মায়াপরী বুবুন.......

অবহেলা (এপ্রিল ২০১৭)

ভুতুম প্যাঁচী
  • ৪৫
মাঠের পুর্ব কোণে একটা আম গাছের গুড়ির ওপর বসে আছে নোমান। দুপুরের ভাত ঘুমের সময় এটা। তবে পাড়ার সব ছেলেপুলেরা এই সময়টাতে এখানে খেলতে আসে। নোমান ও আসে। তবে খেলা দেখতে। কেন যেন ওর খেলার প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। বেশির ভাগ সময় অন্যমনস্ক দেখা যায়। এ তল্লাটে ওর কোনো বন্ধুও হয়ে ওঠেনি কেউ। কেউ যেচে কথা বলতে এলে এমন একটা ভাব নেয় ও যে, সে কথা বলতে এসে অন্যায় করে ফেলেছে। ধীরে ধীরে ওর মেজাজটা খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। আজ মাঠে কেউ খেলতে আসেনি। কয়েকটা পিচ্চি পুরো মাঠে ছুটোছুটি করছে। প্রতিদিন যারা আসে তারা বয়সে বড় হওয়ায় তাদের সাথে ভয়ে লাগতে আসে না এই পিচ্চিরা। মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে মাঠের পাশে বসে থাকে কিংবা ফুটপাতে ছুটোছুটি করে খেলে। আজ তারা স্বর্গ পেয়েছে। নোমান পিচ্চিগুলার ছুটোছুটি বেশিক্ষণ দেখতে পারল না। পিচ্চিগুলার মা বাবা এসে ধমকে লাঠি দেখিয়ে বাসায় নিয়ে গেছে।
নোমান একা বসে আছে। পুরো মাঠ ফাঁকা। ঠিক ওর নিজের পৃথিবীর মতো। ওর পৃথিবীটাও তো এমনই ফাঁকা।
.
নোমানের পুরো নাম আবদুল্লাহ আল মুন্তাকির নোমান। বাবা মা হয়তো অনেক বুঝে শুনেই নামটা রেখেছিলেন। নামের দৈর্ঘ্যের মতোই তাদের মাঝের দূরত্বটা অনেক বেশি হবে সেটা তারা জানত কী! তাই এমন নাম রেখেছে! নোমানের বাবা অত্যন্ত বিত্তশালী লোক। বিজনেসের কাজে মাসের ঊনত্রিশ দিন দেশের বাহিরে থাকেন। মাঝেমাঝে বছরের অর্ধেকটাও কাটিয়ে আসে এক নাগারে। মা একজন স্বনামধন্য সমাজসেবিকা। দিন নেই রাত নেই তাকে ছুটতে হয় সমাজসেবার কাজে। এক মুহূর্ত বসে থাকার জো নেই।
নোমান তাদের একমাত্র সন্তান। নোমানের বেড়ে ওঠা বাড়ির নয় দশজন চাকর বাকর আছে তাদের কাছেই। ছেলের জন্য দুজনের হাতে বিন্দুমাত্র সময় নেই। এই নিয়ে নোমানের মনে রাজ্যের যত আক্ষেপ। কিন্তু বাবা মায়ের সামনে কিছুই বলে না। বলেইবা কি হবে? শোনার মতো সময় কি তাদের আছে? তাদের কাছ থেকে একটা কথাই শুনতে হবে, 'সব কিছুতো তোমার সুখের জন্যই করছি। যাতে তোমার কোনো কিছুতে অভাব না থাকে। আজ পর্যন্ত কোনো কিছুতে অভাব রেখেছি বলো?' নোমানের তখন খুব বলতে ইচ্ছে করে, 'হ্যা অভাব রেখেছ। সময়ের অভাব। একটুখানি সময় চাই আমি। আর কিচ্ছু চাইনা। এইসব বাড়ি গাড়ি কিচ্ছু চাইনা। তোমাদের সাথে বসে একসাথে খেতে চাই। তোমাদের মুখে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমাতে চাই। আমার সব গল্প, সব আনন্দ, সব ব্যথা-কষ্ট তোমাদের বলতে চাই।