জানালা দিয়ে সকালের প্রথম রোদ’টা মুখে এসে পরলেই ঘুম উধাও।সে যত গভীর ঘুম হোক না কেন।এটা রীতিমত অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে বলা যায়। আর আমি ঘুম থেকে উঠে সোজা বারান্দায় যাবো; চেয়ারে বসে ব্রাশ করবো। এটাও এতদিনে অভ্যাসের মধ্যে শামিল হয়ে গেছে।প্রতিদিন সকালে, তিনতলার বারান্দায় বসে শূন্য রাস্তার ব্যস্ত হয়ে ওঠা উপভোগ করতে খারাপ লাগে না। বাসা থেকে মেইন রাস্তার দূরত্ব, চোখ বন্ধ করে এক মিনিট। এখানে বসেই রাস্তার ওপাশের ‘টু-স্টার হেয়ার ড্রেসার সেলুন’ ও ‘মায়ের দোয়া হোটেল’ দুটি স্পষ্ট দেখা যায়। আজ সকাল সকাল রাস্তাটা বেশ ফাঁকা, মাঝে মাঝে দু’একজন পথচারী, দু’একটা রিক্সা দেখা যায়। মায়ের দোয়া হোটেলের কর্মচারীরা মোটামুটি তাদের কর্মে ব্যস্ত হচ্ছে তা এখান থেকেই দেখা যাচ্ছে। একজন আটার লাড্ডু করছে, একজন চুলা জ্বালাচ্ছে।আমি অলসের মত মুখে ব্রাশ নিয়ে তখনও বসে। দেখছি, শান্ত শহরের ক্রমশে ব্যস্ত হয়ে ওঠা। ঘুরে ফিরে আবার চোখ পরলো মায়ের দোয়া হোটেলে।পরোটা ভাজা তুলতে গিয়ে একটা পরোটা নিচে পরে গেল। লোকটা পরোটা’টা তুলে রাস্তার মাঝে ছুড়ে মারলো। আমি তাকিয়ে দেখলাম। কোথা থেকে একটা পথশিশু ছুটে আসলো। বয়স খুব সম্ভবত ৬-৭ বছর হবে। খালি গা, এলোমেলো লালছে চুল, পরনে একটা হাফপ্যান্ট। একটু ভালো করে খেয়াল করলাম, পরোটা’টা ছুড়ে দেয়া হয়েছিলো একটা কুকুরকে লক্ষ্য করে। কুকুরটা রাস্তার এপাশে শুয়ে ছিলো। কিন্তু ঘটনাক্রমে, পরোটা’টা দেখে দুটো প্রাণী’ই ছুটে এসেছে রাস্তার মাঝে।হয়তো শিশুটা রাস্তার কোন এক প্রান্তে বসে একটা পরোটা কামনা করেছিলো তার ক্ষুধার রাজ্যের জন্য। তেমনি হয়তো কুকুরটাও। যাইহোক, আমি এবার বসা থেকে দাঁড়ালাম একদম গ্রিল ঘেঁষে। বিষয়টা একটু ভালো করে খেয়াল করার জন্য। দেখলাম শিশুটা’ই পরোটা’টা হাতে নিলো এবং পরোটার গায়ে লেগে থাকা ময়লা তার প্যান্টে মুছার চেষ্টা করলো। পরোটা’টা ছিড়ে অর্ধেকটা কুকুরটার মুখের সামনে দিলো।কুকুরটাও মুখের গ্রাসে পুরো পরোটা লুফে নিলো।বাকী পরোটা শিশুটা এবার নিজের মুখে দিলো।আমি শুধু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম।খুব খারাপ লাগলো, নিজের চোখে এমন দৃশ্যটা দেখে। ছুটে গিয়ে আরো দুটো পরোটা কিনে দিতে ইচ্ছে করলো ওদের। কিন্তু ততক্ষণে ওরা চলে গেছে যে যার মত। আমি তখনও গ্রিল ঘেঁষে দাড়িয়ে। শুধু অনুভব করার চেষ্টা করলাম, ‘ক্ষুধার রাজ্যে অসহায় কতটা ক্ষুধার্ত?’ ‘কতটা তৃপ্তি কামনা করে ক্ষুধার জ্বালা ভুলতে?’
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
দেয়াল ঘড়ি
থিম আর বলার ধরন দুই আসাধারন। কিন্তু আরেকটু বড় হলে আরো ভাল লাগত।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী
গল্পের থিমটা এতটাই চমৎকার ছিল যে বলা বাহুল্য। ঘুছিয়ে লিখতে পারলে অসাধারণ গল্প হয়ে যেত। কিন্তু গুছিয়ে, শব্দের ঝলকানিতে প্রমাণ করতে পারলেন না ভাই। আশা করছি, সামনে যথাযথ শব্দের ভঙ্গি আর আলোচনায় আরও বড় দেখতে চাই। যা হোক অনেক শুভকামনা রইল....
ফেরদৌস আলম
আপনার এই গল্পের থিমটা এত ভালো ছিল যে এটা সেভাবে লিখতে পারলে আন্তর্জাতিক পুরষ্কারও অর্জন করতে পারত। আপনিও আপনার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। সে দিক থেকে অসাধারণই বলব। তবে আরো আরো ভালো চাই। হৃদয়-কাড়া শব্দের খেলা দেখতে চায়। আশা করছি সামনে তা দেখতে পাবই পাব।
জসিম উদ্দিন আহমেদ
গল্পের থেকে এটা বেশি স্মৃতিকথা বা ডায়েরি’র মত হয়েছে। আপনার লেখায় আবেগ আছে। এই আবেগের সাথে কয়েকটা চরিত্র জুড়ে দিন, দেখবেন ভাল গল্প হয়ে যাবে।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।