংসারের সব দায়-দায়িত্বও নেবে।..."
এরকম নানান প্রলোভন কথা যাতে আমার বাবার মন গলে যাই।
এবং তাই হল!
আন্টি : "মেয়ে কোথায়? ওকে কি দেখতে পারি, ভাই?"
বাবা : "মেয়েতো ওর খালার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে। ওর ছবি আছে আপা দেখতে পারেন।"
আন্টি : "ঠিক আছে!"
এরপর আমার ডাক পড়লো।
মা : "আকাশ, যাও তো বাবা, বীথির ছবি আছে টেবিলের ওপর, নিয়ে আসো।"
আমি ছবিটা নিয়ে এসে মায়ের হাতে দিলাম। মা ছবিটা আন্টির কাছে দিলেন। আন্টি : "মাশাল্লাহ! মেযেতো ভারী মিষ্টি!"
মা: "আপা, ছেলের কোনো ছবি আছে আপনার কাছে?"
আন্টি তার ব্যাগ থেকে ছেলের ছবি বের করে দিলেন। মা, ছেলের গ্রাজুয়েশন এর দিনের ছবি দেখে অনেক মুগ্ধ! কিন্তু তার চেয়ে বেশি মুগ্ধ ছেলের মায়া ভরা ডাগর ডাগর দুটি চোখ দেখে, যদিও ছেলে একটু মোটা আর শ্যামলা।
নানান প্রশ্নের মাধ্যমে ছেলে আর মেয়ে উভয়ের বিষয়ে জানা হলো দুইপক্ষ থেকে।
আন্টি : "আপা আমার কিন্তু মেয়ে অনেক পছন্দ হয়েছে! এখন আপনাদের যদি ছেলেকে ভালো লেগে থাকে তাহলে কথা এগোনোর জন্য আমি ছেলের মা, বাবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবো। তারা বর্তমানে বাংলাদেশে আছে।"
মা, বাবা দুজনই অনেক চিন্তায় পরে গেলেন! অনেক কিছুই মাথার ভেতর চলছিলো তাদের। কিন্তু কি বলবে সেটা ভেবে পাচ্ছিলো না! খানিকক্ষণ পর মা আর বাবা দুজনই আন্টির কাছে সময় চাইলেন। যদিও আমার লোভী বাবার চোখে মুখে বিয়ের জন্য রাজি দেখা যাচ্ছিলো।
আন্টি কিছুক্ষন পরে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন।
তারপর শুরু হলো মা আর বাবার মত-দ্বিমতা বাবা যখন থেকে শুনেছেন ছেলে আমাদের পরিবারকে আমেরিকাতে নিয়ে যাবে আর সংসার চালানোর দায়িত্ব নেবে, তখন থেকেই সে বিয়ে দেবার জন্য রাজি।
এমন পাত্র কি সহজে মিলে? ঘরেই যেন সুভাগ্য নিজ পায়ে হেঁটে এসেছে!