মাঝেমাঝে তোমাদের সাথে পৃথিবীটা একটু চষে বেড়াতে চাই। আচ্ছা তোমরা কি খেয়াল করেছ আমার স্বর পাল্টে যাচ্ছে। নাকের নিচে গোফের আনাগোনা শুরু হয়েছে। শরীরের মধ্যে কেমন যেন এক ধরনের অশান্তি জন্মেছে। ছটফট করছি প্রতি মুহূর্তে। জানো, বড্ড ভয় হচ্ছে আমার। হঠাৎ করে এমন পরিবর্তন। অথচ জানি খেয়াল করোনি তোমরা। কেন খেয়াল করোনি বলো?' কিন্তু কিছুই বলতে পারেনা। সব কথা কন্ঠ অব্দি এসে কাঁটার মতো আটকে যায়। কিচ্ছুটি বের হয়না।
নোমানের বয়স তেরো কি চৌদ্দ হবে। এই বয়সের ছেলেরা যতটা চঞ্চল ছটফটে হয় নোমান একদম অমন না। সারাক্ষণ নিজের ঘরে গুটিসুটি মেরে বসে থাকে। যখন আর ঘরে ভালো লাগেনা তখন এই মাঠে এসে বসে থাকে। সমস্ত অভিমান আছড়ে ফেলে এই মাঠে। এখানে এলে কিছুটা স্বস্তি খুঁজে পায়।
আজ নোমানের মনটা ভালো নেই। তাই এখানে এসে বসে আছে। ভেবে নিয়েছে আজ অনেকক্ষণ থাকবে। সন্ধ্যের অন্ধকার পৃথিবীর বুকে নেমে আসার পরেও অনেকক্ষণ। বাসায় আজ সবাই ব্যস্ত। তাই কারো ওর দেরিতে যাওয়ার বিষয়টা খেয়ালে আসবে না। কাল ওর জম্নদিন বলে বাসায় প্রতিবারের মতো হুলুস্থুল কান্ড শুরু হয়েছে। প্রতিবার বিশাল পার্টির আয়োজন হয়। অনেক বড় কেক থাকে। রাতের কালো আঁধারে বিজলি বাতির মিটমিটে আলো পুরো বাড়িকে স্বপ্নিল মায়ারাজ্যে পরিনত করে। নোমানের এসব আয়োজন একদম পছন্দ না। তাও মুখে এক গাল মিছে হাসি ফুটিয়ে কেক কাটতে হয়। বাবা শেষ কোন বারে ওর পার্টিতে ছিল তা মনে নেই। এখন আর মনে করার ব্যর্থ চেষ্টাও করে না।

সূর্য লাল হয়ে এসেছে। বিশাল আকারের লাল টুকটুকে গোল একটা সূর্য। একটু পরেই ডুব দিবে অন্ধকারে। মিলিয়ে যাবে রাতের মাঝে। নোমান এখনো ঠায় বসে আছে। বাড়ি ফেরার তাড়া নেই। সূর্য প্রায় ডুবে যাচ্ছে। রক্তিম একটা আভা সারা আকাশ জুড়ে। পশ্চিমের আকাশটা পুরো সিঁদুররাঙা।

সূর্য আস্তে আস্তে পুরোটা ডুবে গেছে। আকাশটা এখনো উজ্জ্বল। একটু পরই অন্ধকার নেমে আসবে পুরো আকাশ জুড়ে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে হলুদ আলোর লাইট জ্বলে উঠেছে।
নোমান উঠে দাড়াল। হেটে হেটে বাসায় যেতে আধাঘণ্টা মতোন লেগে যাবে। এই সময়টাতে রাস্তায় সচরাচর কেউ থাকেনা। তাই এখন একা আনমনে সন্ধ্যের মৃদু আলোর সাথে রাস্তার মোড়ের সোডিয়াম আলোর মিশ্রনে অবগাহন করতে পারবে। এই সময়টা নোমানের ভীষণ ভালো লাগে।
