দিগন্ত জোড়া মাঠ চার দিকে ধূ ধূ শূন্যতা কোথাও কেউ নেই, এক দৃষ্টে চেয়ে থাকি আমি, মনে মনে কত কথা জাগে কত ইচ্ছার সে কি লুটোপুটি কত কিছু ভাবি আনমনে কল্পনার সমুদ্র সফেনে ভেসে বেড়াই নিয়ত আমি। এই চুপ চুপ কথা কইস নাতো আমার খোকা ঘুমায় ঐ দোলনায়। আকাশের চাঁদ মামা টিপ দিয়েছিল আমার চাঁদের কপালে লাল নীল পরীরা আলতো করে চুমু খেয়েছিল তার গালে। দিন যায়; মাস গড়িয়ে বছর ফুরোয় আস্তে আস্তে হাটতে শিখে খোকা। ছুটে বেড়াই তার পেছনে আমি সারাক্ষণ সদাই তটস্থ থাকি আমি এই বুঝি ব্যাথাপায় সে, টুক টাক পছন্দের মজাদার রান্না করি খোকার জন্য। কত যত্নে লালন-পালন করি আমার খোকাকে। চার/পাঁচ বছরে সাদা কাগজে "অ" "আ" লিখতে শেখাই তাকে, খোকার সে কী আনন্দ নতুন কিছু শিখতে পেরে। খোকাকে নিয়ে ছুটে বেড়াই স্কুল থেকে স্কুলে, দিন রাত কত কৌতুহলী প্রশ্নের জবাব মেটাই তার বন্ধু হয়ে। বছরে বছরে বেড়ে ওঠে আমার খোকা! স্কুলের গন্ডি পেড়িয়ে কলেজের পথে পা বাড়ায় সে, তারপর আস্তে আস্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে সে। এভাবে বছরে বছরে বয়স বাড়ে আমারও। একদিন খোকা ছুটতে ছুটতে এসে সালাম করে বলে মা মা আমার ভাল চাকরী হয়েছে শুনে সেদিন তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলি আমি। এতদিনে বুঝি আল্লাহ্ আমার স্বপ্ন সফল করেছেন, আমার আর চিন্তা কি? সেই ছোট খোকাটিকে আজ আমি পরিপূরণতা দিয়েছি। এখন আমার বিশ্রামের প্রয়োজন, তবে আর একটা দায়িত্ব খোকার জন্য বৌ খোঁজা খোকার ঘর বেঁধে দিয়ে তবেতো আমার ছুটি! ভাল বংশ শিক্ষা-দীক্ষা আর সেরা সুন্দরী দেশের সবস্থানে তন্ন তন্ন করে খুঁজে নিয়ে আসি আমার খোকার জন্য লাল টুকটুকে বউ। দুইজনের জননী হয়ে আনন্দেই কাটবে দিন এটাইতো স্বাভাবিক। খোকার ঘরে সুখের ঢেউয়েরা নিত্য আছরে পরে। ব্যস্ততায় কাটে তাদের দিন আজ এখানে তো কাল ওখানে, আমি পথ চেয়ে বসে থাকি আর ভাবি এই বুঝি মোর খোকা শুধায় মা খেয়েছো? দিনের পরে দিন যায় জ্বরের ঘোরে পড়ে থাকি বিছানায়; এক দিন নিজেকে আবিষ্কার করি অনেকের মাঝে আমি ওরাও আমারই মতো অন্যকারো মা কিম্বা বাবা জানিনা কখন কিভাবে এখানে এসেছি। অনেক মায়ের মাঝে আমি একজন "মা" আমি এখন অন্য এক খোকার গড়া বৃদ্ধাশ্রমে। জানালার ধারে একাকী বসে অসীম শূন্যতার দিকে চেয়ে থাকি। আপন জনের পরশ বিহীন জীবনের এই ক্রান্তি লগ্নে হাতরে বেড়াই আর ভাবি ছোট্ট দুটো হাতে গলা জড়িয়ে খোকা বলছে মা মাগো কেমন আছো তুমি ও আমার প্রিয় "মা"! পরক্ষণেই বুঝি এই বৃদ্ধাশ্রমের মাঠ ঘাট প্রান্তরে আমার ভাবনা গুলো আছরে পরে বার বার কোথও কেউ নেই, এখানে আমি বড় একা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফাতেমা প্রমি
বিষয়বস্তু আর প্রকাশ চমত্কার..শেষের দিকে অনেক ভালো লেগেছে,শুরুতে বিরক্ত লাগছিল...গদ্যকবিতাও ছন্দমধুর সুরেলা হতে পারে,সেই ঘাটতিটা আছে এখানে....তবে overall অনেক সুন্দর হয়েছে এটা বলতেই হয়....
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।