আমিনুল সাহেবের গালের ঘা টা বেড়েই চলেছে।জিহবার এমন দশা হয়েছে যেন,এক খানা ফাটা মানচিত্র তার মুখের মধ্যে দিব্বি পুরে রাখা।আজকাল খাদ্য খাবার বলতে তেমন বিশেষ কিছু খাচ্ছে না।কাজের বুয়া রেসমির মা প্রতিদিন সকালে চুরি করে এক গ্লাস ভাতের মাড় দিয়ে যায়।ওইটাই তার সকাল বেলার নাস্তা। অসুস্থ হয়েছে সে জন্য সে ভাতের মাড় খায় বিষয়টা এমন না,অভ্যাসটা প্রায় বছর খানিক হল চালু করেছে।পারিবারিক ডাক্তার হিসেবে আমি তাকে অনেক বার নিষেধ করেছি।কাজ হওয়াতো দূরের কথা উলটা আমাকে শাষিয়ে দিয়েছে প্রতিবারই।ডাক্তার খবরদার বলে দিচ্ছি্ এত ঘন ঘন এ বাড়িতে এসো না।যে হারে ফিস নেয়া শুরু করেছো,কবে না জানি বাড়িটাই লিখে নাও,আমার বোকা ছেলেদের কাছ থেকে।
কি বলেন চাচা এসব?
হা ঠিকই বলছি।
চাচা আমি তো আপনাকে দেখতে আসি না,আপনার বড় ছেলে ও তার স্ত্রীর ডায়াবেটিস আছে।ওনাদের রিকোয়েস্ট ফেলতে পারি না।তাই ওনাদের দেখতে আসি।
খচ খচ করে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে মুখ ভেঙচি দিয়ে বললেন-রিকোয়েস্ট আর ফেলতে পারিনা।বলি যাকে দেখতে আসো ওটা জন্ম দিয়েছে কে?
জি চাচি আম্মা।
চাচি আম্মা আমার কি হয়?
স্ত্রী।
আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে দাত কিড় মিড় করে ফিসফিসিয়ে বলল ওটা তৈরি করতে কষ্ট হয়নি বুঝি?
কিঞ্চিত লজ্জা পেলাম।
ত্যাদোড় বুড়োটার বয়স যতই বেড়ে চলেছে তার বাক পটুতা,ততই যেন বাড়ছে।তার সাথে কথায় পেরে উঠা খুব মুসকিলের ব্যপার।যে যাই বলুক তার সোজা সাপ্টা কথা,আর যাই হোক টাকা খরচ করা চলবে না।
যদিও সংসারের মুল চাবি কাঠি এখন তিন ছেলের উপর।তবুও বাড়ির যাবতীয় কাজ-কর্মে তার খবরদারির অন্ত নেই।তার অত্যাচারের ঠেলা্য দু মাসের বেশি কোন ভাড়াটীয়া বাড়িতে থাকে না।অদ্ভুত প্রকৃতির সব অভিযোগের ঝুলি নিয়ে সে ভাড়াটিয়াদের পিছু লাগে।যেমন দিনের বেলা বাথ রুমে গেলে লাইট জ্বালা যাবেনা,রাত ১০টার পর ঘরের লাইট জ্বলতে পারবে না।তিন বেলা গ্যাসের চুলায় রান্না করা যাবে না।বড় বড় ড্রাম কিনে এনে পানি ভর্তি করে রাখতে হবে।কারন প্রতি দুই দিনে একবার পানি ছাড়া হবে।ছাদে উঠা সম্পূর্ন নিষেধ।কোন ভাড়াটিয়ার বাসায় অতিথি আসতে পারবে না,বাড়ির সিড়ি প্রত্যেক ভাড়াটীয়াকে নিজ হাতে পরিষ্কার করতে হবে,কাউকে দিয়ে টাকার বিনিময়ে করা চলবে না,কারন এটা অপচয়,আর এ বাসায় কোন অপচয় হতে দেয়া হবে না ইত্যাদি।