অলিগলি রাস্তার কোল ঘেঁষে নোমান হাটছে। মনে মনে ভাবছে বাসায় ওকে নিয়ে এখন কেউ চিন্তা করছে কিনা। 'কে জানে? কেউ হয়তো খেয়ালই করেনি এখনো। বাসার চাকর-বাকররা খেয়াল করলে কি আব্বু আম্মুকে কল দিয়ে বলবে? কি বলবে? আমাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা? আমি হারিয়ে গেছি? নাকি ভয়ে কেউ কল দিবেনা? নিজেরাই কি আমাকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়বে? কে জানে, কি করবে?' এমন ভাবতে ভাবতে পা গুনে গুনে হাঁটছে। মাথাটা পায়ের দিকেই ঝুকানো ছিল। আনমনে মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতেই হতচকিত হয়ে গেল। একটা কুকুর একহাত লম্বা একটা জিভ বের করে এদিকেই আসছে। আচমকা সামনে থেকে কুকুরটাকে ধেয়ে আসতে দেখে নোমান কিছুটা ভয় পেয়ে গেল। নিজের অজান্তেই নোমানের হাঁটা বন্ধ হয়ে গেল। রাস্তার পাশে একটা বাড়ির কংক্রিটের প্রাচীর ঘেঁষে দাড়াল। কুকুরটা এতক্ষণে নোমানের সামনে এসে গেছে। মুখ দিয়ে হুস, হুস, হুস শব্দ শব্দ করেও লাভ হচ্ছেনা। কুকুরটা সামনে এসে ঘেউঘেউ করে উঠল। নোমানের পিলে চমকে উঠল সাথে সাথে। আশে পাশে কেউ নেই। অন্ধকার ধীরে ধীরে লুফে নিচ্ছে আকাশের আলো। মোড়ের হলুদ আলোটাও এই পর্যন্ত এসে পৌছাতে পারছেনা। নোমান হাত দিয়ে আবার কুকুরটাকে তাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করল। কুকুরটা আরো জোরে ঘেউঘেউ করে উঠল। নোমান কি করবে বুঝতে না পেরে কোমর ছুঁইছুঁই প্রাচীরটা টপকে বাড়ির উপর লাফিয়ে পড়ল। প্রায় বসে পড়েছিল। সাথে সাথে নিজেকে সামলে উঠে দাড়াল। আশে পাশে তাকিয়ে বুঝতে পারল কোনো বাড়ির পেছনের দিকটায় সে অবস্থান করছে । বড় ছোট কিছু গাছ দিয়ে পরিপূর্ণ জায়গাটা। এই মুহূর্তে গাছগুলোর একটা অন্ধকার কালো অবয়ব দেখা যাচ্ছে। ভালো করে বোঝা যাচ্ছে কি গাছ।
নোমান ভাবল কিছুক্ষণ এখানে দাড়িয়ে থাকবে। কুকুরটা চলে চলে গেলেই প্রাচীর টপকে বাড়ি চলে যাবে। কুকুরটা ওখানে ঘুরে ঘুরে ঘেউঘেউ করছে। নোমানের এবার কুকুরটার প্রতি প্রচন্ড রা হচ্ছে। রাগে কুইকুই করছিল ভেতরটা। এদিকে মশারাও ওর আগমনী বার্তা পেয়ে গেছে। দল বেঁধে এসেছে ওকে আহারে পরিনত করতে। অলরেডি তারা তাদের প্রোগ্রাম চালু করে দিয়েছে। পায়ে ঘাড়ে কয়েকটা ইনজেকশন বসিয়ে দিল যেন। নোমান দু'হাত দিয়ে পা আর ঘাড়ে চুলকাচ্ছে আর মশাদের গুষ্ঠি উদ্ধার করছে। দু'হাতে চাপড়ে ধরে মারার ব্যর্থ চেষ্টা। মশাদের সাথে নোমানের যুদ্ধ চলছিল এমন সময় বাড়িটার