-কি?এত বেলা হয়েছে আমাকে বলনি কেন? মাকে বোকা দিয়ে ঝটপট রেডি হয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। তখন ওর মা বললো নাস্তা করলি না। লাবন্য বললে, না তাড়াতাড়ি যেতে হবে খুব ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে।এভাবে বেড় হয়ে গেল ঠিকি তবে তার কোন ইম্পরট্যান্ট ক্লাস নেই। কলেজে অনুর্বর নামে শান্ত,ভদ্র,পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্থ থাকার ছেলেটার পিছে লাগাই লাবন্যের প্রধান কাজ। অনুকে জ্বালাতেই যেন লাবন্য স্বর্গীয় সুখ অনুভব করে।তবে অনু তাকে পাত্তা দেয়না। ক্লাসের প্রথম দিনই লাবন্য অনু চশমাটা কেরে নিয়েছিলো। সেই থেকে লাবন্যকে দেখতে পারেনা। যদি অনু ক্লাসে বা ক্যাম্পাসে বসে পড়াশোনা করতে দেখে লাবন্য বিরক্ত করা শুরু করে দেয়।লাবন্যের অত্যাচারে অনু অতিষ্ট। কিন্তু সত্য যে এটাই লাবন্য অনেক বেশি ভালবাসে অনুকে। লাবন্যের ভালবাসা অপ্রকাশিত প্রকৃত ভালবাসা। যেটা অনু বুঝতে পারে না।তার কাছে এসব জ্বালাতন মনে হয়।তাই অনু সিদ্ধান্ত ন্যায় লাবন্যের কোন কথার উত্তর দিবে না আর।
একদিন লাবন্য অনুর সাথে কথা বলতে চেষ্টা করে। অনু রেগে যাবার মত ছেলে না। কিন্তু সে রেগে বলে ওঠে "এই মেয়ে কি পেয়েছ তুমি যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছো" ছাত্রছাত্রী তে পরিপূর থাকা ক্যাম্পাস।সবাই অনুর কথার দিকে মনযোগী হয়ে আসে।লাবন্য সেদিন প্রচন্ড অপমানিত হয়। রাগ করে চলেও যায় বাসাতে। অনু মনে মনে হাসে আর বলে যাক বাঁচা গেলো। কিন্তুু না লাবন্যের গতদিনের অপমানিত হওয়া অনুর সাথে কথা বলা আটকাতে পারে না..
পরের দিন ক্লাসরুম বসে অনু পড়ছিল। লাবন্য এসে বললো কেমন আছো...? এ কথা অনু শুনে অবাক..? লাবন্য বলছিলো.. জানো কালকে তুমি যে আমাকে বোকা দিলে সেটা আমার অনেক বেশি মজা লেগেছে। কালই প্রথম তুমি আমার উপর রাগ করে কথা বলেছ.. আমি সারা রাত তোমার মিষ্টি ঝাড়িটাকে মিস করেছি...। একথা শুনে অনু মনে মনে বলতে লাগলো কি বেহায়া মেয়েরে বাবা.. গতকাল কতগুলো মানুষের সাথে অপমান হলো.
সেটা কিনা তার কাছে মোজা লেগেছে...
অনু কোন কোথার উত্তর দিলো না... লাবন্য বকবক করতেই লাগলো। তাই অনু সেখান থেকে রাগ করে উঠে বাসায় চলে গেল।
পরেরদিন সারা ক্যাম্পাস ঘুরে অনুকে আর খুঁজে পাওয়া গেলনা। লাবন্যের মনটা ভীষন খারাপ হয়ে গিয়েছে.. প্রায় ১০দিন হল অনু ক্যাম্পাসে আসেনা..। লাবন্য অনেকভাবে যোগাযোগ কোরার চেষ্টা করেছে... কিন্তুু তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি..
