অন্ধকারে আলোর ছোঁয়া

ভয় (সেপ্টেম্বর ২০২২)

মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী
মোট ভোট ২৮ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৪.৬২
  • 0
  • ৮৪
এক.
সুমনা তুমি জিজ্ঞেস করবে না আমার দৈনিন্দন জীবনের চাওয়া পাওয়া স্বপ্ন, মেঘালয়, বৃষ্টি। কখনো পুড়েছি কি না, কখনো নিজেকে গড়তে গিয়ে কেউ আঘাত করেছিল কি না। আপনজন, প্রিয় মানুষেরা কি চেয়েছিল আর কতোটা আকুতি বুকে জমিয়ে আমি শেষ নিঃশ্বাসে হারাতে চেয়েছিলাম। সুমনা আজ আমি সাতাশের ঘরে দুর্বার একজন সৈনিক। জীবনে চাওয়া পাওয়ার কোন অভাব ছিল না। ইচ্ছা-অনিচ্ছার কোন কোন কমতিও ছিল না। কমতি ছিল না কোন আত্মীয়স্বজন আর আপনজনের। বিধাতার লিখিত জীবন বিধানের ধার বেয়ে জন্মের কয়েকমাসেই হারিয়ে ফেলি বাবাকে। জীবন নামক এ অধ্যায় মায়ের কাছ থেকে শুরু হয়েছিল কেবল। অথচ অন্যান্যদের মতো বিশাল সুখ নিয়ে পৃথিবীতে জন্মাতে পারিনি বলে হারিয়ে ফেলেছি হাসি মাখা স্বাচ্ছন্দ, হাসিমাখা ভালোবাসা। হারিয়ে ফেলেছি দাদা-নাতির ভালোবাসা। দাদার হাত ধরে হেটে চলা। দাদার সাথে গরুর গাড়ি খেলা আনন্দময় দিনটা৷ হারিয়ে ফেলেছি চাচা-চাচীর পিতৃত্ব আর মাতৃত্বের হাসিমাখা মুহূর্ত। এক অবলোকন হয়ে দাঁড়িয়েছি সবার চোখে। দেখলেই শুধু আকুতি জমায়- আহা অল্পবয়সে পিতা হারিয়ে ফেলেছে, অথচ পিছনে কেউ বলে না- ছেলেটা কোথায়, কেমন আছে, কি করে, কোথায় ঘুমায়! তবুও মায়ের কাছে ছিলাম হীরা মানিক, রাজপুত্র। বুঝতে দেয়নি এই চলার পথ কতোটা কন্টকাকীর্ণ আর বেদনাময়। বুঝতে দেয়নি একজন পিতা ছাড়া জীবন যেন আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার মতো। জানো এই যুদ্ধের পথ মাত্র শুরু হয়েছে, শেষ হবে হবে বলে হতো না। আবার যেন নতুন করে শুরু হতো।

দুই.
সুমনা আমার ছয় বছর বয়স পুরাতে মায়ের যেন পঞ্চাশটি বছরের সমান লেগেছিল। কখনো আমার মুখে এক টুকরো খাবার জুটাতে পারেনি বলে মায়ের আহাজারিতে মহান রবের আকাশও কেঁপে উঠেছিল। নামাজের বিছানায় মা'কে কত কাঁদতে দেখেছি। যদিও বুঝতাম না, তবে ঠিক বুঝার পর অবলোকন করতে পেরেছি। অন্য দশজনের মতো সাজিয়ে দিতে পারতো না বলে মা'কে নীরবে কাঁদতে দেখেছি। সে মা তবুও একটা উজ্জ্বল স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সে স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন স্কুল নামের গন্ডিতে। অনেক কষ্ট এবং পরিশ্রমের দ্বার বেয়ে ধীরেধীরে বড় হতে শুরু করেছিলাম। মায়ের কঠিন পরিশ্রম ছিল আমার একমাত্র উজ্জ্বল স্বপ্ন পুরণের অভিধান। সে নারী জানে যে নারী সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কঠিন পরিশ্রমকে সন্তানের ভালোবাসায় বিকিয়ে দিয়েছেন। সে নারী জানে যে নারী নিজেকে নয় সন্তানের সুখেই নিজেকে সুখী ভেবেছেন। আবার সে নারীই জানেন যে নারী সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সমস্ত কিছু পর করে দিয়েছেন। আমি সে নারীরই একজন সন্তান সুমনা। ছয় বছর থেকে সাত, সাত থেকে আট ধীরেধীরে বড় হতে থাকি আর খরচের ভার দীর্ঘ থেকে আরো দীর্ঘতর হতে থাকে। জীবনের সংলাপ যেন কমে না বরং বাড়তে থাকে, আরো বাড়তে থাকে। সাংসারিক চেতনা আরো পুড়তে থাকে।

