খবরটা তিরবেগে চাউর হয়নি। শীতকালের ঘন কুয়াশা ভেদ করে সূর্য তার মুখ দেখাতে যেমন বেশ কিছু সময় নেয়, প্রায় তেমনই মন্থর গতিতে এমুখ ওমুখ হয়ে বদরগঞ্জের লোকজনের কানে বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনায় মর্মান্তিক খবরটি গিয়ে পৌঁছায়।
বিকেল তিনটার দিকে পুলিশ রিক্সাভ্যানে করে লাশটি থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় অবধি কাক-পক্ষীও জানতে পারেনি দৃশ্যটি নসিমন চালক রফিকের দৃষ্টিতেই প্রথম পড়েছিল। রফিক চালাক ছেলে। পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ ঘা একথা সে নসিমন চালাতে চালাতে ভালভাবেই জেনেছে। তাই নিজের অমঙ্গল ডেকে না আনার জন্যই সে কাউকে বুঝতেই দেয়নি যে সে অন্ধকার থাকতেই কাঁচালঙ্কাসমেত পান্তাভাত খেয়ে তার নসিমন নিয়ে এলজিআরডির রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিল। এবং প্রাত্যহিক অভ্যাসমত রাস্তায় উঠে একটি সিগারেট ধরিয়ে ভালভাবে হালকা হওয়ার জন্য লুঙ্গি উঁচিয়ে রাস্তার পাশের জব্বারের দোকানের আড়ালে পেচ্ছাব করতে বসেছিল। ঠিক তখনই আবছা আলোয় সে দোকানের বাঁশের খুটির গোড়ায় কুণ্ডলীর মত কিছু একটা দেখতে পায়।
ইউপি চেয়ারম্যান খবর পান সকাল দশটায় – দোকানদার জব্বার নিজের গরজেই ফোন করে জানিয়েছে চেয়ারম্যানকে। লোকটা মরার আর জায়গা পেল না; হাভাতে জব্বারের দোকানের তালা আজ আর খোলা হবে না। কিন্তু ঘটনার বিবরণ এরকমভাবে প্রমাণিত যে, হাড়কাঁপানো শীতের সকালে লোক চলাচল কম থাকলেও বেগুনভর্তি বস্তা মাথায় নিয়ে কালীপদ মালাকার সকাল সাতটার দিকে জব্বারের দোকানের সামনে নসিমন কিংবা অসময়ের কোনো একটি যানবাহনের জন্য দাঁড়িয়েছিল – সে থানা শহরে যাবে বেগুন বিক্রি করতে। শীতের কামড়ে কাঁপতে কাঁপতে সে তখন বিড়ি মুখে নিয়ে পায়চারি করছিল। হঠাৎ করে তার চোখ যায় ছেঁড়া-ময়লা লুঙ্গিপরা মূর্তির মত স্থবির কুণ্ডলীপাকানো মানুষটির প্রতি। এই হাঁড়চিবানো শীতের মধ্যেও লোকটির গায়ে লুঙ্গি ছাড়া আর কোনো কাপড় নেই। কালীপদ ভয়ে ঠিকই শিউরে উঠেছিল, কিন্তু পরক্ষণে সাহস সঞ্চয় করে সামনে এগিয়ে যায় এটা বুঝতে যে লোকটি কি তখনও বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে। যখন সে নিশ্চিত হল যে লোকটি আর বেঁচে নেই তখনই সে ভীষণ ভয় পেয়ে ‘রাম রাম’ বলে লাফ দিয়ে ওঠল। আশেপাশে তখন আর কোনো লোক ছিলনা। জব্বার সাধারণত ন’টার আগে দোকান খোলে না। বেশি কিছু ভাববার মত অবস্থা তার না থাকায় কালীপদ গলা ফাটিয়ে চিৎকার ছাড়ল, ‘ওইইইইই কেউ আছোনি....?’
