মেঘ‌রোদ্দুর

প্রেম (ফেব্রুয়ারী ২০১৭)

সারোয়ার কামাল
  • 0
  • ৮৯
লাবণ্য একটা মৃত পা‌খি‌কে অঞ্জ‌লিবদ্ধ হ‌া‌তে তু‌লে নি‌য়ে তা‌কি‌য়ে থাক‌লো করুণ চো‌খে । চোখদু‌টো তার বর্ষার আকা‌শের মত ঘন কা‌লো গভীর ছলছ‌লে । ওর হা‌তে মৃত পা‌খিটার নিষ্প্রাণ শরীর । বৃ‌ষ্টি‌তে ভি‌জে পা‌খিটার গা‌য়ের পালক খাড়া খাড়া হ‌য়ে গে‌ছে । গলার কাছটায় সামান্য শুক‌নো র‌ক্তের দাগ । গলাটা ঈষৎ বেঁ‌কে গি‌য়ে লম্বা চিকোন ঠোঁট দু‌টো হাঁ করা । গতকাল রা‌তে এই পাহাড়ী এলাকার উপর দি‌য়ে ঝ‌ড়ো বাতা‌সের সা‌থে বৃ‌ষ্টিপাত ব‌য়ে গে‌ছে তুমুলভা‌বে । জানুয়া‌রির শুরুর দি‌কে কনক‌নে ঠান্ডার সা‌থে এই ধর‌নের অপ্রত্যা‌শিত ঝ‌ড়ো বাতাস নিশ্চয় সুখকর নয় । সারা রাত ফায়ার প্লে‌সের পা‌শে ব‌সে থে‌কেও হাড় কাঁপুনী শীত‌কে উপেক্ষা করা যায় নি । লাবণ্য ঘন ঘন ক‌ফি বা‌নি‌য়ে আন‌ছিল । ক‌ফির মগ হা‌তে আমরা দুজন ফায়ার প্লে‌সের সাম‌নে ব‌সে সম্পূর্ণ রাত জে‌গে ‌ পোড়া কা‌ঠের ফুট ফাট্ শব্দ আর বাই‌রের ঝ‌ড়ো হাওয়ার শো শো মাতম শুন‌ছিলাম ।পাহা‌ড়ের কোল ঘেষা ছ‌বির মত সুন্দর ম‌নোরম ডাক বাং‌লোটার পিছ‌নে শাল সেগু‌নের ছোট একটা জঙ্গল । সকাল বিকাল শত শত পা‌খির কলতা‌নে মুখ‌রিত হ‌য়ে থা‌কে সমস্ত জঙ্গলটা । গত রা‌তে ঝড় বাদলা এই জঙ্গলের বু‌কেই তার সকল রুদ্র মত্ততা চা‌লি‌য়ে‌ছিল প্রাণপ‌ণে । সবুজ ঘা‌সে শক্ত বু‌টের ঘষা খে‌লে যেমন ঘাস উপ‌ড়ে জায়গাটা ছাড়া ছাড়া হ‌য়ে যায় আজ‌কে সকা‌লে শাল সেগু‌নের জঙ্গলটা‌কে ঠিক সেরকম লাগ‌ছে । বাতা‌সে গা‌ছের ডালপালা ভে‌ঙ্গে গে‌ছে । ভেজা মা‌টি‌তে ঝরা পাতার স্তূপ । উঁচু গা‌ছের শাখা প্রশাখা পাতা বিবর্ণ ভা‌বে জবুথবু অবস্থায় নি‌জে‌দের অতি ক‌ষ্টে মে‌লে ধ‌রে‌ছে । মৃত প্রায় জঙ্গলটা‌তে আজ আর কোন পা‌খি ডাক‌ছে না , অথচ গত কাল সকা‌লেও পা‌খির কি‌চির মি‌চির শ‌ব্দে কা‌ন তা‌লি লাগার জোগাড় ।মৃত পা‌খির কোনটা ডানা মে‌লে আবার কোনটা ডানা গু‌টি‌য়ে জঙ্গ‌লের এদিক ও‌দিক মুখ থুব‌ড়ে প‌ড়ে আছে । ঝ‌ড়ের প্রবল ঝাপটা এদের ছোট ডানা দু‌টো সামলা‌তে পা‌রে‌নি । লাবণ্য একাগ্র‌চি‌ত্তে বেদনা ভরা দৃ‌ষ্টি‌তে তা‌কি‌য়ে‌ ওর হা‌তের মৃত পা‌খিটার দি‌কে ।বু‌কের গভীর থে‌কে একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস বে‌রি‌য়ে এলো ওর ।আমার দি‌কে করুণ চো‌খে তা‌কি‌য়ে বলল-" এদের জন্য কি আমরা কিছু কর‌তে পা‌রি না ? "
আমি বললাম-"‌কি কর‌তে চাও ? "
লাবণ্য তারপর উদাসভা‌বে কিছুক্ষণ নীরব থে‌কে বল‌লো -"মা‌টি খুঁ‌ড়ে এদের কবর দি‌লে কেমন হয় ?"
