ঘুম ভেঙ্গে গেল হঠাৎ করেই। কোথায় আছি বুঝে উঠতে কিছু সময় ব্যয় করলাম। ডিম লাইটের আবছায়া আলোয় সবকিছু কেমন অচেনা লাগছে। ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার কারণটা বুঝতে পারছিনা। ঘরের ভেতরে আরামদায়ক উষ্ণতা। দুঃস্বপ্ন দেখেছি বলেও মনে হচ্ছেনা। ঢোক গিলতে গিয়ে অনুভব করলাম গলা, ঠোঁট শুকিয়ে গেছে। ভীষণ তেষ্টা পেয়েছে। বিছানা ছাড়লাম। ডাইনিং রুমে এসে তেষ্টা মিটালাম। ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে, মুখে জল ছিটিয়ে টাওয়ালের খোঁজে বারান্দায় গেলাম। বারান্দায় এসেই চমকে উঠলাম। অসম্ভব সুন্দর জোছনা পুরো প্রকৃতিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। বারান্দার রেলিঙে ভর দিয়ে তা অনুভব করার চেষ্টা করলাম। পারলাম না। কিন্তু জোছনাময় পরিবেশ মোহাবিষ্ট করে ফেলল আমাকে। বারান্দার নিচে বড়সড় একটা বালুর মাঠ, তারপরে বাঁশবাগান। বাগানের ঝিরঝিরে ফাগুনি হাওয়া এখান পর্যন্ত এসে মুখে কোমল পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে। শীতের শেষের শীতলতাও জড়িয়ে আছে এই বাতাসে। শরীরে শিহরণ সৃষ্টি করছে। তারপরেও ভালো লাগছে। মাঠের বালুর উপরে জোছনা প্রতিফলিত হয়ে কেমন একটা শুভ্রতা সৃষ্টি করেছে। পুরো পরিবেশে ছড়িয়ে দিয়েছে তা। কেমন স্বর্গীয় মায়াময় বিভা যেন! প্রকৃতির এই রুপ ব্যাখ্যা করার মত ভাব ও ভাষা কোনটাই আমার নেই। কিশলয় থাকলে কাব্যিকভাবে পুরো ব্যাপারটা আমাকে শোনাত। কিশলয়! কতদিন পর ওকে মনে করলাম। যেন ওর কাছ থেকেই আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। অথচ একসময় কত খুঁজেছি ওকে। ভার্সিটি ক্যাম্পাস, ওর খুব প্রিয় রুপসার তীর, দিগন্তের বনে, পথের পাশে কোথায় বাদ দিয়েছি? কিন্তু কোথাও পাইনি। একসময় খুব অভিমান হল ওর উপর। খুঁজে বেড়ানো বাদ দিলাম। কিন্তু ডায়েরির পাতায় প্রতিদিন ঝড় তুলতাম। মনের ভেতরের ঝড় তাতে একটুও কমতনা, বরং বেড়ে যেত। আমি ওর হারিয়ে যাওয়ার কারণ জানি। কিন্তু আমার যে কিছুই করার নেই। আমার হাতে পায়ে জিঞ্জীর বাঁধা।
একসময় জোছনা আমার এত পছন্দ ছিলনা। আকাশের চাঁদটা দুর্বল টর্চলাইটের মত ঝাপসা আলো ছড়াচ্ছে, এ আবার দেখার কি হল? কিন্তু কিশলয়ের সাথে পরিচয় হওয়ার পর যত কাছে যাচ্ছিলাম, আমার জগতের মাঝে ও অনেক প্রভাব ফেলা শুরু করল। আমাকে সম্পূর্ণ অপরিচিত একটা জগতের সাথে পরিচিত করল। চাঁদের ঝাপসা আলোর মাঝে যে এক অদ্ভুত মায়াময় পৃথিবী লুকিয়ে আছে তা দেখাল। রুপালি আলোর রুপকথায় হারিয়ে যাওয়া শিখলাম, মায়াবী স্বর্গরাজ্যে হারিয়ে যাওয়ার রাস্তা চিনলাম। যেদিন কিশলয় আমার কাছ থেকে হারিয়ে গেল, অভিমানভরে ওর চিনিয়ে দেওয়া রাজ্য থেকে ছুটি নিলাম। আজ হঠাৎ আমার সামনে সেই জোছনা অপ্রত্যাশিতভাবে এসে হাজির হয়েছে। ইচ্ছে করেই জোছনা দেখিনি এতদিন। জোছনা দেখলেই যে আমার কিশলয়ের কথা মনে পড়ে যায়। রুপসার তীরে দুজনে একসাথে কত জোছনা দেখেছি।
আরেকটা ব্যাপার ওর খুব পছন্দের ছিল। জীবনানন্দ ও তাঁর কবিতা। জীবনানন্দের সাথে ওই আমাকে পরিচয় করিয়েছিল। কিভাবে একজন কবি সময়ের ভেলায় ভেসে চারদিকের পৃথিবী দেখেন, কিশলয়ের সাথে না মিশলে জানতেই পারতাম না। কত কবিতাই শুনিয়েছে ও জীবনানন্দের। কিশলয় খুব ভালো আবৃত্তি করতে পারত। শেষের দিকে যখন ওর আকুলতাকে ধর্মের দোহাই দিয়ে ফিরিয়ে দিতাম, একটা কবিতাই বেশি আবৃত্তি করতঃ
তুমি তা জানোনা কিছু_ না জানিলে,
আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে;
যখন ঝরিয়া যাবো হেমন্তের ঝরে-
পথের পাতার মতো তুমিও তখন
আমার বুকের ‘পরে শুয়ে রবে?
অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন
সেদিন তোমার।
তোমার আকাশ-আলো-জীবনের ধার
ক্ষয়ে যাবে সেদিন সকল?
আমার বুকের ‘পরে সেই রাতে জমেছে যে শিশিরের জল
তুমিও কি চেয়েছিলে শুধু তাই, শুধু তার স্বাদ
তোমারে কি শান্তি দেবে;
আমি চলে যাবো,- তবু জীবন অগাধ
তোমারে রাখিবে ধরে সেইদিন পৃথিবীর ‘পরে
আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে।
এখন এইসব মনে পড়লে চোখ ছলছল করে উঠে, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। কিশলয়কে হারানোর পর থেকে তাই আমি জীবনানন্দ থেকেও পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
ধর্ম! হ্যাঁ, ধর্মই ছিল আমার আর কিশলয়ের মাঝে সবচেয়ে বড় ব্যবধান। ও মুসলমান ছিল। ভালোবাসা দিয়ে এই বাঁধাকে ও উপড়ে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু আমার বাবা মাকে আমি কষ্ট দিতে চাইনি। একটা মুসলমান ছেলের সাথে প্রেম তারা নিশ্চয়ই মেনে নিতনা। কিশলয়কে এই কারনেই আমি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু চেয়েছিলাম সারাজিবন অন্তত আমরা বন্ধু হয়ে থাকব। তা তো হলই না। উল্টো ও কোথায় হারিয়ে গেল। কিন্তু ও যে জানেনা, যেদিন চোখের জলে বাঁধ দিয়ে ওকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম, সেদিনই পণ করেছিলাম চিরকুমারী থেকে যাব।
মঙ্গলবার ছিল সেদিন। আষাঢ়ের প্রথম। কিশলয় ক্যাম্পাসে যেতে বলেছিল। জানতাম না, সেদিনই যে ওর সাথে শেষ দেখা হবে। সকাল থেকেই আকাশে মেঘ করছিল, ঠাণ্ডা বাতাসও বইছিল ভীষণ। আমি ক্যাম্পাসে ওকে খুঁজে পেলাম বড় জামগাছটার তলায়। অন্যরকম দেখাচ্ছিল ওকে। রাতে ঘুমোয়নি, এটা বুঝতে পারছিলাম। চোখ নেমে গেছে। সবসময়ের সঙ্গী গিটারটাও ওর পিঠে নেই। ওর নির্ঘুম রাত কাটানোর কারণটা বুঝতে পারছিলাম। চেহারার এরকম শ্রী দেখে আমার চোখে পানি এসে যাচ্ছিল। নিজেকে ভীষণ শক্ত করে রেখেছিলাম।
আমাকে দেখে এগিয়ে এলো ও। বড় বড় চোখ দুটিতে কি অপরিসীম মায়া ছেয়ে আছে। আর, আর কেমন যেন একটা ব্যাকুলতা। আমি বেশিক্ষণ তাকাতে পারিনি। চোখ নামিয়ে নিয়েছিলাম। ও শুধু এটুকুই বলল,
“এসেছ, সোমলতা?”