১১তম দিন লাবন্য মনটা খারাপ করে তার ডিপার্টমেন্টের সামনে বসে ছিলো.. সে লক্ষ করলো অনু ক্যাম্পাসে আসছে... লাবন্য অনুকে দেখা মাত্রই দৌরে তার সামনে গিয়ে দাড়ায়.. অভিযোগের সুরে বলে, এতদিন ক্যাম্পাসে আসনি কেন..? তুমি জানোনা অনু..? তুমি বুঝোনা? তোমাকে কত ভালবাসি অামি। তোমাকে এই দশটা দিন দেখতে না পেয়ে আমার দুনিয়া অন্ধকার হয়েগিয়েছিলো। অনু তোমাকে ছাড়া আমার জীবন অচল। আমি তোমাকে ভালবাসি অনু।
দাড়িয়ে দাড়িয়ে কথাগুলো শুনার পর.... হঠাৎ অনু বলে উঠে, আমি তোমাকে ভালবাসি না লাবন্য। আমার পথ ছাড়ো বলছি.. লাবন্য কাঁদতে কাঁদতে বললো.. এ হতে পারে না অনু এ হাতে পারে না...
এরপর আর দুজনকে দেখা যায়নি ক্যাম্পাসে.. অনুর কোন খোঁজ কেউ জানে না.. এদিকে লাবন্য চোখের জলে সাগর সৃষ্টি করে ফেলেছে..
তার ভালবাসায় কোন খুঁত ছিলো না তবে কেন তাকে এত কষ্ট পাবে... প্রায় দেড়মাস হয়ে গিয়েছে..
এর মাঝে এক বিকালে লাবন্য বেলকোনিতে অনুর সাথে ঘটে যাওয়া সৃতিগুলোর সৃতিচারন করছিলো.. তখন একটা ফোন আসে। লাবন্য ফোন ধরে... ওপাশ থেকে কেউ একজন বলে, আপনি লাবন্য বলছেন..? লাবন্য বলে হ্যাঁ।বলুন।।। খুব দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে চলে আসুন.. অনু আপনার সাথে কথা বলতে চায়..
অনু.? হাসপাতাল.? কি হয়েছে অনুর..?
আপনি চলে আসুন..
লাবন্য খুব দ্রুতই চলে যায় হাসপাতালে এবং জানতে পারে অনুর ক্যান্সারের জটিলতায় ভুগছে.. কয়েক ঘন্টা সময় অাছে।
লাবন্য অনুর রুমে ঢুকেই বলতে লাগলো.. তুমি কি এই জন্য এতদুরে ছিলে...? তুমি এত স্বার্থপর হলে কিভাবে..? অনু বলপ ওঠে, .আমি তোমাকে এই অনিশ্চিত জীবনের সাথে জোড়াতে চাইনি লাবন্য। তোমাকে প্রথম দিনই ভাল লাগে যায়। মাঝপথে এসে জানতে পারলাম। আমি মরনের অতি কাছে। যে দশদিন আমি ক্লাসে গিয়েছিলাম না.. আমি তখন ছিলাম ICO তে। অামার অার সময় নেই লাবন্য। আমাকে যেতে হবে। অনুর অবস্থা খুব খারাপ হচ্ছে ধীরে ধীরে...
অনুর এমন খারাপ হওয়া দেখে লাবন্য ডাক্তারকে ডাকে, ডাক্তার! ডাক্তার!
এদিকে অনু তার হাত ধরে বলে... ভাল থেকো লাবন্য..........
তারপরই অনুর চোখ দুটো তাকিয়ে ছিলো ঠিকই কিন্তু প্রান পাখিটা উড়ে চলে গিয়েছে.. দূরে অনেক দূরে। লাবন্য অভিমানের সুরে বলে ওঠে। তুমি আমাকে এভাবে একা ফেলে চলে যেতে পারো না.. এই অনু! ওঠো.... এই ওঠ না। ঠিক আসে কথা বলবে নাত। না বললে।
অনুর হাত জোড়িয়ে ধরে, লাবন্য খুব করে কাঁদে।
কান্নাই যে তার এখন একমাত্র সাথী।
বুকের মাঝে কষ্টের অনুভুতিগুলো তাকে কুড়েকুড়ে যন্ত্রনা দিতে থাকে। নিষ্টুর এই পৃথিবী টা। তার কষ্ট হয়তো বুঝবে না।।। তবুও তার কান্না থেমে থাকবে না।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।