একটা সময় ছিল যখন রাত ১১টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়তাম আর ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠতাম। কিন্তু শুচি ছেড়ে যাবার পর রাত জেগে ফোনে বিরহের গান শোনা, ফেসবুকিং করা, আড্ডা সব কিছুকেই খুব সহজেই অভ্যাসে পরিণত করে ফেললাম। এখন রাত ১২ টার আগে ঘুমাতে যাওয়ার কথা চিন্তা করা মানে আকাশকুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এইতো সেদিনের কথা। বরাবরের মতোই সেদিনও ঘুমোতে ঘুমোতো প্রায় রাত তিনটা বেজে গেল। সকাল ৭টায় ফোনে রিংটোন বেজে উঠল "মন মাঝি রে আয় ফিরে আয়"। প্রায় ২০ সেকেন্ড বাজার পর ফোনের স্ক্রিনে লক্ষ্য করলাম এক অচেনা নাম্বার। ঘুমের ঘোর নিয়েই কলটা ধরে কানের কাছে ধরতেই শুনতে পেলাম " স্বপ্ন, কেমন আছো? " আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। কণ্ঠটা চিনতে এক ন্যানো সেকেন্ড সময় লাগলো না। এই স্বপ্ন নামটা ধরে ডাকার অধিকার শুধু আমি তাকেই দিয়েছিলাম। যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না এতোদিন পর সে আমার সাথে যোগাযোগ করবে। মনে হলো স্বপ্ন দেখছি নাতো আবার? আমি কাঁদো কাঁদো গলায় বললাম, যেমন রেখেছো ঠিক তেমনই আছি। তুমি তো অনেক ভাল আছো, তাই না? শুচি বলল, তুমি একটু আমার সাথে দেখা করতে পারবে? আমি কোন কিছু না ভেবেই বিস্ময়ের সাথে প্রশ্ন করলাম: কোথায়, কখন, কীভাবে? বলল, আমাদের সেই চিরচেনা জায়গায় সকাল ১০ টায় আসো।
আমি সঙ্গে সঙ্গে বিছানা ত্যাগ করে ওয়াশ রুমে যেয়ে দাঁড়িগুলো কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ মনে পড়ল সে তো আমার মুখ ভর্তি দাঁড়িগুলি খুব পছন্দ করতো। রীতিমতো সে আমার চাপা চাপা দাঁড়িগুলোর ফ্যান বলা যেতে পারে। তাই দাঁড়ি না কেটে গোসল করে নিলাম। চুলে একটু জেল লাগিয়ে তার দেওয়া সযতনে তুলে রাখা পাঞ্জাবীটা বের করে পড়লাম। এক ঘন্টা আগেই বের হয়ে হাটতে শুরু করলাম। ভাবতে লাগলাম প্রকৃত প্রেম একদিন না একদিন ঠিকই ফিরে আসে। আমার বিশ্বাস সে ভাঙেনি। জানতাম একদিন সে ঠিকই ফিরবেই।
অপেক্ষাটা বরাবরই আমাকেই করতে হতো। আজো তার ব্যতিক্রম হলো না। প্রায় বিশ মিনিট পরে সে আসল। বসল আমার থেকে বেশ একটু দূরেই। বললাম কি ব্যাপার ভয় পাচ্ছো নাকি? সে বলল , নাতো ভয় পাবো কেন? আমি এক নাগারে বলতে লাগলাম, কেন চলে গেলে সেদিন? আমাকে কি তোমার কখনো মনে পড়ে নি? কতবার তোমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু তুমি করো নি? কেন? কেন? কেন করো নি? আজ হঠাৎ করে কেনই বা এলে আবার? সে আমাকে থামিয়ে দিয়ে তার ভেনিটি ব্যাগ থেকে একটা দামি মোটা রঙিন কার্ড বের করে আমার হাতে দিয়ে বলল এটা পড়ো বুঝে যাবে। পড়ে বুঝলাম আমার এতোক্ষণের সমস্ত কল্পনা অহেতুক। ভেবেছিলাম তার সাথে আমার যে সারাজীবন পাশে থাকার অলিখিত চুক্তি ছিল সেটাকে লিখিত রুপ দিতেই তার পুনরাগমন। লিখিত চুক্তি ঠিকই কিন্তু সেই চুক্তিতে আমি নই, চুক্তিবদ্ধ হতে চলেছে সদ্য সরকারি চাকরি প্রাপ্ত আমারই পরিচিত এক বড় ভাই। আমার গত দেড় বছরে সামলিয়ে নেওয়া জীবনটাকে এলোমেলো করে দিয়ে বলল, আশা করি বিয়েতে আসবে। অপেক্ষায় থাকবো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।