হিজিবিজি খাতা

অন্ধ (মার্চ ২০১৮)

Jamal Uddin Ahmed
মোট ভোট ২৯ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.২৫
  • ৩২
  • ১৪
দোকানের শাটার ফেলে তালা লাগিয়ে চাবির গোছা জব্বার চাচার হাতে তুলে দিল লিটু। তারপর ‘তাইলে যাই’ কথাটা সে অভ্যাসমত বললো ঠিকই, কিন্তু হাঁটা ধরলো না। সে জানে, রুটিনমাফিক জব্বার চাচা তেতো মুখে জিজ্ঞেস করবেন, ‘ঠিকমত বন্ধ করছস?’ তারপর নিজে গিয়ে চারটা চায়নিজ তালা ধরে টানাটানি করবেন। নিশ্চিত হবার পর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলবেন,’যা, সকাল সকাল আইসা পড়িস, দেরি করিস না।‘ জব্বার চাচা অর্থাৎ সিটি ফটোষ্ট্যাট নামক দোকানের মালিক আব্দুল জব্বার শিকদার আজও তাই করলেন।
লিটু চলে যাওয়ার পর কালো মোটাকাপড়ের পুরনো সাইডব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে রায়েরবাজারের সরু রাস্তা ধরে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা দিলেন জব্বার শিকদার। রাত ন’টায় ছোট ছোট পদক্ষেপে তিনি রিক্সা-গাড়ির পাশ কাটিয়ে অতি সাবধানে পুলপাড়ের বাসায় প্রতিদিনই পায়ে হেঁটে যান। যাবার পথে একটা গোল্ডলিফ সিগ্রেট আয়েশী ভঙ্গিতে টানতে টানতে হাঁটেন। এটা তার এক অদ্ভুত রুটিন। অদ্ভুত এজন্য যে, তিনি নেশাখোর ধুমপায়ী না, অথচ দোকান বন্ধ করে বাসায় ফেরার পথে অতি অবশ্যই একটা সিগ্রেট টানবেন। অই একটাই। অন্যসময় কেউ সাধলেও নেবেন না। শংকর বাসষ্ট্যাণ্ড থেকে পুলপাড় পর্যন্ত রাস্তা তার মুখস্থ, বেশির ভাগ দোকানীই পরিচিত। এলাকার ছেলেবুড়ো অনেকেও চেনে তাকে । তাই দোকানে আসাযাওয়ার পথে টুকরো হাই-হ্যালো, সালাম বিনিময় হয়েই থাকে।
বাসষ্ট্যাণ্ডের কাছাকাছি এক বাড়িওলার কাছ থেকে দোকানটি একযুগ আগে ভাড়া নিয়েছিলেন জব্বার শিকদার। পুরনো ডিজাইনের চারতলা বাড়ি – বাড়িটি বানানোর সময়ই বাড়িওলা সামনের দিকে চারটি ছোটমাপের দোকানঘর বানিয়ে ভাড়া দিয়েছিল। ভাগ্যক্রমে ষ্টেশনারী দোকানটার মালিক হার্টফেল করে মারা গেলে অই দোকানটা ভাড়া নেন জব্বার শিকদার। মৃত দোকানদারের একমাত্র ছেলে সিটি কর্পোরেশনের চাকুরে হওয়ার কারণে বাবার দোকানের ভার নেয়া তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। সে বাড়িওলার কাছ থেকে মাসখানেক সময় নিয়ে অনেক চেষ্টা-চরিত্র করে কিছু কাগজ,খাতাকলম, ইত্যাদি বাপের পরিচিত কিছু দোকানদারকে গছিয়ে দিতে পেরেছিল। তারপরও যেটুকু অবশিষ্ট ছিল তা বাড়িওলার সমঝোতায় সুবিধাজনক দামে জব্বার শিকদার রেখে দিয়েছিলেন। বাকি তিনটি দোকানের একটা মুদিদোকান, একটি ফাষ্টফুডের দোকান আর শেষদিকেরটা একটা অফিসের মতো – সন্ধ্যায় তিনচারজন উকিল বসে। শাটারে সাদারঙের উপর লালকালিতে নোটারী পাবলিক, আয়কর উপদেষ্টা, এরকম আরোও অনেককিছু লেখা আছে।
জব্বার শিকদার বাসার কাছাকাছি পৌঁছুতেই দেখলেন গেটের সামনে একটা ষ্টার্ট দেওয়া মোটরসাইকেল। গেটের পাশে দাঁড়ানো দু’টি মেয়ে টা-টা, বাই বাই বলে বিদায় দিল আরোহী ছেলেটিকে। গলার আওয়াজে জব্বার শিকদার নিশ্চিত হলেন, অই মেয়েগুলো তারই – নীলা আর শীলা। এই দুই মেয়ে ছাড়া তার আর কোন সন্তান নেই। ওরা কলাপ্সিবল গেটে তালা লাগাতে যাচ্ছে দেখে তিনি দ্রুত পা ফেলে এগিয়ে এসে বললেন, ‘দাঁড়া।‘ নীলা অবশ্য দাঁড়ালো না। তবে শীলা ধাক্কা দিয়ে গেট খুলে বাবার কাঁধের ব্যাগটি নিয়ে নিল। তারপর তালাচাবি বাবার হাতে তুলে দিয়ে সেও সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠে গেল। ওরা কাকে বিদায় দিল তা আর জিজ্ঞেস করলেন না জব্বার শিকদার।
সিটি ফটোষ্ট্যাটের জনবল বলতে তারা দু’জনই মাত্র – মালিক জব্বার শিকদার এবং কর্মচারি লিটু। একটু সোজাসরল স্কুলপাশ লিটুকে নিয়েই টেনেটুনে চালিয়ে যাচ্ছেন জব্বার শিকদার। পুরনো দুটি ক্যানন ফটোকপিয়ার, অল্পদামে কেনা একটি ক্লোন কম্পিউটার, লিকুইড ইঙ্কের একটা এপসন প্রিন্টার আর কিছু বাইণ্ডিং ইকুইপমেন্ট নিয়েই মূলত সিটি ফটোষ্ট্যাট । শুধু ফটোকপি আর প্রিন্ট করে পোষায় না বলে খাতাপেন্সিলসহ আরোও কিছু জিনিসপত্র রাখতে হয়েছে দোকানে। যন্ত্রপাতির কাজগুলো লিটুকেই করতে হয় বেশির ভাগ। জব্বার শিকদার বিক্রিবাটার কাজটাই করেন। অবশ্য কাজের চাপ না থাকলে এ কাজটাও লিটু করে।
একটা অ্যাপ্লিকেশন আর বায়োডাটা টাইপ করছিল লিটু। বিকেলের দিকে কাষ্টমার এসে প্রিন্টআউট নিয়ে যাবে। চল্লিশটাকা অগ্রিম পরিশোধও করে গেছে। পাশের মসজিদ থেকে জোহরের নামাজ শেষ করে এসে টিফিনবক্স খুলে লাল আটার তিনটা রুটি আর করলাভাজি নিয়ে লিটুর পাশে বসেছেন জব্বার শিকদার। কম্পিউটারের কারিকুরি বেশি জানা না থাকলেও লিটুকে টাইপিংটা শিখিয়েছেন তিনি। সে বাংলা ইংরেজি দু’ভাষাতেই টাইপ করতে পারে। তবে বানান-ব্যাকরণ জব্বার শিকদারকেই দেখে দিতে হয়। তাছাড়া লেখার ফরম্যাট সম্মন্ধে অনেকের চাইতে তারই ভাল ধারণা আছে। ইংরেজি দৈনিকে ষোলবছর টাইপিষ্টের কাজ করা চাট্টিখানি কথা নয়।
‘আজকে আইছিল সে।‘ কম্পিউটার স্ক্রিনে লেখা কারেকশন করতে করতে প্রায় আনমনেই কথাটা বললো লিটু।
জব্বার শিকদার চমকালেন না, কে এসেছিল সেটাও জানতে চাইলেন না। শুধু কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে মাথা তুলে কর্মরত লিটুর মুখের দিকে একবার নির্বিকারভাবে তাকেলেন। যেন এটা খুবই সাধারণ একটা জানা বিষয়।
‘একটা গুলুষ্টিক নিছে, চা-সিগারেটও খাওয়াইছি।‘ কাজ করতে করতে সাদামাটাভাবে কথাগুলো যোগ করলো লিটু। তারপর প্রিন্টারে কাগজ ঢুকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘প্রিন্ট দিমু নাকি?’
