বেঁচে যদি যাই গল্প হয়ে যাবে !

ভয় (জুলাই ২০২০)

Abu Umar Saifullah
  • ৫৯
মধুমিতার বাসর সাজাতে গিয়ে মাধবীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়, সাথে-সাথে আমি রাগ করে রাত ১২টার দিকেই বাড়ীতে চলে আসি। কিন্তু মনকে কিছুতেই মানাতে পারছিলাম না । ব্যাপারটি নিয়ে আমি এতটাই এবনরমাল হয়ে গেয়েছি যে আমার পরিবারের অনেকেই বুঝতে পেরেছিল। বিশেষ করে আম্মু। উনার অনুরোধে আমি বড় দুলাভাই অর্থ্যাৎ বড় বোনের স্বামীর সাথে বেড়াতে গিয়েছিলাম পাবত্য চট্টগ্রামে। আমি জানতাম না উনি পাহাড়ীয় এলাকায় ব্যবসা জুড়ে নিয়েছেন। মোটামোটি ভাবে সফরের প্রস্তুতি নিয়ে উনার সাথে গাড়ীতে উঠেগেলাম। রাত ১০টার সময় সিটি শহরে একরাতের জন্য হোটেল বুক করা হল। আমি উনার সাথে এক রুমে আলাদা খাটে থাকলাম। হোটেলে ও ভাল খাওয়ার খাওয়ানো হল। তখন পর্যন্ত সফরের মজাটা বুঝতে পারিনি। তবুও মনের ইচ্ছা নিয়ে জিঞ্জেস করলাম।॥ এই শহরে না আপনার ব্যবসা তাহলে এখানে কেন? উনি সৎউত্তর দিয়ে বলল ঃ তুমি হয়ত ভুলে গিয়েছো যে আমার ব্যবসা পাহড়ীয় এলকায়। কাপ্তায় শহর থেকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মাইল দুরে। আমি বললা অ আচ্ছা। আজ-কাল অনেক কিছুই ভুলে যায়। তিনি বললেন তাকে কি বেশী ভালভেসে ফেলেছ। আমি আর কোন উত্তর না দিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ঘুমিয়ে পড়লাম। জার্নিং করাতে ঘুমিয়ে পড়ছি অতি তাড়াতাড়ী সকালে নাস্তা না করেই গাড়ীতে উঠে বসলাম। এইটি পাহাড়ীয় সরু গলি দিয়ে শোঁশোঁ বাতাস কেটে চলতে শুরু করল। লাস্ট ডিস্টিনেশন কাপ্তাই শহর। তবে মাঝে মাঝে অনেক জায়গাতে হালকা একটু থেমে গিয়ে আবার চলতে শরু করে। একবার লিচুবাগানে থামল সেখানে নাস্তা করা হল। এবং প্রাকৃতীয় বন-বনানীর সাথে উপজাতীয় অনেককে দেখে আমি অভিভুত হয়ে পড়লাম। এমন দৃশ্য আমার আর কোন দিন দেখা হয়নি তাই। দুপুর সাড়ে বারটার দিকে আমরা কাপ্তাই উপশহরে এসে নামলাম। দুলাভাইর জীবনে এন্টারটেটমেন্ট ভাবে একটা ঘটনা ঘটেছিল। তা আর একদিন না হয় বলব। তবে উনার বয়স যখন ১০ কি ১২ বছর তিনি তখন এই শহরে এসেছিল। তাই এখানে সবকিছুই উনার পরিচিত। আমাকে পলিটেকনিকেল ইনস্টিউট দেখিয়ে ছিলেন। এবং আরো অনেক কিছু। খাওয়া পর সিনেমা হলে নিয়ে গেলেন। ভাবলাম এখানে সিনেমা আর কি দেখব। তবুও টিকিট নিয়ে ডুকলাম। বাংলাচলচিত্র “জীবন সঙ্গী” দেখলাম। তবে হাসির ও কারণ ছিল। কারণ আমার মাত্র ১১জন দর্শক ছিলাম। কি আর্শ্চায তবুও কোন সমস্যা না করেই আমাদের কে পুরা ছবি উপভোগ করতে দেয়া হয়েছিল। তিনটার দিকে আমরা বের হলাম। কাপ্তাই বাঁধ দেখা হল। পরে রাতে আমরা সেখানে এক পরিচিত হোটেলে রাতে থাকলাম। সকাল নয়টায় আমরা লঞ্চে উঠলাম। কাপ্তাই ছেড়ে লঞ্চ তক্তানালা হয়ে আরো বহু দুরে যাবে। এই প্রথম আমি সমুদ্র যাত্রা করছি। দীর্ঘপথ। নানা উপজাতীয় লোকের সাথে আমি বসে আছি।

