আমদের স্বাধীনতায় ৭১ যখন বর্তমান

স্বাধীনতা (মার্চ ২০১১)

নীল স্বপ্ন
  • ১৬
  • 0
  • ২৯



এ্যারপোর্টের বাইরে দাঁড়িয়ে সজলের মনে হতে লাগলো এই কোন নরকে আমি এসে পড়লাম। সকাল ৯’টা বাজে,এ্যারপোর্টের ভিতরে তাও যা একটু ঠান্ডা ছিল,বাইরে তো তার থেকে প্রায় হাজার গুণ বেশি গরম। আর সেই গরমকে আরও গরম করে দেবার জন্য যেন পাল্লা দিয়ে ট্যাক্সি-ড্রাইভাররা চিৎকার করে যাচ্ছে। সজলের অনুসন্ধানী চোখজোড়া কিছু একটা খুজঁতে খুজঁতে ঠিকেই খুজে পেল। কিন্তু সজলের নামের আইডেন্টি-বোর্ড’টা ধুমড়ে-মুচড়ে এভাবে নিচে পড়ে আছে কেন?
: এইযে শুনছেন? এই আইডেন্টি বোর্ডের এমন অবস্থা কেন? কোনো সমস্যা?
হালকা পাতলা গরনের একটি ছেলে বোর্ডটা তুলে নিয়ে নির্বাক গলায় বলল
 আপনার তাতে কাম কি?
দেহেন ভাই এমনিতেই মেজাজ গরম আছে, আর জ্বালাইতে আইসেন না।
: ও, আচ্ছা ঠিক আছে। আমি আর কে দেখতে চাচ্ছিলাম এটা আমার নাম কিনা?

ইলেকট্রিক শক খেলে মানুষ যেভাবে লাফিয়ে ওঠে ,ঠিক সেভাবেই লাফিয়ে উঠে ছেলেটা বলতে লাগল,
 আপনিই সজল ভাই নাকি?দেখছেন কারবার,খালু আমারে এই বোর্ডটা ধরাই দিছিলো,কিন্তু বাসে কইরা আসবার সময় এক মহিলা বমি কইরা বোর্ডটা ভাসাই দিলো। এইখানে পানি দিয়ে পরিস্কার করার সময় এক লোক আইসা কইলো হেরে ৫০টাকা দিলে নতুন বোর্ড করসি দিবো। ৫০টাকা লইয়া হেই যে গেলো এখনো আসে নাই।
: আচ্ছা ঠিক আছে,ঠিক আছে। আর বলতে হবে না।
কিন্তু তুমি বাসে করে আসছিলে কেন?
 ভাইজান হেইডা হচ্ছে আর একখান কাহিনি। গাড়ি লইয়া বের হইছি,আর মাঝ রাস্তায় আইসা ড্রাইভার কয় গ্যাস নাইকা। মগজ তো পুরাই গরম হইয়া গেলো। ঐ ড্রাইভারের বাচ্চাই গ্যাস সরাইছে,আর কয় কিনা...
: উফ! তুমি অনেক কথা বলো। এবার বলো যাবার ব্যবস্থা কি?
 ভাইজান যাবার সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে। ঐযে দেখেন ট্যাক্সি ঠিক করে রাখছি। আপনার বাক্সগুলা দেখি।
আরে মাত্র ২টা বাক্স কেন? এ্যারপোর্ট মাইরা দিছে নাকি?
: না-না! ঠিকই আছে,কেউ কিছু মারে নাই।
শুধু-শুধু কেন তারা চুরি করবে?
 ভাইজান আপনি এগো চেনেন না। চোরের গুষ্টি সব। যা পায় তাই লইবার চায়।
: আচ্ছা ঠিক আছে বুঝলাম। চলো,এবার গাড়ির দিকে যাওয়া যাক।

গাড়িতে উঠেই সজলের মনে হলো,দেশটা কি এমনই ছিল? এই দেশে কিভাবে মানুষ থাকে? একে তো গরম,তার উপরে এত মানুষ যে নিঃশ্বাস নেবার মাঝেও স্বস্তি নেই। আবার তার উপরে এতো অবিশ্বাস।
ভাবতে ভাবতেই সজলের চোখের সামনে এক অস্বাভাবিক দৃশ্য ঘটতে লাগলো।