আমি ওর কথায় অবাক না হ‌য়ে পা‌রি না । মরা পা‌খি তা সে ফে‌লে রাখ‌লেও কি আর মা‌টি‌তে পুঁ‌তে দি‌লেও কি !তাছাড়া মাথার উপর ঝলম‌লে রোদ উঠ‌লেও শী‌তের দাপট এখনও বর্তমান । দমকা হি‌মেল বাতা‌স শরীরে কাঁপু‌নি তুল‌ছে । ঠান্ডায় উন্মুক্ত হা‌তের টসট‌সে আঙু‌লগু‌লোর রক্ত বর‌ফের মত জমে যাবার উপক্রম ।এই অবস্থায় হিম শীতল ভেজা মা‌টি খুঁ‌ড়ে পা‌খি কবর দেয়ার মত মহৎ কাজটা কি আদৌ বু‌দ্ধিমা‌নের ! মৃত পা‌খি নি‌য়ে লাবণ্যর এই ছে‌লেমানুষী প‌রিকল্পনায় যোগ দি‌তে আমি মো‌টওে আগ্রহী না ।অথচ এই কথাটা ও‌কে সরাস‌রি মুখ ফু‌টে বলাও চ‌লে না । লাবণ্য ব্যগ্রভা‌বে আমার দি‌কে তা‌কি‌য়ে আছে যেন আমি মু‌খে একবার "হ্যা" বল‌লেই সে সারা জঙ্গল ছু‌টে ছু‌টে মৃত পা‌খি‌দের কুঁ‌ড়ি‌য়ে এনে কবর দি‌বে ।ওর করুণ মু‌খের দি‌কে তাকা‌লে মায়া হয় আবার হিং‌সাও হয় । সামান্য কিছু মৃত পা‌খি নি‌য়ে ওর এত আদি‌খ্যেতা কি‌সের অথচ ওর সাম‌নে রক্ত মাং‌সের জলোজ্ব্যান্ত একজন মানুষ দা‌ড়ি‌য়ে তার দি‌কে ফি‌রেও তাকায় না । সকল প্রকার তুচ্ছ অনাবশ্যক বস্তু‌তে ওর মায়া দরদ উপ‌চে প‌ড়ে আর আমার বেলায় ভান্ডার খা‌লি । আমার বেলায় তার কেবল সীমাহীন কার্পণ্যতা । ওর মায়া ভরা মু‌খের সাম‌নেও ক্ষুব্ধ অভিমা‌নে আমার বুকটা পাথর হ‌য়ে গে‌ছে । গম্ভীর গলায় বিরক্তি ফু‌টি‌য়ে বললাম-"‌কি দরকার এইসব উটকো ঝা‌মেলা করার । দেখ‌ছো না ভেজা স্যাঁত‌সে‌তে মা‌টি । ঠান্ডা লে‌গে যা‌বে । তার‌চে‌য়ে বরং জঙ্গল থে‌কে বে‌রি‌য়ে প‌ড়ি ।" লাবণ্য আমার এমন নিষ্ঠুর উত্ত‌রে মুখ কা‌লো ক‌রে ফে‌লে‌ছে । আমার দি‌কে ফ্যালফ্যাল ক‌রে তা‌কি‌য়ে যেন আমা‌কে খোঁজার চেষ্টা কর‌ছে । ওর দৃ‌ষ্টির মা‌ঝে এমন একটা সরল তীক্ষ্ণতা আছে যেটা দে‌খে নি‌জের কথায় নি‌জেরই চমক হয় । স‌ন্দেহ জা‌গে স‌ত্যি কি আমি আর আগের সেই আমি‌টি নেই ? বদ‌লে গে‌ছি ? তা হ‌বে হয়ত । বদ‌লে যাওয়াই তো জগ‌তের নিয়ম । লাবণ্য কি বদলায় নি? আজকাল আমার প্র‌তি তার এত অনীহাভাব অথচ কিছুকাল আগেও সে তো এমন ছিল না ।