ডেডলাইনঃ কাজীপুর

জননী (মে ২০২৩)

Jamal Uddin Ahmed
  • 0
  • ৩০
টেস্ট রিপোর্টগুলো ভাল করে দেখে ডাক্তার সোহেল শিকদারের কপাল কুঁচকে যায়। তিনি রুগির সাথে আসা মহিলার দিকে চোখ তুলে তাকাতেই দেখেন মহিলাটি স্থির দৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছেন। ডাক্তার হিসেবে অমন ঘটনা তাঁর কাছে অস্বাভাবিক কিছু নয়। রুগিরা সাধারণত আশ্বাসবাণী শোনার জন্য ডাক্তারের দিকে এভাবেই হা করে তাকিয়ে থাকেন। তাছাড়া ডাক্তার এবং রুগির সাথে আসা এই মহিলা - রুগির মেয়েই হয়তো হবে , তাঁরা এমন বয়সের নন যে এরকম তাকানোর মধ্যে অন্যকিছু থাকতে পারে। তবুও ডাক্তারের কাছে এমন তাকানো একটু বিব্রতকর লাগে এজন্য যে আগের দু’বারে মহিলা যখন তাঁর মাকে নিয়ে এসেছিলেন, ডাক্তার লক্ষ করেছেন, তখনও তিনি বেশ নিবিষ্টভাবে তাঁর চেহারার দিকে তাকিয়েছিলেন।

মন থেকে এসব খটকা দূর করে ডাক্তার এবার কাজের কথায় এলেন। বললেন, ‘রুগিকে এডমিট করিয়ে দিন। ওনার বেশ কিছু জটিলতা আছে।’

রুগি মিসেস ফারহানা বেগম হুইল চেয়ারে চড়ে ডাক্তারের চেম্বারে এসেছেন। চেম্বার মানে স্কয়ার হাসপাতালে ডাক্তারের নির্দিষ্ট কক্ষ। রুগির অবস্থা যে খুব একটা সুবিধের নয় তা তাঁর পরিবারের লোকজনও বুঝতে পারে। ডায়াবেটিসের সাথে সাথে কিডনি, হার্ট, ইত্যাদির অবস্থাও বেশ নাজুক। চোখেও দেখতে পান না ভাল করে। হুইল চেয়ারে বসে থাকতেও তাঁর বেশ কষ্ট হচ্ছে। শ্বাস-প্রশ্বাসের ওঠানামা দেখে বুঝা যাচ্ছে যে ফুসফুসেও সমস্যা আছে।

রুগি ঘন ঘন শ্বাস টানতে টানতে তাঁর মেয়েকে বললেন, ‘রেহানা, আমি হাসপাতালে থাকব না।’

হাসপাতালে রুগি রাখা যে কী ঝক্কি তা রুগির সঙ্গী অর্থাৎ রেহানাও বুঝতে পারেন। তিনি মায়ের কথা শুনে আবার ডাক্তারের মুখের দিকে তাকান।

ডাক্তার মাথা নাড়িয়ে বললেন, ‘হাসপাতাল ছাড়া ম্যানেজ করা যাবে না। খুব শিগগিরই ওনার ডায়ালাইসিস লাগতে পারে। তাছাড়া অন্যান্য দিক তো আছেই। আমাকে ছাড়াও অন্যান্য স্পেশালিষ্টও লাগবে।’

ডাক্তারের কথা শুনে রেহানার মুখ ফ্যাঁকাসে হয়ে যায়। বাসায় নিজের কোনো বাড়তি লোকও নেই। স্বামী বেচারা ব্যস্ত ব্যবসায়ী; বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ওষুধ পরিবহণের কাজ করেন। ট্রাক-ভ্যান চারটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ওষুধ নিয়ে ছুটোছুটি করে। ঢাকায় বসে তাঁকে সার্বক্ষণিক কান খাড়া রাখতে হয়, সব ধরণের ঝুটঝামেলা সামাল দিতে হয়। বড় ধরণের কোনো সমস্যা, যেমন, দুর্ঘটনা কিংবা পুলিশি ঝামেলা হলে তাঁকে অকুস্থলে ছুটে যেতে হয়। তাছাড়া ঢাকায় ফেরার পথে গাড়িগুলো যেন খালি না এসে ঢাকামুখী যেকোনো দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে আসতে পারে সেজন্য ওসব এলাকার দালালদের সাথেও যোগাযোগ রাখতে হয়। এসবের বাইরেও তাঁর আরও কিছু ব্যবসা আছে পার্টনারশিপে। ছেলে মাহবুব লণ্ডনে পড়তে যাওয়ার নাম করে সেখানে দু’বছর কাটিয়ে স্থায়ী হবার আশায় ফ্রান্সে গিয়ে শিকড় গেড়েছে। মেয়ে ছোট; সে কলেজে পড়ে। পড়াশোনায় মনোযোগী বলে মা-বাবার ইচ্ছা মেয়েটাকে ডাক্তারি পড়াবেন। বাবা বছর তিনেক আগে মারা যাবার পর রেহানা মাকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। রেহানা ছাড়া মায়ের আর কেউ নেইও। কিন্তু রেহানাও তো আগের মতো নেই; বয়স আস্তে আস্তে তাঁকেও কাবু করেছে। ডায়াবেটিক হয়ে না পড়লেও আইজিটিতে আছেন; হাইপারটেনশনের জন্যও ওষুধ খান।

