রুজেল আহমেদ। দুই ভাই বোনের মধ্য তিনিই ছোট। বড় বোন হোসনে আরা তার থেকে পাঁচ বছরের বড়। তাদের মাঝে পড়াশোনার ফারাকও পাঁচ ক্লাসের, রুজেল পড়েন চতুর্থ শ্রেণীতে আর হোসনে আরা নবম শ্রেণীতে। ভাই বোনের মিলটা চোখে পরার মত, শুধু শখটা বাদে। হোসনে আরা পড়তে ভীষণ পছন্দ করেন। আর রুজেলের পছন্দ এবং কামনা-বাসনা জুড়ে কেবল গাছের চারা লাগানো আর তাদের পরিচর্যা করা।তাদের গৃহশিক্ষক রাসেল রায়হান উভয়ের এই শখ সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই অবগত আছেন। তিনিই তো মাঝে মাঝে তাদের শখের গোঁড়ায় পানি ঢালেন যথাযথ পরামর্শ দিয়ে। যাই হোক, রুজেলের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে বাসার কার্নিশ ঘেঁষা হাসনাহেনা গাছটা।যেটা গত দুই বছর যাবত ফুল দিয়ে আসছে।তবে রুজেলের এই বিশেষ পছন্দটা রুজেল আক বারিয়ে কাউকেই বলেনি। শুধু বিশেষ পছন্দের গাছটার পরিচর্যা একটু বেশী করে, করে। সেটাও অবশ্য অন্যদের চোখ এড়িয়ে।বিষয়টা কারো চোখে পরলেই গাছটা কেটে ফেলার হুমকি দিবে যে। অন্যদিকে হোসনে আরা’র বিশেষ পছন্দের তালিকায় হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমু’। হিমু সিরিজের যত বই আছে সব বই হোসনে আরা’র সংগ্রহে আছে। তার ধারণা হিমু মহৎ ও গুণী ব্যক্তিদের একজন। হিমুর জীবনী তাকে একদিন সত্যি সত্যি মহৎ ও গুণী করে তুলবে। যাইহোক, মূল ঘটনায় আসা যাক, ২০১৬ এর শেষের দিকে রুজেল ও হোসনে আরা’র বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়াতে গৃহশিক্ষক রাসেল সাহেব তাদের অভিবাবকের কাছে ছুটির আবেদন করলো। তিনি গ্রামের বাড়িতে যাবেন এই উদ্দেশে। অভিবাবক কর্তৃক তার দশ দিনের ছুটি মঞ্জুর হলো। তিনি গ্রামের বাড়িতে গেলেন। কিন্তু তিনি দশ দিনের বদলে ফিরে এলেন ত্রিশ দিনের মাথায়। কোন একটা পারিবারিক কাজে তিনি আটকে গিয়েছিলেন। ঢাকায় ফিরে বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশা নিয়ে সোজা রুজেলদের বাসার দিকে রওনা হলেন। বাসার কাছাকাছি আসতেই রুজেল’কে দেখে তিনি রিকশা থেকে নামলেন। রুজেল’কে ব্যাগ থেকে চিপস বেড় করে দিলেন। কথা প্রসঙ্গে কুশলাদি জিজ্ঞেস করলেন, বাসার সবাই ভালো আছে রে? -হুম ভালো হোসনে আরা কেমন আছে? -হোসনে আরা?? হোসনে আরা তো মারা গেছে!!! মারা গেছে ??? এ যেন খাঁ খাঁ রোদ্দুরের মাঝে অনাকাঙ্খিত বজ্রপাত হয়ে গেলো রাসেল সাহেবের মাথায়। রাসেল সাহেব কোনভাবে নিজেকে সামলে নিয়ে বাসার দিকে ছুটলো পেছনে রুজেলও। বাসার সামনেই রুজেলের মা দাড়িয়ে ছিলেন। রাসেল সাহেব দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলেন। এইটা কি করে হলো খালাম্মা? -কি হইছে, বাবা। হোসনে আরা’র কি হইছিলো? চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ইতিমধ্যে হোসনে আরাও উপস্থিত হলো সেখানে। কি হইছে স্যার? -হোসনে আরা তুমি? রুজেল যে বললো... পেছনে তাকিয়ে দেখলো রুজেল কাঁদছে। একটা মৃত হাসনাহেনা গাছের সামনে দাড়িয়ে। আর অবলীলায় বিলাপ করছে, স্যার, আমার হোসনে আরা গাছটা কি আর ফুল দিবে না? আমি কি আর পানি দেবো না আমার ফুল গাছটায় ? রাসেল সাহেবের ততক্ষণে আর বুঝতে বাকী নেই যে, হাসনাহেনা গাছটা রুজেলের রাজ্যে হোসনে আরা নামেই পরিচিত ছিল এতদিন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সেলিনা ইসলাম
শেষে এসে বেশ হাসি এলো। ছোট করে বেশ লিখেছেন। আরও গল্প লিখুন সেই প্রত্যাশায় শুভকামনা।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।