আমা‌দের প্রথম সন্তান প্রস‌বের সময় মারা যাওয়ায় লাবণ্যের জীব‌নে একটা বড় রক‌মের ধাক্কা গে‌ছে । আমি নি‌জেও খুব কষ্ট পে‌য়ে‌ছি । ভাব‌তে গে‌লে যন্ত্রণা হয় লাবণ্য ম‌নে ম‌নে সন্তা‌নের মৃত্যুর জন্য আমা‌কে দায়ী ক‌রে । আমার প্র‌তি ওর প্রচ্ছন্ন অভিমান আজও আমা‌কে কু‌ড়ে কু‌ড়ে খায় । প্রসব যন্ত্রণার মুহূ‌র্তে আমি স‌ঠিক সময় বা‌ড়ি‌তে পৌছ‌তে পা‌রি নি । বি‌দে‌শি ক্লাইন্টদের নি‌য়ে খুব ইম্পর্টেন্ট একটা মি‌টিং‌য়ে ফেঁ‌সে গি‌য়ে‌ছিলাম । মি‌টিং‌য়ের সফলতার উপর আমা‌দের পু‌রো কোম্পা‌নির ভ‌বিষ্যত নির্ভর কর‌ছিল । আর সৃ‌ষ্টিকর্তারও এমন কৃপা সে‌দিন পু‌রো কম্পা‌নির দা‌য়িত্বভার আমার কাঁ‌ধে চাপা‌নো । আমার বিচক্ষণতার উপর নির্ভর কর‌ছে কোম্পানীর সবাই । এক‌দি‌কে ক্লাইন্ট‌দের হ্যা‌ন্ডেল করা অন্য দি‌কে প্রসব বেদনায় কাতর লাবণ্যর উপর্যুপ‌রি ফোন । কোন‌দি‌কে সামলাব আমি । জা‌নি , সবার আগে প‌রিবার । কিন্তু আমি যে দা‌য়িত্ব কাঁ‌ধে নি‌য়ে‌ছি তা থে‌কেও তো পা‌লি‌য়ে আসা যায় না । সে‌দিন মি‌টিং‌য়ে আমি কি প‌রিমাণ অস্থির ছিলাম , কি প‌রিমাণ চাঞ্চল্য আমার রক্তে ছ‌ড়ি‌য়ে প‌ড়ে‌ছিলাম , কি প‌রিমাণ দু‌শ্চিন্তা নি‌য়ে দুরু দুরু বু‌কে দৌ‌ড়ে বা‌ড়ি‌ এসে‌ছিলাম সেটা শুধু আমি জা‌নি । ততক্ষ‌ণে বড্ড দেরী ক‌রে ফে‌লে‌ছি । এই ক্ষোভ দুঃখ অভিমান নি‌য়ে লাবণ্য আজও আমা‌কে দোষী ভা‌বে । কা‌ছে থে‌কেও সম্পূর্ণ অপ‌রি‌চিত মানু‌ষের মত আমার সা‌থে ঘর সংসার ক‌রে । আর আমি যে অনু‌শোচনার ছব‌লে তি‌লে তি‌লে কষ্ট পা‌চ্ছি সে কথা তার অন্ত‌রে কি ঘুণাক্ষ‌রেও ঠাঁই পায় না ?