সবার কানে কালীপদের চিৎকার না পৌঁছালেও রাস্তার পাশের বাড়ির এক বউ তার মরণ চিৎকার শুনতে পায় – সে কুয়াশাঢাকা পুকুরঘাটে বসে রাতের বাসি বাসনকোসন মাজছিল। হয়ত সেই সূত্র ধরেই কিছুক্ষণের মধ্যে জনাপাঁচেক লোক গায়ে কাঁথাকম্বল চাপিয়ে রাস্তার দিকে বেরিয়ে আসে। তারপর আস্তে আস্তে শুরু হয় আসল চিৎকার চেঁচামেচি। সময় যত যায় জটলা তত বাড়তেই থাকে। এই হট্টগোলের ভেতর থেকে বুদ্ধি করে কেউ একজন ছুটে যায় জব্বারের বাড়িতে। জব্বার পড়িমরি করে ছুটে এলে সবাই ঘিরে ধরে তাকে; হাজার প্রশ্নের তোড়ে বেচারা জেরবার। ইতিমধ্যে অনেকেই মৃত লোকটিকে চিনতে পেরেছে – ও মাখন পাগলা। এই এলাকার লোক না হলেও বছরের পর বছর ধরে এই রাস্তার ওপর দিয়ে মাখন পাগলা প্রায় প্রতিদিনই আনমনে পূব থেকে পশ্চিম এবং পশ্চিম থেকে পূব করে এটা মোটামুটি সবাই জানে। সে কারোও অনিষ্ট করেনা বলে ছেলে-বুড়ো কেউই তাকে ভয় করেনা বরং কেউ কেউ তাকে বাতেনী লাইনের মানুষ মনে করে বেশ সমীহই করে। সে কারোও ডাকে সাড়া দেবে না, কারোও দেয়া কোনোকিছু হাতে তুলবে না। তবে হঠাৎ হঠাৎ কোনো দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বলবে, ‘একটা রুটি দেয়।’ এরূপ ক্ষেত্রে দোকানদাররা উৎফুল্ল হয়ে শুধু রুটিই না, সাথে চা কোল্ডড্রিংক্স এমন কি সিগারেটও সাধে। কৌতুহলী লোকজন তখন চোখ বড়বড় করে মাখন পাগলার আচরণ লক্ষ করে। সবাই ধরে নেয় এটা দোকানদারের সৌভাগ্য। তবে এমন রহস্যময় এবং বাকবিমুখ লোকটা কীভাবে মাখন পাগলা নামে পরিচিত হল এটা কেউই বলতে পারেনা।
শৈত্যাক্রান্ত সকাল বেলার হট্টগোলের ভেতর থেকে এপর্যন্ত দুটি তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ১. কালীপদের ভাষ্য থেকে জানা গেছে গতকাল থানাশহরে সে মাখন পাগলাকে দেখেছে। তখন তার গায়ে ছাই রঙের একটি নতুন কম্বল ছিল – কোনো এক নেতা নাকি গতকাল দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছিল। ২. শীত জেঁকে বসেছে বলে জব্বার গত সন্ধ্যায় একটু আগে আগেই দোকান বন্ধ করে ফেলেছিল। তারপর দোকানের ফেলনা দ্রব্যাদি জমিয়ে রাস্তার পাশে আগুন জ্বেলে হাত-পা গরম করে বাড়ির পথ ধরে কিছুদূর এগোনোর পর পিছন দিকে তাকিয়ে তারই রেখে যাওয়া ছাই-ভস্মের কাছে একটি লোককে বসতে দেখেছিল। আবছা আলোয় তার কাছে লোকটিকে মাখন পাগলা বলে মনে হয়েছিল । কিন্তু শীতের তীব্রতার জন্য জব্বার আর দাঁড়ায়নি বা ফিরে আসেনি। তাই লোকটির গায়ে কিছু ছিল কি না তা সে খেয়াল করেনি।
খবরটা বেশ আগে পেলেও চেয়ারম্যান সাহেবের নাশতা খেয়ে তৈরি হয়ে বেরোতে বেরোতে বেশ বেলা হয়ে যায়। তিনি মোটরসাইকেল স্টার্ট করে অকুস্থলে রওয়ানা হবার আগেই থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে জব্বারের দোকানের সামনে এসে মোটরসাইকেল থেকে নেমে চেয়ারম্যান তার লোকজনসহ ভিড় ঠেলে লাশটি দেখার পরই উপস্থিত লোকদের একটা ধমক লাগান, ‘একটা নিরীহ লোক বলা নাই কওয়া নাই এমনি এমনি মইরা পইড়া রইল, এই গেরামের কেউ কিছু জানেনা; কী তাজ্জব ব্যাপার!’ এ সময় বদরগঞ্জ গ্রামের ওয়ার্ড-মেম্বার মজিবর মিয়া ভিড় করা লোকজনদের ঠেলে ঠেলে লাশের পাশ থেকে সরাতে লাগল। চেয়ারম্যান তখন জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমারে ফোন করছিল কেডা?’
