মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন দেশ

ভাঙ্গা মন (নভেম্বর ২০১৯)

মুহম্মদ মাসুদ
  • ১০৬
বেশ কয়েক মাস আগের ঘটনা। 'সোনার বাংলা' ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছিলাম সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে। বিকাল ৫ টায় ছাড়ে ট্রেন। শুনেছি বাংলাদেশের ট্রেন গুলোর মধ্যে এই ট্রেনটি যাতায়াতের জন্য বেশ ভাল।
মনোযোগ সহকারে যখন কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পড়ছিলাম। ঠিক তখনি এটেন্ডেসরা এসে বলল, জানালা বন্ধ রাখতে। গ্লাস এবং সাটার দুইটাই যেন ফেলে লক করে দেওয়া হয়। কেউ কেউ তাও জানালা খোলা রেখেছিলো। পূর্বের ট্রেনে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা না থাকায় বুজতে পারলাম না কেন বললো।
প্রায় ৮ টার দিকে হঠাৎ হৈচৈ পড়ে গেল। চলন্ত ট্রেন থেকে থাবা মেরে ব্যাগ নিয়ে গেছে এক বয়স্ক দাদুর। জায়গাটা ঠিক কোথায়? জানিনা। এখানে ট্রেনটি একটু আস্তে চলছিল। মূহুর্তের মধ্যে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে যায় সবার মাঝে।
এরকম ঘটনার ফলে বয়স্ক দাদু কাঁদতে শুরু করলো। সবাই তখন স্তব্ধ হয়ে গেল।একটা ব্যাগের জন্য এভাবে কেউ কাঁদে। অনেকে আবার বিরক্ত হচ্ছিল। আবার অনেকেই জিঙ্গেস করতে লাগলো। কি ছিলো ব্যাগের ভিতর? কেউ কেউ বলছিলো অনেক টাকা পয়সা ছিলো নাকি? এরকম নানান কথা জিঙ্গেস করা আর সান্ত্বনা দেওয়া সত্বেও দাদুর কান্না থামছিলো না।
ঘটনাটি বিস্তারিত জানার খুব কৌতুহল হলো আমার। সিট থেকে উঠে ওনার পাশে গিয়ে দাড়ালাম। বয়স্ক দাদু আস্তে আস্তে কান্নাকাটি করছে আর বলছে, হায়রে দেশ! হায়রে আমার দেশ।
দাদু যখন কান্না থামিয়ে বসে আছে, তখন দাদুর পাশের সিটে বসা যুবক ভাই আবার জিঙ্গেস করলো, কি ছিলো ব্যাগে? তখন দাদু বললো, ব্যাগে তেমন কিছু ছিলো না।ছিলো শুধু আমার কিছু পরনের কাপড়চোপড় আর বাবু (আমার ছেলে, আদর করে ডাকি) আর নাতির জন্য আনা নারু। আর ছোট একটা মোবাইল।
বুঝতে পারলাম দাদু গ্রাম থেকে ঢাকায় যাচ্ছে ছেলের বাসায়। তখন পাশে বসা যুবক ভাই আবার জিঙ্গেস করলো, এই সামান্য কিছুর কাঁদলেন। দাদু কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, এই সামান্য বস্তুর জন্য কাঁদিনি। কেঁদেছি এই ভেবে যে, ছয় মাস খেয়ে না খেয়ে, জীবন বাজি রেখে, না ঘুমিয়ে যুদ্ধ করেছি দেশ স্বাধীন করার জন্য। যুদ্ধ করতে গিয়ে হারিয়েছি বাবা মা ও ভাইবোন। কিন্তু আজ এখন আমি, আমরা পরাধীনতায় বন্দী। স্বাধীন ভাবে চলতে পারছি না। নিজের দেশে নিজেরাই নির্যাতিত। নিজেরাই নিজের কাছে হেঁড়েছি।
শুনে আমিও স্তব্ধ হয়ে গেলাম। যুবক ভাইটিও মাথা নিচু করে রাখলো। আর কিছু বললো না।আমি তখনও সেখানে দাড়িয়ে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর আবার যুবক ভাই বললো, আপনি কোথায় যাবেন? দাদু বললো, আমি কমলাপুর যাবো। ওখানে আমার ছেলে এসে থাকবে।
যুবক ভাই বললো, নাম্বার আছে আপনার ছেলের।
দাদু বললো, জি আছে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী অনন্য, শুভেচ্ছা সতত ।
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
মুহম্মদ মাসুদ ধন্যবাদ প্রিয় কবিবর।
নাস‌রিন নাহার চৌধুরী খুব কঠিন বাস্তবতা সম্পৃক্ত গল্প। আসলেই আমাদের মানবিকবোধ জাগ্রত করা জরুরি। আরেকটু বড় করলে একটি পরিপূর্ণ গল্প হতো। শুভেচ্ছা সহ ভোট রইলো।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

আমাদের চোখের সামনে প্রতিদিন এমন অনেক ঘটনায় ঘটে। যা আমাদের বারবার শিহরিত করে, বারবার কাঁদিয়ে যায়, এমনকি বারবার ভাবিয়ে তোলে। আসলে কি এমনটা হওয়ার ছিলো? এরকম নানান প্রশ্ন এসে ভিড় করে মন পাড়ায়। হয়তো কখনো কখনো এর সমাধান মেলে কিন্তু....। যখনই কিছু করার উপায় থাকে না ঠিক তখনই মন ভেঙে যায়। আর হৃদয়ের মধ্যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়। আলোচ্য অংশে উল্লেখ বিষয়ের সাথে ভাবগত সামঞ্জস্যতা রয়েছে। যা গল্পকে আরও বেশি সার্থক করে তুলবে।

৩০ মে - ২০১৮ গল্প/কবিতা: ৪৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