লাবণ্য ব্যথাতুর মু‌খে আমার থে‌কে চোখ স‌রি‌য়ে নিল । সে মৃদু পা‌য়ে হাঁট‌তে হাঁট‌তে চারপা‌শে মা‌টি‌তে প‌ড়ে থাকা আরও তিন চারটা মৃত পা‌খি‌কে আল‌গো‌ছে কু‌ড়ি‌য়ে নি‌য়ে অদূ‌রে একটা উঁচু গা‌ছের গোড়ায় হাটু ভে‌ঙ্গে ব‌সে পড়‌লো । পা‌খিগু‌লো‌কে এক জায়গায় জড়ো ক‌রে সো‌য়েটা‌রের হাতা গু‌টি‌য়ে ভেজা মা‌টি খুঁড়‌তে লাগ‌লো । শিউ‌লি ফু‌লের মত নিপুন শুভ্র ওর হা‌তের আঙুলগু‌লো ‌দেখ‌লে বু‌কের ভেতরটা ব্যথায় টনটন ক‌রে । দৌ‌ড়ে গি‌য়ে ওর হাত দু‌টো বু‌কের মা‌ঝে চে‌পে ধ‌রে গলা ফে‌টে চিৎকার করে বল‌তে ইচ্ছা ক‌রে -"আ‌মি অনেক বড় অপরাধী লাবণ্য । আমা‌কে শা‌স্তি দাও তোমার যা ম‌নে চায় । এই দেখ আমি মাথা পে‌তে দি‌য়ে‌ছি শা‌স্তির জন্য ।আজ‌কে আমি সকল শা‌স্তি মাথা পে‌তে নি‌তে প্রস্তুত ।" এক‌দি‌কে অন্ত‌রে যেমন প্রবল ঝড় উঠে‌ছে অনুতা‌পের অন্য দি‌কে তেম‌নি সহস্র অভিমান চে‌পে ধ‌রে‌ছে আমার কন্ঠস্বর । লাবণ্য তার সমা‌ধি পর্ব শেষ ক‌রে উঠে এসে আমাকে বলল-" চ‌লো যাওয়া যাক । " নিঃশ‌ব্দে পাশাপা‌শি হাট‌ছি দুজন । আমা‌দের পা‌য়ের তলায় ঝরা পাতার মচমচ শব্দ আমা‌দের অদৃশ্য দূরত্ব‌কে বা‌ড়ি‌য়ে‌ছে বহুগু‌ণে । আড়‌চো‌খে লাবণ্যকে দেখ‌ছি । সরল শান্ত বিষাদভরা মু‌খে একটা অপরূপ লাবণ্যময় দী‌প্তি ।মৃত পা‌খিগু‌লোর জন্য একটা কিছু কর‌তে পে‌রে‌ছে ব‌লে শর‌তের আকা‌শের মত স্নিগ্ধতা ওর চো‌খ মু‌খ থে‌কে ঠিক‌রে পর‌ছে । শুধু আমার প্র‌তিই তার সহজ স্বাভা‌বিক বিমুখতা । সামান্য গোলাপ ফু‌লের চারা শু‌কি‌য়ে গে‌লে তার কষ্ট , দিন রা‌ত্রি উৎপাত করা মেনী বেড়ালটার জন্য ওর মায়া, ছা‌দের কা‌র্নি‌শে ঘর পাতা পায়রা‌দের নি‌য়ে তার মাতামা‌তি , রাস্তার অভুক্ত শিশুর জন্য ওর দয়া ।কেবল আমার প্র‌তি সে রিক্ত হস্ত ।‌কি নিষ্ঠুর অভিমাণীনি লাবণ্য তু‌মি ! কি নিষ্ঠুর তোমার নীরবতা !
ডাক বাং‌লোয় যখন ফি‌রে আসলাম তখন পাহাড়ের গা‌য়ে ঝুঁ‌কে পরা নীল আকা‌শে রো‌দের ঝলমলা‌নি । আমা‌দের শোবার ঘরটায় শী‌তের মি‌ঠেকড়া রোদ কাঁ‌চের জানালা ভেদ ক‌রে ঢু‌কে প‌রে মে‌ঝে‌তে লু‌টোপু‌টি খা‌চ্ছে । লাবণ্য ওয়ারড্রব খু‌লে পুর‌নো কাঁপড় ঘাঁটাঘাঁ‌টি‌তে ব্যস্ত । আমি সোফায় ব‌সে খব‌রের পাতায় চোখ বু‌লি‌য়ে যা‌চ্ছি । উত্ত‌রের হিম শীতল মৃদুমন্দ বাতা‌সে দরজার পর্দা উদাসী ভ‌ঙ্গি‌তে উড়‌ছে । একম‌নে খব‌রের কাগজ পড়‌ছি ,কখন যেন লাবণ্য আমার সাম‌নে এসে দাড়াল ।‌কোমল ক‌ন্ঠে বলল-"একবার গা‌য়ে দি‌য়ে দে‌খো তো কেমন হ‌চ্ছে ।" লাবণ্যর হা‌তে একটা হাতে বোনা উলের সো‌য়েটার । আ‌মি অবাক হ‌য়ে জি‌জ্ঞেস করলাম-"তু‌মি বু‌নেছ ?"