জব্বার শিকদার টিফিনবক্সের ঢাকনা বন্ধ করে চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে বললেন, ‘দে’। আবার থেমে কী ভেবে চেয়ারে বসে লিটুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাইলে চল্লিশটাকাই শ্যাষ?’
‘নাহ্’ বলে টিটু তার পকেট থেকে দুটো করে দশটাকা এবং দুটাকার নোট আর একটা একটাকার কয়েন বের করে মালিকের হাতে তুলে দিল।
জব্বার শিকদারকে এসব বিষয় আর চমকিত করে না।যেন আর দশটা ঘটনার মতই এটা। এসব নিয়ে যত কম ভাবা যায় ততই ভাল। একটু আধটু ভর্তুকি গেলেও রবির কারণেই হয়তো অনেক কম ঝক্কিতেই আছেন তিনি। ওকে তিনি ওর উঠতি বয়স থেকেই চিনেন। বড়ভাইদের সাথে ঘুরতো। বড়ভাইরা তাফালিং করলেও সে তেমন বেয়াদবি করেনি জব্বার শিকদারের সাথে। স্কুলে পড়াকালীন সময়ে মাঝে মাঝে খাতাকলম কিনতে এসে খেজুরে গল্পসল্প করতো। এসএসসি পাশ করে কলেজেও গেছে কিছুদিন। এরপর লেখাপড়ায় কতদূর এগেয়িছিল জব্বার শিকদার তা জানেন না, জানার আগ্রহও বোধ করেননি। জানাজানির আগ্রহ থাকাটাও অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ক্ষমতারও পালাবদল হয়েছে। বড়ভাইদের কেউ কেউ গেছে ক্রসফায়ারে, কেউ দেশান্তরে আবার কয়েকজন আছে চৌদ্দশিকের ভেতরে। ফাঁকা মাঠে রবিই এখন বড়ভাই। জুনিয়ররা এখন তাকেই লিডার মানে। স্বস্তি এটুকুই যে এই পিচ্চি পোলাপানরা জব্বার শিকদারকে জ্বালাতে আসে না। তবে অস্বস্তিও আছে একটা; তা অন্যরকম। ওদিক থেকে তিনি সজ্ঞানেই নজর সরিয়ে রেখেছেন।
দোকানের শোকেস-কাম-টেবিলের পাশে নিজের চেয়ারে বসে ঝিমুতে ঝিমুতে জব্বার শিকদার কখনো কখনো ভাবেন, তার জীবনটা অন্যরকম হতে পারতো। চোখের সামনে কত জনের কত কি হয়ে গেল। নিজের গ্রামের শান্তিকমিটির চেয়ারম্যানের ছেলে পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম উঠিয়ে ভাতাতো পাচ্ছেই, আরো কত কি সুবিধা আদায় করে নিয়েছে। অথচ সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তাকে জীবনের কঠিনতম পরীক্ষা দিয়ে যেতে হচ্ছে । এই রবিই কতবার বলেছে, ‘আঙ্কেল, একটা কাগজ জোগাড় কইরা দেন; আমি আপনার নাম তালিকায় উঠাইয়া দিমু।‘ কিন্তু জব্বার শিকদার রাগে-ক্ষোভে হোক আর ক্লান্তিতে হোক বলেছেন, ‘না বাবা, অইসবের এখন আর দরকার নাই। তখন বয়স কম ছিল – বুঝি নাই, এই রকম সময় আসবে জানলেতো একটা কাগজ রাখতামই। এখনতো মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডের কেউ আমারে চিনেইনা।‘ ব্যাপারটা আসলে তা-ই। পড়ালেখার প্রতি একটু টান ছিল বলে যুদ্ধ থেকে ফিরে এসেই সব হৈ হল্লা বাদ দিয়ে মেট্রিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন জব্বার শিকদার। ঐ বছর সবাই পাশ করেছিল; তিনিও করেছেন। তারপর পূর্ণোদ্যমে ঢাকায় এসে উঠেন তিতাসগ্যাস-কর্মকর্তা মামার বাসায়। কলেজে ভর্তি হয়ে আইএ পরীক্ষা দেবার আগেই বাবাকে হারান। এ অবস্থায় মামার উৎসাহেই কোনমতে আইএ’র বৈতরণী পার হন। তখন মামাই বললেন, ‘বাবারে, দেশের যে অবস্থা, রিলিফটিলিফ দিয়ে আর সংসার চলবে না। একটা সুযোগ আছে, লাগিয়ে দিই।‘ শেষপর্যন্ত তিনি এক বন্ধুর সহায়তায় ভাগ্নেকে রেলওয়ে ডিপার্টমেন্টে ক্লার্ক-কাম-টাইপিষ্টের একটা চাকুরি জোগাড় করে দিলেন। এ পর্যন্ত পৌঁছাতেও জব্বার শিকদার মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্রের কোন তাগিদ অনুভব করেননি।
রেলওয়ের চাকুরি ছেড়ে পেট্রোডলারের লোভে কুয়েতে না গেলে হয়ত পরবর্তীতে বিচিত্র অধ্যায়গুলো জব্বার শিকদারের জীবনে যোগ হতো না। কিন্তু ভাগ্যলিপিতো তিনি বদলে দিতে পারেন না। নইলে কেনইবা বিয়ে করা বউ আরেক ছেলের হাত ধরে পালিয়ে যাবে। কেন একদিন ইংরেজি দৈনিকটা বন্ধ হয়ে যাবে। এরকম অনেকগুলো ‘কেন’ গাদাগাদি করে নিশ্চুপ বসে আছে তার ভেতরে। বয়োবৃদ্ধির কারণে হোক কিংবা মানসিক স্থৈর্যের কারণেই হোক জব্বার শিকদার এখন একটা অনড় উপলব্ধিতে পৌঁছেছেন যে মানুষ যতই নীতিকথা বলুক ভাগ্যের উপর মানুষের কোন হাত নেই।
