'আব্বা!'
সুরুজ মাষ্টার পত্রিকার দিকে দৃষ্টিপাত রেখেই বললেন, 'বল।'
'ও আব্বা!'
'আমি শুনতাছি।'
'শুনলেই হইবো না, এদিক চাও।'
সুরুজ মাষ্টার পত্রিকা ভাজ করে তাকালেন।
'দ্যাশে নাকি অসুখ আইছে, তার লাগি ঘরবন্দী থাকা লাগবো!'
'হ, ক্যাডাই কইল?'
'মনির।'
'কথা হাছাই।'
'তয় আমি যে সেই ছোটকাল থেইক্কাই ঘরবন্দী অইয়া আছি। অব্যেশ অইছে। এতো মানুষ ক্যামনে...?'
সুরুজ মাষ্টারের চোখে অশ্রু ফোঁটার গড়াগড়ি। সত্যি! ছেলেটার এই কথাটিই আজীবনের পাপ অভিশাপ বলে মনে করেন তিনি।
ছেলেটি সেই ছোটবেলা থেকেই বলতো, 'আব্বা! আমিও স্কুলে যাবো। আমারেও লওনা।'
সুরুজ মাষ্টার সাইকেলে উঠা মাত্রই চোখ দুটো কেঁদে কেঁদে উঠে। ছেলেটি প্রতিবন্ধী। হাঁটতে পারে না। একা-একা...। একা-একা...।
পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষই অসহায়। কেউ ভালোবাসায়, পেটের ক্ষুধায়, কেউ আবার সুখ শান্তির নেশা। আবার কেউ জীবনের প্রতিটি লাইনে নিজেকে নিজ থেকে লুকিয়ে রেখে ভোগে। সত্যি! এইসব মানুষই প্রকৃতপক্ষে অসহায়। যাদের সবকিছু আছে কিন্তু বেঁচে থাকার ইচ্ছে নেই।