জব্বারের কপালে শনি; লাশ পড়ে আছে তার দোকানের চালার নিচে। চেয়ারম্যানের জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে সে তার বিধ্বস্থ শরীর ঠেলে নিয়ে সামনে এসে বলে, ‘আমি, চেয়ারম্যান সাব।’
‘এই দোকান তাইলে তোমার?’ চেয়ারম্যান নিশ্চিত হতে চান।
জব্বার মাথা নাড়ে, ‘জী, আমার।’
এবার চেয়ারম্যান পেয়ে বসেন, ‘তোমার দোকানের পাশেই যখন লাশটা পইড়া আছে, তাইলে নিশ্চয়ই রহস্যটা তুমি জান।’
জব্বার এমনিতেই নাজেহাল হয়ে পড়েছিল। এখন চেয়ারম্যানের এমন মন্তব্যে দিশেহারা হয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে সে; বলে, ‘আমি কিছুই জানিনা চেয়ারম্যান সাব।’
ভিড়ের ভেতর থেকে তখন একজন বলে ওঠে, ‘তুমি না বললা বাড়ি যাওয়ার সময় তুমি মাখন পাগলারে আগুনের পাশে বসতে দেখছ?’
জব্বার বলে, ‘ওই ইকটু আগুনের আলোয় আমি দূর থেইকা লোকটারে পুরা চিনতেই পারি নাই ...’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঠিক আছে, থানা থেইকা পুলিশ আসতেছে; যা করার তারাই করব।’ তারপর আবার কঠিন কণ্ঠে বললেন, ‘তুমি কোথাও যাইবা না।’
তখন পিছন থেকে আরও একজন চিৎকার করে বলে, ‘চেয়ারম্যান সাব, কালীপদ কইছে সে মাখন পাগলার গায়ে একটা নতুন কম্বল দেখছে গতকাইল।’
‘কী?’, চেয়ারম্যান লাফ দিয়ে উঠলেন। আরোও একটা ক্লু আবিষ্কারের উত্তেজনায় তিনি উচ্চস্বরে জিজ্ঞেস করেন, ‘কালীপদ কেডা?’
কালীপদ সেই ভিড়ের মধ্যেই ছিল। আজকে তারও ব্যবসা লাটে উঠেছে। সে কাঁপতে কাঁপতে চেয়ারম্যানের সামনে এগিয়ে এল, ‘আইজ্ঞে।’
চেয়ারম্যান হুকুম দিলেন, ‘তুমিও এখানে থাকবা।’
বিকেল দু’টোর দিকে থানার দারোগা একজন কনস্টেবলসহ মোটরসাইকেলে এসে পৌঁছান জব্বারের দোকানের সামনে। এই সময়েও লোকসমাগম কমেনি বরং বেড়েছে। থানার লোকের আসতে দেরি হচ্ছে দেখে চেয়ারম্যান বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। তার আবার ইনসুলিন নিয়ে খাবার খেতে হয়। তবে দারোগা এসে ফোন দিলে মিনিট দশেকের মধ্যেই তিনি আবার ফিরে আসেন। চেয়ারম্যানের অবর্তমানে মজিবর মেম্বার লোকজনদের সামলাচ্ছিল। সে আর কতটুকুইবা প্রভাব খাটাতে পারবে; মেম্বার হওয়ার আগে সেও রফিকদের সাথে নসিমন চালাত।
চেয়ারম্যান কাকে যেন চায়ের ব্যবস্থা করতে বললেন। তারপর এ ঘটনা সম্মন্ধে তিনি যতটুকু বুঝতে পেরেছেন তা দারোগাকে বুঝিয়ে বললেন। এই অবসরে মজিবর মেম্বার জব্বার এবং কালীপদকে টেনে নিয়ে এসে দারোগার সামনে মাটিতে বসাল। ইতিমধ্যে দারোগার সাথে আসা কনস্টেবল লোকজনকে ঠেলেঠুলে অনেক দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
দারোগা উঠে গিয়ে লাশটা উল্টেপাল্টে দেখে এসে বললেন, ‘কোনো ইনজুরিতো দেখলাম না।’
চেয়ারম্যান বললেন, ‘আশ্চর্য, তবে লোকটা মরল কেমনে?’
দারোগা ঠোঁট কামড়াতে কামড়াতে কী যেন চিন্তা করলেন। তারপর জব্বারকে বললেন, ‘তুমি কি এই পাগলের কম্বলটি নিয়া গেছ?’
জব্বার কাঁপতে কাঁপতে বলে, ‘স্যার আমিতো তারে দেখিই নাই, কম্বল পামু কই?’
‘এই তুমি মিথ্যা বলছ!’ দারোগা ধমক লাগান, ‘তুমি বাড়িতে যাওয়ার সময় মাখন পাগলারে রাইখা গেছ ...’
দারোগার কথা শেষ হওয়ার আগেই জব্বার হাউমাউ করে কান্না ছেড়ে দেয়, ‘স্যার, লোকটা কে ছিল আমি দূর থেইকা দেইখা চিনতেই পারি নাই। শীতে কাঁপতে কাঁপতে আমি বাড়ি চইলা গেছি।’
তখন চেয়ারম্যান বললেন, ‘অ্যাই কালীপদ! তুই কী দেখছস বল।’
কালীপদের অবস্থা আরোও নাকাল। সে কথা বলার আগেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল। কাঁদতে কাঁদতে যা বলল তার সারমর্ম ওই কথাই যা সে সারাটি দিন সবাইকে বলে আসছে: সে গরিব মানুষ; বেগুনের বস্তা নিয়ে নসিমনের অপেক্ষায় ছিল ... ইত্যাদি, ইত্যাদি।
দারোগার সোজা-বাঁকা জেরা যখন ক্রমশ চলছিল তখন কনস্টেবল মাঝখান থেকে বলল, ‘ওস্তাদ, আমার মনে হয় লোকটারে ঠাণ্ডাই কাবু কইরা ফালাইছিল, যা শীত পড়ছে।’
দারোগা বললেন, ‘সেইটাতো আমিও বুঝি। কিন্তু এই লোকটার গায়ে যদি কম্বল থাকত তাইলে হয়ত সে মরত না। নিশ্চয়ই কম্বলটা কেউ মাইরা দিছে।’
চেয়ারম্যান মাথা নেড়ে বললেন, ‘রাইট! আপনি ঠিক ধরছেন।’
দারোগা তখন কনস্টেবলকে একটা রিক্সাভ্যান জোগাড় করতে বলে জব্বার এবং কালীপদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘লাশটারে ভ্যানে উঠাইয়া তোমরা থানায় নিয়া আস।’
জব্বার ও কালীপদ প্রায় সমস্বরেই আর্তচিৎকার করে উঠল, ‘থানায় যামু!’
দারোগা বললেন, ‘অবশ্যই। আসল ঘটনাটা বাইর করতে হবেনা?’