রেহানা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে বলেন, ‘ওষুধ তো খাচ্ছিলেন নিয়মিত; একজন ডাক্তারকেও দেখাতাম কিছুদিন পরপর, শ্যামলীতে। এরই মধ্যে শরীরটা এত খারাপ হয়ে গেল।’

ডাক্তার বলেন, ‘হয়তো তত গুরুত্ব দেননি আপনারা; এসব রুগির নিয়মিত চেক-আপের প্রয়োজন আছে। আপনারা কতটুকু কী করেছেন কে জানে।’

স্বামীর সাথে আলাপ না করে মায়ের ভর্তির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া রেহানার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তিনি ডাক্তারকে বলেন, ‘আজকে আমরা প্রস্তুত নই। কালকে না হয় যোগাযোগ করি।’

ডাক্তার সোহেল বলেন, ‘ঠিক আছে, তবে দেরি করবেন না। আর ভর্তির ব্যাপারে কাউন্টার থেকে বিস্তারিত জেনে নিবেন; ঠিক আছে?’

রেহানা সম্মতিসূচক মাথা নাড়েন। এবং আবারও তিনি মনোযোগ দিয়ে ডাক্তারের চেহারার দিকে তাকান।

মানুষ হিসেবে রেহানার স্বামী মাহমুদুল হক কোমলমতি ও সহমর্মী। রেহানার প্রস্তাবের আগেই তিনি শাশুড়িকে ঢাকায় নিয়ে আসার কথা বলেন। তাঁর কথা, নিজের মা-বাবা বেঁচে থাকলে তাঁরাও হয়তো ছেলের বাসায় থাকতেন। এখন অসহায় শাশুড়িকে তাঁর মেয়ের কাছে নিয়ে এলে সবারই ভাল হয় এবং পুণ্যও হয়। শ্বশুর বেঁচে থাকতে কারুর মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজের বেশ কিছু সয়-সম্পত্তি বিক্রি করে দিন গুজরান করলেও, এখনও তাঁর ভিটে ছাড়াও বেশ কিছু ধানী জমি আছে। শাশুড়ি মারা গেলে এটা স্বাভাবিকভাবে রেহানারই পাওয়ার কথা; কিন্তু সে জন্য নয়; বরং বেদখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মাহমুদুল হক স্ত্রীকে নিয়ে বছরে দুয়েকবার শ্বশুরবাড়িতে ঘুরে আসেন। এতে কবর জেয়ারত এবং জমির বর্গাদার ও বাড়ির পাহারাদারদের সাথে দেখাসাক্ষাৎ দুই কাজই হয়। আসার সময় জমির ফসল বিক্রির টাকা এবং কিছু মৌসুমি ফল, শাকসবজি ইত্যাদি নিয়ে আসাও হয়।

রেহানার কাছে আসার পর থেকে মা বহুবারই কথাটা বলেছেন। মায়ের মন খারাপ হলেই তিনি রেহানাকে ডেকে বলেন, ‘আমি তো মরেই যাব। তোর বাপের রেখে যাওয়া যতটুকু সম্পদই থাক, তোরা খা। তবে আমার ছেলে ফিরে আসলে কিন্তু ওসব তার হাতে ছেড়ে দিস মা।’ এ কথা বলার সময় মায়ের দৃষ্টিদুর্বল চোখ আর্দ্র হয়ে যায়।

রেহানা মায়ের কষ্ট বোঝেন। মায়ের চোখের পানি মুছিয়ে দিতে দিতে তিনি বলেন, ‘ঠিক আছে মা, সবকিছু তোমার ছেলেই পাবে। আমার ওসবের দরকার নেই।’

রেহানার জন্মের পর আর তার কোনো ভাই-বোন হয়নি। মায়ের খুব ইচ্ছে ছিল তাঁর যেন আর একটা ছেলে জন্মায়। কিন্তু সে ভাগ্য তাঁর হয়নি। এজন্য প্রায়ই লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদতেন।