ওর কণ্ঠে কি যেন ছিল, আমার চোখের জলের বাঁধকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলেছিল। আমি আর নিজেকে সামলাতে পারিনি, ঝরঝর করে কয়েক ফোঁটা জল গাল বেয়ে নেমে এসেছিল। কিশলয়ের চোখ এড়াতে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়েছিলাম। পারিনি হয়ত, পারলে এই লাইন কয়টাই কেন ও আবৃত্তি করবে?
“চোখে তার
যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার;
করুণ শঙ্খের মতো- দুধে আর্দ্র- কবেকার শঙ্খিনীমালার
এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।”
সে যা হোক, আমি বললাম,
“আমাকে কি কবিতা শোনানোর জন্যে ডেকেছ?”
“নাহ।”
“তাহলে? কোন কারণে ডেকেছ, নাকি এমনিই?”
এত শক্ত কোন কথা বলিনি কিন্তু ও আহতজোড়া তুলে আমার দিকে তাকাল। আমি জানি, ও ভীষণ স্পর্শকাতর।
ওকে খুশি করতেই বললাম, “বুঝেছি, আজকে আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টি হবে। ভিজতে চাও, এইতো?”
কিশলয়ের মুখে এক চিলতে হাসি দেখা গেল। ওর হাত ধরে বললাম, “চলো।”
“কোথায় যাবে?”
“দেখা যাক, বৃষ্টি কোথাকার গন্তব্যে আমাদের খুঁজে নেয়।”
আমরা হাঁটা শুরু করলাম।
কিশলয় অনেকক্ষণ ধরেই কোন কথা বলল না। আমিই আগে বললাম,
“আজ কি তোমার মন খারাপ, কিশলয়?”
“নাহ। কেন?”
“কথা বলছ না যে?”
“কি বলব?”
“কি বলবে খুঁজে পাচ্ছনা? রাতে ঘুমাওনি কেন?”
“এমনিই। ঘুম আসেনি তাই।”
“সত্যি বলছ?”
এমন সময় হঠাৎ করেই এক ঝলক দমকা শীতল বাতাস প্রবাহিত হল। আশেপাশের গাছের পাতাগুলোতে সেই হাওয়ার গুঞ্জন শুরু হল। তারপরে কিছু না বুঝে উঠার আগেই ঝুম বৃষ্টি। হঠাৎ গগনঝরা জলের শীতল স্পর্শে কেঁপে উঠলাম।
আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টি। অন্য কিছু ছিল মনে হয় এই জলে। কিশলয় ও বৃষ্টির স্পর্শে হঠাৎ অন্যরকম হয়ে গেল। ভেতরের আকুলতাকে একটুও লুকানোর চেষ্টা না করে বলল, “তুমি কি আমাকে বুঝতে পারো না?”
আমি অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে কণ্ঠে যথাসম্ভব গাম্ভীর্য ঢেলে বললাম, “এটা সম্ভব না, কিশলয়। বন্ধুত্বের চেয়ে বেশি কিছু করতে গেলে আমাদেরকে পায়ে জড়ানো সমাজের শিকল ছিঁড়তে হবে। যদি তাই করতে হয় তবে আমাদের ভেতরে বহুদিনের যে শিক্ষা তা কেন আছে বলো?”
কিশলয়কে খুব হতাশ মনে হল। কোন জবাব দিলনা ও।
নিজেকে খুব শক্ত রেখে এই কথাগুলো বলতে হয়েছে। আবেগকে প্রশ্রয় দিলে লাগামছেড়া ঘোড়ার মতো হয়ে যাবে। এই ঘোড়াকে নিশ্চয়ই তখন শিকলে বাঁধা যাবেনা।
বললাম, “দাঁড়িয়ে থাকবে? না হাঁটবে?”
