আজ নাবিলার বিয়ে

ঋণ (জুলাই ২০১৭)

নূরনবী সোহাগ
  • ১৪
পুরো নামটা না হয় অভ্রর সেই রঙ্গিন সময়ের মাঝেই চাপা থাক। ছোট করে বললে, সে নাবিলা। এক কথায় রূপবতী ও গুণমতী উভয়ই। তার সাথে অভ্রর সম্পর্কের শুরুটা কোন এক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে। এর পরে গুটি গুটি পায়ে এক সাথে হেঁটেছে বহু পথ। দুজন মিলে মনস্থির করেছে, যে ভাবেই হোক বছর দুয়েকের মধ্যে সম্পর্কটাকে বিয়ের রূপ দেবে। বলে রাখা ভালো, অভ্র গত চার বছর যাবৎ পড়াশোনার উদ্দেশে ঢাকার যান্ত্রিকতার সাথে থাকে। আর বর্তমানে এর সাথে যোগ হয়েছে ছোট আকারের একটা চাকরি। পরীক্ষা, অফিস সবকিছু মিলিয়ে গত ছয় মাস ধরে অভ্রর বাড়ির মুখ দেখা হয়নি। হঠাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত একটা ছুটির পূর্বাবাস পেলো অভ্র। শুক্র, শনির সাথে ২৬ শে মার্চ উপলক্ষে রবিবারের একটা লম্বা ছুটি। সচরাচর এরকম ব্যাটে-বলে একসাথে হয়না বললেই চলে। এ সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না ভেবে অফিস শেষ করে সোজা নাইট কোর্সে উঠে পরে অভ্র। ভেবেছিলো, মায়ের সাথে নাবিলা’কেও এবার একটু চমকে দেয়া যাবে। ভোর পাঁচটার দিকে অভ্র বাড়ির পথে নামলো। দরজায় কড়া নাড়তেই মা দরজা খুললো। মা তো একদম অবাক!
‘বাবা আইছো! মোবাইলে তো বললি না যে বাড়ি আসবি?’
অভ্র ক্লান্ত কণ্ঠে উত্তর দিলো-‘এমনি।’
‘কিছু শুইনা আইছো বাবা?’
‘কই নাতো! কিছু হয়েছে নাকি মা?’ অভ্র প্রশ্ন করে।
‘না কি হইবো। বাসে তো ঘুমাইতে পারো নাই মনে হয়, এখন ঘুমাও বাপ সকালে কথা হইবো।‘
গানের আওয়াজে সকাল ১০ টার দিকে অভ্রর ঘুম ভাঙলো। খুব সম্ভবত গানের আওয়াজটা নাবিলাদের পাড়া থেকে আসছে।
অভ্র মাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘কোন অনুষ্ঠান নাকি ও পাড়ায়?’
মা কোন উত্তর করলো না। হাত মুখ ধুয়ে নাস্তা খেতে বললো অভ্র’কে।
তীব্র ক্ষুধা থাকায় অভ্রও দ্রুত ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলো। মা অবলীলায় অভ্রর পাশে বসলো।
অভ্রর পিঠে হাত রাখলো।
মা বললো, ‘বাবা, পুরুষ হইয়া জন্মাইছো অল্প কিছুতে ভাইঙ্গা পরবা না।’
অভ্রর কাছে কি রকম একটু খটকা লাগলো বিষয়টা।
‘কি হয়েছে মা?’
‘আজ নাবিলার বিয়ে। আমি তো ভাবছিলাম তু্মি খবর পাইয়াই আইছো।’
অভ্র এক নাগাড়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। কি রকম একটা অস্বস্থিতে অভ্র আর খেতে পারলো না। মাকে কিছু না বলেই অভ্র বাসা থেকে বের হলো সোজা রাস্তার দিকে হাঁটলো। নদীর পাড়ে কতক্ষণ বসে থাকলো একমনে। মা ততক্ষণে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েছে অভ্রকে। অভ্র ফোন তুললো না। সাত-পাঁচ না ভেবে অভ্র নাবিলাকে ফোন দিলো
‘এটা কি হচ্ছে? এমনটা তো কথা ছিলো না, নাবিলা।’