ষ্টেনোগ্রাফার হাশেম সাহেবের রেলওয়ে কলোনীর বাসায়ই তার শ্যালিকা আয়েশার সাথে পরিচয় হয়েছিল জব্বার শিকদারের । হাশেম সাহেবই চেয়েছিলেন বাপমরা শালীকে একটা সুপাত্রের হাতে তুলে দিয়ে শ্বশুরপরিবারের উপকার করতে। তাই প্রায় প্রতিটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে জুনিয়র সহকর্মি জব্বার শিকদারকে জোর করে নিয়ে আসতেন বাসায়। উদ্দেশ্য সফলও হয়েছিল আখেরে। টিএণ্ডটি কলেজের ছাত্রী আয়েশার সাথে জব্বার শিকদারের মন দেয়ানেয়া বলতে যা বোঝায় তা হয়নি। তবে তার চাকুরির সুবাদেই হোক কিংবা দুয়েকটা ছোটখাটো গিফটের প্রভাবেই হোক তিনি আয়শার গুডবুকে জায়গা করে নেন। তখন হাশেম সাহেবের উদ্যোগেই দুই পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ কাজ সম্পন্ন হয়। বিয়ের আলাপ চলাকালেই হাশেম সাহেবের স্ত্রী রাবেয়া প্রস্তাব করেছিলেন যে সরকারি কোয়ার্টার না পাওয়া পর্যন্ত বোন, বোনজামাই তাদের বাসায় থাকবে। এতে জব্বার শিকদার বা তার পরিবারের কারোও কোন আপত্তি ছিল না।
বিয়ের বছরখানেক পর মধ্যপ্রাচ্য যাওয়ার হিড়িক পড়লে জব্বার শিকদারও কপাল ঘোরানোর আশায় কুয়েত যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেন। তিনি হিসাবনিকাশ করে দেখলেন যে কয়েক বছর মধ্যপ্রাচ্যে থাকতে পারলে আর চাকুরি করার দরকার পড়বে না। বউয়ের মন প্রথম দিকে ভার হলেও কাল্পনিক ডলারের গন্ধ নাকে লাগতেই তার চোখ চকচক করে উঠলো। ব্যস, দেরি না করে খুবই অল্প খরচে ম্যানপাওয়ার অফিসের মাধ্যমে যাওয়ার ব্যবস্থা করে ফেললেন জব্বার শিকদার এবং কিছুদিনের মধ্যে চলেও গেলেন।
মায়ের কাছে, বউয়ের কাছে কম টাকা পাঠাননি জব্বার শিকদার তার প্রথম বছরের প্রবাসজীবনে। মা সামান্য জমিজমাও কিনে ফেলেছেন এই টাকা দিয়ে। অবশ্য আয়েশার হিসাবটা ছিল ভিন্ন । ভায়রা হাশেম সাহেব বৈষয়িক চিন্তার মানুষ। জব্বার শিকদার কুয়েতে যাবার সময়ই বলে দিয়েছেন, রূপনগর আবাসিক এলাকায় একটা প্লট ম্যানেজ করা যাবে। সরকারি প্লট । লটারিতে কীভাবে নাম উঠানো যায় সে ব্যবস্থা তিনি করবেন। সে কথা মাথায় রেখে যেন জব্বার শিকদার টাকা পাঠান তার স্ত্রী অর্থাৎ আয়েশার কাছে। তাই বছরাধিক সময়ে আয়েশার একাউন্টে মোটা অংকের টাকা জমা হয়।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই জব্বার শিকদারের সব স্বপ্ন ও সংসারকে অসার প্রমাণিত করে আচমকা আয়েশা উপাখ্যানের পরিসমাপ্তি ঘটে গেল। পরিবার-পরিজনসহ হাশেম সাহেবকে লজ্জায় কর্দমাক্ত করে শ্যালিকা আয়েশা রেলওয়ে কলোনীরই বাসিন্দা পুরনো প্রেমিকের হাত ধরে চলে গেল । অনেকদিন পর্যন্ত স্ত্রীর চিঠিপত্র না পেয়ে অধীর হয়ে ভায়রা হাশেম সাহেবকে ফোন করলেন জব্বার শিকদার। এমনিতেই কর্মকর্তার অফিসের টেলিফোন, তার উপর ভায়রাকে কিছু বলার মতো মুখ না থাকা – সব মিলিয়ে লেজেগোবরে পড়া অবস্থায় হাশেম সাহেব আমতা আমতা করা ছাড়া ফোনে তেমন কিছুই বলতে পারলেন না। তবে তিনি চিঠিতে বিস্তারিত জানাবেন বলে জব্বার শিকদারকে আশ্বস্থ করলেন। চিঠি তিনি লিখেছিলেনও বটে। কিন্তু এরপর আর তাদের মধ্যে যোগাযোগ থাকার কোন কারণই থাকলো না।
কুয়েতে চাকুরির মেয়াদ নবায়ন না করেই দু’বছরের মাথায় জব্বার শিকদার দেশে ফিরে এলেন। ততদিনে তার নিজের পরিবারের সবার কাছে কেলেঙ্কারির ব্যাপারটা আর গোপন থাকেনি। তাই মা চিঠি লিখে বললেন, বাবা তুমি সোজা বাড়িতে চলে এসো। তোমার মুরব্বিরা তোমার জন্য অপেক্ষা করছেন। জব্বার শিকদার বুঝতে পেরেছিলেন মুরব্বিরা কেন অপেক্ষা করছেন। এবং হলোও তাই। দেশে ফেরার পর কান্নাকাটির পর্ব শেষ হবার আগেই তিতাসগ্যাসের মামা তাদের বাড়িতে এসে হাজির। তিনি সবে চাকুরি থেকে অবসর নিয়ে সস্ত্রীক গ্রামেই চলে এসেছেন। তার প্রথম সন্তান ছেলে – সিডিএ’র প্রকৌশলী হিসেবে সস্ত্রীক চট্টগ্রামে বসবাস করে। দ্বিতীয় সন্তান মেয়ে – স্বামীর সাথে নিউজিল্যাণ্ডে থাকে। মামাই কথাটা সোজাসুজি তুললেন। বললেন, ‘বাবারে, মানুষের জীবনটা বড়ই রহস্যময়, বড়ই জটিল। কখন কী ঘটে যায় বলা যায় না। কিন্তু তাই বলে জীবন থেমে থাকে না। তোমাকেও সামনের দিকে তাকাতে হবে।‘
জব্বার শিকদারের মা একটু ভয় পাচ্ছিলেন যে মামার কথায় তার ছেলে যদি কোন উল্টাপাল্টা কথা বলে বসে। একটু ধীরেসুস্থে এগুলে ভাল হবে মনে করে তিনি বললেন, ‘ভাইজান, আগে খাওয়াদাওয়া করে নেন, পরে কথা বইলেন।‘
বোনের কথায় কান না দিয়ে তিতাসগ্যাসের মামা সরাসরি ভাগ্নেকে বললেন, ‘আমি একটা মেয়ে ঠিক করেছি, তোমার পছন্দ হবে। আগামি শুক্রবার আমরা মেয়েটাকে তুলে নিয়ে আসবো। তোমার মাকেও দেখাশোনার জন্য একটা মানুষ দরকার। আশা করি তোমার আপত্তি থাকবে না।‘
