রুশ সাহিত্যিক আন্তন চেখভ রচিত ছোটগল্প কাশতাংকার প্রধান চরিত্র ছিল কাশতাংকা নামের একটা কুকুর ছানা । গল্পে কুকুর ছানাটি সমগ্র মানবজাতি কে দুই ভাগ করেছিল। প্রথম ভাগে ছিল মনিব ও তার ছেলে। এই দুইজনের ছিল কাশতাংকা কে মারার অধিকার। বাকি মানবজাতির ঠ্যাং কামড়ে দেবার অধিকার কুকুরটি রেখেছিল নিজের জন্য। জরি পাগলীর কাছে মানুষের অর্থ হল তার দেহ ভোগের খদ্দের । এই খদ্দেরাও দুই ভাগে বিভক্ত । প্রথম দল হল সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই দলের খদ্দেরা একা বা সংঘবদ্ধ ভাবে প্রায় তার উপর যৌন নির্যাতন করে । কখনো সংঘবদ্ধ ধর্ষনের স্বীকার হতে হয়। এবং ফুর্তি করে তারা শিস দিতে দিতে চলে যায়। টাকা পয়সা কিছু দেয় না। অন্য দল একই কায়দায় নিগ্রহ করলেও মাঝে মাঝে হাতে দশ বা বিশ টাকার নোট গুজে দেয়।
জরি পাগলীর নাম কে রেখেছিল সেই ইতিহাস জানা যায় না। মুক ও বধির এই নারীটির বয়স পচিঁশ থেকে পয়ত্রিশ বছরের মধ্যে হবে। এক সময় সে আকর্ষনীয় দৈহিক গঠনের অধিকারী ছিল। কান্দুপট্টির পতিতাদের সর্দারনি আনা খালা পড়ন্ত বিকালে জরি কে নিজ হাতে সাজিয়ে দিত। খদ্দেরদের কাছে যেসব পতিতার চাহিদা সবচেয়ে বেশি ছিল জরি তাদের মধ্যে অন্যতম। প্রতিদিন পনর থেকে বিশ জন খদ্দেরের মনোরঞ্জন তাকে করতে হত। আর তার আয়ের সব টাকা যেত আনা খালার হাতে। জরি ছিল কান্দুপট্টির লক্ষ্ণী। প্রাকৃতিক নিয়মে সূর্যোদয় ঘটে। আবার সূর্য পশ্চিমাকাশে অস্ত যায়। সময় বয়ে চলে। কয়েক বছরের মধ্যে জরি বুড়িয়ে যায়। তার শরীরে অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয়। বলা বাহুল্য বিষয়টা আনা খালার দৃষ্টি এড়ায় নি। এক সন্ধ্যায় জরির শাড়ি, অলংকার সহ সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে সর্দারনি ও তার দালালরা মিলে জরি কে কান্দুপট্টি থেকে বের করে দেয়।
দুই তিন দিন জরি রাস্তায় রাস্তায় ঘোরে। তারপর ক্ষুধা, অত্যাচার এবং যাবতীয় নিগ্রহ সহ্য করে আবার সে কান্দুপট্টির সামনে এসে দাড়াঁয়। এই জীবন ভালো না মন্দ সেটা বোঝার সামর্থ্য জরির নেই। তবে সে এইটুকু বোঝে এখানে সে দুই বেলা খেতে পারত। গলির ধারে দাড়িঁয়ে ছিল মৌসুমি। কান্দুপট্টির নতুন হার্টথ্রব। জরি কে দেখে এক ঝটকায় কোণে টেনে নিয়ে যায়। বলে, তুই এই নরকে আবার পচে মরতে এসেছিস কেন? যা ভাগ এখান থেকে। জরি কাতর স্বরে আঁ আঁ জাতীয় শব্দ করে। মৌসুমি কে বলতে চায় সে ক্ষুধার্ত। মৌসুমি জরির হাতে বিশটা টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলে, এক্ষুনি কেটে পড়। ওরা দেখতে পেলে তোকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে। মৌসুমির