কিন্তু, আমার মায়ের মন সায় দিচ্ছিলো না। কেন জানি তার মনে একরকম শঙ্কা! কারণ, মায়ের নিজেরই বিয়ে হয়েছিল অনেক ছোট বেলায়। মাত্র তেরো বছর বয়সে। অবশ্যবিয়েটা হয়েছিল অনেক জোর পূর্বকা মা অনেক সুন্দরী ছিলো

ছোটবেলা থেকে। আমার খালার বাসায় থাকতো! সেইখানেই স্কুলে পড়তো। একদিন বাবার নজরে আমার মা পরে। তারপর অনেকদিন ধরে ঘুরে ঘুরে নানান প্রকার জোর খাটিযে নানা, নানু সবাইকে বাধ্য করেছিল বিয়ের জন্য রাজি হতে। বিয়েও হলো, কাবিন নামাই কনের বয়স বাড়িয়ে দিয়ে, যেখানে বরের বয়স কনের বয়সের দ্বিগুন। বিয়ের এক বছর পরে এই পৃথিবীতে এলো আমার বড় বোন আর তার ৭ বছরের মাথায় এলাম আমি। মায়ের বিয়ের পর বন্ধ হয়ে গেলো পড়াশোনা৷ আর সংসারের ধরতে হলো ঘানি। যেন আমার দাদি সংসারের জন্য একটা কাজের মেয়ে পেয়ে গেলো। দাদি রীতিমত মাকে উঠতে বসতে কষ্ট দিতো। ঘরের মেজো বউ বলে কথা! আর বড় বউ, খাটের বিবি হয়ে হুকুমজাদী করতো সারাক্ষন। শুধু তাই না, পরিবারের সবাই যেন একটা কম বয়সী চাকরানী পেয়ে গেলো সবার হুকুম শোনার জন্য। আর বাবা কিছুই বলতো না। কোনো কিছু বলতে গেলে উল্টো মাকে ধরেই মারতো৷
মায়ের মনে সেই একই ভয়। যদি সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে! স্কুল পড়ুয়া মেযে! যদি ওকে বিয়ের পরে পড়াশোনা না করায়! সংসারের কাজে ওকে যদি রাতদিন কাজের মেয়ের মতো খাটাই! যদি ছেলের চরিত্র ওর বাবার মতোই হ্য! না, আমার মতো আমার মেয়ের কপাল এতো কম বয়সে বিয়ে দিয়ে খারাপ হতে দেব না৷
অনেকক্ষন ধরে চললো এই মতভেদ! এক দফা ঝগড়াও হয়ে গেলো বাবার সঙ্গে। আমিও ভয়ে ছিলাম! কখন যেন বাবা, মাকে ধরে মারবে। আমার মোটেও ভালো লাগতো না, যখন বাবা কম বেশি প্রতিদিনই মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করতো আর অনেক জোরে জোরে মাকে মারতো।
সন্ধ্যা হতে না হতেই আন্টি আবার এলেন। কিন্তু এইবার তিনি একা নয়, সঙ্গে তার স্বামীকে নিয়ে এসেছেন। আন্টি আসলে পাত্রের আপন চাচী।
আন্টি আর আঙ্কেল ছিলেন নাছোড়বান্দা। তারা আমার বোনকে তাদের ভায়ের বউ বানিয়েই ছাড়বে।
বসার ঘরে বসে আবারো সেই প্রলোভন কথা। মা তাদেরকে নাস্তা দেবার জন্য রান্না ঘরে গেলেও আন্টি যেন মায়ের পিছু
ছাড়লেন না। সেখানেও মাকে বোঝাতে শুরু করলেন।
অনেক আশ্বাস দেবার পর, শেষ পর্যন্ত আন্টি মাকে রাজি করাতে পারলেন।
এখন মা, বাবা দুজনই রাজি। খুশির সময়! মিষ্টি মুখ না করলে চলে? নতুন কুটুমদের মিষ্টি মুখতো করাতেই হবে। ঘরে বিয়ের সংবাদ বলে কথা!
বাবা : "আকাশ, যাতো দৌড় দিয়ে মিষ্টির দোকান থেকে ১ কেজি মিষ্টি কিনি নিয়ে আস।"
বাবা টাকা দেয়া মাত্রই দরজা খুলে এক দৌড়ে মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনে এনে রান্না ঘরে মাকে দিলাম।

মা, চা নাস্তার সঙ্গে প্লেটে মিষ্টি সাজিয়ে ট্রেতে করে নিয়ে গেলেন বসার ঘরে। আমিও সঙ্গে সঙ্গে পানির গ্লাসগুলো ট্রেতে করে নিয়ে গেলাম।
সবাইকে মিষ্টি মুখ করানো হলো। বসার ঘরে যেন খোশ আমেজ।
এরপর আন্টি নিজেরও গল্প শুরু করেদিলেন। তার নিজেরও বিয়ে নাকি অল্প বয়সে হযেছে আবার মেয়েকেও অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন।
এ যেন একটা প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে মেয়েকে অল্প বয়সে বিয়ে দিতে হবে ভালো পাত্র পেলে, এই আধুনিক যুগে!