লোকটা এক সময় নিতান্ত গরিব মানুষ ছিল।দিন এনে দিন খাওয়ার মত অবস্থা।কমলাপুর বস্তিতে তার প্রায় এক যুগ কেটেছে,স্ত্রী আর ছোট ছোট বাচচাদের নিয়ে।কাম কাজ বলতে তেমন কিছুই করতো না সে।মাঝে মাঝে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্নার কাজ করতো।তাও আবার সব সময় হত না।তবে রান্নার হাত ছিল তার চমৎকার।তার খাবারের প্রশংসা করতেই হয় আমিও অনেকবার খেয়েছি তার রান্না।পুরূষ মানুষ যে এত ভালো রান্না করতে পারে,এটা এর আগে আমার জানা ছিল না।
কোন একদিন তার ডাক পড়লো স্থানিয় এক সাংসদের বাসায়।বিদেশি কিছু গেষ্ট এর জন্য রান্না করতে হবে।সে দিন তার হাতের রান্না খেয়ে তো বিদেশিরা সব রান্নার তারিফ করতে লাগলো।বড় আল খিল্লাহ পরা এক ভদ্রলোক এম্পি মহোদয়কে বলেই বসলো এই পাচক আমার চাই।আসলে ভদ্রলোক ছিলেন সৌদি আরবের রাষ্টদূত। বাংলাদেশে তার চাকরির মেয়াদ শেষ।খুব শিঘ্রই সে দেশে ফিরে যাবে।মুলত তার উদ্দেশেই অনুষ্ঠানের আয়োজন।সুতরাং এম্পি সাহেব তার আবদার ফেলতে পারলেন না।লোক লস্কর নিয়ে মধ্যরাতেই কমলাপুর বস্তিতে হাজির।এত লোক জন দেখে বেচারার তো পানি খাব পানি খাব অবস্থা।না জানি কি অপরাধই আজ করেছে।রান্নায় কোন ত্রুটি হয় নি তো?না,ভয়ের কিছু নেই,সৌদি আরবের রাষ্ট দূত মোহাম্মদ সোলাইমান খাজা তার রান্না পছন্দ করেছে।আর তাই তাকে তার সাথে সৌদি আরবে নিয়ে যেতে চায়।কপাল খুলে গেল আমিনুলের।কয়েক বছরের মধ্যেই সে হয়ে গেল আমিনুল থেকে আমিনুল সাহেব। আমেরিকা,ইংল্যান্ড,কানাডা,জার্মান,জাপান,কুয়েত,স্পেন সহ ত্রিশটি দেশে সে ঘুরেছে।প্রতিবারই কোন না কোন রাষ্ট দূত তাকে হাইজ্যাক করে নিয়ে যায়।
ঢাকাতে আজ তার তিনটা বাড়ি,গাড়ি,টাকা পয়সার অভাব নাই।প্রবলেম শুধু এক জায়গায়,এমন হিসেবি লোক দুনিয়াতে আর দ্বি্তীয়টি হয় না।সে সব কিছু করতে পারে,কিন্তু টকা খরচ করতে পারে না।এটা তার জন্য অত্যন্ত পীড়াদায়ক।এখন তো অবসরে চলে এসেছে,এসময় তার আরাম আয়েশের দরকার।অথচ এই সময়টাতে আরো বেশি করে কৃপণতা শুরু করেছে সে।
ভালো পোষাক কাকে বলে সে জানে না,আমি প্রায় আট বছর যাবৎ তার বাড়ির পারিবারিক ডাক্তার।সেই প্রথম দিন তাকে যে পোষাকে দেখেছিলাম আজও তার গায়ে একই পোষাক।যদিও প্রায় ডজন খানিক তালি দেয়া হয়েছে।পোষাকতো নয় যেন অক্ষয় বসন!পায়ের জুতার ও ওই একই অবস্থা।শেষ বার যখন মুচির কাছ থেকে অনেক দর দাম করে জুতো জোড়া সারিয়ে নিচ্ছিলেন,আমি তখন সিড়ি দিয়ে নামছি,মুচির মুখে শুনতে পেলাম,কাহা আমি আর পারুম না।এই বারই শেষ কইলাম।আপনে এক খান নতুন জুতা লন।আমিনুল সাহেব এত চটা চটলেন যে তাকে বলে বসলেন ব্যাটা দরদ লাগলে একটা কিনে দিয়ে যেও।যাবার সময় মুচি ঠিকই তার পায়ের জুতো জোড়া রেখে গেলেন।গেট দিয়ে বের হবার সময়,তার মুখে শোনা গেল সালা কঞ্জুস এক খান।আমি তাকে সাথে সাথে ধরে বসলাম কি বললে তুমি?