কথা না বুঝলেও তার চোখে ভয়ের ছাপ দেখতে জরির অসুবিধা হয় না। সে সেখান থেকে সরে আসে। টাকাটা পেয়ে জরি সোজা যায় রাস্তার ধারে চায়ের দোকানে। আবুল চাচার চায়ের দোকানটা কান্দুপট্টির অদূরে অবস্থিত। পতিতালয়ের খদ্দের এবং পতিতারা তার দোকানে চা, সিগারেট, কোমল পানীয় ইত্যাদি কিনতে আসে। আবুল চাচার বয়স পঞ্চাশ ছাড়িয়ে গেছে। মাথায় টুপি এবং মুখে কাচাঁ পাকা দাড়ি দেখে অনেকে মনে করতে পারে সে একজন ধার্মিক ব্যক্তি। কিন্তু কান্দুপট্টির মেয়েরা তার দোকানে আসলে আবুল চাচা রীতিমত রসালাপ জুড়ে দেয়। আজ কিন্তু আবুল চাচা জরি কে দেখে বিরক্ত হলো। তেড়ে উঠে বললো, ভাগ এখান থেকে, বুড়ি মাগী। বিনা পয়সায় খাবার খাওয়ার জন্য ঘুর ঘুর করে। একটা বনরুটির দাম কত জানিস?
কিন্তু জরি ভয় পায় না। বিশটা টাকা আবুল চাচার সামনে রেখে সদ্য ভাজা পরোটার দিকে ইঙ্গিত করে। আবুল চাচা চোখ কপালে তুলে বলে, টাকা কোথায় পেয়েছিস? চুরি করেছিস? উনুনের সামনে দাড়িঁয়ে পরোটা ভাজছে ব্যঙ্গা। আবুল চাচার কর্মচারী। গনগনে গরম উনুনের তাপে তার চোখমুখ লাল হয়ে উঠেছে। সে বিরক্ত হয়ে বলে, ওর সাথে চুকলি মেরে লাভ কি? দাম দিয়েছে। পরোটা দিয়ে দ্যান। ও থাকলে অন্য কাস্টোমার আসবে না। কথাটা শুনে আবুল চাচার খেয়াল হলো। সে প্রায় কেড়ে নেবার ভঙ্গীতে টাকার নোটা নিয়ে জরির হাতে একটা পরোটা ধরিয়ে দেয়। এভাবে শুরু হলো জরির ভাসমান জীবন।
দিনের বেলা জরি বড় রাস্তার একপাশে ফুটপথে বসে ভিক্ষা করে। তার গায়ের শতচ্ছিন্ন শাড়ি দিয়ে কোনো রকমে শরীরটা ঢেকে রাখে। আর রাতের বেলা সে ভাসমান ডাস্টবিনের একপাশে ঘুমাবার জন্য চলে যায়। প্রথম দিকে ফুটপথের এক কোণে দোকানের ছাউনির নিচে সে ঘুমাবার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ডিউটিরত নাইট গার্ড তাকে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে। বলাবাহুল্য ডাস্টবিনে সে সহজে জায়গা পায়নি। মানুষের সমাজের মতো সেখানেও উচ্ছিস্টের ভাগ নিয়ে কাক, বেজি, কুকুর এবং বিড়ালের মধ্যে রয়েছে নির্মম প্রতিযোগিতা। রাস্তার কুকুরগুলো জরি কে দেখলে তেড়ে যেতো। কিন্তু কয়েক দিন পর তারা বুঝতে পারলো, উপদ্রবটি শান্ত প্রকৃতির। এমন কি হাতে রুটি থাকলে জরি কুকুরদের দুই এক টুকরো খেতে দেয়। অতএব নেড়ি কুকুরের পাল জরির প্রতি প্রসন্ন হয়ে ওঠে। জরিও বুঝতে পারে মানুষ ছাড়া এই পৃথিবীতে অন্য প্রাণীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
