প্রানোচ্ছ্বল মেয়েটির নাম নিতু। পরিবারের সবচেয়ে ছোট মেয়ে বলে সারাদিন হই হই শব্দে পুরো বাড়িটাই মাতিয়ে রাখে। মেয়েটা প্রচন্ড একঘেয়ে, যা করা শুরু করে আর বন্ধ করতে চায় না। তবে খুব ভালো একটা মেয়ে নিতু। প্রচন্ড রকমের ভালোবাসতে পারে সে। কখনও কখনও মানুষের দুঃখ দেখে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদেই দেয়। -এসব কি জয় -কি? -তুমি নেশা করছ!! কি দুর্গন্ধ আসছে তোমার গা থেকে! -তো কি হয়েছে -দেখ এভাবে নিজের জীবনটা নষ্ট করনা প্লিজ -কেন? কার জন্য বাঁচব আমি বলতে পার? যার জন্য পুরোটা হৃদয় দিয়ে দিয়েছি, সেইতো নেই। এখন এই শূণ্য হৃদয় দিয়ে কি করে বাঁচব! -তবুও বাঁচতে হবে। -কার জন্য বাঁচব -একজন চলে গেছে তো কি হইছে, আরও আসবে। -এসব কি বলছ তুমি! আমি ওকে ভালোবাসি, ভালোবাসি নিতু জয়ের পাগলামী দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। ভাবছে এতো ভালোবাসার পরও মেয়েটা কি করে জয় কে ছেড়ে চলে গেল। নিতু এরকম একটি ছেলে পেলে কখনও তাকে কষ্ট দিত না। যে এতো ভালোবাসতে পারে তার শত ভুল হয়তো নিতুর মতো মেয়ে সহজেই মাফ করে দিতে পারে। -চল একটু ঘুরে আসি -কোথায় যাবে? -আরে চলতো নিতু জয়কে নিয়ে চলল দিগন্তের পথে যেখানে নীল আকাশ মাঠকে ছুয়ে বলে "বড় ব্যথা দিস তুই আমায়"। কষ্টগুলোকে বুকের ভিতর জিইয়ে রেখে নীল আকাশ তবুও মাঠকে ছাড়েনা। তাকে আকড়ে রেখে আজীবন ভর ভালোবাসতে থাকে। এ ভালোবাসায় নেই কোন খাদ, কেবল রংধনুর সাত রংয়ে স্বপ্নের ভুবনে নানা গল্পের বিস্তৃতিই থাকে। এই স্বপ্নময় গল্পগুলো কখনও কখনও বাস্তবতা পায় কখনওবা হারায় নিজের অস্তিত্বকেই। তখন স্বপ্নগুলো মনে হয় ভাবা হয়েছিল অতীতের কোন এক স্মৃতিপটে। -কি ব্যপার? -কি? -কথা বলছনা যে -ভালো লাগছেনা -বর্ষাকে কি তুমি খুব ভালোবাসো? -হুম, তাহলে ও ব্রেক আপ করল কেন? -জানিনা -হুম নিতু আর জয় নিশ্চুপ হয়ে হাটছে। দুজনের মাঝে এক হাত দুরত্ব। কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছে না। তারা হেটে চলছে নিভৃত নিরব ভর দুপুরে গন্তব্যহীন পথে। এভাবে করে নিতু জয়কে সময় দেয়া শুরু করল। জয়ের কষ্টগুলো বুঝতে চেষ্টা করল। জয়কে অন্ধকার পথ থেকে আলোর পথে আনার চেষ্টা করল। জয়ের সে অনেক কাছের বন্ধুতে পরিনত হলো। এক সময় নিতু জয়কে ভালোবেসেই ফেললো। জয়ও নিতুর মাঝে আশ্রয় খুঁজে পেল পরম ভালোবাসার। এভাবে করে তাদের এক সাথে পথ চলা শুরু হলো। জয় নিতুর সাথে খুব ক্লোজলি মিশতে চাইত। কিন্তু নিতু এসব একদমই পছন্দ করে না। আজ পর্যন্ত জয় নিতুর হাত ধরার সাহসই পায়নি। তাদের মাঝেই ভালোবাসাটা পবিত্র আর হয়তো তাদের এই ভালোবাসায় কোনও খাদও নেই। নিতু জয়কে আসলেই অনেক ভালোবাসে। মনের বাগানে হয়তো নিতু কেবল জয়কে নিয়েই স্বপ্ন বুনে। কিন্তু তাদের এই সুখ পৃথিবী নামক অদ্ভুত মঞ্চে সহ্য হলো না। বর্ষা আবার জয়ের মাঝে চলে এসেছে। আর জয়ও বর্ষাকে আগের মতো মেনে নিয়েছে। এদিকে নিতুর মন ভেঙে চুরমার। না পারছে কিছু মানতে আর না পারছে জয়কে ছেড়ে থাকতে। জয়ও নিতুর সাথে সব সময় যোগাযোগ রাখতে চায়। পাগলপ্রায় নিতু বুঝতে পারছেনা কি করবে। সারাদিন মুখ ভার করে প্রচন্ড বিষন্নতায় ডুবে থাকে। একদিন তো আত্মহত্যা করার চেষ্টাওকরছে কিন্তু তাতে সফল হতে পারেনি। নিতু ভাবছে "এভাবে একজনের সাথে সম্পর্ক রাখলে যদি সুখই হারিয়ে যায় তাহলে তার দরকার কিসের। যেখানে ভালোবাসা বলে কিছু নেই। জয় বর্ষাকে নিয়েই ভালো আছে। আমি কেন জয়ের পথে কাটা হয়ে দাড়াবে। হয়তো জয়ের প্রচন্ড বিপদে আমি ওর পাশে ছিলাম। অন্ধকার থেকে আলোর মুখটি আমিই দেখিয়েছিলাম। " জয় ইদানিং নিতুর সাথে খুব রেগে থাকে। নিতু এখন আগের মতো জয়ের সাথে মিশতে চায় না। হয়তো জয় নিতুকে তাই ভুল বুঝতেছে। নিতু জয়কে ভুলে যেতে কয়েক মাস ধরে চেষ্টা করছে। অথচ জয় নিতুর সাথেও সম্পর্ক রাখতে চায়। এমনকি নিতুকে বলছে বর্ষাকে ছেড়ে চলে আসবে। নিতু তা কখনও চাইবেনা। তাইতো নিতু জয় থেকে আজ খুব দূরে কোথাও চলে যেতে চায়। বেশ কয়দিন হলো জয়ের কোন খবর নাই। নিতুর সাথে রাগ করে কথা বলছে না। নিতু তাই অনেক কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু কি আর করবে সে এখন। জয় যা চায় তাতো আর সম্ভব নয়। শেষমেষ একদিন নিতু জয়ের সাথে ব্রেক আপ করে ফেলে। হয়তো ব্রেক আপ করাটা নিতুর পক্ষে অনেক কষ্টের ছিল। কিন্তু ব্রেক আপ না করলে সীমাহীন কষ্টের সাগরে যে ডুবে যেত। হয়তো সেই দস্যিপনা আর দেখা যাবে না। চঞ্চল মেয়েটি আর আগের মতো সবাইকে মাতিয়ে রাখবেনা ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।