নাস্তা শেষে আন্টি, আঙ্কেল দুজনই বিদায় নিলেন। যদিও মা, বাবা বারবার তাদেরকে রাতের খাবার খেয়ে যেতে বললেন।
আমি এর আগে কখনো মা, বাবাকে এক সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলতে দেখিনি! যাই হোক, বিয়ের সংবাদে এবার দুজনের মুখে এক সাথে হাসি দেখতে পারছি।
কিন্তু আমার কেন জানি ভালো লাগছিলো না। বিয়ের পরেতো আমার বোন বিদেশ চলে যাবে। তাহলে আমার সঙ্গে খেলা করবে কে? এই বাড়িতে আমিতো একদমই একা হয়ে যাবো!
এই বাড়িতে আসার পেছনে অনেক বড় একটা ঘটনা আছে। আমার বড় ফুফুর সুবাদে আমাদের আলাদা হতে হয়েছিল দাদুর বাড়ি থেকে। তারপর থেকেই এই বাড়িতেই আমাদের বড় হয়ে উঠা।
বিয়ে বলতে আমার মাথায় তেমন কোনো ধারণা ছিল না। সিনেমাতে দেখতাম, ছেলে সাদা পাঞ্জাবি আর মাথায় পাগড়ি পরে মুখে রুমাল দিয়ে মেয়েকে বিয়ে করতে আসতো পরিবার স্বজন নিয়ে। আর মেযে লাল বেনারসি শাড়ি, গহনা পরে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে থাকতো। তারপর কাজী বিয়ে পড়ানোর সময় ৩ বার কবুল বলতে বলতো আর বিয়ে হয়ে যেত। এরপর একটা সুন্দর গান হতো।
আমরাও আমাদের পুতুলগুলোর সাথে বিয়ে বিয়ে খেলতাম। কোনো এক লাল শুক্রবারে আমার বোনের পুতুলের সাথে আমার পুতুলের বিয়ে দিতাম আর কাজী হতেন আমাদের মা। সবাইকে দোকান থেকে কিনে আনা কেক বিয়ের খাবার হিসেবে খেতে দিতাম।
সকাল থেকে বাবা, মা আমাদের আত্মীয়দের কাছে টেলিফোন করে বিয়ের বিষয়ে কথা বলছেন। ঢাকাতে থালার কাছে মা ফোন করে জানিয়ে দিলেন বিয়ের কথা আর আমার বোনের প্রতি খেয়াল রাখতে।
মায়ের অনুরোধে বাবাও ছেলের পরিবার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে লাগলেন। বাবা তার বন্ধুদের মাধ্যমেও ছেলের পরিবার সম্পর্কে জানার জন্য খোঁজ লাগিয়ে দিলেন। সবারই একই কথা। পরিবার ভালো!

সন্ধ্যার দিকে আন্টি, আঙ্কেল আবার এলেন। এইবার খালি হাতে না।
মিষ্টির প্যাকেটগুলো আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে, বাবা, মাকে সালাম দিলেন।
আন্টিতো বিয়ে নাই হতে মা, বাবাকে বিয়ান, বেয়াই বলে সম্বোধন করা শুরু করে দিয়েছেন। বসার ঘরে দেখি আঙ্কেল আর বাবা গল্পে মেতে আছেন। বাবা, মা এর অনুরোধে আজ তারা আমাদের বাড়িতে রাতের খাবার খাবেন। এদিকে মা রান্না ঘরে তাড়াতাড়ি নতুন কুটুমদের জন্য পোলাও, মাংস রান্না করছেন। আন্টিও দেখি মাকে সাহায্য করছেন। সেখানেও তাদের কি সব গল্প!
খাওয়া শেষে তারা বাবা, মাকে ছেলের মা, বাবার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলিয়ে দিলেন। সবাই রাজি!
