স্মৃতি ফেরা

বৃষ্টি ও প্রেম (সেপ্টেম্বর ২০২০)

হারুন-অর-রশিদ
  • ৬০
: কেয়া, কেয়া আমি এসে গেছি।
: পলাশ ভাই আপনি।
: লেখা, আমার কেয়া কোথায়?
: লেখা নেই।
: নেই মানে?
: কেয়া মারা গেছে। কাঁদবেন না পলাশ ভা্ইয়া। আপনাকে যেদিন ওরা মেরে রক্তাক্ত করে এসে বলল, পলাশকে মেরে ফেলেছি সেই দিন থেকে কেয়া নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে দেয়। শুধুই আপনার নাম জবতে থাকে। কয়েকদিন পরে একদিন বিলেত ফেরত এক ছেলে দেখে কেয়াকে পছন্দ করে। তার সাথে বিয়ের কথা পাকাপাকি হলে সেই রাতে জহর খেয়ে ঘুমিয়ে পরে। আপনে্ এতো দিন কোথায় ছিলেন পারলেন না কেয়া কে বাঁচাতে।আজ কেনইবা আসলেন। কেয়ার বুকে বসন্তের ফুল ফুটিয়ে, বর্ষাতে সব কিছু একাকার করে দিয়ে গেছে কেয়া।
‘ফুটবে না আর কোনদিন বর্ষার ফুল, ফুটবে তোমার ফাল্গুনের ফুল। কোকিল হয়ে উঠে বেড়াবে তুমি আসবে না আর কেয়ার বুকে।’
: লেখা ও কথা আর বলেনা। ওরা যখন আমাদের সর্ম্পকটা মেনে নিতে না পারল।তখন থেকেই আমাকে মারার ফন্দি বার করল। আমিও সাবধানে ছিলাম। কিন্তু পারুল যখন এসে বলল, কেয়া আপা আপনার জন্য ঐ বাঁশ বাগানে চাঁদনী রাতে অপেক্ষা করছে, তখন আমি ওর সাথে কেয়ার কাছে যাই দেখা করতে। চাঁদনী রাত, হঠাৎ করে আকাশ মেঘাছন্ন অন্ধকার হয়ে যায়। কেয়া আমাকে বলে, বাবা আমাকে নানা বাড়িতে পাঠিয়ে দিবে। আমাকে আর এখানে রাখবে না। চল আমরা দুজনে পালিয়ে যাই। আমি কেয়াকে বললাম, আজ আর দেরি করো না বাড়ি যাও অন্ধকার হয়ে গেছে বৃষ্টি আসতে পারে, তোমার সাথে কাল দেখা হবে। আমি বাড়িতে আসতে আসতে বৃষ্টিতে ভিজে যাই। আমি রাতে ঘুমিয়ে স্বপ্নে দেখি, সত্যি সত্যি কেয়াকে তার বাবা কোথায় যেন লুকিয়ে রেখেছে। আমি অনেক খুজেও কেয়াকে পাইনা। এদিন ছ্দ্মবেশ ধারণ করে আমি কেয়াকে খুজতে থাকি এ গ্রাম থেকে ঐ গ্রাম কোনো গ্রামেই তাকে পাই না। রাস্তার দুপাশে খেজুর গাছের সবুজ ছায়ায় ঘেরা অপুর্ব গ্রাম। দেখলেই প্রাণ জুরিয়ে যায়। এমন একটি গ্রাম খুজে পেলাম সেখানেই আমার অনেক আইসক্রিম বিক্রি হয়ে যায়। আর কিছুদুর আগালেই আমার মাইকের শব্দে এক মেয়ে এগিয়ে এসে বলে, দাদা আমাকে দুটি আইসক্রিম দাও। তখন আমার কাছে একটি মাত্র আইসক্রিম ছিল। আমি তাকে বললাম, আমার কাছে দুটি আইসক্রিম নেই, একটি আইসক্রিম আছে। আকাশে বিজলী চমকাচ্ছে, আমি আইসক্রিমটি দিয়ে তাড়াহুড়া করে গান বাজাতে বাজাতে আসতে থাকি। আমার পিছন থেকে কে জেন এসে মাথায় আঘাত করে তাতে আমি মাটিতে লুটে পড়ে যাই। আর কে জেন বলে এই গ্রামে গান বাজনা নিষিদ্ধ তুমি জান না। বৃষ্টি এসে আমার সব ছদ্মবেশ খুলে গেল কে জেন আমাকে বলে, ছদ্মবেশ আর কত ধারণ করবেন।
তারপর আমার কি হয়েছে আমি নিজেও জানি না। তবে বাবা সব বলতে পারবে।
: কোন বাবা।
: আমার আশ্রীতা বাবা। আমি এতোদিন যার কাছে ছিলাম।