বাবা ছিলেন সরলরৈখিক মানুষ। অনর্থক কোনো ব্যাপারে গুরুত্ব দিতেন না। তাঁর সোজা কথা, ‘আমার পাওনা যা, আল্লাহ আমাকে তা-ই দিয়েছেন, যা নেবার তা নিয়ে গেছেন।’ কিন্তু এই সোজাসাপটা প্রবোধে মায়ের মনের ব্যথা তো প্রশমিত হয় না। তিনি তাঁর নাড়িছেঁড়া প্রথম সন্তানকে ভুলবেন কেমন করে। তবে তাঁর গর্ভে যদি আরেকটি ছেলেসন্তান জন্ম নিত তবে হয়তো তিনি প্রথম সন্তানের কথা ভুলে থাকতে পারতেন। তিনি এখনও, জীবনের শেষ বেলায়, বিশ্বাস করেন তাঁর বাবু ফিরে আসবে।

রেহানা তার হারানো ভাইয়ের ভাল নাম জানেন না, কোনোদিন বাবা-মাকেও জিজ্ঞেস করেননি। তাঁর কাছে নিয়ে আসার পর অবশ্য মাকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলেন। কিন্তু ভাল নাম মা-ও ভুলে গেছেন; বাবু নামই সবসময় তার মুখে লেগে থাকে।

মাহমুদ সাহেবের হাজার ব্যস্ততা থাকলেও শাশুড়ির অবস্থা শুনে তিনি রেহানাকে বলেন, ‘না, আমাদেরই ভুল হয়েছে। আগেই আমাদের গুরুত্ব দেয়া উচিৎ ছিল। এখন আম্মার যা অবস্থা, হসপিটালাইজ করতেই হবে। আমরা যতটুকু পারি করব, আর রাত্রে আম্মার কাছে রানীর মা থাকবে। তোমার কষ্ট হবে জানি; একটা ছোটা বুয়া জোগাড় করা যায় কি না দেখ।’

ঠিক পরদিন হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এর পরের দিন মাহমুদ সাহেবের ব্যস্ততা কম থাকায় তিনি সন্ধ্যার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে যান। ভর্তির যাবতীয় বিষয়াদি রেহানা আগেই জেনে গিয়েছিলেন, তবুও কেবিনের আকার-প্রকার এবং আনুষঙ্গিক খরচপাতি ইত্যাদি ভালভাবে জানার জন্যই মাহমুদ সাহেব নিজে এসেছেন। মোটামুটি সবকিছু ফাইন্যাল করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা দুই মিনিটের জন্য ডাক্তার সোহেলের সাথে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেন।

হাসপাতালের স্টাফ সরাসরি ‘না’ না বলে কী বুঝে ডাক্তারের সাথে কথা বলে দু’মিনিটের অনুমতি নেন। রেহানাকে দেখার সাথে সাথেই ডাক্তার সোহেল জিজ্ঞেস করেন, ‘রুগিকে নিয়ে আসেননি কেন?’

মাহমুদ সাহেব বলেন, ‘স্যরি, ডাক্তার সাহেব, আমার ব্যস্ততার জন্যই সবকিছু গোছাতে পারিনি। কাল সকালেই নিয়ে আসব।’

ডাক্তার বলেন, ‘জানেনই তো, রুগির অবস্থা রিস্কি। গতকালই নিয়ে আসা উচিৎ ছিল।’

কিছু বলার না থাকায় স্বামী-স্ত্রী দুজন অসহায়ের মতো পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করেন।

ডাক্তার সোহেল তখন বলেন, ‘ঠিক আছে যান – ফরমালিটি তো কমপ্লিট?’

রেহানা বলেন, ‘জ্বি। টাকা জমা দিয়ে দিয়েছি। কাল দশটার মধ্যেই চলে আসব।’

‘ঠিক আছে আমি ওদের সাথে কথা বলব।’ বলে, ডাক্তার তাঁদের বিদায় জানান।

হাসপাতাল থেকে বেরোতে বেরোতে মাহমুদ সাহেব রেহানাকে বলেন, ‘ডাক্তারকে কেমন পরিচিত পরিচিত মনে হয়।’ রেহানা বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘তোমারও? প্রথম দিন থেকে আমারও এরকম লাগছে।’


শাশুড়িকে কেবিনে রেখে মাহমুদ সাহেব রেহানাকে বলেন, ‘কোনো অসুবিধা হলেই আমাকে ফোন করো। আর রাতের বেলা আম্মার কাছে রানীর মা থাকলে চলবে কি না তা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিয়ো।’ কাজের তাড়া থাকায় মাহমুদ সাহেব আর থাকতে পারেননি।

