১।
সকাল থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে শখানেক বার মোবাইলে চোখ বুলানো হয়ে গেছে রাফিনের। আসেনি সেই প্রতিক্ষিত ফোনটি । এমনকি কোন এসএমএস ও না। অবশ্য অস্থিরতা বা ধৈর্য্যর অভাব রাফিনের স্বভাবের সাথে একদমই যায় না। অন্তত সে নিজে তাই মনে করে।
রাফিন আহমেদ একজন ক্রিকেটার। সবচেয়ে বড় কথা সে একজন টেস্ট ক্রিকেটার । এ জাতটাই আলাদা, এদের ধৈর্য্যহীন হলে হবে না। কিন্তু তার অস্থির হবার যথেষ্ট কারন আছে । নিজেকে জাত টেস্ট ক্রিকেটার বলে মনে করলেও এ পর্যন্ত একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছে সে। প্রথম শ্রেণীতে তার বেশ ভাল রেকর্ড থাকার পরও টেস্ট দলে সে প্রথম সুযোগ পায় ২৯ বছর বয়সে । প্রথম ইনিংসে ৫৬ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭ নট আউট ছিল। খুব একটা খারাপ কি? অথচ সে আর কোন ম্যাচে ডাক পেলো না। তার বয়স এখন ৩১, একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তার দলে সুযোগ পাওয়ার । মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান কায়সার খান এর ইঞ্জুরি ওর সুযোগ এনে দিয়েছে । কিন্তু তা কনফার্ম হবে কেবল দল ঘোষণার পরই । এমনও হতে পারে খুলনার ছেলে জহুরুল কায়েস সুযোগ পেতে পারে। বিসিসিবি তে নাকি তার বেশ ভাল কানেকশান। থাকলেই বা কি , নির্বাচকদের কি চোখ নেই?এই তো শেষ ম্যাচেও রাজশাহীর বিপক্ষে তার সেঞ্চুরি আছে। ওই জহুরুল অভিজ্ঞতায় তার ধারে কাছেও না।
রাফিনের অস্থিরতার আরেকটা কারন আছে। বয়স ৩১ হয়ে গেলেও এখনো বিয়েথা করে ওঠা হয়নি। অধ্যাবসায়ী একজন টেস্ট ক্রিকেটার সে। জাতীয় দলে খেলাই তার আসল লক্ষ ছিল। দিনের পর দিন ফার্স্ট ক্লাস, ক্লাবে ভাল খেলে গেছে। এ জগতে আপন কেউ তেমন না থাকায় ফ্যামিলি প্রেশার ছিল না। তাই বলে যে তার পছন্দের কেউ ছিল না, তা নয়। তারই সতীর্থ বন্ধু শহীদের বোন রিতুকে কে সে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করে। একথা সে জানিয়েছেও রিতুকে, সে রাজি হয়নি। রাফিনের ধারনা টেস্টে সুযোগ পেলে সে যখন তারকা হয়ে উঠবে রিতুর পক্ষে আর নারাজি হবার কোন কারন থাকবে না।
রাফিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে রইল, কোন ফোন এল না।
২।