গল্প ও গানে তের নদীর সাত সমুদ্রর কথা শুনেছি। আজ নিজ মনে হিরো হয়ে বসে আছি। এই যেন এক আনন্দ কিলবিল করা নব শিহরণ। চর্তুদিকে পাহাড়ীয় গাছের হেলে দুলে থাকা বায়ুবীয় বয়ে যায়। তার ভিতরকার সমুদ্রের পানিগুলোকে দুভাগ করে যেন সমুদ্রের বুক ছিড়ে চলছে লঞ্চ। মাঝে মাঝে জেলেদেরকে ও দেখা যাচ্চে। আবার কখনও কখনও বাংলা সেনাবাহীনদের বোর্ঢ স্টীমার অতিদ্রুত ছুটে যাচ্চে। একবার উঙতলা এলাকায় দেখা গেল বেডুয়াদের । ইহার খ্রীষ্টান। যদিও বা পাহাড়ের গায়ে তাদের বসবাস তবুও তারা উন্নত জীবনযাপন করেই চলেছে। তা দেখেই বুঝলাম। নদীর দ্বার ঘেষে দেখলাম এক বেড়–য়া উপজাতী নদীতে পানি নিতে এসে খেলা করছে। খানিকটা কাপড় জড়ানো। নদী পাহাড় ও প্রকৃতি রংয়ের সাথে সে মিশে আছে। আমার মত অনেকেরই দৃষ্টি সেদিকে পড়েছিল। মেয়েটি নিজস্বা ভাষায় কি যে ন বলছিল সবাই হা হা করে হেসে উঠল। অনেকেই ভাষাটি বুঝছিল। শুধু আমি ও বিড়ামাষ্টার নোমান সাহেব বুঝতে পারেনি। বিলাই ছড়ি থেকে নোমান সাহেব উঠেছেন। উনিও তক্তানালা যাবেন। ইতিমধ্যে দুলাভাইয়ের সাথে উনার খায়খাতিল ভালই জমল। তিনি আমার সাথেও পরিচিত হয়ে নিলেন। শহরের বাড়ী রাজশাহী। তবে স্ব পরিবারে বিলাইছড়িতে আছেন। দুই ছেলে ও স্ত্রীর সাথে একমাত্র শালীও আছেন। সেও এবার চারুকলা থেকে পাস করে বের হয়েছে। তাছাড়া পাহাড়ীয় কিছু ছবি স্কেচ করে নিবে। আমরা যখন উলু পাহাড়ায় নৌকা যোগে এলাম। ওখানে মাঝি ভাইয়ের কথায় নেমে পড়লাম। তবে নোমান সাহেবের কারনে ওখানে বেশ সমাদর করল সেনাবাহীনি বীটঅফিসার। রাতে ওখানে থাকতে বলছিল। কিন্তু থাকলাম না। বড় একট বিপদে পড়লাম। কারণ ছিল। এইসব জায়গায় পানি না থাকলে নৌকা ও চলেনা তখন নদীর দ্বার দিয়ে হেঁটে চলতে হয়। তাই দুলাভাই এবং উনার এক ভাগিনা বীড় অফিসার এবং আমি সহ হাঁটতে শরু করলাম। সন্ধ্যা আটটার পর। সাধরণত এখানে বিকেল চারটা দিকেই অন্ধকারের ছাঁয়া পড়ে যায়। আর কিছু কিছু জায়গায় দিনের আলোও পৌঁছে না। তবুও আমরা নিরূপায় হয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটারের পথটি হাঁটতে শরু করলাম। যে ভাবে দেখলাম। এক বিশাল রোড় করা হয়েছে। বন কাটে পাহাড়ীর গায়ে। এখান দিয়ে সম্ভবত সেনাবাহীনিদের টহল হয়ে থাকত। কিন্তু প্রায় ৫বছরের মাঝে এই পথে কেউ কখনো আসেনি। এই পথের