না স্যার,কিছু না কিছু না।
আমি ও কিছু না শোনার ভান ধরে,তাকে নির্বিঘ্নে যেতে দিলাম।
বর্তমানে যে এক জোড়া জুতো দিয়ে তার পথ চলার কাজ চলে সেটা দিলু মুচির দেয়া উপহার।বেশ হাসি খুশি মনেই এটা ব্যবহার করে সে। যদিও আমি সব জানি তবুও রসিকতার খায়েস আমায় পেয়ে বসলো।এক দিন জিজ্ঞাসা করে বসলাম,চাচা নতুন জুতা নিলেন বোধহয়?
দিলু মুচি সেদিন দিয়েছে,বেশ সুন্দর না জুতাটা?
যদিও এটাতেও সেলাইয়ের অভাব নাই।তবুও তাকে খুশি করার জন্য বললাম জি চাচা।সেদিনই জীবনের প্রথম বার তার মুখে হাসি দেখেছি।আর ওটাই শেষ বার।
গোসলের ব্যপারেও সে পাক্কা হিসেবি তিন দিন পর পর গোসল করে।এত জল খরচ সে করতে পারবে না।প্রতিদিন নাইতে গেলে কি চাট্টেখানি পানি লাগে?একটু বুঝে শুনে পাক পবিত্র থাকলেইত হয়। তার যুক্তি যেন অকাট্য দলিল,লঙ্ঘন করে কে?ইদানিং তার কাছে গেলে প্রায়ই আমি কিসের যেন একটা গন্ধ পেতে লাগলাম।তার শরিরটাও কেমন যেন রুক্ষ রুক্ষ লাগে।শেষমেশ তাকে জিজ্ঞাসা করলাম চাচা আপনার ঘরে কি কিছু পচেছে?
কি সব আবোল তাবল বলো ডাক্তার?পচার মত কি কিছু আছে যে পচবে?
না আমি যেন কিসের একটা গন্ধ পাচ্ছি।
কই আমি তো পাচ্ছি না।
বেশ খানিক পর্যবেক্ষনের পর লক্ষ্য করলাম অন্য কোন জায়গা থেকে গন্ধ আসছে না,স্বয়ং তার গা থেকেই আসছে।কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলাম।
দোতালার সিড়ি ডিঙ্গিয়ে তিন তালায় উঠলাম।এর পর আমিনুল সাহেবের বড় বউমার কাছে বিষয়টা সব খুলে বললাম।তার দুই মেয়ে জুলি ও নীলাও আমার কথায় সাই দিল।তারাও তিন দিন হয় গন্ধের কারণে দাদুর রুমে যায় না। ভদ্রমহিলা শুনে তো বেশ চটে গেলেন মেয়েদের উপর,এত দিন হয়,অথচ আমাকে জানাও নি কেন?তোমাদের দাদু নিশ্চয় গোসল করে না।অবশেষে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাড়ির তিন বউ মিলে তাকে জোর করে সাবান দিয়ে গোসল করালো।পরে শুনেছি-আমাকে কি গালাগালই না সেদিন দিয়েছিল। বড় ছেলের বউ হাসতে হাসতে যেন পাগল হয়ে যাবে এমন অবস্থা।বুড়োটার উপর মনে মনে প্রচন্ড রাগ হতে লাগলো।কিন্তু তার বউমা আমকে আগেই রাগ না করতে অনুরোধ করেছেন। এত বড় খাইশটা মানুষ জগতে যে আর দ্বিতীয়টি নাই,এটা আমি নিশ্চিত।কিসের অভাব তার?জীবনে যা সে করেছে,তার তিন পুরুষ ঠ্যাঙ্গের উপর ঠ্যাং তুলে খেতে পারবে।
হাতের লাঠিখানা পর্যন্ত আলমারিতে তুলে রেখেছে।নষ্ট হয়ে যাবার ভয়ে ব্যবহার করে না।মেঝ ছেলে সিঙ্গাপুর থেকে তিন বছর আগে ওটা এনে দিয়েছে।ব্যবহার করার জন্য রিকোয়েস্ট করতে করতে তার মুখের তালু ক্ষয় হবার উপক্রম।এখন আর কিছু বলে না।যা খুশি তাই করুকগে।
পাশের গলিতে একটা ভাংড়ির দোকান আছে,সেখান থেকে একটা পুরোনো লোহার রড কিনে এনে তাই দিয়ে সে চলা ফেরা করে।কেমন যেন এবড়ো থেবড়ো,নিচের অংশটা অনেক খানি সুচালো।
প্রথম যেদিন লাঠিখানা তার হাতে দেখলাম,সে দিনই মনে মনে বললাম,এইবার বুড়োর কপালে ফ্যারা আছে।আসলে হলোও তাই,আজ কয়েকদিন হয়, হাতের সেই অদ্ভুত লাঠির,সুচালো অংশের আঘাতে,পায়ের বুড়ো আঙুল কেটে ক্ষত হয়ে গেছে।ঠিক মত পরিচর্যা না নিলে যে কোন মুহুর্তে সেপ্টিক হয়ে যেতে পারে। কিন্তু কে শোনে কার কথা!