তিন.
মায়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য চমৎকার এক ফলাফল করে বেরিয়ে আসি স্কুলের গন্ডি থেকে। জানো সুমনা মা সেদিনও কেঁদেছিল। না কেঁদেছে শোকে আর না কেঁদেছে দুঃখে, আমার চমৎকার এক ফলাফলে মায়ের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে। সেদিন না পেরেছি মিষ্টির আয়োজন করতে আর না পেরেছি আনন্দ উৎসব করে সবাইকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াত। আমার দ্বিতীয়তে যে চমৎকার ফলাফল করেছে তার পরিবারের দেখেছিলাম ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হতে। প্রতিবেশি, আত্মীয়স্বজনকে কত উপহার দিতে। অথচ সুমনা সেদিন কোন স্বজনেরা একটি উপহারও দেয়নি। সেদিন সেই কষ্টটাই আমাকে বারবার আঘাত করেছিল। তবুও মায়ের স্বপ্ন পূরণে আমি ছিলাম এক রাজপুত্র। সবে মাত্র আমিও যুদ্ধ করতে শিখেছি। অ্যালগরিদমের সূত্রগুলো প্রয়োগ করতে শিখেছি। মা সেদিনও আমার মুখের দিকে সমস্ত কষ্ট লুকিয়েছিল সুমনা। এক পর্যায়ে ভর্তি হই কলেজে; এবারো যুদ্ধ, সফল ফলাফলের জন্য। কিন্তু খরচের ভারটা আরো বাড়তে থাকে। মা অনেকসময় না খেয়েও ক্লান্ত শরীরটা নিয়ে পড়ে থাকে। তবুও সন্তানকে সামান্য হলেও খাওয়াতে ভুল করেননি। নানার পরিবারও খুব একটা বিরক্তির। তবুও নানু ছিলেন আমার পাগলী। আমি সবসময় নানুকেই ডিস্ট্রাভ করেছিলাম। সুখে-দুঃখে সময়ে-অসময়ে নানু আমার পাশে থাকতো আর আমাকে সাপোর্ট করতো। হাসিমাখা মুখ নিয়ে আমাকে এগিয়ে যাওয়ার গল্প শুনাতো। যেখানে দাদার হাত ধরে পাড়ি দেয় দূর-দূরান্তে সেখানে নানার হাতটি চেঁপে ধরে পাড়ি দিই হাটবাজারে, দূরদূরান্তে। এখানে সেখানে ভালোবাসার ফুলগুলো শুধু নীরব হয়ে থাকে, জেগে উঠে শুধু বিন্দমাত্র কয়েকজনের। তবুও প্রাসঙ্গিক এই কাব্যিক অভিমান নিয়ে চলতেছি। তবুও ভরসা এবং শুকরিয়া মহান রবের প্রতি।

চার.
এইচএসসি'তে পরীক্ষা চলছে। আনন্দময় মুহূর্ত এবং সফল হয়ে কলেজের গন্ডি থেকে বের হয়ে আসার আরেকটা কঠিন পরীক্ষা। যখন পরীক্ষা দিতে যাই তখন আমার ক্লাসমেট ছেলেমেয়েদের মা বাবা- আত্মীয়স্বজন গাড়ি দিয়ে কত আনন্দ করে নিয়ে আসে, দামি দামি খাবার নিয়ে আসে। অথচ আসা তো দূরের কথা পরীক্ষার হল থেকে বের হয়েও নিজের কাউকে দেখতাম না সুমনা। পরীক্ষার হল থেকে বের হলে মাঝেমাঝে শিক্ষকেরা জড়িয়ে ধরত। এভাবে পরীক্ষা শেষ হলে মাস দু'য়েক এর ভিতরে আরেকটা চমৎকার ফলাফল বেরিয়ে এসেছে। দুঃখের বিষয় মা দীর্ঘদিন খুব অসুস্থ্য। সংসারের অভাব অনটন দিন দিন মাকে আরো বেশি পুড়িয়ে ফেলে, গুলিয়ে ফেলে তার সমস্ত আশা ভরসা। যে একশত দুই ডিগ্রি জ্বর কমাতে কেবলি একটা প্যারাসিটামল খেয়ে সুয়ে থেকেছিলেন, সেই মায়ের মুখেও আজ হাসি ফুটে উঠলো। আনন্দে মায়ের হৃদয় আরো উজ্জীবিত হয়ে উঠলো। দীর্ঘদিন পর মায়ের মুখের একফোঁটা হাসি যেন আমার সমন্ত সুখ, আমার হাসিমাখা হৃদয়ের গল্পচিত্র। তবুও আঁকি, আরেকটু ধৈর্য ধরি আসবে___ একদিন সুখ আসবে। কলেজের এমন উজ্জলময় ফলাফল নিয়ে গ্রাম ছেড়ে মা পাঠিয়ে দেয় শহুরে পরিবেশে। ছেলে আরো ভালো করে পড়ালেখা শেষ করুক। জীবনকে আরো সুন্দর করে গড়তে শিখুক। মা'কে সালাম করে চোখে সমুদ্রভরা জল আর বুকে দীর্ঘ আশা নিয়ে পাড়ি দিলাম শহরে। এক স্বপ্নময় উজ্জ্বল দিন মাকে উপহার দেবো। মাকে উপহার দিবো সমস্ত কষ্টের ভিতরে সুখ থাকে। যেমন- মহান রাব্বুল আলামিন বলেছিলেন- নিশ্চয়ই কষ্টের পর স্বস্থি রয়েছে। পরপরই সরকারী ভার্সিটিতে টিকে যাই। শুধু দু'চোখে স্বপ্ন জাগে একদিন সে ভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হবো। সবাইকে রাঙিয়ে দেবো। না পারার মাঝেও যে স্বপ্নটা সবসময় আকুল হয়ে ফের ফিরে আসে সে স্বপ্নটাই একদিন নিশ্চয়ই ফিরে আসবে।