রাস্তায় জরির ছয় মাস কেটে গেছে। একদিন বেশ বেলা করে ঘুম ভাঙ্গে তার। সূর্য তখন মাথার উপরে এসে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। গত কয়েক দিন ধরে তার শরীরটা ভালো লাগছে না। রাতে কিছু না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। এখন উঠে দাড়াঁতে গিয়ে বুঝলো তার শরীর টা কাপঁছে। অন্য সময় হলে সে শুয়ে থাকতো। কিন্তু এখন সে ক্ষুধার্ত। কোনো মতে টলতে টলতে জরি আবুল মিঞার দোকানের সামনে এসে দাড়াঁয়। তারপর আচঁলের খুট খুলে টাকা বের করে। দোকানে আজ বেশ ভীড়। কেউ ছোলার ডালের তরকারি দিয়ে রুটি খাচ্ছে। কেউ আধ আঙ্গুল লম্বা আয়তনের কাপে গরম গরম চা খাচ্ছে। বিক্রি বেশি হওয়ায় আবুল মিঞার মন আজ ফুরফুরে। জরি কে দেখে খোশ মেজাজে বলে, এই যে এসে গেছে। দোকানের নাম্বার ওয়ান কাস্টোমার। দোকানে উপস্থিত খরিদ্দাররা সবাই জরি কে চেনে। কেউ কেউ রাতে ফুটপথে তার শয্যাসঙ্গী। তাদের একঘেয়ে জীবনে একটু রঙের আভাস পেতে সবাই একসঙ্গে হেসে ওঠে। জরির শতছিন্ন শাড়ি থেকে শরীরের বেশ কিছু অংশ দৃশ্যমান। কেউ কেউ উৎসুকভাবে সেদিকে তাকিয়ে থাকে। আবুল মিঞাও বাদ যায় না। ক্রমে তার দৃষ্টি তীক্ষ্ণ হয়। পাকা জহুরীর মতো জরি কে নিরীক্ষণ করে সে বলে ওঠে, এ্যাই তুই কি করেছিস? কোত্থেকে পেটে বাচ্চা জোটালি?
তার সুউচ্চ কণ্ঠস্বর শুনতে কারও বাকি থাকে না। দোকানের সব কলরব থেমে যায়। তবে তা কয়েক মুহুর্তের জন্য। ভীমরুলের চাকে ঢিল ছুড়লে যেমন পরিস্থিতি হয় তেমনি ভাবে চারদিক থেকে মন্তব্য আসতে থাকে। কেয়ামতের বেশি দিন বাকি নেই। দুনিয়ায় তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এই পাপ সহ্য করা যায়? একশো ব্যাটার জন্ম। জরি ফ্যাল ফ্যাল করে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। বধির হবার কারণে কথাবার্তা শুনতে না পেলেও জরি বুঝতে পারে তাকে নিয়ে কথা হচ্ছে। ব্যাঙ্গা এতোক্ষণ উনুনের সামনে দাড়িঁয়ে পরোটা ভাজতে ভাজতে মানুষের অভিশাপ আর অশ্লীল কথাবার্তা শুনছিল। আচমকা সে বলে ওঠে, আপনারা কেউ জরি পাগলির সন্তানের দায়িত্ত্ব নেবেন? নিমেষে সবাই চুপ হয়ে যায়। ব্যাঙ্গা বলে, আপনারা যদি দায়িত্ত্ব নিতে না পারেন তো চুপ করে থাকেন। টিপ্পনি কাটে আসলাম, কি রে ব্যাঙ্গা, তোর অতো দরদ কিসের? তুই জরি পাগলির পিরীতের নাগর নাকি? ব্যাঙ্গা আসলামের কলার চেপে ধরে গরম খুন্তি বাগিয়ে ধরে, একটা বাজে কথা বললি চোখের মধ্যি খুন্তি ঢুকায় দিমু। হা হা করে ছুটে আসে আবুল। ব্যাঙ্গা কে কোনো রকমে ছাড়িয়ে নেয়। তারপর জরি কে ইশারায় চলে যেতে বলে। ভাগ এখান থেকে, গতরখাকি মাগী।