: আরে-আরে করছেন কি?
 কি হইছে ভাইজান?
ড্রাইভারের পাশের সিটেও বসে থাকা ছেলেটার নির্বিকার দৃষ্টি দেখে অবাকই হতে হচ্ছে।
: আশ্চর্য! ড্রাইভার wrong-side দিয়ে কেন যাচ্ছে? যেকোনো সময় বড় ধরনের অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে। গাড়ি এক্ষুনি থামাও,নইলে ঘুরাবার ব্যাবস্থা করো।
 হে-হে! ভাইজান আপনি নতুন আইছেন দেইখা এমন লাগতেছে। কিছু হইবো না। আপনি চোখ বন্ধ কইরা বইসা থকেন। সজলের চোখ ফেটে বের হয়ে আসতে চাইলো।
: কিছু হবে না মানে? এই ছেলে তোমার নাম কি যেনো?
 জ্বে ভাইজান,আমার নাম? আমার নাম তো সাবু।
: সাবু,আমি শেষবারের মত বলছি। এক্ষুনি গাড়ি থামাও।
 ভাইজান কি বলেন? গাড়ি থামাইলে অবস্থা বুঝেন? পিছনের গাড়ি গুলাকেও থাইমা যাইতে হবে। এরপর তো জ্যাম লাইগা যাবো।
: পিছনের গাড়ি মানে? Oh, my God!এই গাড়ির পিছনে এতোগুলো গাড়ি কেন আসছে?আশ্চর্য! তোমরা কি traffic rules না জেনেই রাস্তায় নেমেছ নাকি? গাড়ি থামাও বলছি। আমি কিছু শুনতে চাই না,এক্ষুনি গাড়ি থামাও।

গাড়ি থামানো মাত্র পিছনের গাড়িগুলো তারস্বরে চেচাঁতে লাগলো। পিছন থেকে একটা জিপ ওভারটেক করতে যেয়ে একটা বাসের সামনে ব্রেক কষলো। চোখের পলকে পুরো রাস্তাই জ্যাম!



রাস্তার পাশ দিয়ে হাটঁতে-হাটঁতে হঠাৎ করেই সজল দাড়িঁয়ে পড়ল।
নাহ! এখন আর সাবু পিছন-পিছন আসছে না।
হঠাৎ করেই রাস্তায় গাড়ি থামাবার পর যখন পুরো রাস্তায় জ্যাম লেগে গেল,তখন এক পুলিশ অফিসার এসে ড্রাইভারের লেইসেন্স দেখতে চেল।
কিন্তু লাইসেন্সে সব ঠিক দেখার পরেও পুলিশটা ফাইন করার নামে চিৎকার করতে লাগল। সঙ্গে সঙ্গে সাবু ২০০টাকা আফিসারের হাতে ধরিয়ে দিল। ব্যাস,অফিসার একদম ঠান্ডা।

কিন্তু এসব কিভাবে সম্ভব? একজন পুলিশ অফিসার কিভাবে তার দায়িত্ব অবহেলা করতে পারে?
আর একজন নাগরিক হিসেবে সাবু অথবা ট্যাক্সি-ড্রাইভারই বা কেন এতো সহজে আইন ভাঙ্গবে?
এদের মধ্যে কি দেশপ্রেম নেই? নাকি এরা দেশকে ভালবাস্তেই জানে না?
এরা কি সত্যি নিজের দেশকে শ্রেষ্ট দেশে পরিনত করতে চায় না?
এরাই কি সেই নিরীহ বাঙ্গালীদের বংশধর,যারা দেশকে স্বাধীন করার জন্য একত্রে যুদ্ধ করেছিল?
এরা কিভাবে সেইসব মুক্তিসেনা অথবা শহীদের সন্তান?

সজলের মনে হত লাগল, assignment করা যতটা সহজ মনে হচ্ছিলো আসলে সেরকম হবে না। বিশ্বাস করাই তো কষ্টকর যে এই বাঙ্গালীরাই দেশকে বাচাঁবার জন্য যুদ্ধ করেছিল।
নাহ! ১৯৭১’ যদি সত্য হয়,তবে এরা কখনই সেই ৭১’র বাঙ্গালীর বংশধর হতেই পারে না।

সজল ৫ বছর বয়স থেকে আমেরিকায় থাকে, সেখানে “ফিল্ম মেইকিং” কোর্স করছে।
এই সামারে ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র বানাতে বাংলাদেশে এসেছে।
যদিও সজলের জন্ম বাংলাদেশেই কিন্তু আজ পর্যন্ত ও বাংলাদেশ নিয়ে বিন্দু মাত্র আগ্রহী ছিল না।
আর আজকে যা হল তারপরে ওর আগ্রহ যেনো আরো কমে যেতে লাগলো।।