চেয়ারম্যান দেখলেন যে আরেকটা মড়াকান্নার অবস্থা তৈরি হয়ে গেছে প্রায়। তাই তিনি চেয়ার থেকে লাফ দিয়ে উঠে বললেন, ‘অ্যাই তোরা ভয় পাইস না। সত্য কথা বলবি। তোরা নির্দোষ হইলে দারোগাসাব ছাইড়া দিব।’
যেইনা চেয়ারম্যান কথাটা বললেন অমনি জব্বার ও কালীপদ চেয়ারম্যানের পা দুটি আঁকড়ে ধরল।
চেয়ারম্যান কোনোভাবে পা ছাড়াতে না পেরে বললেন, ‘অ্যাই পাগলামি করিস না। যাহ্। আমিও থানায় আসতেছি।’
মাখন পাগলার লাশ তুলে নিয়ে যাবার পর লোকজনের ভিড় পাতলা হয়ে গেল। শুধু মাখন পাগলার প্রতি অতি সংবেদনশীল কিছু লোক মুখ-মাথা মাফলারে ঢেকে বিড়ি টানতে টানতে পাগলার অদৃশ্য অশ্রুত বাতেনী রহস্য নিয়ে উহ্ আহ্ করছিল। ঢিপ ঢিপ করা বুক নিয়ে রফিকও কোনো এক সুযোগে চুপচাপ ভিড়ে এসে মিশেছিল। চেয়ারম্যান, দারোগা চলে যাবার পর সে কানকো মেরে মেরে একটু এগিয়ে এসে মজিবর মেম্বারের হাতটা চেপে ধরে বলে, ‘একটু পরে যাইস।’ মজিবর মেম্বার আর রফিক এখনও বন্ধুভাব বজায় রেখে চলে।
জব্বারের দোকান থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে বড় রাস্তার ওপরেই হাবুল্যার চায়ের দোকান। মজিবর মেম্বারকে নসিমনে চড়িয়ে ওই দোকানেই নিয়ে গেল রফিক। কড়া লিকারের দুই কাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে সে পকেট থেকে সিগারেট বের করে মজিবর মেম্বারকে একটা দেয় এবং নিজেও একটা জ্বালায়। তারপর চায়ের কাপ হাতে নিয়ে একটু দূরে গিয়ে ঘাসের ওপর বসে ওরা।
চায়ে চুমুক দিয়ে রফিক ধরা গলায় বলে, ‘ঠাণ্ডায় জইমা লোকটা মারাই গেল; কেমন খারাপ লাগে।’
মজিবর মেম্বার বলে, ‘তার কপালে এমুন লেখাই ছিল; আমাগো কিছু করার নাই।’
কিছুটা শঙ্কিত কণ্ঠে রফিক বলে, ‘আচ্ছা, জব্বার আর কালীপদের কী অইব? ওগো ছাইড়া দিবতো ?’
‘তেমন কিছু অইব না,’ মজিবর ঠোঁট উল্টিয়ে বলে। ‘পকেট থেইকা কিছু মাল খসাইবো আর কি।’
আরোও কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে ফুরুৎ ফুরুৎ শব্দে চা খাওয়া শেষ করে তারা। বসা থেকে উঠতে উঠতে রফিক বলে, ‘দোস্ত, একটা কথা! আমার পেটে হজম হইতেছে না। তুই সাহস দিলে বলব।’
মজিবর বলে, ‘এইটা আবার কেমুন রহস্য। কী এমন কথা? কইয়া ফালা।’
‘শোন – আমারতো আবার ভয় করে।’ তারপর মাথা ঘুরিয়ে ডানেবাঁয়ে তাকিয়ে বলে, ‘মাখন পাগলার কম্বলটা কিন্তু আমি সরাইছি!’
মজিবর মেম্বার চিৎকার করে বলে ওঠে, ‘ক্কী?’
রফিক তড়াক করে মজিবরের মুখ চেপে ধরে বলে, ‘শোন আগে।’
মজিবর মেম্বার চোখ গোল করে তাকায় রফিকের দিকে।
‘আরে শোন। কম্বলটা তার লাশের একটু দূরেই পইড়া আছিল; নতুন কম্বল …………’
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
শীতকালের হাজার গল্প হয়। আমার এই ছোটগল্পটাও শীতের পটভূমিতে তৈরি। কাহিনীর বিন্যাসে শীতের আবহ ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
১৯ নভেম্বর - ২০১৭
গল্প/কবিতা:
১৭৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ ” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ , থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী