লালসা

ঋণ (জুলাই ২০১৭)

অমিতাভ সাহা
তিন বছর প্রেম করার পর গার্লফ্রেন্ড একদিন ল্যাং মেরে চলে গেল। কি কারণ জানি না। বলল, কাস্ট প্রবলেম। বাড়িতে নাকি বিয়েতে রাজি হচ্ছে না। ওরা কুলীন কায়স্থ আর আমি বৈশ্য। সত্যি মিথ্যা জানি না। ভীষণ অবাক হলাম। এত সুন্দর একটা সম্পর্ক হুট করে শেষ করে দিতে দ্বিধা করল না। আমার জন্য বাড়িতে একটু লড়াইও করল না। এতদিন বলেছিল, “আমাকে ছাড়া নাকি বাঁচতে পারবে না”। এমন অন্তঃসারশূন্য কথায় কি করে ভুললাম। নিজেকে বুর্বক মনে হচ্ছিল। অনেকবার ফোন করলাম। কিন্তু ফোন তুলল না। শেষে বিরক্ত হয়ে সিমটাই পাল্টে দিল। নতুন কোন পাখি জুটেছে কিনা তাও জানতে পারলাম না। কিছুদিন খুব বিষণ্ণভাবে কাটল। তারপর শুরু হল শুন্যস্থান পূরণের খোঁজ। যতদিন প্রেম করিনি ভালোই ছিলাম। একবার প্রেম করার পর কেউ ছেড়ে চলে গেলে শূন্যতার যন্ত্রণা এত তীব্র হয়, যে তা পূরণ না করে পারা যায় না। বন্ধুমহলে যেসব মেয়েরা ছিল, তারা নেহাতই বন্ধু। ওদের প্রপোজ করলে হাসির খোরাক হতে হবে। তাই ফেসবুকে অনুসন্ধান শুরু করলাম। যেসব সুন্দরীর সন্ধান পেলাম, তারা বেশিরভাগই এনগেজড। এনগেজড না হলেই বা তারা আমার ডাকে সাড়া দেবে কেন? তারা তো আর আমাকে চেনে না। আর আমি সল্লুভাইও নই যে একটা ফ্লাইং কিস দিলেই মেয়েদের লাইন লেগে যাবে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালেও তা আনঅ্যাটেন্ডেড অবস্থাতেই রয়ে গেল।

মেয়ে খুঁজতে খুঁজতে একদিন সকালবেলা চোখ গেল পত্রিকার পাত্রপাত্রী কলামে। এবার যাকে পছন্দ হবে তাকে বিয়েই করে ফেলব। প্রেম-ট্রেম করে আর লাভ নেই। পত্রিকায় আমার মনের মত মেয়ে সন্ধান করতে লাগলাম। মনের মত বলতে অবশ্যই সুন্দরী, এ ছাড়া আর খুব বেশি ক্রাইটেরিয়া ছিল না। সুন্দরের প্রতি আমার ক্রেজ বরাবরই একটু বেশি। একটা বিজ্ঞাপনে “অতীব সুন্দরী” দেখে খুব ভালো লাগল। ভাবলাম একবার ফোন করে দেখি। ফোন লাগালাম। অপরপ্রান্ত থেকে নারীকন্ঠ ভেসে এল- “কে বলছেন?”

আমি পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের কথা বললাম।

“বাবা একটু বাজারে গেছেন। আপনি কিছুক্ষণ পরে ফোন করুন”- বলল মেয়েটি।

“ঠিক আছে”- বলে রেখে দিলাম।

মনে হল এই মেয়েটিরই বিজ্ঞাপন। কি চমৎকার কন্ঠস্বর! মিনিট কুড়ি পরে ঐ নম্বর থেকে ফোন এল। ধরার পর ভদ্রলোক কথা বললেন। আমার নাম, ঠিকানা, বাবা-মা, চাকরি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চাইলেন। আমি বললাম। ভদ্রলোক আগ্রহের সাথে শুনলেন। আমি মেয়েটির ছবিসহ বায়োডাটা পাঠাতে বললাম বাবা-মাকে দেখাব বলে (বাবা-মা নামমাত্র, আসলে আমি দেখব বলে)। ভদ্রলোক রাজি হলেন এবং বললেন আমাকে মেইল করে দেবেন। আমি ই-মেল আই.ডি. দিলাম। বিকেলবেলা যথারীতি মেল পেলাম। মেয়েটির ছবি দেখে বেশ আকর্ষণীয় মনে হল। এত সুন্দরী মেয়ে এখনও সিঙ্গেল আছে, ভেবে অবাক লাগল। ভগবান বোধ হয় আমার জন্যই রেখে দিয়েছিলেন। ভদ্রলোককে ফোন করে বললাম, বাবা-মায়ের পছন্দ হয়েছে। আমি জানতাম বাবা-মা আমার পছন্দে আপত্তি করবেন না। উনি পরের বুধবার ওনার বাড়িতে আমাদের যাবার আমন্ত্রণ জানালেন। আমি ঠিক সময়মত বাবা-মা কে নিয়ে ওদের বাড়ি গেলাম।

মেয়েটি চমৎকার সুন্দরী, শাড়ি পরে খুব সুন্দর করে সেজেছিল। আমাদের চা-জলখাবার পরিবেশন করল। আমি দু’একবার মেয়েটির দিকে তাকালাম। আমার সাথে চোখাচোখি হল। মনে হল মেয়েটিরও আমাকে পছন্দ হয়েছে। আমি দেখতে কার্তিকের কোন অংশে কম নই (যারা আমাকে দেখেছে তারা আরও ভালো বলতে পারবে)। দু’পক্ষের মধ্যে কথাবার্তার পর কারোর কোন আপত্তি রইলা না। কদিন পরেই চৈত্র মাস ছিল। তাই ঠিক হল, বৈশাখ মাসে বিয়ের কথাবার্তা হবে।

একদিন দুপুরবেলা অফিসে বসে আছি। একটা আননোন নাম্বার থেকে ফোন এল। ফোন ধরার পর বলে উঠল- “আমি সুস্মিতা বলছি”।

বুঝলাম মেয়েটি ওর পার্সোনাল নম্বর থেকে ফোন করেছে। বলল- “আমার কিছু কথা বলার আছে”।

আমি বেশ আগ্রহের সঙ্গে বললাম- “চলো না, আমরা কোথাও মিট করি”।

সুস্মিতা রাজি হল। রবিবার ছুটির দিন বিকেলবেলা আমরা একটা রেস্টুরেন্টে দেখা করলাম। এক কোনায় একটা টেবিলে গিয়ে বসলাম যাতে নিরিবিলি একটু কথা বলা যায়। সুস্মিতাকে ভীষণ আপসেট দেখাচ্ছিল, মাথা নিচু করে টেবিলে অনেকক্ষণ বসে রইল। আমি খাবারের মেনু দেখছিলাম। হঠাৎ দেখি ওর চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পড়ছে। আমি খুব আশ্চর্য হয়ে বললাম- “কি হয়েছে? কাঁদছ কেন?”

আমার দিকে একবার তাকিয়ে রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে লাগল। ওকে সান্ত্বনা দেবার জন্য চেয়ার থেকে উঠে ওর হাতদুটো ধরতে গেলাম। কিন্তু একটু ইতস্তত লাগছিল যেহেতু ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক তখনো গভীর হয়নি। আমার সম্পর্কে খারাপ ভাবতে পারে তাই ইচ্ছে থাকলেও হাত ধরার ইচ্ছেটাকে হজম করতে হল।

কিছুক্ষণ পর ভারি গলায় বলল- “আমার সঙ্গে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যা আপনার জানা দরকার। ঘটনাগুলো আমাকে দুঃস্বপ্নের মত তাড়া করে বেড়াচ্ছে। বিবেক দংশন হচ্ছে। আমি আপনাকে ঠকাতে চাইনা”- বলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল।

আমি খুব চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়লাম। অজানা আশঙ্কা মনে ভিড় করতে লাগল। চিন্তার সুরেই বললাম –“কেন কি হয়েছে তোমার?”

সুস্মিতা কাঁদতে কাঁদতে বলল- “আমি এক জানোয়ারের লালসার শিকার। আমাদের পাড়ার রকে বসে আড্ডা দেওয়া একটা ছেলে। অনেকদিন থেকেই আমার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকাত বুঝতে পারতাম। একদিন জানোয়ারের ভোগবাসনা এত তীব্র হয়ে গেছিলো যে আমাকে একা পেয়ে আর স্থির থাকতে পারেনি। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিলাম বিকেলবেলা। গলিতে আমাকে একা পেয়ে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে, মুখে কামড় দিতে থাকে আর আমার সারা শরীরে হাত দিয়ে খামচে হাতের সুখ নিতে থাকে। আমি অপ্রস্তুত ছিলাম। আশেপাশে কেউ ছিল না। খুব জোরে চিৎকার করার পর মনে হল দুএকজন লোক শুনতে পেয়েছে। তারা ছুটে এসে আমাকে বাঁচায় এবং শুয়োরটাকে অনবরত লাথি মারতে থাকে। কোনরকমে পালিয়ে বেঁচে যায় শুয়োরটা। বাড়িতে ফিরে বাবা-মাকে শয়তানটার কথা বলি। বাবা-মা লোকলজ্জার ভয়ে ব্যাপারটা পুরোপুরি চেপে যায়। তারপর থেকে আমাকে আর বাড়ি থেকে একাএকা যাওয়াআসা করতে দেয় না”।

আমি বললাম-“তোমাদের অবশ্যই পুলিসে জানানো উচিত ছিল”।

সুস্মিতা-“ওর বাবা এলাকার বিরাট বড়লোক। থানার বড়বাবু এমনকি এম.পি., এম.এল.এ. দের সঙ্গেও ওঠাবসা আছে। টাকার গরমে সবকিছু কিনে নিতে চায়। ছেলেটাকে ছোট থেকেই যা চেয়েছে তাই দিয়ে দিয়ে একটা কুলাঙ্গার তৈরি করেছে। পুলিশ ওকে ধরলেও একবেলার বেশি রাখবে না”।

আমি-“তারপর কি হল?”

সুস্মিতা-“এই ঘটনার মাসখানেক পর একদিন বিকেলবেলা বান্ধবীর সাথে কলেজ থেকে ফিরছিলাম। একটা মারুতি ভ্যান হুট করে রাস্তায় আমার পাশে এসে দাঁড়াল। কিছু বোঝার আগেই গাড়ি থেকে একটা কালো বলিষ্ঠ হাত আমার হাত ধরে হেঁচকা টান মেরে গাড়িতে তুলে নিল। আমি চিৎকার করার আগেই গাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে গেল আর গাড়ি ছুটতে শুরু করল। আমি বান্ধবীকে ডাকতে লাগলাম। ও গাড়ির পেছনে দৌড়াচ্ছিল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই নজরের সীমানার বাইরে চলে গেল। গাড়ির ভেতরে ঐ শয়তানটাই আমাকে টেনে তুলেছিল। চোখ লাল, চোখের চাউনি দেখে বুঝলাম মদের নেশায় চুর হয়ে আছে। সামনের সীটে ছিল ড্রাইভার। আর কেউ ছিল না।

আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম - “প্রকাশ্য দিবালোকে এত সাহস পায় কি করে?”

সুস্মিতাঃ-“ও আমার উপর প্রতিশোধ নিতে এসেছিল। সব কথা এখানে বলা সম্ভব নয়”।

তারপর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে একটা চিঠি বের করে আমার হাতে দিল। বলল-“আমার সমস্ত আত্মগ্লানি আমি এই চিঠিতে লিখেছি। আপনি পুরোটা পড়ার পর সিদ্ধান্ত নেবেন আমাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে পারবেন কিনা”।

সেদিনের মত বিদায় নিলাম। বাড়ি এসে পুরো চিঠিটা পড়লাম। একটা প্রচন্ড কালো ঝড় যেন আমার মনের সমস্ত আনন্দের আবহাওয়াটা গ্রাস করে নিল। চিঠির বিবরণ নিম্নরূপঃ

বরুণ,
বাড়িতে বারণ করেছিল তবু আমি কথাগুলো তোমাকে শেয়ার না করে পারছি না। আমি চাইনা একটা সম্পর্কের শুরু ধোঁয়াশা থেকে হোক। আমাদের সমাজে যখন কোন মেয়ের উপর অন্যায় হয় তখন মেয়েটিকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বাপমায়ের মাথা হেঁট হয়ে যায়, অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে পরিবারের সম্মান বাঁচানোটাই হয়ে ওঠে মূল কর্তব্য। এসব কথা বলতে যেকোনো মেয়েরই লজ্জা হবে, আমারো হচ্ছে। তোমাকে দেখে আমার অনুভূতিশীল ছেলে বলেই মনে হয়েছে। তাই তোমাকে বলতে আর দ্বিধা করছি না।

নরপশুটা গাড়িতে তোলার পর আমি যে কলঙ্কের ভাগীদার হয়েছি, সেটা জানলে হয়ত অনেক ছেলেই আমাকে বিয়ে করতে চাইবে না। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও মেয়েদের কেন এত লাঞ্ছনার শিকার হতে হবে বলতে পারো।

আমাকে গাড়িতে তোলার পর শয়তানটা আমার দিকে ভয়ঙ্কর চাউনি দিয়ে বলল-“সেদিন ওরা আমাকে এমন মার মেরেছিল যে পায়ের একটা হাড় ডিস্প্লেসমেন্ট হয়ে গেছে। একমাস হয়ে গেল। এখনও খুঁড়িয়ে হাঁটছি। আর তুই দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছিস”।

আমি মিনতি করে বললাম-“আমি কি ক্ষতি করেছি তোর যে তুই আমার জীবনটা শেষ করে দিতে চাস?”

শয়তানটা আমার কাছে এসে বলল -“কেন রে, আমি যে তোকে ভালবাসি, তুই কি বুঝিস না? আমি তোর জন্য সবকিছু ছেড়ে দিতে পারি। তুই শুধু আমাকে বিয়ে কর। আমি ভালো হয়ে যাব।”

আমি বললাম-“বিয়ে? তোর সাথে? তুই কি মানুষ? আর ভালোবাসার যে নমুনা তুই দেখিয়েছিস? আগে মেয়েদের সম্মান দিতে শেখ”।

সঙ্গে সঙ্গে উঠে এসে আমার চুলের মুঠি ধরে বলল-“আমার কাছে ভালোবাসা মানে হল শারীরিক বাসনার পরিতৃপ্তি। আমি তোর শরীরটাকে উপভোগ করে আমার যৌবন পিপাসা মেটাতে চাই”।

জানোয়ারটার মুখে থুথু ছিটিয়ে দিলাম। আরো রেগে গেল।

বলল-“তুই আমার না হলে তোকে অন্য কারোরও হতে দেব না”। আমার সাল্বার-কামিজ টেনে ছিঁড়তে লাগল।

আমি ওর পায়ে গিয়ে পড়লাম, “আমার সর্বনাশ করিস না প্লিজ”। ও মোবাইল বের করে অর্ধনগ্ন অবস্থায় আমার কিছু ছবি তুলে নিল।

বলল- “এক মাস সময় দিলাম। যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজি না হোস, তাহলে এই ছবিগুলো নেটে আপলোড করে দেব”। তারপর আমাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে চলে গেল।

আমি বাড়ী ফিরে বাবা-মাকে বলার পর ওরা দিশেহারা হয়ে পড়লেন। বংশের মুখে চুনকালি লাগতে আর বাকি থাকবে না ভেবে আমার বিয়ের জন্য তোড়জোড় করতে লাগলেন। এরপরই পত্রিকায় আমার বিয়ের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এবার আপনি আমাকে প্রত্যাখ্যান করলে করতে পারেন।

ইতি
সুস্মিতা

আমি একটা অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়লাম। জানোয়ারটা ছবিগুলো কোথাও পোস্ট করেছে কিনা কে জানে। ভবিষ্যতে বিয়ের পর ছবিগুলো যদি বান্ধুবান্ধব কারোর হাতে এসে পড়ে, তাহলে মান-ইজ্জত কিছুই থাকবে না। আমার ভালোবাসার মানুষটির দিকে কেউ লোলুপ দৃষ্টিতে তাকাবে এটা ভেবে বড় বিতৃষ্ণা জন্মাতে লাগল। বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম, একটা জানোয়ারের লালসার জন্য একটি নিরপরাধ মেয়ের সম্ভ্রম আজ বিপন্ন। সুস্মিতার তো কোন দোষ নেই। সুস্মিতার কান্না বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল। সুস্মিতাকে একবার দেখেই আমার পছন্দ হয়েছিল। ওকে ছাড়তে কিছুতেই মন চাইছিল না। জানোয়ারটার কথা ভেবে রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে উঠল। এই নরপশুদের জন্যই মেয়েরা আজও ঘরে-বাইরে কোথাও নিরাপদ নয়। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