সারাদিন আজ অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়েছে। সময়টা ঠিক বর্ষা না, কিন্তু বোঝার উপায় নেই। ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিলো। এখন বোধহয় থেমেছে খানিকক্ষন এর জন্য। বেশ রাত হয়েছে, রিতু বারান্দায় ধোয়া ওঠা চায়ের কাপ নিয়ে বসেছে। আজ সন্ধ্যার দিকে তাকে ছেলেপক্ষ দেখে গেছে। ছেলে আর্মিতে আছে। ক্যাপ্টেন বা মেজর এরকম কিছু একটা। তাকে বেশ পছন্দ করেছে বলেও মনে হচ্ছে।
বৃষ্টির পরের স্তব্ধ প্রকৃতির কারনেই কিনা জানে না, রিতুর বেশ মন খারাপ। ভাবছে রাফিন ভাই এর কথা। গতকাল ফোন করে বলেছিল আজ একটা গুড নিউজ দেবে। কি গুড নিউজ তা অবশ্য অনুমান করতে পারে সে, টেস্ট দলে চান্স পাওয়ার খবর। লোকটা এসব নিয়েই আছে। টেস্ট দলে চান্স পেলে পুরান কথা আবার শুরু করবে রাফিন ভাই, জানে সে।
লোকটা তার বড় ভাই এর বন্ধু । ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছে। বেশিরভাগ সময় এ বাড়িতেই তার আনাগোনা ছিল। ভাইয়া লন্ডন চলে যাবার পর আর তেমন আসেনা। নিজেকে বেস্ট টেস্ট ক্রিকেটার বলে দাবি করে। ন্যাশনাল টিমে জীবনেও চান্স পায়নি। সব সময় ধীর স্থির ভাব-গাম্ভীর্জ বজায় রাখলেও রিতু জানে পুরোটাই মেকি। একরকম মেকি একটা লোকের ন্যাশনাল টিমে চান্স না পাওয়াই উচিত।
এই ফালতু লোকটা তাকে প্রেম নিবেদন করেছিল সে যখন সবে কলেজে পড়ে। কোন রকম নাটকীয়তা ছাড়াই তার কলেজের গেট থেকে ডেকে নিয়ে ব্যাপারটা বলে সে। সাদামাটা ভাবে প্রস্তাবটা দিলেও সে হয়ত রাজি হতো কারন, ছোটবেলা থেকেই জানে লোকটা খারাপ না। কিছুটা সহজ সরল। দুটি কারনে সে রাজি হয়নি, সে নাকি কলেজের কোন ছেলের সাথে কথাও বলতে পারবে না, কি ধরনের শর্ত এটা? আর বলেছে টেস্ট দলে সুযোগ পেলে তাকে নিয়ে নাকি কাড়াকাড়ি পরে যাবে। তাই দেরি যাতে না করে। এরকম অহঙ্কারী আর নিচু মনের কাউকে সে গ্রহন করতে পারেনা ।
রিতু রাফিন ভাই কে নিয়ে আর ভাবতে চাইলো না। বৃষ্টিটা আবার শুরু হয়েছে। দমকা বাতাসের সাথে খানিকটা বৃষ্টির পানি ওকে ভিজিয়ে দিয়ে গেল। রিতু আজকের সন্ধ্যার কথা ভাবলো। ক্যাপ্টেন বা মেজর ওই ছেলে ওকে পছন্দ করে বসতে পারে। মায়ের কাছে যতটুকু শুনেছে ছেলের হাতে সময় কম , পছন্দ হলে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে বিয়ে করতে চায়। জাতিসংঘ মিশনে নাকি কাজ টাজ করে। বিয়ের পরই আবার চলে যাবে আফ্রিকার কোন একটা দেশে।
রিতু ভাবছে সে কি তার পরিবারে বোঝা হয়ে গেছে? অনার্সটাও তো শেষ হয়নি এখনও।
তাহলে এখনই বিয়ে কেন?