 ভাইজান, এই যে এইদিকে রিক্সার দিকে তাকান।
হঠাৎ একটা রিক্সা এসে সজলের সামনে থেমে গেল। রিক্সার ভিতরে সাবু বসেছিল, সে বলতে লাগলো,
 ভাইজান,রিক্সায় উঠেন। আপনারে আমার চেনা হইয়া গেছে। আপনার সামনে উল্টা-সিধা কিছু করন যাওইবো না
তাই আপনি রিক্সায় উঠেন। রিক্সায় উল্টা-সিধা কিছু করনের কোনো চ্যান্স নাইকা।

প্রচন্ড জিদ নিয়ে সাবুর দিকে তাকাবার পর সজলের মনে হতে লাগল,আগে তার আকমল চাচার বাসায় যাওয়া জরুরী।
এখানকার মানুষের চিন্তা-ভাবনা সে সহজে বুঝে উঠতে পারবে না।
আকমল চাচার সঙ্গে কথা বলেই সব ঠিক করে নিতে হবে।
তাই আপাততো সজল কিছু না বলেই রিক্সায় উঠে বসল। আর বাকি রাস্তাটুকু মোটামুটি চোখ-কান বন্ধ করেই রাখল।
আবশেষে আকমল চাচার বাসায় পৌছেই সজলের মন ভালো হয়ে গেল।
এ্যায়ারপোর্ট থেকে বের হবার পর থেকেই গিঞ্জি-গিঞ্জি বাসা দেখে সজল ভিতরে-ভিতরে অতিষ্ট হয়ে উঠছিল, সে তুলনায় আকমল চাচার বাসা বেশ ভালো খোলামেলা।

 ভালো আছো বাবা?
হালকা-সুতার কাজ করা সুতার পাঞ্জাবী পরে একজন ভদ্রলোক সজলের সামনে এসে দাড়াল।
আরে ইনিই তো আকমল চাচা। কিন্তু ...
: জ্বি চাচা ভালো আছি। কিন্তু আপনার চুল কোথায় গেলো?
কথাটা বলেই সজল লজ্জা পেল,এভাবে তো কথাগুলো বলা ঠিক হয়নি।
 হা-হা-হা! ইয়াং-ম্যান, আমার মতো বুড়ো হয়ে গেলেই এই রহস্য বুঝতে পারবে।
বাদ দেও এসব,তোমার কথা বলো, আসতে কোনো অসুবিধা হয়নি তো?
: চাচা না মানে ...
আমি ঠিক আছি, কিন্তু এ দেশের রুলস বুঝতে পারছি না। চারিদিকে সবাই যেনো দেশটাকে বিশৃংখলায় ভরিয়ে দিতে চাইছে। সাধারন মানুষ থেকে একজন পুলিশ অফিসার পর্যন্ত সবাই।
 পুলিশের কথা আসছে কিভাবে? রাস্তায় কি কিছু হয়েছিলো? সাবু নিশ্চয়ই কোনো গোল পাকিয়েছে। এ জন্যই বলি হতচ্ছাড়া আমার সঙ্গে দেখা করছে না কেনো। কোথায় গেলো সাবুর বাচ্চা!!
সাবু...
: ইটস ওকে চাচা। ও তেমন কিছুই করেনি, অবস্থাটাই কেমন যেনো ছিলো।
 হয়েছে, তোমাকে আর কিছু বলতে হবে না। আমি সাবুর মুখেই শুনব।
Now you must be tired. ফ্রেস হয়ে রেস্ট নেও। then we’ll have a talk.
: ঠিক বলেছেন চাচা। কিন্তু চাচি, রুদ্র-মেঘাপু কোথায়?
 তোমার চাচির আম্মার শরীর খারাপ। তিনজন মিলে তাই নানিবাড়ি গিয়েছে।
বিকালের মাঝেই চলে আসবে।
এইযে তোমার রুম। দেখতো পচ্ছন্দ হয় কিনা?

কথা বলতে-বলতে কখন যে চাচা পুরো বাড়িটা ঘুরে ফেলল সজল টেরই পায়নি।
কিন্তু এই রুমটা অনেক সুন্দর। বড়-বড় জানালা। আর জানালার পাশে লেক!
সজলের প্রথম নজরেই রুমটা পচ্ছন্দ হয়ে গেলো।
জানলা দিয়ে এক জটকা বাতাস এসে যেনো সেই সময় সকালের অবসাদগুলোই মুছে ফেলতে চাইছে।
 ইয়্যাং ম্যান, পাশেই আমার স্ট্যাডি রুম আর লাইব্রেরী।
কিছু লাগলে চলে এস। আর কফি চলবে নাকি?
: না ঠিক আছে চাচা। আমি একটু ঘুমাবো।
 Fine. Have a sound sleep.