এখন সরাসরি মেয়ে দেখার পালা। ঠিক হলো এই বৃহস্পতিবারে সবাই মিলে এক সঙ্গে ঢাকাতে যাওয়া হবে।
দেখতে দেখতে বৃহস্পতিবার হয়ে গেল। বাবার খরচে আন্টি, আঙ্কেল, তাদের ছোট ছেলে, মা আর আমি সবাই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ঢাকাতে পৌঁছানোর পর তারা কলাবাগানে আত্মীয়ের বাড়ি চলে গেলেন আর আমরা উঠলাম খালার বাড়িতে। আমার বোন এখনো জানে না যে তার বিয়ের বিষয়ে কথা চলছে। ভেবেছিলাম সবাই মনে হ্য খালার বাড়িতেই থাকবো, মোহাম্মদপুরে। কিন্তু সন্ধ্যা হতেই বাবা আমাদের সবাইকে নিয়ে নয়া পল্টনে তার বড় ভাইয়ের বাড়িতে রওনা হলেন।
বড় চাচার বাড়িতে গিয়ে তেমন ভালো ব্যবহার পেলাম না। যদিও তারা কোনো দিনই আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেনি। বাবা, চাচাকে নিয়ে টেলিফোনে তাদের হবুবেয়াই, বিয়ান এর সঙ্গে কথা বললেন। ঠিক হলো এই রবিবারে বাহির থেকে রেস্টুরেন্টে তারা মেয়েকে দেখবে।
আমার বড় চাচী কেন জানি অনেক হিংসায় জ্বলছিলেন। আর শুরু থেকেতো চাচা তেমন মত দেননি বিয়ের জন্য বাবাকে, গাঁ ছাড়া ভাবে সাথে থাকছেন শুধু। হিংসার মূল কারণ হলো, ছেলে পরিবারসহ আমেরিকাতে থাকে আর মেয়েকে বিদেশ নিয়ে যাবে। ৪ বছর হয়ে গেলো, তারা নিজেদের বড় মেয়েকেও আমেরিকাতে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ছেলে আজও মেয়েকে আমেরিকাতে নিয়ে যেতে পারেনি। অবশ্য ছেলে আমেরিকার নাগরিক ছিল না।
একবার যদি বিয়ে হয়ে যাই বীখির, তাহলে তো সবাই আমেরিকাতে যাবে, বড়লোক হয়ে যাবে! আরও নানান রকম চিন্তা!
এদিকে আমার চাচাতো বোন, বীথি আপুকে বিয়ের বিষয়ে গোপনে জানিয়ে দিয়েছে। রুমে ঢুকতেই আপু, মায়ের প্রতি অনেক রাগ দেখালো। সে তো রীতিমতো মায়ের সঙ্গে ঝগড়াও শুরু করে দিলো।
আপু: "মা, তুমি কি কারণে আমাকে বিয়ে দিতে চাও? আমাকে কি বিদেশে বেঁচে দিতে চাও?..."
এমন অনেক কিছু। এক পর্যায়ে আপু মাকে ভয় দেখালো, যদি সে তাকে এখন বিয়ে দেয় তাহলে সে বিষ খাবে।
সারারাত এভাবে গেলো। পরের দিন সব স্বাভাবিক ছিলো, কারণ বড় চাচা, চাচী বিয়ে ভাঙার অন্য বুদ্ধি আটছিলেন মাথায়। যেভাবেই হোক বিয়ে ভাঙতেই হবে। সারা দিন চাচী আর তিথি আপু মিলে আপুর মাথায় মায়ের বিষয়ে এমন বিষ ঢাললো যে রাতারাতি মা আমার বোনের কাছে শত্রু হয়ে গেলো। তারা যদিও জানে ছেলের পরিবার ভালো।
মাঝরাতে হঠাৎ মা বাথরুমে যাবার সময় বসার ঘরে কথার আওয়াজ শুনতে পেল। একটু আড়াল হয়ে দেখে যে ডিম লাইট জ্বলিয়ে চাচা, চাচী আর তিথি আপু মিলে গোল মিটিং শুরু করেছে।
বিষয় একটাই, কিভাবে বিয়েটা ভাঙা যাই!