ভেতর থেকে একটা প্রচন্ড মাত্রার আওয়াজ এল। নোমান কিছুক্ষণের জন্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল। বাড়িটার দিকে তাকাল। ভেতর থেকে যে আওয়াজটা এসেছিল তার রেশ এখনো কাটেনি। ধীরে ধীরে কমছে আওয়াজটা। মনে হচ্ছে কেউ সিলভার বা স্টীলের কোনো হাড়ি-পাতিল গায়ের জোরে ছুড়ে মেরেছে। আছড়ে পড়ে এখনো সেই হাড়িটি কেঁপে কেঁপে ঘুরতে ঘুরতে আওয়াজ করছে।
মনে হচ্ছে বাড়ির ভেতরে কর্তা আর গিন্নির মধ্যে ঝগড়া চলছে। কিন্তু কোনো চিল্লাপাল্লা হচ্ছেনা কেন! আশ্চর্য! এমন নীরব ঝগড়াও হয় নাকি? আব্বু আম্মুর মধ্যে ঝগড়া হলে তো পাশের তিন বাড়ির মানুষ টের পেয়ে যায় ঝগড়া হচ্ছে। দু'জনের এত জোরে জোরে চিল্লানি শুনে কানে তুলো গোঁজা ছাড়া কান রক্ষার আর উপায় থাকেনা।
নোমান বাড়িটার দিকে উঁকিঝুঁকি মেরে দেখছে ঘটনাটা কি? কিন্তু কিছুই খুঁজে পেলনা দেখার বা বোঝার মতো। একটা ময়লা জমা জানালায় চোখ দিয়ে ভেতরে একটা পিটপিট করে জ্বলতে থাকা লাইট ছাড়া কিছুই দেখতে পেলনা। কোনো মানুষজনও না। তাই নিছক তদের নিজেদের ব্যাপার বা শুনতে ভুল করেছে অথবা বিড়ালের কাজ মনে করে দেয়াল টপকানোর জন্য পা বাড়াল।
ঘাড়টা ঘুরাতে ঘুরাতে আবার আওয়াজ। আবারো হাড়ি- পাতিল পড়ার আওয়াজ। এবার স্পষ্ট শুনতে পেল হাড়ি ছুড়ে মারার আওয়াজ। গড়িয়ে পরার নয়। বিড়াল নয় নিশ্চিত। কিন্তু নোমান কাউকেই তো দেখতে পেলনা ঘরে। হবে অন্য রুমে । এই ভেবে নোমান দেয়ালের উপর চড়ে গেছে। হঠাৎ নোমানের চোখ কপালে উঠে গেল। দেয়ালের উপরে বসেই বাড়িটার দিকে ভালো করে তাকাল। হ্যাঁ। এটাতো ওর চেনা বাড়ি। আবছা অন্ধকারে এতক্ষণ খেয়ালই করেনি। এটা ওর দাদুর বাড়ি। ওর আব্বু আম্মুর বিয়ের পর তারা এ বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। দাদুও কিছুদিন পরে মারা যায়। বাড়িটা খালিই পড়ে থাকে। কবে যেন একবার ওর বাবা ওকে বাড়িটা দেখিয়ে বলেছিল, 'এটা তোমার দাদুর বাড়ি। এখানে এখন কেউ থাকেনা। আমাদের অনেকগুলা বাড়ি থাকায় এখানে আসার প্রয়োজনও নেই। বিক্রি করিনি কারণ তোমার দাদি- দাদুর কবর এই বাড়িতে।'
সেদিন নোমান বাড়িতে ঢুকতে চেয়েছিল, দাদি-দাদুর কবর দেখবে বলে। কিন্তু নোমানের বাবা বারণ করে দিয়েছিলেন। আর কখনো যেন ভুলেও এ বাড়ির ধারেকাছে না আসে সেই আদেশও কড়াভাবে দিয়েছিলেন। কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, 'অনেক পুরোনো বাড়ি। ভেতরে ময়লার স্তুপ জমেছে। সাপ-জন্তুর বাসস্থল হয়েছে। এখানে যাওয়া খুব ভয়ংকর।' সেই থেকে নোমান কখনো এই বাড়ির দিকে তাকাও না বলতে গেলে। সব সময় মাঠ থেকে যাওয়ার সময় ভেতরের সরু গলিটা দিয়ে যায়। কিন্তু আজ সন্ধ্যার পরে ফেরার জন্য এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল।