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। নদীতে বেশ ঢেউ নৌকা নিয়ে যাতাযাত করা খুব কষ্টকর হয়ে পরেছে। কিন্তু কি আর করার সেইদিনও পেটের দ্বায়ে নদীতে যেতে হয়। একদিন নৌকা না চালাইলে যে পেটে ভাত যাবে না। চুলায় আগুন জ্বলবে না। তেমনি দিন ছিল সেইদিন।
নদী পাড়াপাড়ের তেমন যাত্রী পাওয়া গেল না। আমি হাত মুখ ধুতে থাকি এমন সময় দেখি কেজেন একটি বাঁশ হাতে পরে রইছ নদীর তীরে। তারপর আমার এখানে। কি ওর পরিচয় আমি কিছুই জানি না। ও জ্ঞান ফিরে বলতে লাগল,
: আমি কে? আমি কোথায়? কি আমার পরিচয়? কিছুই আমার মনে পরছে না।
আমি তখন কি বলব ভেবে উঠতে পারলাম না তাই ওকে নতুন এক নাম দেই শিমুল।শিমুল হয়ে সে আমাদের এখানেই আছে। আমি ওর স্মৃতিশক্তি ফেরানো জন্য কত কিছুই না করেছি। এখান থেকে ওখানে কিন্তু কিছুতেই ফিরল না তার স্মৃতিশক্তি।
আমার মেয়ে সাথে ও বেশ মানিয়ে নিল। রেনু একদিন বৃষ্টিতে ভিজে কোথা থেকে আসছে ওকে দেখে শিমুল দৌড়ে যায় ওরা দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে বৃষ্টিতে ভিজে ওরা দুজনে গল্প করতে থাকে হঠাৎ শিমুল জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
তারপর বলে, কেয়া কোথায়?
রেনু জিজ্ঞাস করে কোন কেয়া, কোথাকার কেয়া?
: আমার কেয়া। আমি কেয়াকে ভালবাসি। আজ থেকে কয়েক বছর আগে আমাদের পরিচয় হয়। আমার আর কেয়ার বৃষ্টিতে ভিজতে খুব ভাল লাগত। বৃষ্টি ভেজা শরীর আমর ভাল লাগে। যে করেই হোক বৃষ্টির দিনে আমরা দুজনে মিলে দেখা করতাম। দুজনের মিলে বৃষ্টির আনন্দ উপভোগ করতাম। একদিন বৃষ্টিতে দুজনে মিলে নৌকা বিলাসে যাই। কে জেন দেখে ফেলে। তার পরে থেকে কেয়া কে বৃষ্টির দিনে ঘরে বন্ধী করে রাখা হতো, আমি জানতান না। আমি পলাশ ফুলে মালা গেছে কেয়ার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম কেয়ার আসতে দেড়ি হয়ে গেল বৃষ্টি শুরু হলো কিন্তু কেয়া আর আসল না। আমি সেদিন একা একা বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে কেয়াদের বাড়ির পেছনে ঝোপে বসে রইলাম। জানালা দিয়ে কেয়াকে দেখা গেলেও ও আমার শব্দ শুনতে পেলনা। বৃষ্টিতে ভিজে পলাশ ফুলের মালা আরো সতেজ হয়ে গেল। অতপর দেখা না করে বাড়ি ফিরে আসতে হলো...
: কেয়া, আমার কেয়া।
: কি বলছিস বাবা? কোন কেয়া? এইতো রেনু তোর সামনে বসা।
: বাবা আমার সব মনে পরেছে। আমি সব মনে করতে পারছি। আমার নাম পলাশ। আমার বাড়ি চাপাডাঙ্গায়। আমি সব মনে করতে পারছি।
: কোথায় যাচ বাবা?
: আমি আসছি বাবা।
এই বলে দৌড়ে কোথায় জেন চলে গেলো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী অনন্যসাধারণ ভাবে অনুপম লেখা I
ভালো লাগেনি ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

২৬ জানুয়ারী - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