সারাদিন অনেক ধকল গিয়েছে। রুগি আসার সাথে সাথেই কত রকমের টেস্ট শুরু হয়ে যায়। ব্লাড, ইউরিন, মিউকাস এসব তো নিয়েছেই। এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি আরও কী কী করতে হয়েছে। রেহানা স্বামীকে কিছুক্ষণ পরপর চিকিৎসার অগ্রগতি জানিয়েছেন। সন্ধ্যার পর রানীর মা এবং মেয়ে মিথিলাকে নিয়ে মাহমুদ সাহেব হাসপাতালে এলে রেহানা একটু হাঁফ ছাড়েন। সাড়ে আটটার দিকে ডাক্তার সোহেল একটা ব্রিফিং দিবেন, তখন মাহমুদ সাহেবের উপস্থিত থাকাটা জরুরি।

নানীর নাকে অক্সিজেনের নল আর ঝুলানো স্যালাইনের ব্যাগ দেখে মিথিলা ভড়কে যায়। নানী ইশারায় তাকে কাছে ডেকে নিয়ে তার মাথায় হাত বুলান। মিথিলা নুয়ে নানীকে চুমু খেয়ে বলে, ‘চিন্তা করো না নানী, এই তো ভাল হলেই তোমাকে বাসায় নিয়ে যাব।’ নাতনীর কথা শুনে নানী একটু মুচকি হাসেন। মুখে মাস্ক থাকায় কিংবা কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে বলে তিনি কোনো কথা বলেননি। নইলে হয়তো হতাশাভরা কণ্ঠে বলতেন, ‘আর আমার ভাল হওয়া!’

মাহমুদ সাহেব স্ত্রীর খাওয়াদাওয়ার খোঁজ নেন। রেহানা অবশ্য আসার পথে হটপটে করে ভাজা ডিম এবং সেঁকা রুটি নিয়ে এসেছিলেন; তা দিয়েই লাঞ্চ সেরে নিয়েছেন। মায়ের জন্য হাসপাতাল থেকে স্যুপ আর মাছ-ভাত দিয়েছিল। মা স্যুপ খেলেও ভাত খেয়েছেন অল্পই। রেহানা মায়ের অবশিষ্ট খাবারটুকুও খেয়ে নিয়েছেন। মাহমুদ সাহেব বলেন, ‘রানীর মাকে খাইয়ে নিয়ে এলাম, ডাক্তার অনুমতি দিলে তাকে রেখে যাব।’

দরজায় নক হতেই সবাই সটান হয়ে যান। ডাক্তার সোহেল নার্সসহ কেবিনে ঢুকেই রুগির অবস্থা পরখ করেন। তারপর নার্সের হাত থেকে ফাইল নিয়ে পাতা উলটাতে উলটাতে বলেন, ‘আমি রিপোর্টগুলো ভাল করে দেখেছি। কালকে সকালে ইউরোলজি এক্সপার্ট আসবেন, আমার ধারণা রুগির ডায়ালাইসিস লাগবে – যা করার ওই ডাক্তার সাহেব করবেন। আমি হার্ট-চেস্টের কথা বলতে পারব, হার্টের অবস্থা নাজুক – বিট খুব কম। আর লাংসে পানি জমেছে, এজন্য শ্বাসকষ্ট বেড়েছে।’

ডাক্তারের মুখস্তবৎ কথাগুলো শুনে রেহানার হার্টবিট বেড়ে যায়। ফ্যাঁকাসে মুখে তিনি স্বামীর দিকে তাকান।

মাহমুদ সাহেব স্ত্রীকে সান্ত্বনামূলক কিছু বলতে না পেরে অসহায়ভাবে ডাক্তারের পরামর্শ চান, ‘আমরা এখন কী করব?’

ডাক্তার সোহেল বলেন, ‘না, এখন আপনারা আর কী করবেন? চিকিৎসার জন্য যা যা করা দরকার করবেন আর সৃষ্টিকর্তার কাছে ওনার জন্য প্রার্থনা করবেন। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করব।’

ডাক্তার রানীর মাকে থাকার অনুমতি দিলেও রেহানা মায়ের শারীরিক অবস্থার কথা শুনে ভেঙ্গে পড়েন। তিনিও হাসপাতালে থেকে যেতে চান।

মাহমুদ সাহেব বলেন, ‘প্রয়োজনের মুহূর্তে তুমি থাকবে নাহয় আমি থাকব, কিন্তু এখন রানীর মা থাকুক। তুমিও তো সুস্থ নও, রাতে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো, কালকে তো আবার আসতে হবে।’


মাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। চাপটা শুধু রেহানা নয়, পরিবারের সবার ওপরেই পড়েছে। নিচের ফ্ল্যাটের কাজের বুয়া সাময়িকভাবে মিথিলাকে রান্নাবান্না ও ঘর সামলাতে সাহায্য করছে। মাহমুদ সাহেব তাঁর কাজ এবং হাসপাতাল নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। রেহানা গত তিনদিন ধরে বাসায় যাচ্ছেন না। মায়ের অবস্থা দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দুইবার ডায়ালাইসিস হয়ে গেছে। ডাক্তার বলেছেন অন্যান্য সমস্যা না থাকলে হার্টের জন্য পেসমেকার লাগানো যেত, কিন্তু এখন তা সম্ভব নয়। অক্সিজেন সার্বক্ষণিক দিতে হচ্ছে। মুখে তেমন কিছু খাচ্ছেন না। মাঝেমাঝে বিড়বিড় করে বাবুকে ডাকছেন। ডাক্তার সোহেল বলেছেন শিগগিরই রুগিকে আইসিইউতে ট্রান্সফার করতে হবে। রেহানার অস্থিরতা লক্ষ করে ডাক্তার বলেছেন, ‘আপনিও তো তেমন সুস্থ নন, রেস্ট নেন, কী ওষুধ খান বলেন তো।’

রেহানা ওষুধের নাম বললে ডাক্তার বলেছেন, ‘ওষুধ ঠিক আছে। কিন্তু আপনি তো প্রি-ডায়াবেটিক, প্রেশারও আছে। অবশ্যই যতটুকু সম্ভব হাঁটাহাঁটি করবেন। আর ঘুম; ঘুম না এলে ঘুমের পিল খাবেন – অর্ধেক – আমি লিখে দিব।’

দুদিন পর রুগির অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায়। এমনিতেই খাওয়াদাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে, শরীরও ফুলে গেছে বেশ। ডায়ালাইসিসে তেমন কাজ হচ্ছে না। হাইফ্লো অক্সিজেন দিলেও খুব অস্থিরতা করছেন। শরীরে শক্তি না থাকলেও দুপাশে কষ্ট করে মাথা নাড়াচ্ছেন আর ঠোঁট নেড়ে নেড়ে গোঙাচ্ছেন। ডাক্তার সোহেলও বেশ টেনশনে আছেনে। তিনি তাঁর সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন। একটু আগে এসেই তিনি আইসিইউর সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন। যাবার আগে রুগির মুখের দিকে তাকিয়ে রেহানাকে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘তিনি কি ঠোঁট নেড়ে কিছু বলতে চেষ্টা করছেন?’

রেহানা চোখ মুছতে মুছতে বলেছেন, ‘আমরা তো কিছু বুঝতে পারছি না। তবে আগে যখন কথা বলতে পারতেন তখন শুধু বাবু বাবু বলতেন।’

ডাক্তার একটু থমকে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘বাবু কে?’

মাহমুদ সাহেব আজ সকাল সকাল চলে এসেছিলেন। তিনি ডাক্তার সাহেবের প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইলে ডাক্তার বলেন, ‘ঠিক আছে, থাক। রুগিকে তাড়াতাড়ি আইসিইউতে নিতে হবে, আমি ওদের বলছি।’ বলে, ডাক্তার সোহেল দ্রুত বেরিয়ে যান।


মাকে আইসিইউতে নিয়ে গেলে রেহানা কেবিন ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। চিকিৎসা-খরচের চাপটাও তাঁর মাথায় আছে। মাহমুদ সাহেব বললেন, ‘পাগল নাকি? তুমি কি সারাদিন বাইরে বসে থাকবে। অনিয়ম করলে তো তুমিও পড়ে যাবে। তুমি কেবিনে গিয়ে একটু ঘুমোতে চেষ্টা কর। আম্মার ব্যাপারটা আল্লাহ্‌র হাতে ছেড়ে দাও। আমরা তো সাধ্যমত চেষ্টা করছি।’

রেহানা চোখ মুছতে মুছতে বলেন, ‘তোমারও তো কম কষ্ট হচ্ছে না। আর কাজকর্ম দেখবে কে?’