লাবণ্য স্মিত হে‌সে বলল -" খুব বা‌জে হ‌য়ে‌ছে তাই না ।"
লাবণ্যর ভুল ভাঙা‌নোর জন্য ত‌ড়িঘ‌ড়ি সো‌য়েটারটা গা‌য়ে পুরলাম । লাবণ্য আমার হাত ধ‌রে টে‌নে আয়নার সাম‌নে দাড় করা‌লো ।তারপর আমার হাত দু‌টো আল‌তো ক‌রে ধ‌রে নিষ্পলকভা‌বে আমার দি‌কে তা‌কি‌য়ে রই‌লো কিছুক্ষণ । আমার বিস্ম‌য়ের ঘোর যেন তখ‌নো কা‌টে‌নি ।বি‌স্মিত ক‌ন্ঠেই জান‌তে চাইলাম-" সো‌য়েটার বুন‌লে কখ‌ন ?
লাবণ্য সহজ সাবলীল মৃদু ক‌ন্ঠে বলল-" তু‌মি তো সারা‌দিন অফি‌সের কা‌জে ব্যস্ত থাক‌তে । আমিও সারা বা‌ড়ি‌তে একা হ‌য়ে যেতাম । হা‌তে করার মত কিছুই থাক‌তো না । তাই ভাবলাম তোমার জন্য একটা উলের সো‌য়েটার বু‌নে তোমার জন্ম‌দি‌নে প্রে‌জেন্ট সারপ্রাইজ হি‌সে‌বে দেব । বি‌য়ের আগে মা‌য়ের কা‌ছে টুকটাক শি‌খে‌ছিলাম ,প‌রে নানা কার‌নে আর করা হল না ।তাই শখ ক‌রে করা ,,,,,,,আচ্ছা কেমন হল কিছু বল‌ছো না যে ।"
আমার তখন কথা বলার মত অবস্থা নেই । বু‌কের মা‌ঝে অসম্ভব ঝড় উঠে‌ছে ।ঝ‌ড়ো হাওয়ায় একটা একটা ক‌রে অভিমা‌নের সকল পর্দা খু‌লে পর‌ছে । অদৃশ্য একটা দেয়াল আমা‌দের মা‌ঝে এত‌দিন যে দূরত্ব তৈরী ক‌রে রে‌খে‌ছিল সেটা থে‌কে একটা একটা ক‌রে ইট খ‌সে পর‌ছে ।আমা‌দের কা‌ছে আসার মা‌ঝে যে জড়তা আর দ্বিধাদ্বন্দ্ব তার গিঁট যেন একটু একটু ক‌রে আলগা হ‌য়ে আস‌ছে । আর থাক‌তে পারলাম না । লাবণ্য‌কে বু‌কের সা‌থে শক্ত ক‌রে জ‌ড়ি‌য়ে ধরলাম ।চোখ ফে‌টে আষা‌ঢ়ের ঢল নাম‌বে ব‌লে ।গলাটা ধ‌রে এসে‌ছে ।ধরা গলায় কাঁপা ঠোঁ‌টে কোন রক‌মে উচ্চারণ করলাম-"আমা‌কে ক্ষমা ক‌রো লাবণ্য।"
লাবণ্য তার বাহুদু‌টোতে আমা‌কে আরও দৃঢ় ভা‌বে চে‌পে ধ‌রে কা‌নের কা‌ছে মুখ এনে ফিস‌ফিস ক‌রে বলল-"‌ছিঃ ক্ষমা চাই‌তে নেই।"
আমা‌দের দুজ‌নের নি‌বিড় উষ্ণতায় এত‌দি‌নের জমা‌নো ক্ষোভ দুঃখ অ‌ভিমান বর‌ফের মত গ‌লে গি‌য়ে একটা শান্ত স্নিগ্ধ প্রশা‌ন্তির ধারা ব‌য়ে ‌গেল শরী‌রে ।
বন পাহা‌ড়ের আকাশ বাতাস ধ্ব‌নিত হ‌লো কি‌ন্নোর ক‌ন্ঠে-------------------
"আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগলপ্রেমের স্রোতে
অনাদি কালের হৃদয়-উৎস হতে।
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের
মাঝে
বিরহবিধুর নয়নসলিলে, মিলনমধুর লাজে–
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।"
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,ভোট রেখে গেলাম ।পাতায় আমন্ত্রন রইল।
ভালো লাগেনি ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

১৪ অক্টোবর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