পাঁচ.
এ কঠিনতম পথ পাড়ি দিতে না দিতে আরো একটা সংকল্প জাগ্রত হলো সুমনা। আরো একটা অভিধান রচনার পথ শুরু হলো। ভাবনায় পড়ে গেলাম রোজ রোজ। যদিও হৃদয়ে কষ্টের দাগ এখনো লেগে আছে, তবুও সমস্তকিছু বুক চেপে চুপ করে থেকেছিলাম। যে প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয়স্বজনকে কখনো বাড়ির চৌকাঠে আসতে দেখিনি, কখনো সামান্যতম খোঁজ-খবর নিতে দেখিনি আজ তারা বিয়ের সজাগে পাত্রীর সন্ধান নিয়ে আসে। চাচাতো বোনকে বিয়ের সুবাদে আপন করতে আসে। তবুও মা কিছু বলেনি। শুধু বলেছিলেন, কোনদিনও হবে না। হতেই পারে না। দুঃসময়ে যাদেরকে দেখিনি কোনদিন আজ সুসময়ের সুবাদে তাদের হাতছানি কেন পাই। সেদিন মায়ের ভাবনার আকাশ যেন ভেঙে দিয়েছিল সব। তছনছ করে দিতে চেয়েছিল আরো একবার। তবুও আমার এ মুখের দিকে তাকিয়ে মা সমস্তকিছু ভুলে গেছেন। আজ আমার আর কোন কষ্ট নেই, দুঃখ নেই, অভিমান নেই। আজ আর আমার কোন অভিযোগ নেই। একটা ছেলে থাকলে হাজার মানুষ হাজার কথার ঝড় তুলবে৷ হাজার মানুষ হাজার কথা বলবে, দেখবে শুনবে, অনেকে অনেক মিথ্যাও রটনা করতে পারে তাতে আমার কিছু যাই আসে না। তবে এ পৃথিবীর মানুষগুলো অনেকটা স্বার্থপর, অনেকটা বেঈমানের মতো। একজন আরেকজনকে ভালো থাকতে দেয় না। একজন সবসময় আরেকজনের পিছনে পড়ে থাকে। আবার তাদের ভিতরে মায়ার যেমন অভাব নেই, তেমনি অভাব নেই কাউকে কষ্ট দেওয়ার মতো ভাবের। মানুষগুলো অনেক জর্জরিত। কারো দুঃখে কেউ পাশে থাকতে চায় না। তাকে আরো উল্টো বলে কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাকে কষ্ট দিয়ে বলে- ব্যাথা পেয়েছ! এ জগৎ সংসারের এ বেদনাময় যেন কোনদিন শেষ হবে না।