‘ওসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমার সব ঠিক আছে। যাও, কেবিনে যাও।’ কেবিনের দিকে যেতে যেতে মাহমুদ সাহেব রানীর মাকেও সাবধান করে দেন, ‘তোমার আপা ঘুমিয়ে গেলে খুব জরুরি কিছু না হলে ডাকবে না।’

ডাক্তার সোহেলের মনটাও একটু খারাপ। তিনি কিছুটা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন। দুবছর আগে তাঁর মা-ও মারা যাবার আগে খুব অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। এই রুগির মতো তাঁর মাও বারবার তাঁকে নাম ধরে ডাকতেন। কাকতালীয়ভাবে তাঁর ডাকনামও বাবু। মা তাঁকে খুব ভালবাসতেন। তিনিও মা বলতে অজ্ঞান ছিলেন। তাঁর কখনও মনে আসে না যে তাঁর আসল বাবা-মা যুদ্ধের সময় মারা গেছেন। তিনি এত ছোট ছিলেন যে তাঁদের চেহারাও তার মনে পড়ে না। অবশ্য বড় হয়ে তিনি জেনেছেন যুদ্ধ শুরু হবার পর অন্যান্য এলাকার মতো কাজীপুর বর্ডার দিয়েও লোকজন যখন দলে দলে ভারতে পালাচ্ছিল তখন পাঞ্জাবী সেনা আর বিহারিদের হাতে পড়ে অনেক লোক মারা গিয়েছিল। তখন ওই এলাকার এক দিনমজুর দুবছরের একটা শিশুকে কুড়িয়ে পেয়েছিল। সে শুধু নিজের নামটাই বলতে পারত। তারপর কেমন কেমন করে গাংনীর নিঃসন্তান প্রাইমারী স্কুলশিক্ষক গোফরান শিকদারের ঘরে এসে শিশুটির ঠাঁই হয়। সরকারি স্কুলের শিক্ষকতার কারণে বা অন্য কোনো কারণে হোক মাস্টার সাহেব আরও অনেকের মতো ভারতে যাননি। তবে লুকিয়ে লুকিয়ে এই ছেলেটির আপনজনের খোঁজ তিনি করেছেন। অবশেষে নিষ্ফল হয়ে গেলে গোফরান শিকদারের নিকটজন তাঁকে একরকম সাবধান করেই দেন যে শত্রুরা যদি জানে যে গুলি খেয়ে মরে যাওয়া কথিত দেশদ্রোহীর সন্তান তিনি লালনপালন করছেন তবে তাঁরই বিপদ হবে। তখন থেকে গোফরান সাহেব ছেলেটিকে নিজের ছেলের মতো পালন করতে আরম্ভ করেন। এতে গোফরান সাহেবের চাইতে তাঁর স্ত্রীই বেশি খুশি হয়েছিলেন। ছেলেটিকে তাঁরা মনপ্রাণ ঢেলে দিয়ে মানুষের মতো মানুষ করেছেন। ভাল একটি নামও রেখেছেন – সোহেল শিকদার। সোহেল শিকদার এতোই আদরযত্নে মানুষ হয়েছেন যে তাঁর শিশু বয়সের ঝড় ঝাপটা তাঁর মনে কোনো চিড় ধরাতে পারেনি।

দুদিন আইসিইউতে থাকার পরও রুগির কোনো উন্নতি তো হয়নি বরং আরও জটিলতা বেড়েছে। মিথিলা নানীর জন্য অস্থির হয়ে পড়লে মাহমুদ সাহেব সন্ধ্যার দিকে মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। নানীকে একনজর দেখার পর সে মা’র গলা জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করে। ইতিমধ্যে ডাক্তার সোহেল মাহমুদ সাহেবকে সহানুভূতিভরা কণ্ঠে বলেছেন, ‘রুগির ইমপ্রুভমেন্ট না হওয়াতে আমাদের খুব খারাপ লাগছে। সবই আল্লাহ্‌র ইচ্ছা। তবে আপনি আপনার ওয়াইফের কাছাকাছি থাকবেন। উনি খুবই ভেঙ্গে পড়েছেন।’

মাহমুদ সাহেব মিথিলাকে বললেন, ‘চল মা, তোকে বাসায় দিয়ে আসি, আজ আমি হাসপাতালে থাকব।’

মিথিলা চিৎকার করে বলে, ‘না, আমি যাব না। আমি আম্মুর কাছে থাকব।’

অগত্যা মাহমুদ সাহেব বললেন, ‘তাহলে চল, আমরা বাসা থেকে খেয়ে আসি আর ওদের জন্যও কিছু নিয়ে আসব।’

মিথিলা যেতে রাজি না হওয়ায় মাহমুদ সাহেব বাইরে থেকে কিছু পাউরুটি, কলা, কোল্ডড্রিংক্স, ইত্যাদি নিয়ে আসেন এবং তিনিও থেকে যান।

ঘুম কারুরই তেমন হয়নি। সকাল আটটা অবধি অন্য কোনো চিকিৎসক বা নার্স তাদের সাথে কোনো কথাও বলেনি। রেহানা একবার মাকে দেখতে আইসিইউতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা অনুমতি দেয়নি। বলেছে, ‘ডাক্তার সোহেল কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসবেন, তারপর যাবেন।’