আশ্চর্য! আমার রুমের জানালা তো এমন না। আর আমার master clock’টাই বা কোথায়? আচ্ছা এখন কয়টা বাজে?
আমিই বা কোথায়?

ঘুম ভাঙ্গবার পর সজল নিজের কাছে ভালই অসহায় হয়ে পড়ল। সব কিছুই কেমন যেনো ঘোলাটে হয়ে লাগছে।
ইস! কেন যে এ দেশে মরতে আসলাম!
বাহ! এই তো সব কিছুই আস্তে-আস্তে মনে পরছে। আমি এখন আকমল চাচার বাসায়।
কিন্তু এই মিউজিকটা কিসের?
কিন্তু মিউজিকটা ভালই লাগছে।আর জানালার বাইরে কি সুন্দর একটা স্নিগদ্ধতা!
মনে হয় পাশের স্ট্যাডি রুম থেকেই আসছে।
কিন্তু স্ট্যাডি রুমের ভিতরে এইকে?
একটা ছেলেকে দেখা যাচ্ছে। চোখ বন্ধ করে রকিং চেয়ারে বসে আছে, হাতে মোটা বাংলা বই। পাশেই সিডি প্লেয়ারে গান বাজছে।
 ঘুম ভালো হয়েছে তো?
চোখ বন্ধ রাখা অবস্থাতেই ছেলেটা কথা বলছে। Strange তো।
 আমি রুদ্র। কিছুক্ষণ আগে এসেছি। বাবা বাইরে গিয়েছে। মা আর মেঘাপু এখনো নানিবাড়িতেই।
চা খাওতো?
: হ্যা,কিন্তু তুমি...
 আসলে তোমাকে ঘুমাতে দেখে আর বিরক্ত করিনি।
বসো। সাবু কিছুক্ষণের মাঝেই দু কাপ চা নিয়ে আসবে।
: কি বই পড়ছিলে?
 মেজর জেনারেল মুহাম্মদ খলিলুর রহমান (অবঃ) এর লেখা বই।
তুমি বাংলা পড়তে পারোতো?
: হ্যা,sure.বইটার নাম পূর্বাপর ১৯৭১? মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নাকি?
 হুমম,ভালই তো পড়তে পার। আর ঠিকই বলেছো,এটা মুক্তিযুদ্ধের বই।
আমাদের লাইব্রেরীতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক বই আছে। বাবার কাছে তোমার assignment’এর কথা শুনেছি।
বইগুলো তোমার কাজে আসতে পারে।
: থ্যাকন্স। তুমি এখন কি পড়ছো বা কি করছো?
 আমি?
আসলে আমি কিছুই করি না। আবার অনেকের মতে অনেক কিছুই করি।
আপাততো genocide নিয়ে পড়াশুনা করছি। আমার বানান genocide’এর detail নিয়ে web-site’টা দেখতে চাও?
: তুমি web-designer নাকি?
 আরে ধুর!
তেমন কিছু না। এই দেখো।
পাশের টেবিলটা থেকে ল্যাপটপ তুলে রুদ্র ওর তৈরী web-site দেখাতে লাগলো।
সজল অবাক হয় ভাবতে লাগলো, মাত্র ৮ ঘন্টার মত হয়েছে এই বাংলাদেশে। কি বিচিত্র একটা দেশ!
একের পর এক অবাক করার মত ঘটনা হয়েই যাচ্ছে। সজল তো ধরেই নিয়েছিলো এই দেশের মানুষের মাঝে দেশপ্রেম নেই। কিন্তু রুদ্রকে দেখে তার ধারনা বদলাতে বাধ্য হলো।
৭১’এর গণহত্যার ছবিগুলো আর সেগুলোই অসংখ্য তথ্য কি যত্নের সঙ্গে ও সংগ্রহ করছে!
সজল যেনো এতোক্ষণে এক প্রকৃত ৭১’র বংশধরকে দেখতে পেল।

 হ্যালো!!
সজল, কোথায় হারিয়ে গেলে?
: রুদ্র, আমার assignment’এর জন্য নয়। আমি এখন সত্যিই এ দেশটাকে আর দেশের মানুষকে জানতে চাই।
আমি সত্যিকারের ৭১’এর প্রতিচ্ছবিই দেখতে চাই। তুমি কি আমাকে সাহায্য করবে?