না, জব্বার শিকদার আপত্তি করেননি। জীবনের মহাসড়কে পা রাখতে না রাখতেই হোঁচট খাওয়ার পর আর কীসের আপত্তি। প্রায় অনাড়ম্বরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো। ভদ্রঘরের মেয়ে সালেহা অল্পদিনেই স্বামীর মনের ক্ষত সারিয়ে তুললেন। এদিকে মা-ও স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেললেন দেখে জব্বার শিকদারের ভাল লাগলো। তার কুয়েত থেকে নিয়ে আসা টাকায় বেশ কিছুদিন সংসারের খাইখরচ মেটানোও গেল বটে। কিন্তু তিনি জানতেন, এ ক’টি টাকা কিছুই না; তাকে নতুন করে আবার সংগ্রামে নামতে হবে। এখন তার পাশে দাঁড়াবে কে সেটাই চিন্তার বিষয় – মামাতো এখন আর কিছু করতে পারবেন না। অবসরে আসা চাকুরিজীবিদের কোন দাম থাকে না। ব্যবসা হয়তো করা যেত, কিন্তু ব্যবসা করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ এবং মানসিকতা তার নেই। তবুও রাগ-দুঃখ দমিয়ে একবার হাশেম সাহেবের কাছে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন তিনি কি আয়েশার একাউন্টে জমানো তার টাকাগুলো তুলে দিতে পারবেন। হাশেম সাহেব ক্ষমা চেয়ে জানিয়েছেন, আয়েশা সব টাকা তুলে নিয়ে ব্যাংক একাউন্ট ক্লোজ করে দিয়েছে। অগত্যা পরামর্শের জন্য মামার কাছেই যেতে হলো জব্বার শিকদারকে ।
মামা অনেক চিন্তাভাবনার পর একটা চিঠিসহ জব্বার শিকদারকে পাঠিয়ে দিলেন তার এক সাংবাদিক বন্ধুর কাছে। বন্ধুটি একটি ইংরেজি দৈনিকের সিনিয়র সাংবাদিক ছিলেন। কলমসৈনিকের ভূমিকা পালন করেছেন মুক্তিযুদ্ধে। জব্বার শিকদারের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় জেনে অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়েই সম্পাদককে বলেকয়ে তিনি টাইপিষ্টের চাকুরিটা ম্যানেজ করে দেন তাকে। তখন থেকেই নতুন করে পথচলা শুরু হয় জব্বার শিকদারের।
মা বেঁচে থাকা অবধি সালেহাকে ঢাকায় নিয়ে আসার কথা ভাবেননি জব্বার শিকদার। ইতিমধ্যে নীলা-শীলারও আগমন ঘটেছে পৃথিবীতে । মা চলে গেলে সালেহার দায়িত্বের বোঝাটা কার্যত নেমে যায়। তবে মেয়েদের ভবিষ্যৎ একটা নতুন ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আর ক’দিন পর তাদের স্কুলে পাঠাতে হবে। গ্রামের স্কুলের পড়াশোনা নিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন। তাই অনেক অংক কষে শেষমেষ আরামবাগে একটা টিনশেড বাসা ভাড়া করে স্ত্রী-কন্যাদের ঢাকায় নিয়ে এলেন জব্বার শিকদার। কিন্তু, ঐযে কপাল! খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে যখন বেশ কিছুদূর চলে এসেছেন এমন এক সময়ে গেল বন্ধ হয়ে পত্রিকাটি। এই প্রথম তিনি চোখে শর্ষেফুলের রঙ দেখলেন।
পত্রিকা বন্ধ হওয়ার পরের এক বছর জব্বার শিকদারের জন্য ছিল আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ। কী না করেছেন। কোথায় না ছুটেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। তার চাকুরির অভিজ্ঞতা মূলত টাইপরাইটারকেন্দ্রিক । এই অভিজ্ঞতা নিয়ে কোথাও চাকুরি পাওয়া খুবই কঠিন। তিনি খেয়ালই করেননি ততদিনে কম্পিউটার এসে টাইপরাইটারের জায়গা দখল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলা ফন্ট আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে দেশি অফিসসমুহের কাজকর্ম সবই বাংলায় কম্পোজ করা হচ্ছে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা আর কাকে বলে! এ অবস্থায় পরিচিত এক সাংবাদিকই পরামর্শ দিলেন জব্বার শিকদার যদি পুরনো একটা টাইপরাইটার জোগাড় করে প্রেসক্লাবের সামনে বসতে চান তবে তিনি তাকে একটা চেয়ার-টেবিলের জায়গা যেভাবেই হোক ম্যানেজ করে দেবেন। সেখানে তখনও টাইপরাইটারে কিছু কিছু কাজ ইংরেজিতে করা হয়। দু’চারটা কাজ পেলেও কষ্টেশিষ্টে চলতে পারবেন। জব্বার শিকদার দ্বিতীয়বার না ভেবেই একহাজার টাকায় একটা অলিম্পিয়া মেশিন এবং তিনশো টাকায় সস্তা চেয়ার-টেবিল কিনে এক সপ্তার মধ্যে প্রেসক্লাবের বাসছাউনির নিচে ছোট্ট একটি জায়গাতে বসে পড়লেন। দয়ালু সাংবাদিক সাহেব যদিও নিজে এসে সবার সাথে তার পরিচয় করিয়ে দিয়ে গেলেন এবং তাদের সহযোগিতা চাইলেন, জব্বার শিকদার ঐ টাইপিষ্ট কমিউনিটিতে শেষপর্যন্ত অপাংক্তেয়ই থেকে গেলেন।
প্রাণপণ চেষ্টাতেও টাইপিষ্টের কাজটা যখন জমলো না, জব্বার শিকদার দিশেহারা হয়ে পড়লেন। ইতিমধ্যে ধারদেনার পরিমাণও বেড়েছে বিস্তর। উপায়ান্তর না দেখে মোহাম্মদপুর এলাকার পুরনো এক সহকর্মির কাছে নিজের দুর্দশার কথা বললেন একদিন। সেই সহকর্মির পরামর্শ ও সহায়তায় আজকের সিটি ফটোষ্ট্যাটের জন্ম। মায়ের কিনে রাখা জমিটুকু বিক্রি করে এনে ঋণ শোধ করাসহ শংকরে দোকান পাতার পর থেকেই তিনি পুলপাড় এলাকায় আছেন। তের বছরে বাসাও পাল্টেছেন বারতিনেক । এই দোকানটাই তার ডালভাতের যোগান দিয়ে যাচ্ছে এযাবৎ।
সেদিন মাগরেবের নামাজ পড়তে মসজিদের দিকে পা বাড়াচ্ছিলেন জব্বার শিকদার। অমনি একটি হুডতোলা রিক্সা থেকে লাফ দিয়ে নেমে এল শীলা। চকচকে জামা গায়ে। মিষ্টি সুগন্ধীর সুবাস পাওয়া যাচ্ছে। নিশ্চয়ই কলেজ থেকে ফিরছে সে। মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে বিবিএ পড়ে। হুডতোলা রিক্সায় কেউ একজন বসে আছে। জিন্সের প্যান্টপরা – কোনও ছেলেতো অবশ্যই। শীলা বললো, ‘আব্বু, আমার কিছু ফটোকপি লাগবে। জব্বার শিকদার রিক্সারোহীর খোঁজ নিতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে চাননি। তাই, ‘নিয়ে যাও’ বলে জামাত ধরার জন্য দ্রুতপায়ে অন্তর্ধান হলেন।
জব্বার শিকদার এখন অনেককিছুই দেখেও দেখেন না, শোনেও শুনেন না। অনেক সীমাবদ্ধতা তার অনুভূতিকেও সীমিত করে দিয়েছে। কিন্তু মাগরেবের সময় শীলার রিক্সাতে যে ছেলের পায়ের অংশ দেখলেন সেই ছেলেটি কে হতে পারে? দোকান বন্ধ করার পর এই প্রশ্নটা মাথায় ঘুরপাকরত অবস্থায় তিনি বাসার পথে হাঁটতে থাকেন।
সালেহার শরীরটা ভাল যাচ্ছে না। বয়সে জব্বার শিকদারের চেয়ে দশবছরের ছোট হলেও কাবু হয়ে গেছেন একাধিক রোগব্যধিতে। ডায়াবেটিসতো আছেই, সাথে উচ্চ রক্তচাপ। শীত পড়ার সাথে সাথে হাঁপানির টান আশংকাজনকভাবে বেড়ে যায়। সে তুলনায় স্বামী জব্বার শিকদার অনেক ভাল আছেন। পঁয়ষট্টি বছর বয়সেও সংসারের পুরো দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পারছেন। পারছেন না বলে পারতে হচ্ছে বলাটা সঙ্গত হবে। বয়সবৃদ্ধির সাথে সাথে নিশ্চয়ই অনেক আগন্তুক শরীরের আনাচে-কানাচে বসে ভিত মজবুত করে চুপ করে বসে আছে। তবে মধুমেহ অর্থাৎ ডায়াবেটিসটাই অধিক দৃশ্যমান। প্রতিমাসে ডায়াবেটিক সেন্টারে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করান; ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করেন। দোকানের অবস্থানের কারণে হাঁটার কাজটাও স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হয়ে যায়। সকালের হাঁটা দ্রুত হলেও সন্ধ্যার হাঁটার গতি একটু শ্লথ হয়। তারপরও সব মিলিয়ে তিনি এখনও কর্মক্ষম। ভয়টা বেশি সালেহাকে নিয়ে; অষুদপথ্য সাধ্যমত যোগান দিলেও শরীরের কলকব্জাগুলো আর তেমন বাগে থাকছে না।
সালেহা খাবার বেড়ে দিতে দিতে আঁচল দিয়ে বারবার চোখ মুছছেন দেখে জব্বার শিকদার একবার মাথা তুলে স্ত্রীর মুখের দিকে তাকালেন ঠিকই, কিন্তু কিছুই বললেন না। এরকম দৃশ্য দেখে তিনি অভ্যস্ত । কিন্তু বিছানায় যাওয়ার পর সালেহার কাছ থেকে যা শুনলেন বা শুনতে বাধ্য হলেন তাতে আর স্থির থাকতে পারলেন না। নীলার অপকর্মের কালিমা এখনও মন থেকে অপসৃত হয়নি। এখন তার সাথে যোগ দিয়েছে ছোটবোন শীলা। তাহলে জব্বার শিকদারের সন্দেহই ঠিক ছিল। রবিই ছিল শীলার রিক্সায়। শীলাকে বাসার সামনে রিক্সা থেকে নামিয়ে দেবার সময় নীলা চারতলার উপর থেকে রবিকে ঠিকই চিনতে পেরেছে। শুধু তাই নয়। রিক্সা থেকে নামার আগে হুডের আড়ালে ওরা দু’জন যে খুবই ঘনিষ্ট হয়েছিল সে দৃশ্যও নীলা অবাক হয়ে দেখেছে। এ নিয়ে দু’বোন গতানুগতিক চুলোচুলিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, একেবারে হিংস্র হয়ে উঠেছিল।
বড়মেয়ের উচ্ছৃঙ্খলতার পর অ্যাবর্শন করিয়ে যদিও সমাজের চোখ ফাঁকি দিয়েছিলেন, কিন্তু অন্তর্দাহ থেকে শিকদার দম্পতি রেহাই পাননি। ভেবেছিলেন ঘটনাটা দু’বোনের জন্যই এক বড় শিক্ষা। নীলা এনজিওতে চাকুরি নেবার পর তারা আরও একটু স্বস্থি বোধ করেছিলেন এই ভেবে যে কিছুদিন গেলে হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তা যে হয়নি, বরং আরোও জটিল আকার ধারণ করেছে তা এখন বুঝতে পারছেন।
শীলার যুক্তি হলো, ‘তোর পেট বাঁধালো যে শালা সে তোকে লাথি দিয়ে ফেলে গেল। এখন তুই রবির দিকে হাত বাড়িয়েছিস কেন?’
