তৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় একজন তৈল বিশারদ। নামের কারণে অথবা অন্য যে কারণেই হোক, তেলের মূল্য বাড়লেই এ দেশের লোকজন মতামত নিতে তাঁর শরণাপন্ন হয়। এবার রমজানের আগেই ভোজ্য তেলের মূল্য বাড়ায় উৎসুক জনতার সাথে আমিও সাক্ষাৎকার নিতে মাইক্রোফোন, ক্যামেরাসহ তাঁর বৈঠকখানায় হাজির হয়ে গেলাম।
- তেলের মূল্য এদেশে শুধু বাড়েই, কমতে তো কখনো দেখি না, কারণ কী?
- বুঝতে হবে, যে জিনিসের ব্যবহার বেশি, তার চাহিদা বেশি। আর যেটার চাহিদা বেশি, তার মূল্য বেশি হবে, এটাই তো স্বাভাবিক।
- একটু যদি বুঝিয়ে বলতেন দয়া করে !
- আমাদের এই লোকসমাজে কোথায় তেলের ব্যবহার নেই, বলেন? বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত, শিল্প-কারখানা, যানবাহন, লঞ্চ বা জাহাজ, এমনকি পাবলিক মিডিয়া - সর্বত্রই তেলের ব্যবহার। আবার তেলা মাথায়ও আমরা তেল দেই।
- এর পিছনে কী কারণ রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?
- বাংলাদেশে জনসংখ্যা বেশি, এখানে দ্রুত শিল্পায়ন হচ্ছে, আর এদেশে সরিষার চাষও হয় প্রচুর।
- জনসংখ্যা বা শিল্পায়নের ভূমিকার ব্যাপারটা বুঝলাম, কিন্তু সরিষার চাষের ব্যাপারটা আবার কেমন?
- সরিষার ছোট ছোট দানার মতো এ দেশে অগণিত তৈলবাজ বেড়ে উঠছে। এদেশে সরিষার পরিবর্তে আপেলের চাষ হলে আমরা তৈলবাজদের পরিবর্তে হয়তো দুই একটা 'নিউটন' পেতে পারতাম !
- চমৎকার বলেছেন, এভাবে তো চিন্তা করিনি !
স্বনামধন্য অভিনেতা আবুল হায়াত কোন এক বিজ্ঞাপনে বলেছিলেন, "জিনিস যেটা ভালো, দাম তার একটু বেশি।" আর তা যদি স্বপ্নে পাওয়া হয়, তাহলে তো কথাই নেই ! স্বপ্নে পাওয়া যে কোন কিছুর কদর আমাদের দেশে অনেক বেশি। শহর কিংবা শহরতলীর দেয়ালে দেয়ালে এ জন্য প্রায়ই চোখে পড়ে স্বপ্নে পাওয়া বিভিন্ন 'কিছু'র চটকদার বিজ্ঞাপন। স্বপ্নের মাধ্যমে প্রাপ্ত বলে প্রচারিত এ সব 'কিছু'র গ্রাহক সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।
মুহূর্তেই তৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার থেকে আমি নিজেকে দেখতে পেলাম টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনে, যেখানে আমি বলে চলেছি, "জীবনে উন্নতি করতে চান, বেশি করে তেল খাওয়ান। জিনিস যেটার চাহিদা বেশি, দাম তার একটু বেশি। আর স্বপ্নে পাওয়া এই তেলের নাম . . .।" এরই মধ্যে টের পেলাম আমার ওয়াইফ আমাকে ধাক্কা দিয়ে ডাকছে, আর বলছেে, "ঘুমের মধ্যে কী বলছো এসব, সেহরি খাওয়ার সময় আর মাত্র পনের মিনিট বাকী আছে।"
ধড়ফড় করে উঠে কোন কথা না বাড়িয়ে সেহরির খাবার খেতে লেগে গেলাম, আর স্বপ্নের সেই সাক্ষাৎকার ও বিজ্ঞাপনটি মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল। মনে মনে ওয়াইফের উপর একটু বিরক্তই হলাম। কারণ, তেলের নাম জানাটাই তো বাকি রয়ে গেল। আমাকে আর একটা মিনিট পরে ডাক দিলে এমন কী-ই বা ক্ষতি হতো ?
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
তেলের মূল্য এদেশে শুধু বাড়েই, কমতে তো কখনো দেখি না, কারণ কী?
১৬ জুলাই - ২০১৯
গল্প/কবিতা:
১৫ টি
সমন্বিত স্কোর
৫.২২
বিচারক স্কোরঃ ২.২২ / ৭.০
পাঠক স্কোরঃ ৩ / ৩.০
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