সজলের কথাগুলো শোনার পর রুদ্রর আর কিছুই বলার ছিলনা। সজলের হাতটা জোরে চেপে ধরে ও হেসে উঠলো। সেই হাসিই যেনো প্রতিজ্ঞার চিহ্ন।
এরপর সমস্ত বিকেলমাঝে রুদ্র,সজলের কাছে ৭১’এর প্রতিটি মুহুর্ত তুলে ধরতে চাইলো।
৭০’এর নির্বাচন,৭’মার্চের ভাষন, ২৫’মার্চের কালরাত্রি, ২৬’মার্চের স্বাধীনতা ঘোষনা, নতুন সরকার গঠন, দেশের চ্ছিন্নবিন্ন জনকূলের শত বিপদের মাঝেও যুদ্ধে নামা, ভারতে আশ্র্য নেওয়া, ইত্যাদি কিছুই বাদ পড়লো না।

যখন সজল অবাক নয়নে সব শুনছে, তখন রুদ্র সেই চাহনী দেখে আরও অবাক হয়ে উঠলো।
যখন রুদ্র ইকবাল হলের ধ্বংসলীলার কথা বলছিলো,অথবা সারাদেশে কিশোরী থেকে শুরু করে বৃদ্ধা নারীর উপর হয়ে যাওয়া অত্যাচার গুলোর কথা বলছিলো, তখন সজল যেনো নির্বাক-বোবা এক ব্যাথায় কাতরে উঠছিলো।
এই কান্না দেখে কার সাহস যে বলবে সজল ৭১’এর বাইরের কেউ?
হ্যা,সজলকে দিয়েই হবে। রুদ্র যা করতে চাচ্ছে তা সজলকে দিয়েই করানো সম্ভব।

 সজল,সবই তো শুনলে, তবু আমার মনে হয় তোমাত সে সময়ের একজন’এর সঙ্গে কথা বলা উচিত।
: ঠিক বলেছো। তুমি যা-যা বলেছো তাই অনেক বেশি। তবু আমি আরও শুনতে চাই।
তোমার পরিচিত কেউ কি আছে?
 শুধু আমার নয়,বরং তোমার পরিচিত অনেকেই আছে।
আব্বু, তোমার বাবা, এরা সুবাই সে সময়কার নিঃসংশতার সাক্ষী। কিন্তু আজ তারা নিরব-দর্শক।
আমি তোমাকে অন্য একজনের সঙ্গেই কথা বলিয়ে দিতে পারি।
: আজকেই কি যাওয়া যায় না?
 হুমম,৭’টা বাজে। সবাই আটটার মাঝে চলে আসবে।
তখনতো আর বের হওয়া যাবে না। কিন্তু চাইলে আমরা এখন বের হতে পারি।
রুদ্রর কথায় সজল যেনো নিজের মাঝে এক নতুন অনুভূতিকেই জন্মাতে দেখলো।
আজকেই একটা সময় সে ভেবেছিলো এদেশের ৭১’নিয়ে কোনো ভালবাসা অবশিষ্ট নেই। আবার রুদ্রকে দেখে যেনো মনে হলো, এই তো ৭১’। কিন্তু নিজেকে ৭১’র প্রেমে উজ্জিবীত হতে দেখে মনে হলো সে নিজেই তো ৭১’এর অংশ।
সাবু, সেই ট্যাক্সি-ড্রাইভার, পুলিশ অফিসারের মত দেরীতেই যেনো তা বুঝতে পেরেছে।

এদিকে তিনবার কলিংবেল বাজানোর পর খাকি-শাল পরা একজন ৬০বছরের কাছাকাছি মহিলা দরজা খুলে দিল। সজল দেখলো,রুদ্রকে দেখে এই তার চোখে কেমন যেনো একটা মমতা উকিঝুঁকি মারছে।
 সজল,ইনি হচ্ছেন নীলিমা তালুকদার।
১৯৭১’এর বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী। এখনো চমৎকার গান করেন। শান্তিনিকেতনে থাকেন,দু-মাসের জন্য বাংলাদেশে এসেছেন। আর,খালা এ হলো সজল, শরিফ চাচার ছেলে। আজই লন্ডন থেকে এসেছে।

ভিতরে ঢুকতে-ঢুকতে সজলের চোখে অনেক কিছুই পরলো। মনে হলো এই মহিলাকে সজল আগে কোথায়ও দেখেছে,কিন্তু কবে? কোথায়?
 আব্বু-আম্মু ভালো আছে তো?
: হ্যা।
সজলের মনে হলো তার মুখে হ্যা শোনার পর এই মহিলার মুখে এক শান্তির হাসি স্থান করে নিল। সে যেনো শুধু এই এক হ্যা শোনার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলেন।
আর তার গলার স্বরটা যেনো অতি পরিচিত। কিন্তু কেন?

 খালা,সজলকে একটা ডকুমেন্টারী ফিল্ম বানাতে হবে। তাও আবার ১৯৭১’নিয়ে। তাই আমাদের ওকে একটু সাহায্য করতে হবে। তুমি কি ৭১’কে একটু তুলে ধরবে?


আমার তখন ২১ বছর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
মে মাসের ২২ তারিখে এক প্রকৌশলীর সঙ্গে আমার বিয়ে। টানা ৩বছর ধরে আমরা একসঙ্গেই আছি।
হঠাৎ মার্চের ২০ তারিখে আম্মার শরীর খারাপ হয়ে গেল। ফুলতলায় আমার গ্রামের বাড়ি। ঢাকার গরম অবস্থার খবর নিয়েই আমি গ্রামে গেলাম। যদিও সহজে গ্রামে ঢাকার খবর পৌছায়না,তবুও ২৭’তারিখের মাথায় ঢাকার কথা শুনে বুক কেঁপে উঠলো। কি ভয়ানাক!
কিভাবে পাকসেনারা ঠান্ডা মাথায় সেই ধ্বংসলীলা সৃষ্টি করলো? তাদের ভিতরে কি মানবিক কোনো বৈশিষ্টই ছিলো না?

আম্মা ঢাকার কথা শুনে,আমাকে জরিয়ে আল্লার কাছে শুকরিয়া আদায় করতে লাগলো।
এরই মাঝে আমার বড় বোন তার ৪ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে চলে এসেছে। আপুকে দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিলো। তার ছোট্ট মেয়েটাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরই মাঝে দুলাভাইও আগরতলা ক্যাম্পে চলে গিয়েছেন।।
এদিকে আম্মার তো ভয়ের কোনোই শেষ নেই।
আমাদের আব্বা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। আমরা তিন বোন সঙ্গে আবার আপুর ছেলে, সবারই চোখ যেনো আম্মার দিকে। কিন্তু আম্মাওবা কিভাবে এতোগুলো মানুষ্কে আশ্রয় দিবে?
আমার আবার যে প্রকৌশলীর সঙ্গে বিয়ে,তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। তার আব্বা আওয়ামীলিগ নেতা ছিলেন বিধায় তাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি।
প্রতিদিনই আমাদের কাছে একের-পর এক খারাপ খব্র আসতেই লাগলো।
মে মাসের ২০ তারিখে শুনতে পেলাম আমাদের গ্রামেও পাকসেনারা চলে আসবে।
তাই আম্মা আমাদের পালানর চিন্তা করতে লাগলেন। আমরাও ব্যাগ গুছাতে লাগলাম।
মে মাসের ২১ তারিখ রাত ৭টায় আমাদের নৌকা ঠিক হলো। আর সেদিন বিকে ৫’টায় ৪জন রাজাকার নিয়ে পাকসেনারা আমাদের ঘর-ঘেরাও করলো।
আম্মা আর আমার ছোটবোন তখন পাশের পাড়ায় এক আত্মীয়র বাসায় বিদায় জানাতে গিয়েছিলো।