রিতুর মা ইয়াসমিন বারান্দায় এসে দাড়িয়েছেন ,
ঃ রিতু মা খেতে আয়
ঃ তোমরা বসো মা
ঃ তোর বাপও বসেছে, তোকে ছাড়া খাবেনা, আয়
অনিচ্ছা সত্তেও উঠল ও। খাবার টেবিল বসেও মুখটা ভার করেই রইল। রিতুর বাবা ইমতিয়াজ সাহেব ব্যাপারটা খেয়াল করলেও কিছু বললেন না। তিনি জানেন এসময় মেয়েরা একটু মন খারপ করেই তাকে। তার বোন শিউলি তো নাওয়া খাওয়াই ছেড়ে দিয়েছিল , কই মরে তো আর যায়নি, লন্ডনে বেশ ভালই আছে। ছেলের বড় মামা তাকে যাবার সময় গ্রিন সিগনাল দিয়ে গেছেন। তিনি জানেন এদের এই বড় মামা ছেলের পরিবারে বেশ প্রভাবশালী, সুখবর এই আসলো বলে।
সুখবর নিয়ে ফোন এল ঠিক রাত দেড়টায়। হ্যা, ছেলের বড় মামাই। ওনারা পুরো পরিবারই রাজি। তবে বিয়ে আগামি শুক্রবার হতে হবে, ছেলের হাতে একদমই সময় নেই। রবি বারেই ছেলে আইভরি কোস্ট-এ মিশনে চলে যাবে। ইমতিয়াজ সাহেবের চোখে পানি এসে গেছে , এ অশ্রু আনন্দের। তার অনেক আদরের মেয়ের সুখি ভবিষ্যত দেখে শান্তিতে মরতে পারবেন তিনি। ইয়াসমিন কে বললেন যেন এখনি সুখবরটা জানায় রিতু কে।
রিতু সে রাতে আর ঘুমাতে পারলোনা।
৩।
রাফিন এর খুব একটা মন খারাপ হওয়া উচিত ছিল না। গতকাল কোন ফোন আসেনি। সকালের পত্রিকার পাতায় ও সে চোখ বুলিয়েছে। আর সব সময় এর মতই তার নাম টেস্ট দলে নেই। গত সাত-আট বছর ধরে এটা নিয়মিতই।
মন খারাপের কারন দুটো। এটাই হয়ত তার শেষ সুযোগ ছিল। আর কখনো সে আর আলোচনায়ই হয়ত আসবেনা। দুই, আজ সকালে সে খবর পেয়েছে রিতুর বিয়ে ঠিক হয়েছে, আগামি শুক্রবার আকদ। রিতুর কি উচিত ছিল না তাকে ফোন করে বিষয়টা জানানো? একটা এস্কেপ প্লান তো তারা করতে পারতো ।
সাত-পাচ ভাবতে ভাবতে রিতুদের বাসায় ফোন করল। ভাগ্য ভাল রিতুই ধরল।
ঃ ফোন করেছেন কেন?
ঃ খবরটা আমাকে জানালে না কেন?
ঃ জেনেই তো গেছেন?
ঃ এখন কি করব আমরা?
ঃ আমরা মানে কি? আমি আর আপনি তো কখনো আমরা ছিলাম না?
ঃ তো আসো আমরা, আমরা হয়ে যাই?
ঃ ফ্লারটিং করেন?
ঃ তুমি কি এই বিয়েতে রাজি?
ঃ রাজি না হয়ে কি আপনার টেস্ট ম্যাচের খেলা দেখার জন্য অপেক্ষা করব?
ঃ রিতু এমনতো কথা ছিল না!
ঃ আপনার সাথে কোন কথাই ছিল না।
খটাশ করে ফোনটা রেখে দিল রিতু।
জীবনে এই প্রথম রাফিন আফসোস করল ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়াতে। তার সমসাময়িক অনেকেই জাতীয় দলে চান্স পেয়ে এখন কোটিপতি। যারা পারেনি তারা খেলা ছেড়ে চাকরি- বাকরি জুটিয়ে নিয়েছে, কেউবা ব্যাবসা করছে। সে করলোটা কি। তার ছোটো চাচা ইউএসএ যেতে বলল, সেখানেও গেল না। একুল অকুল দুটোই হারাল।
৪।