মা তাদের কথা শুনে হতবাক, কারণ তারা অন্য বড় ধরনের ফন্দি আটছে। মা আস্তে করে আমার বোনকে জাগিয়ে তুলে তাদের কথা শুনিয়ে দেয়, কারণ তারা এমন করে তুলেছিলো আমার বোনের মনে যাতে মাকে সে দুই চোখে দেখতে না পারে।
এরপর আপুও চুপচাপ হয়ে গেলো কেন জানি৷ মা, বোনের পা জড়িয়ে ধরে বারবার বলছে কান্না করে, "মা, দেখ বিয়েটা করে ফেল। ছেলে অনেক ভালো। তোকে সুখে রাখবে মা।..."
মা কোনো দিন কি সন্তানের ক্ষতি চাই? সব মায়েরাই চাই যে তাদের সন্তান ভালো থাকুক, সুখে থাকুক।
রবিবার বিকালে বোনকে দেখবে তারা। মা বারবার তিথি আপুকে বলছিলো একটু সুন্দর করে সাজিয়ে দিতে বীথি আপুকে। কিন্তু, তিথি আপু বিকালে বাহিরে ঘুরতে চলে গেলো। চাচীর কাছে একটু সাজবার জিনিস চাইতে গেলে বলে, "তিথিতো ওর মেকআপ বক্স তালা দিয়ে গেছে..."
মা কান্না করে দেন। আমার খালাকে টেলিফোনও করতে পারছিলেন না, কারণ চাচা চালাকি করে টেলিফোন তালা দিয়েগেছেন।
শেষমেশ মা বাহিরে গিয়ে টেলিফোন বুথ থেকে খালার কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন। কিছুক্ষনের ভেতরে গাড়িতে করে আমার খালাতো বোন এসে বীথি আপুকে সাজিয়ে নিয়ে মাকে সাথে করে নিয়ে যাই। ওদিক চাচার সোনার দোকান থেকে বাবা, চাচাকে নিয়ে যাই। সে কি চাচার তাল বাহানা, না যাবার জন্য!
মাযের অনুরোধে আমার খালা, খালুও যাই সাথে। রেস্টুরেন্টে পাত্রের মা, বাবা, চাচা, চাচী অপেক্ষা করছে। বোনকে দেখে তারা এক্কেবারে রাজি। কথা পাকাও হয়ে গেলো এই বুধবারে মেয়েকে আংটি পরাতে আসবে তারা।
আজ পাত্রপক্ষ আমার বোনকে আংটি পরাতে আসবে। সকাল থেকে একে একে সব চাচা, ফুফুরা দাদিকে নিয়ে বড় চাচার বাড়িতে পারি জমাচ্ছেন। বাড়ি ধরে হইহুল্লোড়!

যদিও বড় চাচা, চাচী মোটেও চাননি যে তাদের বাড়িতে অনুষ্ঠান নামক ঝামেলাটা হোক। তারপরেও বাড়ির বড় সদস্য বলে কথা, তাই বাধ্যতাই অনুষ্ঠানটা তাদের বাড়িতে আয়োজন করেছে।
বিকালের দিকে পাত্রের খালাতো আর ফুফাতো বোন এসে বোনকে পার্লারে নিয়ে যাই। তারপর তাদের দো সবুজ কাতান শাড়ি পরিয়ে নিয়ে আসে সুন্দর করে সাজিয়ে। সন্ধ্যায় দুইপক্ষের আত্মীয়তে পুরো বাড়ি সরগম করছে। আমার হবু দুলাভাইয়ের মা বাক্স থেকে সোনার আংটি পরিয়ে দেয় আমার বোনের আঙুলে। সবার নজরে আংটিটা। তিনটা হীরা পাথর বসানো আংটি৷ বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছে। ছেলের বাবাও বোনকে আরেকটি সোনার আংটি পরিয়ে দিলো অনেক সুন্দর ছিল ডিজাইনটা। এরপর কিছু গিফট দেবার পর সবাই মিলে বোনের জন্য দুই হাত তুলে মোনাজাত করলো।
দুদিন পর সবাই আমরা কলাবাগানে গেলাম। ওই দিন ঠিক হলো সামনের শুক্রবারে বিয়ে হবে! কিন্তু একটা সমস্যা! ছেলে চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে আসতে পারছে না বাংলাদেশে। তাহলে, বিয়ে কি ভাবে হবে? সবার মুখে একই প্রশ্ন!