প্রথমেই আমাদের বাসায় ঢুকে পাকসেনারা আমাদের দুইবোনকে চার্জ করা শুরু করলো।
রাজাকারগুলো আপুর বাবুটাকে চেপে ধরে,আপুর কাছে দুলাভাইয়ের খবর জানতে চাইলো। এদিকে আমাকেও আমার হবু জামাইকে নিয়ে প্রশ্নর পর প্রশ্ন করা হলো।
এক পর্যায়ে তারা বুঝেই গেলো যে আমরা আসলেই কিছু জানি না।
আর এটাই বোধহয় কাল হলো।
না জানার অপরাধে আমাদের সামনে আপুর বাবুকে দেয়ালে আঘাত করে হত্যা করা হলো।
আপুর সেই চিৎকার কিভাবে কেউ সহ্য করতে পারে? কি পাষন্ড ওরা তা বলার বাইরে।
কিন্তু তাদের পাষন্ডতা তখনো যেনো শুরুই হয়নি।
কেননা এরপর আমাদের গ্রেফতারের নাম করে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হল।
সেখানে আমাদের মত আরো প্রায় ১৫০ জন মেয়েকে নিয়ে আটক করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে দু-একটা কথায় জেনে ফেললাম আম্মা ঠিক মতই পালাতে পেরেছে। কিন্তু সামনে যে আমাদের অনিশ্চিত সময় আসবে,তার জন্য কোনোভাবেই স্বস্তি পাচ্ছিলাম না।
আর রাত হতই বাড়তে লাগলো ভয় যেনো ততোটাই বাড়তে লাগলো। কিছুক্ষণ পরপরেই আমাদের মাঝ থেকে মেয়েদের ডেকে নিয়ে যাচ্ছে। আর তারপরের যে আর্তচিৎকারগুলো ভেসে আসছিলো তা বর্ণনার অতীত।
তাদেরকে ডেকে নেবার পর আর এই রুমে ফিরিয়ে আনা হচ্ছিলো না। কিন্তু তারপরও আমরা যেনো সব বুঝেও নিজেদের কাছে না বোঝার ভান করে সাহস জোটাতে লাগলাম।
পরদিনই মে ২২ তারিখে,আমার বিয়ে যেদিন হবার কথা ছিলো, সেইদিন আমার ডাকও চলে এলো।
তারপর জেরা করার নামে একেরপর এক কতজন যে কতবার আমাকে ধর্ষণ করলো জানি না।
প্রথম-প্রথম আমি অজ্ঞান হয়েগিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরের আর কিছুই মনে নেই।
কতদিন ওখানে ছিলাম। কতবার আমি ভোগের বস্তু হয়েছি আর কিছুই মনে নেই।
শুধু মনে আছে, আমাকে অন্ধকার এক রুমে রাখা হতো। যে রুমে কোনো সময় ছিলো না।
দিনের কোনো শুরু ছিলো না, কোনো শেষ ছিলো না।
কিন্তু একদিন দিনের শুরু হয়েছিলো।
অন্তত আমি তা দেখেছিলাম। দিনের শুরুতে একটা উজ্জ্বল আলো খোলা দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছিলো।
সেই আলোতে একটা পরিচিতো মুখ আমার হাত ধরে বলেছিলো,নীলিমা আর ভয় নেই।
তারপর আমি আগরতলা ক্যাম্পের হাসপাতালে আসি। আমি সেখানে নিজেকে সামলে নেবার সময় পেয়ে যাই।
তখন নাকি অগাষ্ট মাস! অবাক করা ঘটনা। তিন মাস ধরে আমার সঙ্গে কতকিছুই হলো,তবু আমি কিভাবে বেঁচে আছি?
বড় আপুর কোনো খোঁজ পাওয়া জায়নি। আমাকে নাকি সেদিন আমার দুলাভাই উদ্ধার করেছিলো। ধারনা করা হয় ক্যাম্পে আটকা থাকা অবস্থাতেই আপু মারা গিয়েছে। তবে আমি কিভাবে বেঁচে রইলাম জানি না।
কিন্তু আমি আর বেঁচে থাকার তাগিদ অনূভব করছিলাম না। গাছের মত উদ্দেশ্যহীন বেঁছে থাকতে যেয়ে কখন যেনো হাসপাতালে রুটিনে নার্সের জায়গায় আটকা পরে গেলাম।
ডিসেম্বরে যখন দেশ স্বাধীন হলো,সবাই তখন জয়োল্লাসে ব্যস্ত। আর আমি তখন হাহুতাশ করতে লাগলাম।
কি অদ্ভূত-কি অদ্ভূত!
আমি নাকি তখন ৫মাসের অন্তঃসত্তা। কোনো এক পিশাচের অংশকে সযত্নে বড় করছি। কিন্তু কেন?
এই “কেন” এর উত্তর আমি কখনোই পেলাম না।
এরই মাঝে আমার হবু-প্রকৌশলী বরের সঙ্গে দেখা হলো।
সে এখন আমার ভগ্নিপতি।
আমার আম্মা জানতো আমি আর আপা দুজনই মৃতো,তাই ছোটবোনটাকে নিরাপদে রাখতে এই ব্যবস্থা।
আসলে কি অদ্ভুত বাস্তবতা।
আমি অন্তঃসত্তা কিন্তু বিবাহিত নই।
আর আমার পচ্ছন্দের মানুষটাই এখন আমার বোনের জীবনসঙ্গী।
তবুও সুখের কথা হল,আমার সন্তানটি ভুমিষ্ট হয়ছিলো। সে এখন অনেক বড়।
আর আমার সে প্রকৌশলী হবু বরই তাকে পিতৃপরিচয় দিয়েছে।
আবার এমনোনা যে সে মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত।
কেননা সে আমার ছোট বোনকেই মা ডাকে।
আসলে আমি অনেক ভীতু,তাই আমার সন্তানকে আপন করে নিতে পারিনি।
কিন্তু আমি জানি আমার সন্তান অনেক সাহসী।
নিশ্চয়ই অনেক সাহসী।