কিন্তু নীলার উল্টো কথা, ‘রবি আমাকে ভালবাসে, আমি তাকে ভালবাসি। তুই মাঝখানে এসে ঢুকলি কেন?’
‘রবি তোকে ভালবাসে না, তোকে নিয়ে খেলেছে; তুই একটা খেলনা। ভালবাসে আমাকে। আমরা বিয়ে করবো।‘ শীলার পরিষ্কার কথা।
এই নিয়ে মারামারি করেছে দুইবোন। রবির সাথে ফোনে কথা কাটাকাটিও করেছে দু’জনই। তারপর দু’জনই না খেয়ে শুয়ে পড়েছে। চোখ মুছতে মুছতে স্বামীর কাছে পুরো ঘটনা তুলে ধরেছেন সালেহা। জব্বার শিকদার ঘুমাতে পারলেন না। তিনি বিছানা থেকে উঠে গিয়ে পাশের চেয়ারটায় নিশ্চুপ বসে থাকলেন। এছাড়া যেন আর কিছুই করার নেই তার। শেষরাতের দিকে স্ত্রীর পীড়াপীড়িতে বিছানায় গিয়ে ঘুমানোর চেষ্টায় একটু লম্বা হলেন তিনি।
সকাল দশটার দিকে মোবাইল ফোন বেজে উঠলে লাফ দিয়ে উঠলেন জব্বার শিকদার। লিটুর ফোন, ‘শরীর খারাপ নাকি চাচা?’
‘না, ঠিক আছি।‘
‘তয় আইলেন না যে। আমি বইয়া রইছি।‘ জব্বার চাচা চাবি নিয়ে গেলেই তবে লিটু দোকানের শাটার খোলে। তিনি বলতে গেলে সবসময়ই লিটু আসার আগে দোকানে গিয়ে পৌঁছান। আজকের ব্যাপারটাতো লিটু জানে না। তিনি বললেন, ‘একটু অপেক্ষা কর, আমি আসতাছি।‘
সালেহা তাড়াহুড়ো করে রুটি সেঁকলেন,ভাজি গরম করলেন। তারপর মেয়েদের কক্ষে গিয়ে উঁকি দিলেন। নীলা এখনও শুয়ে আছে। শীলার বিছানা খালি; হয়তো বাথরুমে গেছে। তিনি ফিরে এসে দেখেন স্বামী টেবিলে না বসে শার্ট-প্যান্ট পরছেন। সালেহাকে দেখে বললেন, ‘নাস্তাটা বক্সে দিয়া দেও। দেরি হইয়া গেছে।‘
সালেহা টিফিনবক্স রেডি করতে করতে বললেন, ‘নীলাতো শুইয়া আছে এখনও। অফিসে বোধ হয় যাবে না আজকে।‘
‘আর ঐটার অবস্থা কী? কলেজ কি বন্ধ?‘ শীলার কথা জিজ্ঞেস করলেন জব্বার শিকদার।
সালেহা আবার উঁকি মারলেন মেয়েদের রুমে। নীলাকে বাথরুমে ঢুকতে যেতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘শীলা কই রে?’
নীলা মুখ ঝামটা মেরে বললো, ‘ঐ মাগীর খরব আমি কি জানি?’
‘মানে?’ সালেহা চমকে উঠলেন। ‘কী বলিস? নাস্তা না খাইয়া কলেজে চলে গেল।?’ তারপর ত্রস্তহাতে মোবাইল ফোন টিপলেন। রিং বাজতে বাজতে কেটে গেল। আবার টিপলেন, কিন্তু শীলা ফোন ধরলো না।
জব্বার শিকদার কালো ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে দরজা খুলতে খুলতে বললেন, ‘কী হইছে?’
‘ও তো ফোন ধরে না’, সালেহা শঙ্কিত হয়ে বললেন।
জব্বার শিকদারের মুখে শঙ্কার কোন চিহ্ন দেখা গেল না। হয়তো এসব ভাবনা তিনি মাথায় ঠাঁই দিতে চান না। তিনি কী করতে পারবেন? কী করার আছে? নির্বিকারভাবে তিনি সিঁড়ি ভেঙ্গে নেমে গেলেন।
দোকান খুলে লিটু রোজকার মতো ন্যাকড়া দিয়ে চেয়ার-টেবিল, যন্ত্রপাতি একটু মোছামুছি করলো। জব্বার শিকদার আস্তে আস্তে টিফিনবক্স খুলে টেবিলের উপর রাখলেন। গতরাতের ঘটনা ভুলে তিনি নির্ভার হতে চান। কিছুক্ষণ দম ধরে বসে লিটুকে বলেন, ‘যা তো, দুইটা পরোটা নিয়া আয়; সাথে ডিমভাজা – বেশি পিয়াঁজ দিতে কইবি।‘
লিটু কম্পিউটারের সুইচ অন করতে করতে হা করে তাকালো জব্বার চাচার দিকে। টিফিনবক্সের রুটিতে হাত দেননি তিনি। রেষ্টুরেন্ট থেকে তিনি কখনও পরোটা আনিয়ে খেয়েছেন বলে লিটুর মনে পড়ে না। তার খটকা লাগে; কিছু একটা হয়েছে নিশ্চয়! কিন্তু সে কোনও প্রশ্ন না করে ডিম-পরোটা আনতে চলে যায়।
লিটু আগেও কয়েকবার লক্ষ করেছে, কিন্তু এ নিয়ে শ্বাস ফেলার সাহস পায়নি। জব্বার শিকদারকে মজা করে পরোটা খেতে দেখে ভাবলো আজকের ব্যাপারটা তাহলে বলেই ফেলে। সে জব্বার শিকদারের কাছে গিয়ে গলার স্বর যথাসম্ভব নিচু করে বললো, ‘চাচা,আপনার মাইয়ারে রিক্সায় যাইতে দেখলাম।‘
জব্বার শিকদার কথাটা শুনলেন বলে মনে হলো না। এটা কি একটা শোনার মতো কোন খবর হলো?