বিপরীত পাশ্বে নতুন আর একটি পথ রয়েছে। সেই পথেই সচারচর লোকজন আসা যাওয়া করে। সন্ধ্যার পর প্রায় সময় পাহাড়ের গায়ে বৃষ্টি নামে। আজো তার কোন ব্যতিক্রম হল না। কি আর করা সাল গাছের বড়বড় পাতাগুলো মাথায় ধরে বৃষ্টির পানি থেকে বাঁচতে চাইলাম। না তমূল এক প্রচন্ড বৃষ্টি ও বাতাসে তাও হল না। এই খানে সিগিরেট খাওয়ার মত কোন লোক ছিল না তাই। অন্ধকারে একে অপরেরপিছনের অংশের হাত বা কাপঁড় ধরে আমরা উঁচুনিঁচু পথে হাটছি। কি যে অন্ধকার মনে হয় এখনি প্রাণটি ছুঁটে যাবে। তার মধ্যে মাঝে মধ্যে শিয়াল ও বনপশুর ডাকে আরো ভয় লাগছে। তবুও নিরব ভাষাকে বাক বন্ধি করে হাটছি। কখনো উঁচু নিঁছু গর্তে পড়ে কাউ মাউ করে চিৎকার দিয়ে সাহস নিয়ে উঠে আবারও হাটিঁ। বেঁচে যদি যাই গল্প হয়ে যাবে আর নাগেলে দেহে গুলো ক্ষুধার্ত্ব বনপশুর খাবার হয়ে যাবে। খবরের চিন্নপাতায় এসব আসার মত নয়। তাই সেই শান্তনা বোধ ও নিতে পারছিনা। যাই হোক দুলাভাইয়ের তবুও শান্তনা এইতো আর একটু পথ। নোমান সাহেব এই কথা শুনে যেমন রাগেন তার চেয়ে আমি বেশী রাগ হয়। বেঁচারার কি দোষ! একবার পাহাড়ী পথে পড়ে থাকা গাছের লাগে ধাক্কা লেগে তার পায়ে বৃদ্ধা আঙ্গলীতে রক্তা ঝরে পড়ছিল। তাই এবার সাহস নিয়ে নোমান সাহেব সামনে গেলেন। দশহাত দুরে হটাৎ আগুন জ্বলতে দেখে আমরা আনন্দে সেখানে গিয়ে দেখি সেখানে কিছুই নেই । সিগেরেটের ধোয়ায় হয়ত হয়েছে বলে অনুমান করে আমরা আবার চলতে শরুকরি। ভয়ে শুধু হৃৎপিন্ডটা ফেঁটে যাওয়ার উপক্রম হল। তবুও আমরা হাঁটছি। যেন এক নিরুদ্দেশে পথে হেঁটেই চলছি। নোমান সাহেবে ছেলেমে দুটোর কথা বারবার বলিতে লাগিলে দুলভাই ধমক দিয়ে বললেন। পারলে আললাহ কে ডাকতে থাকুন। এই পথে আমি নিজেও কোন দিন আসেনি। এবার তো আমরা আরো ভয় পেলাম। বড়মামার বিদেশ থেকে পাঠানো একটি কেসিও ঘড়ির আলোতে আলো ধরে আমরা ঐটিকে সেদিন টচ হিসেবে ব্যবহার করেছিলাম। মাঝে মাজে মাথার উপর যখন গাছের ডালপালা ভেঙ্গে পড়ে তখন কি এক আত্ম চিৎকারে আমরা সবায় জড় হয়ে দোয়া কলমা পড়তে থাকি। লাস্টবার নোমান সাহেবকে ১মিনিটের জন্য আমরা খুঁজে পেলাম না। নদীর পাশে পাহাড়ী রা¯তা। বর্ষার দিনে অনেকটা ম্যানহলের মত বড় বড় গর্ত সৃষ্ঠি করে পানি সেচে নেয়াতে তাই এত গর্ত। ঘড়ির আলো দিয়ে দেখলাম উনার মাথা নিচের দিকে পা একটা শিকড়ের সাথে আটকে গিয়ে নি¯তব্দ হয়ে বেহুস হয়ে গিয়েছে। নিচের দিকে যে গর্ত দেখা যাচ্ছে তা কেউ এমনি ভাবে দেখলেও ভয় পাবে। এই শিকড় না থাকলে আমরা চিরদিনের জন্য উনাকে হারাতাম। সাথে সাথে তার পা দুটো টেনে উপরে তুলে আনলাম। মিনিটপাচঁ পর আবার হাটলাম