জিহব্বার ঘা আর পায়ের ক্ষত দিনকে দিন বেগতিক খারাপ হতে লাগলো।হাজার চেষ্টা করেও তার খাদ্য খাবারের রুটিন পাল্টানো গেল না।বার বার পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার কথা বলেও লাভ হয়নি।বর্তমানে তার অবস্থা এমন হল যে,দুদিন যাবৎ প্রচন্ড জ্বর।
আমাকে ডাকা হল।আমি গিয়ে দেখি বেচারার গায়ে প্রচন্ড জ্বর,১০৪ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে।কি সব ভুল ভাল বকছে।ওরে নিয়ে গেল,নিয়ে গেল।নিস না,নিস না।আমার এত টাকার ঘটি।ধর ধর চোর চোর আমার জামা।মুচি পাঁচ টাকা দেব জুতো জোড়া দিয়ে যাও।নিলার মা ডাক্তার ডারে আর টাকা দিয়ো না,ফিস বেশি নেই ও।আমি ক্লিনিকে খোজ নিয়েছি,অত টাকাহয় নাকি?
ঘোরের মধ্যেও বুড়োটা আমার ফিস নিয়ে টানা টানি শুরু করেছে।মান ইজ্জত সব ধূলায় গেল!সে যাই হোক তার অবস্থা তো বেগতিক।তাকে খুব জরুরি হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার।নইলে কিছু একটা দূর্ঘটনা হয়ে যাবে।অতি দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেয়া হল,কিন্তু ততক্ষনে আমিনুল সাহেব কোমায় চলে গেছেন।
বিকেলে বাসায় ফিরে সোজা গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম।আজ শরিরটা বেশ ক্লান্ত লাগছে।মনটাও বেশ খারাপ।আমিনুল সাহেবের জন্য হঠাৎ করে খারাপ লাগতে শুরু করেছে।লোকটা অত্যন্ত কৃপন তবে জীবনে কখনও দুপয়সা দেনা হয়নি কারো কাছে।না কারো সাথে ঠক বাজিও করেনি কোন দিন।আমার অভিজ্ঞতা বলে সে মিথ্যা বলে না,কেউ বললে সাথে সাথে প্রতিবাদ করে।
আমি ভেবে কুল পাই না,একটা লোকের মাঝে এত গুলো ভালো গুন থাকা সত্বেও,এমন একটা পিচেস মার্কা খাইশটা বদ অভ্যাস তার ভিতর জন্ম নিলো কি ভাবে?মনটা কেমন যেন কষ্টে বিষিয়ে উঠলো।একটু ঘুমানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম।তবুও সেই বিকাল থেকে অর্ধরাত বিছানায় গড়াগড়ি চলল। কখন ঘুমিয়েছি জানি না।হঠাৎ টেলিফোনের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল।লাফ দিয়ে উঠে বসে পড়লাম।ডিম বাতির মৃদ্যু আলোয় দেয়াল ঘড়িটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।ভোর ৪ টা বাজে।এই অসময়ে আবার কে ফোন করলো?রিসিভারটা উঠিয়েই হ্যালো বলতেই ওপার থেকে আমিনুল সাহেবের ছোট ছেলের কন্ঠ্য পেলাম।খুব জরুরি ভিত্তিতে আমাকে একবার হাসপাতালে যেতে হবে।আমিনুল সাহেব আমাকে দেখতে চান।রাত দুইটায় তার জ্ঞান ফিরেছে।আইসিইউ থেকে সরিয়ে এখন তাকে নরমাল বেডে রাখা হয়েছে।এ যাত্রায় বোধ হয় লোকটা বেঁচেই গেল।