‘হে-ও সাথে আছিলো।‘ হে মানে যে রবি একথা জব্বার শিকদারের জানা। লিটু যোগ করলো, ‘লগে ব্যাগট্যাগও দেখলাম।‘
জব্বার শিকদার ঢকঢক করে পুরো গ্লাস পানি একবারেই গিললেন। তারপর টিফিনবক্সটা বন্ধ করে তাকের উপর রাখলেন। মেয়ে কি প্রেমিকের সাথে প্রমোদভ্রমনে কক্সবাজার গেল নাকি কাজি অফিসে গেল এসব চিন্তা আর মাথায় ঢুকলোই না। তার জীবনের পুরো খাতাটাইতো হিজিবিজি লেখায় ভর্তি। অই খাতাটি তিনি না পেরেছেন ভাল করে পড়তে, না দেখতে। এখন হয়তো আরোও কিছু হিজিবিজি যোগ হবে। তা-ও হয়তো তিনি দেখতে পারবেন না, পড়তেও পারবেন না। তাই তিনি কিছুই শুনতে পাননি এমন ভাব নিয়ে লিটুকে আবার বললেন, ‘এক কাপ কড়া চা আর একটা সিগারেট নিয়া আয় তো।‘



আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Tahmina Alom Mollah Captain, my firm appreciation lies on your profound writing.
মোঃ মইদুল ইসলাম লেখার মান নির্ণয়ের মাপকাঠি ও নিরপেক্ষতার ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে।
এ ব্যাপারে কিছু বলুন ভাই; আমারও জানতে ইচ্ছে করছে।
ম নি র মো হা ম্ম দ জামাল উদ্দিন ভাই, অভিনন্দন প্রিয়। আর গল্প কবিতায় লিখতে মন চায়না, সহ জায়গায় রাজনীতি!
ভাই, আমি বোকার মত দেখছি আর অবাক হচ্ছি!
কি আর বলব। ভাল থাকবেন প্রিয়!
আজাদ অনিন্দ্য Ovinondon. Sorry, Amio Fahmida Apar kotha suney votay 1 ba 2 diesi. Ekhon dektesi uni jader oposondo korten tara 2-er nichay bicharoker number peyesay. Uner satay golpo kobitar lokder valoi janasuna asey ekhon bujlam. Sudu Bolbo-I am Sorry. Ekhon bolbo sobai 3-er uporay vote din. Amio dibo. Really I am Sorry. Please forgive me.
আজাদ অনিন্দ্য। দেখে রাখুন সকলে। ইনি আরেকটা ব্যাঙ্গের ছাতা। গক তে তার আগমনও সমসাময়িক সময়ে। ২৭ শে ফেব্রুয়ারি। চালিয়ে যান। দেখে যাচ্ছি। কতৃপক্ষের ঘুম ভাঙ্গাতে চাচ্ছি না। তারা আরেকটু ঘুমাক। একবারে ঘুম ভাঙ্গাব
Apa, Nije valo hoilay jogot valo. `benger sata'-Apner kasay ar ki asa korbo? Apni lekhok hoiya arek lekhok k bolen benger sata. Tobay ami apner moto kharap manus na. Goko-er ghum eiber pathokrai vangaiya dibo. Obosso apni goko-er omuk vai, tomuk vai-er satay porichoyer borai koren. Apner kotha alada. Apni je amaray gali dilen eider nalish ami goko-er kasay, pathok, lekhoker kasay korlam. Apni goko manage kortay parleo pathok lekhokder manage kortay parben na. apner chehara sobai china felsay.
hah hah ha....chaliye jan!!
ami apnake chinte perechhi. apnar real name ta ami khub shighroi unmochon korbo. apni onek na, ekjon matro bakti. ebong mohila.
আমির ইসলাম, আজাদ অনিন্দ্য, রনি সবাই যে একই ব্যক্তি সেটা একটা শিশুও বুঝে যাবে সহজে। এত ফাঁকাফাঁকি না করে প্রমাণ দিলেই তো হয়। ফাহমিদা আপার আর কোন কাজ নেই যে জনে জনে গিয়ে বলবে নাম্বার কম দিতে। মানলাম উনি সেকথা বলেছে। তাহলে কীভাবে বলেছে? মেসেজে? কমেন্টে? যেভাবেই বলুক, বলেছে তো। সেগুলো দেখান। তিন চারজন মিলে বলছেন একই কথা। সবার কথা বলতে হবে না, পারলে শুধু একজনই দেখান যে আপু নাম্বার কম দিতে মেসেজ দিয়েছে।
তোমার মতো একজন লেখিকাকে যারা এমন অপবাদ দেই তারাই সাহিত্যকে যুগে যুগে কলঙ্কিত করে আসছে। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। কারণ এরা যে একই ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন আইডির সেটা স্পষ্ট, দিবা লোকের মতো। কিন্তু আর কাউকেই পাচ্ছি না যে সত্যের পক্ষে দাঁড়াবে। কিছু মনে কোরো না আপু, আমি তোমার পক্ষে নই, আমি তাদের পক্ষেও নই। আমি সত্যের পক্ষে। আমার কাছে যা সত্য আমি তাই বলছি, বলে যাব
আজাদ অনিন্দ্য, আমিরুল ইসলাম, রনি নিজের জেদের জন্য, আরেক জনের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এভাবে মিথ্যে বলে যাচ্ছেন? এই পার্থিব অর্জনে কী হবে আমাদের? আমরা নিজেরাই জানি না কখন এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যাব। মৃত্যু ওৎ পেতে আছে সবখানে। যে কোন মুহূর্তেই আমরা মানুষের পরিবর্তে লাশ হয়ে যেতে পারি। সেই দিনের জন্য একটু ভয় করুন। দেখুন মিথ্যে বলে আসলেই কোন লাভ নেই। ভেবে দেখুন আপনি যা করছেন তাতে সাময়িক স্বস্তি পাচ্ছেন, কিন্তু এক সময়ের বিবেকের দংশনে দংশিত হতে হবে
খুব সুন্দর বলেছো। মানুষ থেকে লাশ হয়ে যাবো। সেটাই। দুদিনের এই অর্জন, অথচ তাতেই কত অকারণ শ্যেণ দৃষ্টি! 'রমণী' সংখ্যাতে আমার পাঠক ভোট নিয়ে কথা বলাতে জনৈক মহিলা কবি আমার সাথে গরম ঔদ্ধত্যমাখানো বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তাকে ব্লক করে দিয়ে ভেবেছিলাম আপদ বিদায় হয়েছে। কিন্তু কিছু মানুষ কিছুতেই পরাজয় মানতে পারেন না। সে যাক। ভেবেছিলাম এসব নিয়ে কিছুই বলবো না। কিন্তু না, বলতে হবে। বলতেই হবে। কারণ যারা ফাহ্‌মিদা বারী কে চেনেন না তাদের জন্য আমি কোন রহস্যজাল বিছাতে চাই না। সত্য জানার অধিকার সবার আছে। তাই কেন আমাকে নিয়ে এই টানাটানি তা আমাকে সবার সামনে নিয়ে আসতেই হবে।
