প্রথম অভিজ্ঞতা

কামনা (আগষ্ট ২০১৭)

স্বপন কুমার ঘোষ
প্রাইমারি শেষ করে যেদিন মাধ্যমিকে ভর্তি হলাম সেদিন কত আনন্দ! নতুন স্কুল আর বন্ধুবান্ধব পেয়ে পাঁচ বছরের কাটানো কোন স্মৃতিই যেন মনে পড়ছে না । তারপর মাধ্যমিকের বিদায়ের দিন বান্ধবীরা যখন ওড়না ঘোমটা দিয়ে কাঁদছে আমরা বন্ধুরা তখন তাদেরকে নিয়ে উপহাস করা শুরু করেছিলাম। স্যারদের আড়াল হয়ে বান্ধবীদের বলছিলাম কিরে জিলাপি কম পড়ছে বুঝি, তাই কাঁদছিস? উচ্চ মাধ্যমিকের দুইটা বছর প্রাইভেট পড়তে পড়তে পার করেছিলাম। ছোট্ট জীবনটার বিভিন্ন স্মৃতি, অভিজ্ঞতা, আর যতসব বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হয়েছে তা হয়তো অনার্সে এসেই। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩। দিনাজপুর সরকারি কলেজে আমার অনার্স জীবন শুরু। ডিপার্টমেন্টের সিঁড়িতে প্রথম পা দিতেই এক বৃদ্ধ আমার সামনে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল বাবা ২টা টাকা দাও। আমি প্রায় অন্য সবার মতোই "মাফ করবেন" বলে উপরের দিকে উঠতে লাগলাম। সেদিন ছিল আমার নবীন বরণ। নতুন বন্ধু বান্ধবীদের সাথে পরিচিত হবার জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিলাম। তিন চারটা সিঁড়ি পার হতেই ও আল্লাগো সহ কিছু পড়ার শব্দ শুনতে পেলাম। পিছনে তাকিয়ে দেখলাম সেই বৃদ্ধ ভিক্ষুক সিঁড়িতে পিছলে পড়ছে। আশপাশে তাকিয়ে দেখলাম কেউ নেই শুধু ডিপার্টমেন্টের একরুমে সাউন্ডবক্সে কোন স্যার হয়তো বক্তব্য দিচ্ছে তা আচ করতে পারলাম। কি করা যায়? বরণ হতে যাবো নাকি বৃদ্ধ চাচার খেয়াল করবো। বিবেকের তাড়নায় চাচার দিকে এগিয়ে এলাম। চাচাকে সিঁড়ি থেকে উঠিয়ে বুকের কাছে ধরে দেখলাম অবস্থা খুব গুরুতর নয়। শুধু কপালে একটু রক্ত লেগে আছে। চাচাকে প্রশ্ন করতেই বলল- বাবা আমি ঠিক আছি। মাথায় একটু লেগেছে তবে সমস্যা নেই। তুমি যাও বাবা। আমি বললাম, চাচা আপনার ছেলে নেই? চাচা বলল- ছেলে আছে বাবা। তোমার থেকে বড়। ছেলের আবার দুই ছেলে মেয়ে। আমি বললাম- ছেলে কি করে? চাচা বলল- আমার ছেলে এই কলেজ থেকে অনার্স পড়েছ বাবা। এখন একটা বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করছে। এবার চাচা উঠে দাঁড়াল। বলল, বাবা আমি যাই আমার দেড়ি হচ্ছে। আজ সকাল থেকে মাত্র ১০ টাকা পেয়েছি। আমি মানিব্যাগ বের করে হাতে ২০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললাম ঠিক আছে চাচা ভালো মতো যান। চাচা সিঁড়ি দিয়ে নামছে আর আমি উঠছি। চাচার কথাগুলো ভাবতে ভাবতে অবাক না হয়ে পারি নি। যেই বাবা কত কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশুনা করিয়েছে। বৃদ্ধ বয়সেও সেই বাবার কষ্টের অবসান হলো না। বেসরকারি একটা ব্যাংকে চাকরি করে এক বাবার ভরণ পোষণ করা হয়তো ছেলের কাছে অসাধ্য ছিল না। কিন্তু স্ত্রী,ছেলে, মেয়ে পেয়ে হয়তো ছেলে বাবার কষ্টের কথা প্রতিনিয়ত ভুলেই যান। স্ত্রীর বিভিন্ন চাহিদা, ছেলে মেয়ের পড়াশুনার খরচ এগুলোর তুলনায় বৃদ্ধ বাবার মূল্য কোন অংশে বেশি ছিল না। যাই হোক অনার্স জীবনের প্রথম দিনে এক অদ্ভুদ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা আজো আমাকে তাড়া করে, কবে একটা চাকরি যোগাড় করে বাবা মায়ের কষ্টকে লাঘব করবো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নূরনবী সোহাগ অভিজ্ঞতার ভরে হয়ে যাক একটা বড় চাকরি !! শুভ কামনা রইল সাথে ভোট
স্বপন কুমার ঘোষ ধন্যবাদ সবাইকে।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী বেশ চমৎকার। দোয়া করি, সৃষ্টিকর্তা আশাটা সফল করুক। অনেক শুভকামনা, ভোট ও আমার পাতাই আমন্ত্রণ রইলো।
ফেরদৌস আলম আরো ভাল লেখা প্রত্যাশা করছি।

০৬ ডিসেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