আমরা আবার হাঁটা শুরু করলাম। বৃষ্টি অপূর্ব ঝমঝম ঝঙ্কার সৃষ্টি করছে। নেশা ধরে যায়। দূরের কিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছেনা। এরই মাঝে আমরা রুপসার তীরে পৌঁছলাম। লোকজন আমাদের দুজনকে নির্বিকারভাবে বৃষ্টিতে হাঁটতে দেখে অবাক হচ্ছে।
কিশলয় বলল, “এরকম যে সুরেলা মোহ সৃষ্টি করে বৃষ্টি হচ্ছে, একসময় ভাবতাম এই বৃষ্টি, রুপসা, জোছনা এগুলো ছাড়া আমি বেঁচে থাকতে পারবনা। এরপরে পরিচয় হল তোমার সাথে। ভীষণ কাছে চলে এলে। আমার এই অসুস্থ জগতটাকে আলো দিয়ে ঢেকে রাখলে। তুমি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছ, তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। মেয়েরা এসব খুব সহজেই বুঝতে পারে। কিন্তু যেদিন ফিরিয়ে দিলে, সব অন্ধকার দেখলাম। কালো মেঘ এসে রাতের চাঁদটাকে ঢেকে দিল। কালরাতে ভীষণ বাতাস বইছিল। ওই বাতাস হু হু করে আমার ভেতরটাকে ধ্বনিত করছিল যেন। একফোঁটা ঘুমও আসেনি।”
আমি কোন কথা বললাম না। বৃষ্টির স্রোত যেন আরও মুষলধারে ঝরা শুরু করেছে। রুপসার জল ফুলে ফেঁপে উঠছে।
কিশলয়ের আকুলতা আরও বেড়ে গেল যেন, “কোন কোন রাতে অপূর্ব জোছনা হবে। এই রুপসার জলে রুপালি আলো ঝলমল করবে। ঢেউয়ে চাঁদের কম্পিত বিম্ব মায়াময় আভা ছড়াবে। জোছনার স্নিগ্ধতায় মিশে চেনা, পরিচিত পৃথিবীও অচেনা মনে হবে। কোনদিন হয়ত বারিধারা আজকের মতই ঝমঝম তরঙ্গে সুরেলা মহের সৃষ্টি করবে। কিন্তু তোমাকে ছাড়া যে সবই অর্থহীন। তুমি তো জানো সোমলতা, এই রুপসা আমার অস্তিত্বের সাথে মিশে গেছে। এই রুপসার দিকে তাকিয়ে দেখো আমার ভেতরে কিরকম আলোড়ন হচ্ছে।”
রুপসার দিকে না তাকিয়েই আমি বড় বড় ঢেউয়ের টলমল অনুভব করতে পারছিলাম। জল একজায়গায় স্থির থাকতে পারছেনা যেন! হৃৎস্পন্দনের মতো উঠানামা করছে। আর গগনঝরা জল এই জলে ঝরে আলোড়নের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। পুরো নদীতেই তার এই অস্থিরতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। যেন চোখের জল বুকের রক্তের মধ্য দিয়ে পুরো শরীরে প্রবাহিত হচ্ছে। আর নিজের ভেতরের জমে থাকা কাতরতা, অতল বিষাদ, অস্থিরতার অনুভূতি অস্তিত্বজুড়ে জানান দিচ্ছে। আমার চোখে অবিরামধারায় জল গড়াচ্ছে। বৃষ্টিতে সেই নোনাজল ধুয়ে যাচ্ছে। কিশলয় বুঝতে পারলনা। আমাকে হয়ত খুব নিষ্ঠুর ভাবছিল ও। বলল, “আমরা কি সব সময়ের উপর ছেড়ে দিতে পারিনা?”
আমি কোন কথা বললাম না। কথা বললেই যে কিশলয় আমার কণ্ঠের আর্দ্রতা বুঝে যাবে।
হঠাৎ এক রাতজাগা নিশাচরের শব্দে সচকিত হলাম। কতক্ষণ থেকে এখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম বলতে পারবনা। চোখের নিচে নোনাজলের উষ্ণতা অনুভব করলাম। সেদিনের পরে আর কিশলয়কে দেখিনি। আমি জানি, আর দেখবও না। ও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমি কি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম? মা বাবার মুখের দিকে তাকালে বুঝতে পারি, সিদ্ধান্তটা সঠিকই ছিল। কিন্তু নিজের ভেতরকার অশান্তিকে বাঁধ দিতে পারিনা। তখন, যিনি সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন তাঁর উপর ভীষণ অভিমান হয়। হে ঈশ্বর, কেন দিলে এই ধর্মের বাঁধা? ধর্মের বাঁধাই যখন দিলে তখন ভালবাসাটাই বা কেন দিয়েছ? আমাদের ভেতরটাকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে তোমার ভালো লাগে? সবই কি তোমার লীলামাত্র? আমরা তোমার তুলনায় নগণ্য মানুষ, তাই বলে কি আমাদের ভালোবাসার কোন মূল্যই নেই?
জীবনানন্দের কবিতায় যেভাবে বলা হয়েছেঃ
এই ব্যথা_ এই প্রেম সবদিকে রয়ে গেছে_
কোথাও ফড়িঙে_ কীটে_ মানুষের বুকের ভিতরে,
আমাদের সবের জীবনে।