ছেলের মা, বাবা প্রস্তাব রাখলেন যে বিয়ে টেলিফোনে হবে।
টেলিফোনে আবার বিয়ে হয় নাকি? ছেলে তো নেই! কে কাবিন নামাই সই করবে?
তারও উপায় বের হয়ে গেলো। ছেলের বাবার এক কাজী বন্ধু আছে, এই বিয়ে নিয়ে তেমন সমস্যা হবে না। বিয়ের রেজিস্ট্রেশন এর কাগজ বিদেশে কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিবে তারা। ছেলে সেই কাগজে সই করে আবার বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিবে। আর বিয়ের দিন কবুল বলার সময় কাজী সাহেবের সামনে টেলিফোনে কবুল বলবে।
সবাই কেমন জানি অবাক হয়ে গেলো!
"এ আবার কেমন বিয়ে? ছেলে নেই বিয়ের দিন মেয়ের পাশে! আবার টেলিফোনে বিয়ে করাবে!"
তারপরেও মা, বাবা তাদের কথাতে রাজি! তারা পরিবারের ওপর বিশ্বাস করে মেয়ে দেবে এই ঘরে।
সত্যিই অবাক লাগছিলো আমার, গ্রাহাম বেলের এই আবিষ্কার টেলিফোন এখন দুই জীবনের যোগসূত্র হবে! এর আগে টেলিফোন শুধু কথা বলার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হতো। দূর-দূরান্তের মানুষের বার্তা পৌঁছে দিতো এই টেলিফোন। সে কত রকম বার্তা! কখনো বা সুখের, কখনো বা দুঃখের! কত কথায় না বলে মানুষ এই টেলিফোনে! প্রেমের কথা, মনের কথা, যৌনতার কথা, কামনার কথা, কষ্টের কথা, অভিমানের কথা...
প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে বর্তমান যুগে এখন অসম্ভব বলে কোনো কিছুই আর নেই!
এদিকে ছেলে আমার বাবা, মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের কাছে অনুমতিও নিয়েছে টেলিফোনে বিয়ে করার। মা, বাবা বরাবরের মতোই রাজি।
পরের দিন দুপুরে আমরা সবাই মোহাম্মদপুরে চলে গেলাম খালার বাড়িতে।
সকাল থেকেই খালা, কাজের বুয়াকে নিয়ে ঘর গোছাতে ব্যস্ত! ওদিকে রান্না ঘর থেকে পায়েসের সুন্দর ঘ্রান বের হয়েছে। আরেকদিকে দেখি ছোট খালাকে নিয়ে মা পাটাতে কাঁচা হলুদ আর মেহেদী পাতা বাটছে। নানুও দেখি তার যুগের বিয়ের গান শুরু করে দিয়েছে। হঠাৎ সবাই মিলে বিয়ের গানের তালে তালে নাচ শুরু করে।
ওদিকে খালু গাড়ি নিয়ে বাজারে গেছেন। এবার পুরো বিয়ের দায়িত্ব আমার খালা, খালু নিয়েছেন! ফুলদিয়ে আমরা মালা বানিয়ে আপুর মাথায়, গলায়, কানে, হাতে পরিয়ে দেই। খালাতো বোন কুমকুম দিয়ে ওর কপালে সাজিয়ে দেয়।
হলুদ শাড়ি পরে বোন হলুদের পাটিতে বসে আছে। সামনে পায়েস, মিষ্টির প্লেট আর বাটিতে হলুদ, মেহেদী আর চন্দন বাটা। পায়েস রাখার সময় নানী কেন জানি জিজ্ঞাসা করলো, পায়েসের দুধ ফেটে গেছে নাকি! যদি দুধ ফেটে যাই তাহলে নাকি ভবিষ্যতে বোনের প্রথম সন্তান মেয়ে হবে। কিন্তু পায়েসের দুধ ফাটে নি! সে অনেক খুশি! আমি এখনোও ভাবি, আগের রীতিনীতির কথা! সত্যিই অবাক করার মতো! এবং তারচেয়ে বেশি অবাক হই এখন, কারণ বোনের প্রথম সন্তান ছেলে হয়েছে! জানি না, নানীর কথা কিভাবে সত্যি হলো!