কেউ এ বাড়িতে থাকে না। তাহলে হাড়ি ছোড়ার আওয়াজ এল কেন? তাও দুই দুইবার। নোমান দেয়ালের উপর বসে কি করবে বুঝতে পারছিল না। দেয়াল টপকে বাসায় চলে যাবে, নাকি বাড়ির ভেতরে গিয়ে দেখবে ঘটনাটা কি? যদি কোনো চোর ঢুকে থাকে? ও একাইবা কি করে যাবে? সাপ- জন্তু থাকলে কি হবে? চোর আসলেও তো ওর বিপদ। শত চিন্তার মাঝে এক পা রাস্তার পাশে নামিয়েও পরক্ষণে সাতপাঁচ কিছু না ভেবে বাড়িটার দিকেই ফিরে এল। ভেতরে ঢোকার জন্য গেট খুঁজতে খুঁজতে বাড়িটা দুবার চক্কর দিয়ে আসল। বাড়িতে ঢোকার কোনো রাস্তাই পেল না। চারিদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। নোমান চলে যাবে এমন সময় পাশের বাড়ির জ্বলে ওঠা একটা লাইটের আলোয় একটা দরজা দেখতে পেল। কাছে যেতেই বুঝল এটা বাড়ির পেছনের দরজা। দরজাটা এতক্ষণ চোখে পরেনি কারণ বেশ মোটাসোটা একটা গাছের আড়ালে ছিল।
দরজাটা দেখে নোমান কিছুটা নয় অনেকটাই অবাক হল। দরজাটা গত দুইতিন দিনের মধ্যে ব্যবহার হয়েছে। প্রায়ই ব্যবহার হয়। হাতলটাতে একটু ছেঁড়া ছেঁড়া ময়লা। এক জায়গায় একটু বেশি তো এক জায়গায় হালকা আবার আরেক জায়গায় তেমন ধুলো জমে নেই বললেই চলে।
হাতলটার গায়ে একটা বেশ পুরানো তালা ঝুলছে। নোমানের মনে বেশ কৌতুহল জাগল। প্রচন্ড ইচ্ছে হচ্ছে ভেতরে কেউ আছে কিনা বা কিছু আছে কিনা সেটা জানার। মনের মধ্যে ভয় জোরেসোরে ঘন্টা বাজালেও কৌতুহলটা সেই ঘন্টার আওয়াজকে পাত্তা দিচ্ছেনা। তালাটা ভাঙার জন্য শক্ত কিছু একটা দরকার। আবছা অন্ধকারে খুঁজে খুঁজে নোমান একটা পাথর পেল। মোটামুটি সাইজের একটা পাথর। একহাতে নিতে বেগ পেতে হলেও দুইহাতে অনায়াসেই নিতে পারল। দুইহাতে ধরেই পাথরটা দিয়ে গায়ের সমস্ত জোর একসাথে জড়ো করে হাতলের তালায় কয়েক ঘাঁ দিতেই তালা ভেঙে গেল। পুরোনো বলে তালায় তেমন জোর নেই মনে হল। তালা সরিয়ে হাতলটা আস্তে আস্তে ঘুরিয়ে খুলতে লাগল নোমান। এত সাবধানতার কারণ হচ্ছে কেউ ভেতরে থাকলে যেন না শুনতে পায়। দরজাটা হালকা ফাঁক করে প্রথমে চোখ দিয়ে ভেতরে দেখার চেষ্টা করল। তাতে তেমন লাভ হলনা। এবার মাথাটা আস্তে আস্তে দরজার ফাঁক দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেখার চেষ্টা। না, কেউ কোথাও নেই। দরজাটা পেছনের দিকের একটা বারান্দার। আপাতত বারান্দা পেরয়ে হলরুমটা দেখা যাচ্ছে বাতিটার মিনমিনে আলোয়। দরজা অর্ধেক খুলে অতি সাবধানে নোমান ভেতরে পা বাড়াল। ওর শরীর ভয়ে শীতল হয়ে আসছে। তাও কৌতুহলের বসে পিছপা হল না। পা টিপে টিপে হলরুমে এসে পৌঁছাল। কেউ কোথাও নেই। হলরুমের এদিক-ওদিক করে ছড়ানো ছিটানো বেশ কিছু অনেক পুরোনো ফার্নিচার। কিছু সাদা চাদরে মোড়া আর কিছু এমনি উদোম হয়ে পড়ে আছে। বেশ কিছু ভেঙে গেছে সাথে ঘুণ পোকারাও আস্তানা গেরেছে। হলরুম থেকে বাড়ির দোতলায় যাবার জন্য বাম পাশে একটা সিঁড়ি উপরে উঠে গেছে। সিঁড়িটা অনেক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছেনা বোঝাই যাচ্ছে। বাড়ির দোতলায় নীচ থেকেই ঝুল আর মাকড়শার জালে ধুলের এক ইঞ্চি পুরু স্তর দেখা যাচ্ছে। নীচতলা ব্যবহারের স্পষ্ট ছাপ পাওয়া গেছে। ধুলো ময়লা অনেকটা কম এখানে। পুরো হলরুমটায় মাত্র একটা হলুদ আলোর লাইট মিনমিন করে জ্বলছে। এত বড় হলরুমে একটা মাত্র লাইট থাকায় হলরুম আর পাশের বারান্দা পুরোটা জুড়ে ভুতুরে একটা আবহ। ধুলোর স্তরের জন্য আলোটা আরো ধোঁয়াটে মনে হয়। সব কিছুতে আবছা আবছা ভাব। হলরুমে দাঁড়িয়েই চারিদিকে ঘুরে দেখার পর তিনটে রুম একটা রান্নাঘর অবিষ্কার করেছে নোমান। রুম তিনটের দুটোয় তালা ঝুলছে, বাকিটা চাপানো। রান্নাঘরের দরজা খোলা। এখান থেকেই হয়তো হাড়ি পাতিল ছুড়ে মারার আওয়াজ এসেছিল।
আস্তে আস্তে পা ফেলে নোমান রান্নাঘরের দিকে গেল। খোলা দরজা দিয়ে সাবধানে মাথা ঢুকিয়ে ভেতরটা দেখছে। রান্নাঘরের ভেতরটা দেখে নোমানের পিলে চমকে উঠল। নিয়মিত ব্যবহৃত হয় এটা। পুরো রান্নাঘর জুড়ে এলোমেলো পাতিল-হাড়ি। একটা রংওঠা ফ্রিজ। বেসিনে কিছু উচ্ছিষ্ট খাবার সমেত থালা বাসন। কিছুক্ষণ আগে কেউ খেয়ে রেখেছে। মেঝেতে দুটো সিলভারের মাঝারি সাইজের পাতিল পড়ে আছে। পাতিলের হাল তেমন ভালো না। এবড়ো থেবড়ো হয়ে আছে। এই পাতিল দুটোই ছুড়ে মারা হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। তবে নোমানের চোখ খুঁজছিল কোনো মানুষ। যে এগুলো ছুড়ে মেরেছে। কিন্তু রান্নাঘরে কোনো মানুষের ছায়া পর্যন্ত পাওয়া গেল না।