ছয়.
আচ্ছা সুমনা জিজ্ঞেস করবে না কোনদিন কাউকে ভালোবেসেছি কি না। হ্যাঁ জীবনের একটা পর্যায়ে এসে খুব ভালোবাসা জমে। ভালোবাসার অভাব থাকে না। বিএস সি কমপ্লিট করার কয়েকমাস আগে একটা ভালোবাসা এসেছিল। জীবনের এ পর্যায়ে এসে আবেগে গলে গিয়েছিলাম। তবে এর আগে কোনদিন কোন মেয়ের চোখে চোখ রাখিনি। কম্পিউটারের ক্লাস নিতে গিয়ে একটা ঊননিশ বছরের মেয়ের চোখের প্রিয় হয়ে উঠেছিলাম। ধীরেধীরে একমাস, দুই মাস, তিন মাস যেতে না যেতে মেয়েটার ভালোবাসায় আরো ডুবে যাই। এ বয়সে এসে মনপ্রাণ দিয়ে তাকে ভালোবেসেছিলাম। স্বপ্নের স্বপ্নিল বারান্দায় তাকে দূরন্ত পথে জোড়া বাঁধার ইচ্ছেরও কমতি ছিল না। ভালো লাগা, ভালোবাসার এ বাড়ন্ত ভাবনা চিরকুট হয়ে অবধি মৃত্যু পর্যন্ত চোখের সামনে ভাসবে। সে ছিল আমার ক্রান্তিলগ্ন সময়ের একজন প্রিয় বন্ধু, একটা ভালোবাসা, অন্ধকার রাতের আলোর জোনাকি। সবসময় মহান রবকে ভয় করত। কখনো আমার খারাপ চায়নি। কখনো আমাকে দূরেও ঠেলে দিতে চায়নি। তার ইচ্ছের রঙিন ডানা ছিলাম আমি। খুব করে চেয়েছিল, খুব করে পাওয়ার আকাঙ্খা জমিয়েছিল। দীর্ঘ আড়াইটি বছর পেরিয়ে গেল। সে অনেকটা দিন অপেক্ষা করেছিল। অনেক উপেক্ষা জমিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘশ্বাসের কণ্ঠে খুব করে বলতে হয়- হঠাৎ একটা তুফান এসে সব ভেঙে-ছূঁড়ে দেয়। সাজানো স্বপ্নগুলো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। তার বাড়ন্ত কষ্টগুলো আমাকে দীর্ঘ পুড়িয়েছিল। কান্নায় বিভোর হয়ে পড়েছিল সে। ঠিক আমি গভীর রাত্রে অনুধাবন করতাম। মহান রবের দরবারে দু'চোখ ভিজিয়ে দিতাম। তার জন্য কতশত ঘন্টা জেগে থেকেছিলাম। বিশ্বাস করো ঘুমাইনি সুমনা।

সাত.
সুমনা আজ জীবন অনেকটা আনন্দের। চাকুরী আছে বলে টাকার যেমন অভাব নেই, তেমনি অভাব নেই ভালোবাসার। আত্মীয়স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশি, আপন-পর কারো অভাব নেই। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরেও যাদেরকে দেখার ইচ্ছে দু'চোখ নিভিয়ে আসতো, আজ চোখ না খুলতে তাঁদের দেখা পাই। আজ হাত না মেলতে তাঁদের ইশারা পাই। নানা-নানু সেদিনও দোয়া করেছিল, আজো করে। সেদিনও ভালোবেসেছিল, আজ সেদিনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। তবে তাঁদেরকে নিয়ে আজ আমার এ সংসার। মা সেদিনও কেঁদেছিল, দুঃচোখ ভিজিয়েছিল- আমার মুখে একমুঠো খাবার ঠিকমতো জুটাতে পারেনি বলে, অসুখ হলে নিয়মিত ডাক্তার দেখাতে পারেনি বলে, টাকার অভাবে অন্য দশজনের মতো আমাকে রাখতে পারেনি বলে। আজো সে মা নামাজের বিছানায় খুব করে কাঁদে। প্রতিনিয়ত দু'চোখ ভিজিয়ে যেতে দেখি মাকে। সেদিন কেঁদেছিল অভাবে অথচ আজ সে মা কাঁদে এতো সুখী হয়ে আল্লাহর নিয়মিত শুকরিয়া আদায় করতে না পেরে। আল্লাহকে প্রতিটা সময় স্মরণ করতে না পেরে। নিয়মিত আল্লাহকে ভালোবাসতে না পেরে। শুধু চায় - দুঃখের সময়, কষ্টের সময় মহান রবের কাছে যেমন দু'হাত তুলে কেঁদেছিল, প্রতিটা মুহূর্তে যেমন স্মরণ করেছিল, আজো যেন তাই করতে পারে। আমরাও যাতে পারি। না হয় শেষ বিচারের দিন মহান রবের সামনে উপস্থিত হতে পারবো না।