পথছিল অনেকটা পিচ্ছিল তাই আমি ও কয়েবার পড়েঁ সাদা কাপড় গুলো কাঁদায় কালো হয়ে গেল। রাত ১২টায় আমরা তক্তানালা এসেছি। কি এক আনন্দ নিয়ে তখন হাসলাম। যেন একটু আগের সব ভয় এখন আনন্দ চোখে ফুঁটে উঠল। প্রায় এক মাসের মত থাকা হল। কতকি দেখিছি সেথায় কতকি করেছি। পাহড়ীয় মেয়ে আমার প্রেমে পড়েছি না আমি পড়েছি তা কি করে বলব। জুম পাহাড়ে গিয়ে ঝর্ণার ভিতর দাড়ীয়ে তাদের সাথে গোসল ও দুটো টঙ্কবাধা ঘরে থাকা। পাহাড়ের লুকোচুরি খেলা এবং পাহড়ী লেকে মাছ ধরা এবং পাহাড়ীমানুষের ধমক ও জন্তু জানোয়ার এবং সেনাবাহিনীর ও শাšতী বাহিনীর যুদ্ধ দেখা তার ভিতর হাজারো স¤পদের গুপ্তচরাচর খেলা কালো মানিকের পাহাড়ের কাছে যাওয়া। পাহড়ী ভাষায় বিচরণ শেষে গোধুলীর রং নিয়ে ঘরে ফেরা। মসজিদ গির্জা পেগুড়া সহ নানা মুখর আসর যেন মন মাতিয়ে তুলেছিল আমাকে। আমি যেন স্বার্থপরের মত আমার প্রিয়াসীকেও ভুলে গিয়েছিলাম প্রিয় পাহড়ীয় ললনার গোমট বাঁধন বেঁদনে জড়িয়ে। আর ও যে কত কি? যা ভুলা কখনো যেতে পারে না। এই যেন মহাপ্রভুর অভিপ্রায়ত সৃষ্টি নিয়ে সুখের স্বর্গে নিশ্চšতায় বসবাস। খাওয়ার নেই কোন চিšতা। গাছ কেটে বিক্রি করে খাদ্য সংগ্রহ। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেশ জব্বর খাতির জমল আমার। আমার তল্পাতল্পি সুখ দুচোখে দেখতে পারেনি পাহাড়ের অনেকগুলো বখাটে যুবক। তাই অতিদ্রুত সেনাবাহিনীর মেজর মাসুদ সাহেবের অনুরোধে চলে আসলাম এক ভিন্নতর জীবন নিয়ে। আসার পথে আরো কত নাটকীয় প্রাকৃতি ঘটনা আমার হৃদয় মন ছুঁয়ে আবিস্কার করে নিলো তা যেন কল্প স্বর্গেরবা¯তবতার এক অন্যন্য প্রাকৃতির রূপ। সে বার আমাকে ম্যারিরিয়া চুষে খেয়েছিল। প্রায় ১৮দিন চমক হাসপাতালে বেডেও ছিলাম। আমার ছোট ভাই বাবু তাহা শুনিয়া দ্বিতীয় বারের মত আবারও অন্ধকারের পাহাড়ী পথে একসাথে গেল । আর সেটি ছিল আরো ভয়ানক। জীবনের পান্ডুলিপিও বলা যেতে পারে তাই এখানে সংক্ষেপে তার কিছু উদৃত্ব দিলাম। আশা আছে অভিযান নামে একটি সিরিজ লেখার সেখানে হয়ত পাঠকদের পুরাপুরি ক্ষিদা মিটাতে পারব ইনশ্ আললাহ। তবে এইখানে আমার কোনকৃত্রিমতা নেই। যা ঘটছে তার নমুনা চিত্রের একটি মেপ আঁকা বৈকি। জীবনে যদি কখনও আবার সময় হয় আবারো সেখানে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। পৃথিবীতে যে কত সুন্দর জায়গা রয়েছে তা অনুভব করার মত একটি জায়গা। আর সে ই পথ যদি হয় অন্ধকারে পাহাড়ী পথ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী ভালো লিখেছেন অসাধারণ ।

০৯ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