রান্নাঘর থেকে ঘাড় ফিরিয়ে অন্য রুমগুলোর দিকে এগিয়ে গেল। দরজা চাপানো রুমটায় কেউ থাকতে পারে বলেই মনে হচ্ছে। আস্তে আস্তে পা ফেলে রুমটার দরজায় এসে দাঁড়াল নোমান। দরজাটা খুলবে কিনা সেটা নিয়ে দ্বন্দ্বে পড়ে গেল। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে শেষমেশ ভয়ে ভয়ে দরজাটা যথেষ্ট সাবধানে আস্তে করে একটু ফাঁক করল। অমনি রুমের ভেতরে হুরমুর করে কিছু একটা রুমের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে দৌড়ে গেল। নোমান ভয়ে কয়েক পা পিছিয়ে এল। খানিক বাদে কিছু সাহস সঞ্চয় করে আবার রুমের দরজায় গেল। এক ধাক্কায় দরজাটা পুরো খুলে ফেলল। রুমের ভেতর তাকিয়ে নোমানের চোখ চড়কগাছ। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গেছে। ভয়ে বুকের ভেতরে হাতুরি দিয়ে পেটাচ্ছে মনে হচ্ছে। চোখ সরাতে পারছে না এমন একটা দৃশ্য থেকে। কিছুই বুঝতে পারছেনা। রুমের ভেতরে যাবে নাকি এক দৌড়ে বেরিয়ে যাবে কিছুই ঠিক করতে পারছে না। কতক্ষণ সময় থমকে দাঁড়িয়ে আছে তাও বলতে পারছে না। সামনে আগানো বা পেছনে পেছানোর জন্য পা সরাতে গিয়ে বুঝল পা সরাতে পারছে না। ঘোরের মধ্যে ডুবে গেছে যেন। উঠতে পারবেনা আর সেখান থেকে।
নিজেকে আস্তে আস্তে সামলে নিয়ে ধীরে ধীরে রুমের ভেতরে আগাচ্ছে নোমান। হঠাৎ ওকে লক্ষ্য করে হাতের মুঠো থেকে কি যেন ছুড়ে মারল মেয়েটা। হ্যাঁ, একটা মেয়ে। রুমের ভেতরে এক কোণ ঘেঁষে একটা মেয়ে গুটিসুটি মেরে বসে আছে। দেয়ালে পিটপিট করে জ্বলতে থাকা লাল রংয়ের ডিম লাইটে স্পষ্টভাবে কিছুই দেখার বা বোঝার উপায় নেই। শুধু আবছা অবয়ব বোঝা যাচ্ছে মেয়েটার। মাথার উপরে একটা কোনো শব্দ ছাড়াই সিলিং ফ্যান দুলে যাচ্ছে। রুমের ভেতর তেমন কিছু নেই। একপাশে একটা চাদর আর একটা বালিশ পড়ে আছে। সারা রুম জুড়ে বড় বড় গেছো পোকার মতো কি যেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। ভালো করে খেয়াল করায় নোমান বুঝতে পারল ওগুলোকে পোকা ভেবে ভুল করেছে। ওগুলো আসলে মোম রং। ওগুলোই মেয়েটা ওর দিকে ছুড়ে মেরেছে। হঠাৎ খেয়াল হল রুমের সব ক'টা দেয়ালে এই মোম রং দিয়ে কি কি যেন আঁকানো হয়েছে। লাল রংয়ের ডিম লাইটে সেগুলো ঠিকঠাক বোঝা যাচ্ছেনা।
নোমান টিশার্ট টা উঁচু করে বুকে একটু ফুঁ দিয়ে সাহস সঞ্চয় করে নিল। মেয়েটির দিকে আগাতে গিয়ে দ্বিতীয়বার আক্রমণের শিকার হল। এবারেও মোম রং। নোমান মেয়েটির কিছুটা কাছে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করল। মেয়েটা গোঙানোর মতো একটা শব্দ করল। আরো জুবুথুবু হয়ে কুকরে যেন ছোট হয়ে গেল। দেয়াল ভেঙে পালাতে চাইছে কিন্তু পারছেনা। নোমান বুঝল মেয়েটা ওকে ভয় পাচ্ছে। নোমান মেয়েটার ভয় কাটানোর জন্য বলল, 'ভয় পেয়ো না। আমার নাম নোমান। আমি তোমাকে