রুদ্র আর নীলিমাকে কথা বলতে দিল না।নিজেই বলে উঠল,
 সজল এর থেকেও জঘন্য সময় হচ্ছে এখন। কেননা খালা এখন সে সময়ের থেকেও বেশি কষ্ট পাচ্ছে। কেন জানো?
সে সময়ের রাজাকাররা এখন সগৌরবে ঘুরে বেরায়। এখন তারাই আমদের সরকার। আমাদের তো কিছুই করার নেই।
Please সজল, তুমি যদি সত্যি কিছু করতে চাও তবে এমন এমন একটা ফিল্ম বানাও যেটা দেখে পুরো বিশ্ব ৭১’ আর আজকের নিঃসংশতা জানবে।
তখন বিশ্বের সবাই তাদের বিচার চাইবে।




সজল ভাবতে লাগলো,সে ঢাকায় এসেছে মাত্র একদিন হলো। আগামীকাল বিকেলেই সে গ্রামে যাবে। সেইযে ছোট্টবেলায় যে গ্রামে সে আর মেঘাপু খেলে বেড়াতো,সেই ফুলতলার গ্রামে।
আচ্ছা,নীলিমা খালাও তো ফুলতলার। তবে নীলিমা খালাকে কি কোনো ভাবে চিনি? কিন্তু কিভাবে?
সজল যখন নিজের মাথায় এভাবে জোর দিচ্ছে,তখন পাশেই স্ট্যাডিরুমের জানলা দিয়ে জ্যোৎস্না দেখতে দেখতে রুদ্র ভাবছে, এবার সে নীলিমা খালা আর মেঘাপুর মায়ের সঙ্গে হয়ে যাওয়া অবিচারের বিচার করবে।
মেঘাপু নীলিমা খালার বড় বোনের মেয়ে যে হারিয়ে গিয়েছিল,কিন্তু পরে আগরতলা ক্যাম্পে আব্বু,মানে আমার আব্বু আকমল ইসলাম যে কিনা মেঘাপুর বাবা তার দেখা পেয়ে যায়। যুদ্ধের পর আব্বু মেঘাপুকে দেখে রাখবার জন্য আবারো বিয়ে করেন। যে কারনে আমারো সজলের মতো ২টি মা।
পার্থক্য হলো আমার একজন মা জীবিত কিন্তু সজলের ২জন মাই জীবিত।
অর্থাৎ নীলিমা খালার সেই সন্তানই হচ্ছে সজল। এই সন্তানই মায়ের জন্য সেই স্বাধীনতার বিচার এনে দিবে।

এই তো হলো, ভালোবাসা।
এই তো হলো বর্তমানে ৭১’এর বেঁচে থাকা।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ওয়াছিম কেমন কেমন যেন, তবে শিরনামে আমাদের বানানটা ভুল হইছে।
মামুন ম. আজিজ সুন্দর গল্প। ভালো লেগেছে। আরেকটু গুছিয়ে লিখলে আরও ভালো হতো। লিখতে থাকুন।
সূর্য ৪০বছরের একজন লোক তারচে অর্ধ বয়সী কারো লেখা পড়বে....... এবং তার চোখের কোনে জমা হবে বুকের গভীরে জন্মানো কিছু আকুতি.... এতো সম্ভব শুধু আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আছে বলেই ..... আর তাইতো এতো অনিশ্চয়তায়ও আমরা বেচে আছি.. দিব্যি বেচে আছি.... ৬. নম্বর প্যারাটা না দিলেই ভালো হতো এর আগেই পরিচয়টা জানা হয়ে যায়...
মা'র চোখে অশ্রু যখন গল্পটা পড়তে পড়তে আমিও চলে গিয়েছিলাম সেই ৭১ এ
মা'র চোখে অশ্রু যখন অনেক সুন্দর........... গল্পটা কে পড়তে যায়ে চোখের কোনায় একবিন্দু পানি এসে গেল .....আমিও হইতো আজ আবার নতুন করে জানলাম সেই "৭১" .
সকাল রয় খুব সুন্দর লেখা /আপনি খুব ভালো লিখছেন.........
খালিদ ফারহান একটা movier o chaya paisi...jai hok, vote dilam...arektu choto hoile bhalo hoito... onek boro golpo ar bairer bepar nia onk xtra kotha... gud luck.... amar ta porish
নীল স্বপ্ন সবাইকেই অনেক ধন্যবাদ।। @রাশেদ, কেমন লাগলো জানাবেন।। @খালিদ,হাফ কথা বাজায় রাখিস কেন? কোন লেখক'র ছায়া পাইছিস??
খালিদ ফারহান shama বলসে হইসে মোটামোটি, চালায় যা আর আমি বললাম গল্পে তীব্রভাবে আরেকটি খ্যাতিমান লেখকের গল্পের ছায়া আছে. এটা শ্যামা ও বলসে

০৮ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