আমার মামা পুলিশের ডি.এস.পি., রিসেন্টলি ট্রান্সফার হয়ে আমাদের শহরে এসেছিলেন। মামার সঙ্গে আমি বরাবরই ফ্র্যাঙ্ক, মামাকে সব ব্যাপারটা জানালাম। মামা আমাকে আইনগতভাবে সমস্ত সহযোগিতা করার আশ্বাস দিলেন। সুস্মিতাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জবানবন্দি রেকর্ড করালাম। সুস্মিতার কাছে নাম-ঠিকানা জেনে নিয়ে আমি শয়তানটার পেছনে স্পাই লাগিয়েছিলাম। খোঁজ নিয়ে জানলাম, সারাদিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারে আর সন্ধে হলেই কোথাও না কোথাও মদের আসর বসায়। মামা নিজে দায়িত্ব নিয়ে দু’এক দিনের মধ্যেই সন্ধেবেলা ওর বাড়িতে রেইড করলেন। ওর ঘর থেকে প্রচুর ড্রাগস, অশ্লীল ভিডিও-র ডিভিডি আর ওর মোবাইলটা বাজেয়াপ্ত করা হল। মোবাইল ঘেঁটে উদ্ধার হল সুস্মিতার ছবিগুলো। ছবিগুলো শয়তানটার বিরুদ্ধে প্রমাণস্বরূপ রেখে দেওয়া হল এবং ওকে মহিলা নিগ্রহ মামলায় অভিযুক্ত করে গ্রেপ্তার করা হল। আমি মামাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানালাম।

মামা যথেষ্ট খোলামনের লোক ছিলেন। বললেন-“মামা যদি ভাগ্নের কাজে না আসে তাহলে কে আসবে বলো। এরকম জঘন্য অপরাধের যথাযথ শাস্তি যাতে পায়, আমি সেটা দেখছি”।

আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা মামা জানতেন। আমি ও সুস্মিতা মামাকে প্রণাম করলাম। মামা আমাদের প্রাণভরে আশীর্বাদ করলেন।

আমার প্রাণপ্রিয়াকে ভারমুক্ত করতে পেরে আমি খুব স্বস্তি পেয়েছিলাম। এই প্রথম সুস্মিতার চোখে খুশির ঝিলিক দেখতে পেয়েছিলাম।

সুস্মিতা আমার দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার সুরে বলল,-“তোমার এই ঋণ আমি কোনদিনও শোধ করতে পারব না বরুণ”।

আমি সুস্মিতাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে আহ্লাদ করে বললাম-“আমার কাছে আবার ঋণ কিসের? আমি তোমাকে ভালবাসি সুস্মিতা। আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ তুমি আমাকে সব কথা খুলে বলার সাহস রেখেছিলে”।

কিছুদিন পর আমাদের বিয়ে হয়ে গেল। দুজনের ভালবাসায় গড়ে উঠল একটি প্রেমের স্বপ্ননীড়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মোখলেছুর রহমান ভাষা ও বর্ননা ভঙ্গি চমৎকার, ভোট রইল।
রংতুলি ভাল লাগল লেখাটি, আমার পাতায় আমন্ত্রন।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী গল্পটা পড়তে গিয়ে থমকে গেলাম, শিরশির করে দাঁড়িয়ে গেল প্রতিটি পশম। বেশ চমৎকার গল্প। এমন জানোযারদের জন্য এই শতাব্দীতে এসেও নারীরা টিকতে পারছে না। সমাজ এদের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, দেখছে না কোনো আইনের লোক। এদের জন্য নষ্ট হচ্ছে একজন সৎ ও ন্যায়বান নারী। এমন গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইলো অনেক শুভেচ্ছা ও একরাশ মুগ্ধতা। অনেক অনেক শুভকামনা ও ভোট রইলো ভাইয়া....
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি সুস্মিতা আমার দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার সুরে বলল,-“তোমার এই ঋণ আমি কোনদিনও শোধ করতে পারব না বরুণ”।....// পরিচিত কাহিনী তবে লেখকের লেখার দক্ষতার কারনে গল্পটা প্রাণবন্ত হয়েছ.....খুব ভাল লাগলো দাদা ...শুভ কামনা রইলো।
ফেরদৌস আলম বেশ সরস গল্প বললেন তো ভাই। ভাল লাগলো বেশ।
Bokul গল্পটা পড়তেই আমার পুরো শরীর জোরে কি যেন একটা ঝাকুনি দিয়ে গেলো। অসাধারণ গল্প এ যেন বাস্তবের এক জ্বলন্ত দ্বীপ শিখা। ভালো লাগলো। আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইলো
রুহুল আমীন রাজু মন ছোঁয়া গল্প ...। আমার পাতায় আমন্ত্রণ ।
ইমরানুল হক বেলাল অসাধারণ গল্প । মন ছুঁয়ে গেল পাঠে । মুগ্ধতা রেখে গেলাম কবি ভাই সাথে ভোট রইল ।

১৯ এপ্রিল - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