সকাল সাতটার আগেই আমি হাসপাতালে গিয়ে পৌছালাম।গিয়ে দেখি এলাহি কান্ড কারখানা।একগাদা কাগজ পত্র নিয়ে উকিল হাজির।ভাবলাম জায়গা জমি ছেলেদের নামে বন্টন করবে তাই হয়ত তাকে ডেকেছে।কিন্তু উকিলের মুখে যা শুনলাম,তাতে তো আমার মাথায় চড়ক গাছ।নিজেকে বিশ্বাস করাটা যেন মুশকিল হয়ে যাচ্ছে আমার।গায়ে চিমটি কেটে দেখলাম না সবই ঠিক আছে।ছেলেদের কাছে শুনলাম,প্রত্যেকেই অত্যন্ত সন্তুষ্ট বাবার ইচ্ছায়।শেষমেশ আমাকে ভেতরে ডাকা হল।আমি গিয়ে তার মাথার কাছে বসলাম।আমাকে দেখেই বলে উঠলো কি ডাক্তার সব কিছু শুনেছ তো?
জি চচা,শুনেছি।কিন্তু…
বিশ্বাস করতে শেখো।
আমি ভাষা খুজে পেলাম না।শুধু মাথা নাড়ালাম।
তোমাকে কেন ডেকেছি জানো?
জি না।
আমার মায়ের নামে যে হাসপাতাল হতে যাচ্ছে সেটার দ্বায়িত্ব তোমার হাতে তুলে দিতে চাই ডাক্তার।তুমি না করো না।কারন তোমাকে ছাড়া যে ভরষা করতে পারিনা।
আমি আবারও মাথা নাড়ালাম।
আমি সব রেডি করে ফেলেছি,আমার ছেলেরা তোমাকে সব কিছু বুঝিয়ে দিবে।দ্বায়িত্বটা কিন্তু ভালো ভাবে পালন করো।
আমিনুল সাহেবের কথা শুনে আমার কেন যেন মনে হতে লাগলো।তার কি সত্যি সত্যি ভিমরতি ধরে বসে নি তো?এক টাকা খরচ করতে যার বুক কেপে ওঠে,সে কিনা করবে হাসপাতাল?নাহ কিছুতেই কিছু মেলাতে পারছিনা। মনের মধ্যে হাজার হাজার প্রশ্ন এসে ভিড় করতে লাগলো।সরল অঙ্কের মত সব পেঁচিয়ে গেল,হিসাব মেলাতে পারলাম না।হিসাব কি মেলাতে পারব কোন দিন?
মুহুর্তেই কেমন যেন আনমোনা হয়ে উঠলাম।হঠাৎ করেই একটা শক্ত হাত আমায় জোরে চেপে ধরলো। আবছা নিঃশ্বাসের গোঙানি,তার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।জানি না সেটা সুখের না অর্থ নাশের পানি।নাড়িটা পরিক্ষা করে দেখলাম।কৃপণ আমিনুল সাহেব তার যাবতীয় কৃপণতা ঘুচিয়ে,চির শান্তির দেশে চলে গেছে।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
একটা মানুষের বাহ্যিক রুপ,চলাফেরা,কাজ কর্ম দেখে অনেক সময় ভেতরের দ্বিতীয় মানুষটিকে চেনা যায় না।কেবল সময়ই দ্বিতীয় মানুষটির প্রকৃত রুপ বের করে আনে।আর এই চরম সত্যই এই গল্পের বিষয় সামঞ্জস্যতা।
২৯ সেপ্টেম্বর - ২০১৬
গল্প/কবিতা:
৩৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