সুমনা রাত এখন শেষার্ধ, মসজিদে আযান দিছে। নামাজ পড়বা না। আজ তোমার আর আমার পাশাপাশি থাকার প্রথম রাত। তোমাকে ছোঁয়ার আগেই জীবনের সুখ আর অসুখী কথাগুলো প্রকাশ করে দিলাম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
maruf hossain খুব চমৎকার লিখেছেন। ভাল একটি গল্প।
ভালো লাগেনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
ABDUR RAHMAN অসাধারন একটি গল্প।
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২
doel paki Interesting.
ভালো লাগেনি ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

প্রথমত আল-কোরআনের আয়াতটি না বললেই নয়- নিশ্চয়ই কষ্টের পর স্বস্তি রয়েছে। একটি বাস্তবধর্মী গল্প। আমরা প্রতিটা মানুষ কোন না কোন কারণে কষ্টে আছি। হয় তো ব্যক্তিগত সমস্যা, পারিবারিক সমস্যা কিংবা অভাব অনটন। উক্ত গল্পের লেখক গল্পের নায়কের বিয়ের প্রথম রাতে স্ত্রী পাশে থেকে যখন প্রশ্নগুলো করতে চেয়েছেন তখন নায়েকের পারিবারিক কঠিন কষ্টগুলো তুলে ধরেছেন। সুখ আর অসুখীর কথাগুলো তুলে ধরেছেন। তবুও অন্যায় কাজ করতে চাননি। মায়ের বেদনাময় মুহূর্তগুলো তুলে ধরতে স্বচেষ্ট হয়েছেন। প্রতিবেশির আঘাতগুলোও লেখায় আনতে একটুও ভুল করেননি। তুলে এনেছেন প্রতিটা মানুষের জীবনে কষ্টের মুহূর্তেও যে কোন না কোন ভালোবাসা আসে সে মুহূর্তটা। স্ত্রীর সাথে কথোপকথনের মাঝে কেটে যায় অবধি ফজর পর্যন্ত। অবশেষে গল্পের নায়েকের মা এতোটা কষ্ট-দুঃখ সহ্য করে, সন্তানকে পরিশ্রম করে পড়ালেখার সে অবদান আল-কোরআনের আয়াতের সাথে সম্পূর্ণ প্রমাণিত, ফলস্বরূপ একদিন সংসারে উজ্জ্বলতা এনেছে। সুখ এসেছে, ভালোবাসা এসেছে। সেদিন প্রতিবেশির, আত্মীয়স্বজন কারো অভাব হয়নি। মহান রবের দেওয়া এতোটা সুখ পেয়ে যদি আমরা শুকরিয়া আদায় না করি, তাহলে কাল কিয়ামতের দিন মহান প্রতিপালকের কাছে জবাব দেওয়ার মতো কোন উত্তর থাকবে না। তাই গল্পের নায়েকের মা সেদিন সুখ না পেয়ে কেঁদেছেন, অথচ আজ সুখী হয়েও কান্না করেন। কারণ মহান রবের ঠিকমতো শুকরিয়া আদায় করতে না পারলে কিয়ামতের বিচার হবে কঠিন ভয়াবহ। এখানে কিয়ামতের ভয়টাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর গল্পের নাম- 'অন্ধকারে আলোর ছোঁয়া' রাখার মূল কারণ হচ্ছে- আমাদের দৈনিন্দন বেদনাময় সময়টাকে আমরা কঠিন পরিস্থিতি কিংবা অন্ধকার বলে থাকি। যদি ফের কষ্ট মুছে যায় তখন আমরা সুখ বা আলো বলি। আলো মানে আলোকিত জীবন, নির্ভেজাল, কষ্টবিহীন জীবন। আবার বিবেচনা করলে বোঝা যায়- আমরা জানি না ভবিষ্যতে আমাদের ভাগ্যে কি হয়। যদি অন্ধকারে আলোর ছায়া দিই, তাহলে পরবর্তীতে সম্পূর্ণ নির্ভেজাল। তাই সুখের পরে ভবিষ্যতের কথা যেহেতু এখানে তুলে আসেনি, মাত্র সুখ ফিরে পেয়েছে মানে সুখের ছোঁয়া পেয়েছে তাই গল্পটির নাম অন্ধকারে আলোর ছোঁয়া দেওয়া হয়েছে। গল্পটি অন্ধকারের সে জীবন থেকে আলোকিত জীবনে ফিরে এসে মহান রবের শুকরিয়ায় ব্যস্ত বলে উক্ত গল্পটি 'ভয়' বিষয়ের সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করি।।

২২ ডিসেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৬৯ টি

সমন্বিত স্কোর

৪.৬২

বিচারক স্কোরঃ ১.৮২ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ২.৮ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