দশটার সময় ডাক্তার সোহেল রেহানা ও মাহমুদ সাহেবকে তাঁর কক্ষে ডেকে পাঠান। তাঁরা হন্তদন্ত হয়ে ডাক্তারের কক্ষে গেলে ডাক্তার তাদের বসতে বলেন।

রেহানা চেয়ারে বসার আগেই বলেন, ‘মাকে একটু দেখতে চাই।’

ডাক্তার ইশারায় রেহানাকে বসতে বলে একটু আন্তরিকতার সুরেই বলেন, ‘আমি আপনার কষ্ট বুঝতে পারি। আমার মা-ও এরকম অবস্থায় ছিলেন।’ তারপর একটু স্থির হয়ে বলেন, ‘সেদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম না যে আপনার মা বিড়বিড় করে যে বাবু বাবু ডাকছিলেন, সে কে। কারণ আমার মা-ও অসুস্থ হবার পর আমাকেও এভাবে ডাকতেন; আমার ডাকনামও বাবু।’

রেহানা ও তাঁর স্বামী ডাক্তারের কথা শুনে চমকে ওঠেন। আবেগে রেহানা আর চোখের পানি ঠেকিয়ে রাখতে পারেন না।

ডাক্তার আবার বলেন, ‘হায়াত-মউতের মালিক আল্লাহ্‌। আল্লাহ চাইলে সব করতে পারেন। তবে আমার দায়িত্ব হল আপনাদের জানানো যে রুগির ভোররাতে একটা ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হাসপাতালের তরফ থেকে এক্সট্রিম চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা ঘাবড়াবেন না। শুধু আল্লাহ্‌কে ডাকেন।’

রেহানার কান্নার বেগ আরও বেড়ে যায়। মাহমুদ সাহেব কিছু খুঁজে না পেয়ে বোকার মতো ডাক্তারকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনার মা কি বেঁচে আছেন?’

মাহমুদ সাহেবের প্রশ্ন শুনে ডাক্তার সোহেল বেকায়দায় পড়ে যান। তিনি কেমন করে এই পরিস্থিতিতে উচ্চারণ করবেন যে তাঁর মা-ও শেষমুহূর্তে মারা গিয়েছিলেন। তিনি প্রসঙ্গ পালটাবার জন্য একটু ঘুরিয়ে বলেন, ‘আমার কেইসটা আরও জটিল ছিল, বুঝলেন? সত্যি কথা বলতে কি, আমার মা দুইবার মরেছিলেন।’

ডাক্তারের রহস্যময় কথা শুনে রেহানা চোখ বড় করে স্বামীর মুখের দিকে তাকান।

ডাক্তার সোহেল তখন বলেন, ‘আসলে এখন এসব কথা বলার সময় নয়। তবুও এটুকু বলি, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার আসল বাবা-মা মারা যান। আমি ছোট্ট ছিলাম – কিছুই মনে নেই।’ তিনি আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তৎক্ষণাৎ চেয়ার থেকে উঠে বলেন, ‘চলুন, রুগির অবস্থা জেনে আসি।’

আইসিইউ থেকে বেরিয়ে কপাল কুঁচকে ডাক্তার সোহেল বললেন, ‘যান – একজন – দেখে আসুন। এখনও কিছু বোঝা যাচ্ছে না।’

ডাক্তারের ইতস্তততা দেখে মাহমুদ সাহেবের দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। এই ফাঁকে রেহানা দৌড় দিয়ে আইসিইউ কক্ষে ঢুকে গেলে মাহমুদ সাহেব ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তাহলে আশা খুবই ক্ষীণ?’

‘তাই’, ডাক্তারের সরল জবাব।

ডাক্তার তাঁর কক্ষের দিতে রওয়ানা দিলে মাহমুদ সাহেব আগের আলাপের সূত্র ধরে বলেন, ‘আপনি বিরক্ত না হলে একটা কথা জিজ্ঞেস করব।’

‘না, ঠিক আছে, কী বলবেন বলুন’, ডাক্তার অনুমতি দেন।

‘আসলে এই মুহূর্তে এটা একবারে ছেলেমানুষি প্রশ্ন।’ মাহমুদ সাহেব গুছিয়ে বলতে চেষ্টা করেন, ‘আপনার বাবা-মা যুদ্ধের সময় কোথায় মারা যান – মানে দুজনই কি যুদ্ধে গিয়েছিলেন?’