ব্যাঙ্গা চুপচাপ কাজে ফিরে যায়। তাকে ঘিরে তখনো বিদ্রুপ এবং টিপ্পনি চলছে। ব্যাঙ্গার পরিচয় অনেকে জানে। এই কান্দুপট্টিতে তার জন্ম। যৌবনে অজপাড়া গায়েঁর মেয়ে তারা একই গ্রামের মোসাদ্দেকের হাত ধরে ঘর ছেড়েছিল। লোকটির পেশা ছিল বিচিত্র। কখনো রাস্তার মাটি কাটার কাজ করতো। কখনো সিনেমার ব্ল্যাক টিকিট বিক্রি করতো। তারা কে সে লোভ দেখিয়েছিল ঢাকার জোনাকি সিনেমা হলে দুইজন প্রত্যেক সপ্তাহই সিনেমা দেখতে যাবে। ঢাকায় আসার মাস তিনেক বাদে কোনো এক সন্ধ্যায় নতুন বাসা ভাড়া করার কথা বলে তারা কে তার স্বামী আনা খালার কাছে বিক্রি করে দিয়ে যায়। তারা তখন অন্তসত্ত্বা। ব্যাঙ্গা বেড়ে উঠেছে কান্দুপট্টিতে। মানুষের উপর যত রকম অত্যাচার হতে পারে তার সাক্ষী এই চৌদ্দ বছরের কিশোর। খদ্দেররা বা রাস্তার মানুষ পতিতাদের সম্পর্কে অশ্লীল কথা বলে, তখন ব্যাঙ্গার মাথায় আগুন ধরে যায়। মায়ের যন্ত্রনাদীর্ন মুখটার কথা মনে পড়ে। বছর তিনেক আগে তারা গলায় দড়ি দিয়ে আত্নহত্যা করেছে। আজ জরি পাগলি কে দেখে ব্যাঙ্গার সেই অমোঘ নিয়তির কথা মনে পড়লো। আদিম অবস্থা থেকে মানুষ ক্রমে সভ্যতার দিকে এগিয়েছে। মানছি মানুষ বহুদূর অগ্রসর হয়েছে। হাতে হাতে মুঠোফোন থেকে নভোযান বা সাহিত্যে হোমার থেকে জেমস জয়েসের মতো সাহিত্যিকের আগমন ঘটেছে। কিন্তু তারা, জরি বা ব্যাঙ্গাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এঙ্গেলস বলেছিলেন, মানুষ এখনো বর্বর যুগে বাস করছে। মানব সমাজ যেদিন সত্যি সভ্য হবে সেদিন ভবিষ্যতের মানুষ অবাক হয়ে ভাববে, অতীতে মানুষকে কতো নিপীড়ন, অত্যাচার এবং লাঞ্ছনা সহ্য করে বেচে থাকতে হয়েছে।
জরির শরীরে অন্তসত্ত্বার লক্ষণ দেখা দেয়ার পর থেকে সে আর ফুটপথে বসে ভিক্ষা করতে পারে না। রাস্তার ভদ্রলোকেরা বিব্রত হতে পারে ভেবে আশেপাশের দোকানদাররা মাস্তান ডেকে জরি কে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন জরি অধিকাংশ সময় ডাস্টবিনের এক কোণে খেয়ে না খেয়ে পড়ে থাকে। তবে রাতের অত্যাচার বন্ধ হয়নি । সন্ধ্যার পর ব্যাঙ্গা চায়ের দোকানের কাজ শেষ করে তার ঝুপরিতে চলে যায়। যাবার পথে জরি পাগলির হাতে একটা রুটি বা কলা ধরিয়ে দিয়ে যায়। তবে সে জরির দিকে তাকায় না। কোনো কথাও বলে না।
শীত বিদায় নিয়েছে। বসন্তও চলে গেছে রিক্ত হাতে। গ্রীষ্মের তাপ প্রবাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত। এমনি এক চন্দ্রালোকিত রাতে নিস্তরঙ্গ শহরে গোঙ্গানি জাতীয় শব্দ ভেসে আসে। তবে সেই শব্দ শোনার মতো কোনো মানুষ আশেপাশে নেই। জরি প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে । তীব্র ব্যথায় তার চোখ দুটো বের হয়ে আসতে চাইছে। শরীরটা ধনুস্টংকারের রোগীর মতো বেকে যাচ্ছে। পৃথিবীতে একজন মানুষের আগমন হতে চলেছে। একসময় জরি অজ্ঞান হয়ে পড়ে। জরি কতক্ষণ অজ্ঞান ছিল তা সে জানে না। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন প্রথমে সে কিছু বুঝতে পারে নাই। কিছুক্ষণ পর ধাতস্থ হলে মনে হল তার শরীরের সেই তীব্র যন্ত্রণা একটু কমেছে। তবু তার নড়াচড়া করতে সাহস হয় না। আকাশে চাদেঁর আলোর বন্যা বইছে। নিচে রাস্তায় জ্বলছে রড লাইট। একটু নড়তেই জরির চোখে ধরা পড়ে তার পাশে লাল মতো একটা জীব হাত পা নাড়ছে। শব্দ শুনতে না পারলেও জরি বুঝতে পারে শিশুটি কাদঁছে। শৈশবে জরি যে ছয় বছর ফুটপথে মায়ের সাথে থাকতো সেখানে একাধিকবার সন্তান সম্ভাবা নারীদের সন্তান জন্ম দিতে দেখেছে। সে বিমুঢ়ের মতো শিশুটির দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর আস্তে আস্তে শিশুটিকে জরি কাছে টেনে নেয়।
শিশুটিকে সে নিরীক্ষণ করে। তারপর একসময় তাকে কোলে তুলে নেয়। পৃথিবীর সব শিশু মায়ের স্পর্শ বুঝতে পারে। এই নবজাতকটিও ব্যতিক্রম নয়। ধীরে ধীরে তার কান্না কমে আসে। কৌতুহল আর মমতাভরা চোখে মায়ের দিকে তাকায়। সন্তানের এই স্পর্শ এবং চাউনি তার কাছে অচেনা। এত ভালোবাসার দৃষ্টিতে কোনো মানুষ তার দিকে তাকায়নি। জরি শিশুটা কে আস্তে একটু দোলা দেয়। তার সমস্ত সত্ত্বা আনন্দে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। প্রসবের সময় জরির খুব বেশি রক্তক্ষরণ হয়েছে। একটু পরে সে জ্ঞান হারায়।
জরির যখন জ্ঞান ফেরে তখন মাথার উপর সূর্য উঠে গেছে। চোখ বন্ধ অবস্থায় জরি হাত বাড়ায়। তার বুকের ভিতর ধড়াশ করে ওঠে। কোলে বা পাশে কোথাও শিশুটি নেই। ধড়মড় করে উঠে বসার চেষ্টা করে জরি। দৃষ্টি যতদূর যায় তাকিয়ে দেখে। কোথাও তার সন্তান নেই। হামাগুড়ি দিয়ে উঠে দাড়িঁয়ে খোজেঁ সে। ডাস্টবিন, রাস্তা, ফুটপথ কোথাও শিশুটি নেই। আঁ আঁ জাতীয় শব্দ করে তার সন্তানের কথা জানতে চায়। কিন্তু সমগ্র পৃথিবী তারই মতো নির্বাক থাকে। তবে কি রাতের অন্ধকারে শিশু চোরেরা তার সন্তান কে চুরি করে নিয়ে গেছে? কান্দুপট্টির আশেপাশে এইসব চোরদের উপস্থিতি রয়েছে। জরি আর কিছু ভাবতে পারে না। অসুস্থ শরীরে ডাস্টবিনের একপাশে বসে সে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। রাস্তার নেড়ি কুকুরটি এতোক্ষণ জরি কে লক্ষ্য করছিল। এখন সে আস্তে আস্তে এসে জরির পাশে বসে থাকে। মানুষের মতো নির্মমতায় পশুরা এখনো অভ্যস্ত হয় নাই।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
মা কে নিয়ে লেখা একটা ছোট গল্প
০৩ মার্চ - ২০১৯
গল্প/কবিতা:
৩৭ টি
সমন্বিত স্কোর
৫.৩৩
বিচারক স্কোরঃ ২.৩৩ / ৭.০
পাঠক স্কোরঃ ৩ / ৩.০
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