রিতুর বিয়ে হয়েছে আজ প্রায় দেড় মাস হতে চলল। সে এখন আছে কুমিল্লায়। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে। বিয়ের একমাস পর তার হাসবেন্ড ইমন আইভরি কোস্টে ফিরে গেছে। দিনে একবার ফোন করে। লোকটা খুব একটা খারাপ না। যদিও প্রথম প্রথম সে কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি ইমনকে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে লোকটার ব্যাক্তিত্য, নিয়ম শৃংক্ষলাবোধ বেশ ভালো লেগে যায় ওর। সারাটা ক্যান্টনম্যন্ট ওকে ঘুরে দেখিয়েছে ইমন। কুমিল্লার সব সুন্দর এলাকায় গিয়েছে। অপছন্দ করবার মতো মানুষ ইমন নয়। ও চলে যাবার পর অনেকটা একা হয়ে গেছে রিতু।
অবশ্য এখানে সে খুবই ব্যস্ত। বিকেল হলেই সব আর্মি ভাবিদের সাথে দেখা করতে হয়। বেশ কিছু নিয়ম- সামাজিকতার মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়। সোসাইটি মেনটেইন করার ব্যাপার আছে। মাঝে মাঝে খুবই খালি খালি লাগে তার। নিজেকে রোবট মনে হয় । আবার খারাপও লাগে না। সময় ভালই কেটে যায়।
মাঝে মাঝে রাফিন ভাই এর কথা ভাবে । তার যেদিন বিয়ে হয় ওইদিনই রাফিন ভাই কে ন্যাশনাল টিমে ডাকে। কোন একটা প্লেয়ার এর ম্যাচের মাঝে ইঞ্জুরি হয়েছিল। পরের ম্যাচের জন্য রাফিন ভাইকে ডেকেছিল। রাফিন ভাই সেই টেস্ট ম্যাচ খেলেনি। কিছুদিনের মধ্যে ইউএসএ চলে গেছে। সেখানে নাকি বেশ ভালই আছে। এখন বিয়েটিয়ে করে সুখি হোক বেচারা।
৫।
রিতু যেভাবে ভেবেছিল রাফিন আসলে ততোটা ভালো ছিলো না। আজীবন স্বপ্নের টেস্ট ম্যাচের জন্য সে বড় দেরিতে ডাক পেল। রিতুর বিয়ে হয়ে যাবার পর তার আর কিছুুই ভালো লাগছিল না। একমাত্র আপনজন ছোট চাচা যেন পাগল হয়ে গেল ওকে এম্যারিকা নেয়ার জন্য। দেশের সবকিছু ছেড়ে দিয়ে তাই ও চলে গেলো এম্যারিকায়। এখানে আসার পর ছোটচাচা নিজের বিজনেস পুরোটা ওর উপর ছেড়ে দিয়ে অবসরে গেছেন। ওনার ধারনা ফুল টাইম কাজের মধ্যে থাকলে রাফিন থিতু হতে পারবে জীবনে।
রাফিন সত্যি খুব ব্যস্ত হয়ে গেল। বিয়ের কথা সযত্নে এড়িয়ে গেছে আরো কিছুদিন সময় চেয়ে নিয়ে। ওদের সুপার শপটা এখানে বেশ বিখ্যাত। বাঙালি, ইন্ডিয়ানরা তো আসেই, ফরেনাররাও নিয়মিত এখানে। রাফিনের দম ফেলবার ফুরসত নেই। মাঝে মাঝে দেশে রিতুর খবর নেয় সে। ভালোই আছে স্বামী সংসার নিয়ে।
৬।
রিতু দাড়িয়ে আছে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এর সামনে। বেলা বারটা। এখনি বের হবে ওর ছেলে। হঠাৎ একটা ছোট মেয়ে এসে ওর হাতে একটা খাম ধরিয়ে দিয়ে বলল, একজন সাহেব দিতে বলেছে এটা। খানিকটা অবাক হয়ে খুলে দেখলো ও।
“ রিতু,
তোমার কি আমাকে মনে আছে?
ইতি,
রাফিন।
বিঃদ্রঃ আগামিকাল সকাল ১১ টায় স্কুলের পাশের ক্যাফেতে অপেক্ষা করবো, এসো। ”
এত বছর পর এই লোক তার কাছে কি চায়, বাসায় এসে একথাই ভাবছিল সে। পরদিন যাবে না ঠিক করেও ১১টার দিকে ক্যাফেতে চলে গেল। রাফিন ভাই বসে আছে। ওকে দেখে উঠে দাড়ালো। দুটা কফির অর্ডার দিয়ে মুখোমুখি বসে রইলো দুজন। চুপচাপ দুজনেই। রাফিনই ভাংলো নিরবতাটা,
ঃ কেমন আছো রিতু?
ঃ চলে যাচ্ছে দিন, আপনি?