নাবিলা কান্না শুরু করে দিলো। ‘বিশ্বাস করো আমার কিছু করার ছিলো না। ছেলে সেনাবাহিনীর বড় অফিসার। বাবা মা খুব করে চাইছিলো আমি যেনো তাকে বিয়ে করি। আর আমি বাবা মায়ের কথা ফেলতে পারিনি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।’
অভ্র কোন কথা খুঁজে পাচ্ছিলো না ওকে বলার জন্য। শুধু বললো, ‘হুম ক্ষমা!
শুধু এতটুকুই তো চেয়েছো।আমি সব সময় তোমার চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছি আজো এর বিলম্ব করবো না।’
তবে নাবিলা, ‘আমার অতীতের অনেক দিন আমি তোমায় ভেবে কাটিয়েছি। আমার ভবিষ্যতেরও অনেক দিন আমি তোমায় ভেবেই কাটাবো। আমি, আমি তোমায় ক্ষমা করে দিলাম তবে আমার প্রাণের কাছে সারাজীবনের জন্য তোমায় ঋণী করে রাখলাম। যে ঋণ তুমি কোনদিন শোধ করতে পারবে না।’
অভ্র ফোনটা কেটে দিলো। পরিবেশের সকল শূন্যস্থান যেন মুহূর্তের মধ্যে অস্বস্তিতে সয়লাব হতে শুরু করলো। অভ্র বাসায় ফিরলো দ্রুত, ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে মাকে ডেকে বললো, ‘আমি ঢাকা যাচ্ছি মা।’
মা পাকঘর থেকে তড়িগড়ি করে আসলো।
‘মায়ের কাছে একটা দিন থাইকা যা বাপ।’
‘না মা! যে গ্রামে নাবিলার বিয়ে হয়, সেই গ্রামে আমার জন্য নিঃশ্বাসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আমি এখানে থাকলে মারা যাবো মা।’
অভ্র চলে আসলো। চলে আসলো চিরচেনা সে কর্মব্যস্ত শহরে কোন এক অন্যমনুস্কের রূপ মেখে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মোখলেছুর রহমান অভ্রর সৌভাগ্য,সে আত্মহত্যা করেনি।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি ‘না মা! যে গ্রামে নাবিলার বিয়ে হয়, সেই গ্রামে আমার জন্য নিঃশ্বাসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আমি এখানে থাকলে মারা যাবো মা।’ অভ্র চলে আসলো। চলে আসলো চিরচেনা সে কর্মব্যস্ত শহরে কোন এক অন্যমনুস্কের রূপ মেখে।....// ভাল গল্প...শেষট দারুণ...শুভ কামনা রইলো...
আমার পুরষ্কার আমি পেয়ে গেছি!!! এ আমার অনেক প্রাপ্তি। অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয়
ইমরানুল হক বেলাল হৃদয় ছোঁয়া গল্প, পড়ে খুব ভালো লাগলো। (4) ভোট এবং মুগ্ধতা রইল সোহাগ ভাই। সময় পেলে আমার গল্পটা পড়ার জন্য নিমন্ত্রণ রইল।
আপনার গল্পের পাঠক তো আমি অনেক আগেই হয়েছি, প্রিয় কবি। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সময় করে আমার গল্পটা পড়ার জন্য...
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী মর্মস্পর্শী গল্প। খুব ভালো লাগলো। অনেক শুভকামনা ও ভোটট রইলো...
জুবায়ের হাসান অভ্রর জন্য খারাপ লাগছে...।
আপনার অনুভূতি স্পর্শ করতে পেরেছি, এটাই আমার অনেক প্রাপ্তি
নাদিম ইবনে নাছির খান ভাললাগলো,,, ভালবাসার গল্প,,, শুভেচ্ছা রইল
সময় নিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ

১৭ জুন - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