ডাক্তার সোহেলের কাছে এধরনের প্রশ্ন একেবারে নতুন এবং কিছুটা বিরক্তিকরও বটে। তিনি বলেন, ‘কেন বলুন তো?’

মাহমুদ সাহেব বলেন, ‘না, এমনিই। মানে ব্যাপারটা কেমন রহস্যপূর্ণ।’

‘আমি বড় হয়ে শুনেছি’, ডাক্তার বলেন, ‘কুষ্টিয়ার ওদিকে কাজীপুর বর্ডার দিয়ে পালাবার সময় পাক আর্মিরা অনেক লোককে গুলি করে মেরেছিল; আমার মা-বাবারাও ওদের সাথে ছিল।’

মাহমুদ সাহেব আঁতকে উঠে বলেন, ‘কাজীপুর!’

ডাক্তার সোহেল বলেন, ‘কেন?’

মাহমুদ সাহেব ত্রস্ততার সাথে বলেন, ‘দেখি, রেহানা আসছে না কেন।’ বলে, তিনি আইসিইউর দিকে ছুটে যান। ডাক্তারও একটু অপ্রস্তুত হয়ে তাঁর কক্ষে ঢুকে পড়েন।

একটু পর স্বামীকে নিয়ে রেহানা ডাক্তারের কক্ষে এসে হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দেন, ‘ডাক্তার সাহেব, আমার মা আর বাঁচবেন বলে মনে হয় না।’

ডাক্তার সোহেল বলেন, ‘শান্ত হোন, শান্ত হোন। অশান্তি করলে আপনারই ক্ষতি।’

রেহানা তখন স্থিরভাবে ডাক্তারে মুখের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘প্লিজ আপনি আমাদের পাগল ঠাওরাবেন না। আপনি যদি কাজীপুরে আপনার মা-বাবাকে হারান তাহলে, তাহলে…।’ রেহানা আবার কান্না জুড়ে দেন।

ডাক্তার এবার একটু বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘আপনারা সিরিয়াস রুগিকে আইসিইউতে রেখে কাজীপুর কাজীপুর করছেন কেন বুঝতে পারছি না।’

মাহমুদ সাহেব ব্যস্ত হয়ে বলেন, ‘স্যরি, ডাক্তার সাহেব, আমি বলছি। আমরা প্রথম দিন থেকে আপনাকে লক্ষ করছি, আপনার নাক, চোখ, কপাল প্রায় আমার শ্বশুরের মতো। লজ্জায় কি এসব কথা আপনাকে বলতে পারি?’

ডাক্তার চোখ বড় করে তাকিয়ে বলেন, ‘কী বললেন?’

রেহানা তখন পাগলের মতোই বলে ফেলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনি আমার হারিয়ে যাওয়া ভাই। আপনার বাপ-মা কাজীপুর দিয়েই ভারতে পালিয়েছিলেন, মারা যাননি। দেশ স্বাধীন হলে আমার বাবা ওখানে গিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন। আপনাকে পাননি।’

ডাক্তার সোহেলের এখন সত্যি মাথা খারাপ হওয়ার অবস্থা। তিনি লাফ দিয়ে চেয়ার থেকে ওঠেন। তারপর দ্রুত আইসিইউর দিকে ছুটে যান। তাঁর মনের অবস্থা রেহানা কিংবা মাহমুদ সাহেবের বুঝার কথা নয়। তিনি কি রুগির ডিএনএ পরীক্ষার কথা ভেবে ছুটে গেলেন নাকি রুগিকে বাঁচিয়ে তুলে তাঁকে শুধু এই কথাটি বলবার ইচ্ছা নিয়ে গেলেন যে ‘এই যে দেখ, আমি তোমার বাবু’, তা কেউ জানল না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিষণ্ন সুমন আমি আগেই বলেছি আপনার গল্প মানেই ভীষণ আবেগী কিছু। এটাও ব্যাতিক্রম হলো না। স্যালিউট ব্রো।
অনেক ধন্যবাদ। মাঝেমধ্যে উপদেশও দেবেন।
doel paki চোখে জল আনার মত একটি গল্প।
আপনার ভাল লেগেছে; অনেক ধন্যবাদ।
ফয়জুল মহী অনেক অনেক সুন্দর
Jamal Uddin Ahmed সুহৃদ পাঠকদের অবগতির জন্য, গল্পটির নাম আমি দিয়েছিলাম 'ডেটলাইন:কাজীপুর', ডেডলাইন নয়। এটি গক'র সম্পাদনা। ইংরেজিতে dateline এবং deadline দুটি আলাদা শব্দ,ভিন্ন অর্থ বহন করে।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

মাকে নিয়ে একটি গল্প

১৯ নভেম্বর - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১৫৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