সবাই একে একে, আপুকে পায়েস খাইয়ে দেয়। তারপর কপালে, গালে হলুদ আর হাতে মেহেদী মাখিয়ে দেয়।
বোনের গোসলের সময় সব ছেলেদের বের করে দেয় রুম থেকে আমার খালা, মামীরা। সেখানেও গান আর হাসাহাসির
আওয়াজ।
এর পর আমার খালাতো বোনগুলো মিলে বিয়ের জন্য তৈরি করে আপুকে। পাত্রপক্ষ আগের দিন এসে বোনের জন্য টুকটুকে লাল বেনারসি শাড়ি, গহনা, যাবতীয় বিয়ের সব জিনিসে দিয়ে গেছে।
ওদিকে খালার রান্নাও শেষ। নিজ হাতেই রান্না করেছেন সব!
জুম্মার নামাজ শেষে পাত্রপক্ষ আসবে কাজী সাহেব কে নিয়ে। ঘরোয়া পরিবেশে বিয়ে হচ্ছে বোনের! তেমন বাহির থেকে লোকজন নেই। সব নিজের আত্মীয়!
রুমে ঢুকে আমি বোনকে দেখে হতবাক! কি সুন্দর পরীর মতো লাগছে আমার বোনকে! মাথায় মায়ের বিয়ের টিকলি, গলায় মাযের পাথর বসানো কণ্ঠহার, হাতে বালা আর রেশমি চুরি। ওদিক থেকে ছেলের মাযের দিয়ে যাওয়া সীতা হার, কানের ঝুমকো, পায়ের নুপুর, কোমর বন্ধন, আর নথ। যদিও নথটা বোনকে আলগাভাবে পরানো হয়েছিল। তাড়াহুড়াতে ওর নাক ফোঁড়ানো হয়নি।

বলতে গেলে আংটি পরানোর দিনের চেয়ে আজকে ওকে বেশি ভালো লাগছে। একদম সিনেমাতে যেভাবে বউকে দেখেছিলাম ঠিক তেমন! পায়ে আলতা রাঙানো, কপালে লাল টিপ, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, মাথায় খোঁপা আর বিয়ের লাল জরি ওড়না দিয়ে ঘোমটা দেয়া।
নামাজ শেষে সবাই এলেন।
তারপর বিয়ে পড়ানো শুরু হলো। মেয়ের পক্ষের উকিলবাবা হলেন আমার মামা, আর বড় চাচা। রেজিস্ট্রেশন পেপারে সই এর পর, কালেমা পড়ালো আমার বোনকে, ওদিকে টেলিফোনে হাই স্পিকার দিয়ে কালেমা পড়ালেন আমার দুলাভাইকে। প্রথা অনুসারে "কবুল" বলা! বিয়ে শেষ! সবার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে আশীর্বাদ নেয়ার পালা আমার বোনের! মিষ্টি মুথের পর সেই খোশ আমেজ! কিন্তু আমার মায়ের চোখে পানি, আজ নিজের মেয়ে অন্য ঘরের মেয়ে হয়ে গেলো চিরকালের জন্য! ওদিকে দেখি খালা, নানুর চোখেও পানি। শেষমেশ বোনকে জড়িয়ে ধরে মা, আমার নানী, দাদি, খালা, সবাই কান্না করে দেয়, সাথে আপুও! একে অপরকে সান্তনা দিতে থাকে এই বলে, "মেয়েদের জন্মই হয়েছে অন্য ঘরে যাবার জন্য!..."
আমি তাদের কথা আজও বুজতে পারিনা, কেন এই প্রথা?
বিয়ের মহল একটু স্থির হলে সবাইকে খাবার পরিবেশন করা হয়। মা, বাবা, খালা, খালু, মামা, মামী, চাচা, চাচী, ফুফু সবাই কুটুমদের যত্ন নিতে ব্যস্ত। দুলাভাইয়ের মা ওদিকে আমার বোনকে খাইয়ে দিচ্ছে নিজ হাতে খাওয়া শেষে রীতি অনুসারে পান খেতে দেওয়া হলো সবাইকে।
দুলাভাই বোনকে নিতে আসলেন দীর্ঘ ২ বছর অপেক্ষা করার পর। তারপর নানান অনুষ্ঠানের পর বোনকে নিয়ে চলে গেলেন আমেরিকাতে!