Amir Islam অভিনন্দন জামাল ভাই। উপরের কতগুলো মতামত পড়লাম। আমি কিছু কথা বলব। অামি এখানে গত ফেব্রয়ারীতে যোগ দিয়েছি। ফাহমিদা আপা আমার সাথেও যোগাযোগ করে কথার মায়াজালে ফেলে। আমি নতুন। তাই কিছু বুঝতে না পেরে উনার কথামত উল্টাপাল্টা ভোট দিয়েছি। উনি বিশেষ কিছু পুরান লেখককে ভোট দিতে বা কম ভোট দিতে বলেছেন। আমার এখানে কোন গল্প বা কবিতা নেই। আমার কোন স্বার্থ নেই। উনার সাথে কোন শত্রুতাও নেই। জানি উনার একটা গ্রুপ আছে। আর আমি সামান্য পাঠক। আমার কথা বিশ্বাস করুন। আপনারা উনার কথা না শুনে ভোট দিন বেশী করে। তাহলে দেখবেন ভোটমান বেশী হবে। বেলাল ভাইকে পাশে পেয়ে ভাল লাগল। আমি আপনাদেরকে উনার কথামত কম ভোট দিয়ে লজ্জিত। আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আরও যারা এ ধরনের করেছেন উনার কথামত তারাও ক্ষমা চান।
সেলিনা ইসলাম অভিনন্দন রইল। শুভকামনা সতত।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মাসুদ হোসেন রনি সবাই সালাম নেবেন। অভিনন্দন আপনাকে। ইদানিং ভোট কম পড়ছে। কারন কী? আপনারা জানেন যে ফাহমি আপা ভোট চায় না; উনি শুধু বিচারকের নম্বর চান। গত কয়েক সংখ্যায় উনি এ ব্যাপারে প্রচারণা চালাচ্ছেন। উনি এবারও একজনের গল্পে ভোট চান না বলে মন্তব্য করলেন। কারন উনার ভোট না হলেও চলে। উনি বিভিন্ন নতুন পাঠক বা লেখকের সাথে প্রথমতঃ বার্তা পাঠিয়ে ভাব জমান। তারপর বলেন যে অমুক অমুক উনার সাথে অশ্লীল আচরন করেন। ইত্যাদি বলে ক্ষেপিয়ে তুলেন। তারপর উনি ঐসব লেখককে ভোট না দিতে বা কম ভোট দিতে বলেন। আমাকে সহ এরকম অনেক নতুনকে উনি ফোন, মেইল বা বার্তা পাঠিয়ে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। আমার কথা আপনারা বিশ্বাস করুন। সবাই ভোট দিন। বেশী ভোট দিন দেখবেন আগামী পর্বে এ সমস্যা থাকবে না। আর এর পর থেকেই উনি আমার পিছু লেগেছেন। শুধু আমার নয়; উনার গকতে উনার অভিযোগের কারনে এবার অনেক লেখকবিকে কম নম্বর দেয়া হয়েছে। উনার এসব প্রচারণায় কান না দিয়ে আপনারা বেশী করে ভোট দিন। দেখবেন কম ভোট পাওয়ার সমস্যাটি কেটে যাবে। সবাইকে ধন্যবাদ।
রনি ভাইয়া কেমন আছেন? আমাকে চিনতে পেরেছেন? চেনার কথা না। আমি গক তে নতুন। আপনার মন্তব্য দেখে উত্তর দিতে ইচ্ছে হলো। ফাহমি আপুকে আপনি কতোটা চেনেন? আমি উনাকে বেশ কয়েক বছর ধরে চিনি। আর আপনার অভিযোগ আমার একটুও বিশ্বাস হচ্ছে না। কারণ ঐ যে আমি আপুকে চিনি... আপনার অভিযোগ গুলোর প্রমাণ থাকলে প্রমাণ দেখান। আপনি কয়েকটা অভিযোগ করেছেন সবগুলোর প্রমাণ দেখান। আমাকে ফেসবুকে স্ক্রিনশট দিতে পারেন। আর আপনার অভিযোগ মিথ্যে হলে তখন কী করবেন? সেটাও ভেবে রাখুন ভাইয়া
ভাই এ কী চলছে? এখানেই থেমে যান, প্লীজ।
রনি ভাই, কারো বিষয়ে এভাবে বলা কি ঠিক। আমি যতদুর জানি, গকতে যে যারা ভাল লেখেন ফাহমিদা আপা তাদের মধে অন্যতম। তার বিষয়ে এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ৫/৬ মাস পর আজ গকতে প্রবেশ করলাম, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে না আসাই ভালো ছিল।
জসিম ভাই, এসব এখন অতীতের কথা। আমি ভুলে গেছি। আপনি আমার সমর্থনে কিছু কথা বলেছেন সেজন্য কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানবেন। গক একটা খোলা মঞ্চ। কে কী বলছে, করছে আমরা সবকিছুই দেখছি জানছি। এসবে বিচলিত না হয়ে লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন। লেখা দিয়ছেন ত এবারের সংখ্যাতে?
নাসরিন চৌধুরী অনেক অনেক অভিনন্দন
কৃতজ্ঞতা অনেক।
কাজল অনেক অভিনন্দন আপনাকে। খালি মামুন সাহেবের কথা বললেই হবে! আমরা বুঝি কেউ না। আমি ম্যাক্সিমাম নম্বর দিয়েছিলেম বলেই তো... হা, হা,।
মার্জনা করুন! আপনার নম্বর অমূল্য। কৃতজ্ঞতা। মামুন ভাইয়ের কথা বলেছি এজন্য যে তিনি আমাকে গকতে প্রথম স্বাগত জানিয়েছেন এবং বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
আসাদুজ্জামান খান নিদারুন বাস্তবের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দারুনভাবে গল্পটিতে। অনেক অনেক ভালো লাগল। অভিনন্দন জামাল সাহেব।
আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। অনেক ধন্যবাদ।

১৯ নভেম্বর - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১৫৯ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.২৫

বিচারক স্কোরঃ ৩.৮ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ১.৪৫ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