ঃ দেখতেই পাচ্ছো।
ঃ আপনি তো বুড়ো হয়ে গেছেন।
ঃ সময় তো আর থেমে নেই।
ঃ কবে আসলেন দেশে?
ঃ বিজনেস নিয়ে খুব বিজি ছিলাম, তোমার খবরটা জানতাম না। কিছুদিন আগে জানতে পারি। তোমাকে দেখতেই আসা। কিভাবে হল?
ঃ বছর দুই আগে মিশনে থাকা অবস্থায় একটা যুদ্ধে ইমন মারা যায়। দুমাস পরেই চলে আসার কথা ছিল একবারে । সবই কপাল রাফিন ভাই। বিয়ে করলাম ঠিকই সত্যিকারের সংসার করলাম না। এখন ছেলেকে নিয়ে এখানেই আছি।
ঃ আমি বিয়ে করিনি।
ঃ খুব ভালো করেছেন। চিরকুমার সমিতির সভাপতি হয়ে যান।
ঃ রিতু আমি জানি তুমি খুব কষ্টের ভিতর দিয়ে গেছো, হাসবেন্ড দেশের কাজে প্রান দিয়েছে। ছেলেকে মানুষ করছ। কেমন হয় যদি একসাথে কাজটা করি। চলো এমেরিকা আমার সাথে। টেস্ট খেলে তারকা হতে হয়ত পারিনি সত্যি, কিন্তু এমেরিকায় আমার নাম আছে ব্যাবসায়ি হিসাবে। কোন কিছুর অভাব হবে না।
ঃ রাফিন ভাই, কিছু মনে করবেন না। হয়ত রাজি হতাম। এমন কি দশ বছর আগেও রাজি হতাম, আপনার সব প্রস্তাবেই সাথে একটা শর্ত আর না হলে বিনিময়ে কি পাবো থাকে। ভালবাসা শর্ত আর বিনিময়ে হয় না। ভাল থাকবেন রাফিন ভাই। আসি।
রিতু সেদিন রাগ করে চলে এসেছিলো। রাফিন ও ফিরে যায় এমেরিকায়। নিয়তির টানে আবার কাছাকাছি এলেও এক হওয়া হয় না।
৭।
সকাল থেকেই ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। রিতু এর মাঝেই ঢাকায় যাচ্ছে।
রাফিন ভাই এমেরিকায় গিয়ে কিছুদিন পর তাদের মা- ছেলের জন্য এম্যারিকার টিকেট পাঠিয়েছিল। রিতু ততদিনে ভালো করে বুঝে গেছে এই আধপাগল লোকটাকে সে ছোটবেলা থেকেই ভালোবাসে। কিন্তুু আগে বুঝতে পারেনি। বড় অসময়ে বুঝেছিলো ব্যাপারটা। ছেলে বড় হচ্ছিল, এই সময়ে ব্যাপারটা ছেলে জানুক চায়নি সে। তাই টিকিট ফেরত পাঠায় সে। ছেলেকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরে। রাফিন ভাইয়ের আর কোন খোজ পায়নি ও। সেও যোগাযোগ করেনি।
আজ এতদিন পর আবার রাফিন ভাই দেশে এসেছে। এবার আর প্রত্যাখান করেনি রিতু। কারন এবার আর কোন শর্ত ছিল না।
অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। রিতু অাজিমপুর গোরস্তানের বাইরে দাড়িয়ে আছে। একটু পরেই ভেতরে যাবে।
------------------------------------------------------------------------------------
মৃত্যুর সময় পাশে কেউ থাকবে না,এর চেয়ে ভয়াবহ বোধ হয় আর কিছুই নেই। শেষ বিদায় নেয়ার সময় অন্তত কোনো একজন মানুষকে বলে যাওয়া দরকার। নিঃসঙ্গ ঘর থেকে একা একা চলে যাওয়া যায় না, যাওয়া উচিত নয়। এটা হৃদ্য়হীন ব্যাপার।-----হুমায়ূন আহমেদ।
২২ জানুয়ারী - ২০১৭
গল্প/কবিতা:
৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