জানি না, কতটুকুই বা সুথে আছে আমার বোন! কিন্তু যেমনিই আছে বিদেশের বুকে ভালোই আছে স্বামী আর ছেলেকে নিয়ে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Asif Shahriar আচ্ছা আপনাকে যে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার ওয়াদা করেছিল সেইটা কি পূরণ করেছেন উনারা?
রঙ পেন্সিল সবাই সাজগোজ করে হাসিমুখে ঘুরবে,বৌ বর তিন বার কবুল বলবে আর তারপর দারুন একটা গান হবে.... বিয়ের কথা শুনলেই কিন্তু চোখের সামনে এই দৃশ্যটাই ভেসে ওঠে।
লেখা কোথাও জড়িয়ে যায়নি। মোটকথা ভাল লেগেছে। শুভকামনা
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আসলে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কি বলবো তা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।
ভালো লাগেনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
Zara Rahman চমৎকার একটি গল্প। আকাশ ভাইয়া, আপনার কষ্টটা আমি অনুভব করতে পারি এই গল্প থেকে।
রিয়া ইসলাম অনেক সুন্দর লেখা।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
সিলভী আরা অনেক সুন্দর একটা গল্প, বাস্তবতায় পূর্ণ।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
মণিকা চৌধুরী অনেক সুন্দর একটি গল্প। আশা করছি সামনে আপনার আরো লেখা পড়তে পারবো। অনেক অনেক শুভ কামনা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত খুব সুন্দর একটি উপস্থাপনা । গল্পের মধ্যে দিয়ে একটা ভাল বিষয়ের চিত্ৰ তুলে ধরেছেন । ভোট সহ অনেক শুভকামনা রইল ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
কাজী প্রিয়াংকা সিলমী এটা কি নিজের জীবন থেকে নেয়া? বর্ণনা পড়তে ভাল লেগেছে। এ যুগেও বাল্যবিবাহের প্রচলনটা ধরা পড়েছে। আপু কি পড়াশুনা চালিয়ে গিয়েছেন?
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ! জ্বি, গল্পটি আমার বাস্তব জীবনের সঙ্গে যুক্ত। আমার বোন বিয়ের পরেও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পেরেছে। H.S.C. পর্যন্ত পড়েছিলো। তবে তার মাঝেও ওকে সংসারের কাজ শিখিয়ে ছিল ওর চাচী শাশুড়ি। মূল গল্পটা অনেক বড় ছিল আর অনেক ঘটনার ও বিবরণ ছিল ওতে। ৬০০০ শব্দের অনেক বেশি। কিন্তু প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুসারে আমাকে গল্পটা ছোট করতে হয়েছে। যদিও আমি প্রতিযোগিতার চেয়ে আমার জীবনের গল্পটাকে সবার কাছে তুলে ধরেছি পড়ার জন্য। আসলে কি আপু, অনেক বড় শিক্ষিত পরিবারেও এই বাল্যবিবাহ হচ্ছে। কিন্তু সেগুলো প্রকাশ পাই খুবই কম।
মোঃ মোখলেছুর রহমান বর্ননা স্বচ্ছ,আরও লেখা আশা করি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ! শুধু আপনার সমর্থন এবং ভালবাসার জন্য, আমি লিখব!

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে বর্তমান যুগে, এখন কিনা সম্ভব! এই চোখগুলো দেখেছে সে অবহমান চিত্র। এই কানগুলো শুনেছে সেই কথাগুলো। আর শুনেছে টেলিফোনে তিন বার কবুল বলা! স্মৃতি গুলো যেন আজও জীবন্ত হয়ে কথা বলে। আর সেই স্মৃতিগুলোকে অবলম্বন করে বাস্তব জীবনী থেকে লেখে এই গল্পটি।

২৪ জুলাই - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