কিছু করব না। দেখো আমাকে, দেখো। আর কে থাকে এই বাড়িতে? কে থাকে তোমার সাথে? তুমি একা কেন এখানে? আর কেউ নেই? কথা বলো প্লিজ। আমি তোমাকে কিছু করব না বলছিতো। তোমার নাম কি? বলো।' মেয়েটা আরো নিজের মধ্যে নিজেকে ঢুকিয়ে দিতে চাইছে। যাতে নোমান তাকে দেখতেই না পায়। কিন্তু পারছেনা। সামনে ঝুলে থাকা হাত খানিক লম্বা কোঁকড়ানো চুলগুলো ফ্যানের বাতাসে দুলছে। দুই হাটুর মাঝে মুখ লুকিয়ে আছে মেয়েটা। সামান্য নড়ছেও না। নোমান অনেক চেষ্টা করেও কথা বলাতে পারল না। এখন নোমানের কি করা দরকার ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। লোক ডাকবে কিনা তাও বুঝতে পারছেনা। একবার ভাবল চলে যাবে আবার পরক্ষণেই মনে হল মেয়েটাকে একা ছেড়ে যাবে কি করে! কিছুই তো জানা হল না। কে মেয়েটা! এখানে কেন! কি করে এল! কতদিন এখানে! তার বাবা মা কোথায়! এখন নোমান কাউকে ডাকতে গেলে যদি মেয়েটা চলে যায়? বাহিরেও অনেক রাত হয়ে গেছে। বাসায় ফিরে কাউকে নিয়ে আসা যাবেনা। কেউ হয়তো ওর কথা বিশ্বাসই করবে না। অনেক ভেবেচিন্তে নোমান মেয়েটার থেকে একটু সরে রুমটার দরজার কাছে গিয়ে দেয়াল ঘেঁষে বসে পড়ল।
কিছু একটা গায়ে এসে পড়তেই নোমান হুরমুর করে উঠে বসল। সকাল হয়ে গেছে। বাহির সকালের শুভ্র আলোয় ছেয়ে গেলেও রুমটার ভেতর তেমন আলো এসে পড়েনি। ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে চিলতে চিলতে আলো এসে চারিদিকে একটা আলো-আধাঁরির ভাব জমিয়েছে। তবে রাতের থেকে সব কিছু বেশ স্পষ্ট লাগছে। বোঝা যাচ্ছে সকাল হয়েছে বেশ আগেই। রাতে বসে বসে কখন যে নোমান ঘুমিয়ে পড়েছিল বলতে পারছেনা। ঘুম ভাঙল মেয়েটার মোম রঙের আক্রমণে। মেয়েটা কি সারারাত ঘুমায়নি! কে জানে?
হঠাৎ বাহিরের দরজা খোলার শব্দ এল। কেউ মনে হয় নোমানকে খুঁজতে খুঁজতে এখানে চলে এসেছে। মেয়েটাকে খুঁজতে এসেছে তাও হতে পারে। নোমান উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে একজন রুমের দরজায় এসে হুমরে পড়ল যেন। লোকটা নিজেকে সামলে নিয়ে সোজা হয়ে ভেতরে ঢুকতেই মেয়েটা মাথা তুলে একবার তাকাল, তারপর উঠে দৌড়ে এসে লোকটাকে জড়িয়ে ধরল। আর মুখে বাচ্চাদের মতো কিছুটা অস্ফুটভাবে বলল, 'বাব্বাহ, বাব্বাহ। বাব্বাহ, বাব্বাহ।' নোমান এতক্ষণে মেয়েটার চেহারা দেখেছে। কি সুন্দর দেখতে! চোখে এক সমুদ্র মায়া আছড়ে পড়ছে যেন। যে কেউ তাতে ডুবে যেতে বাধ্য। মুখের কোণে পুরো পৃথিবীটা জয় করা একরাশ হাসি। ঠিক একটা মায়াপরী।
নোমান মেয়েটার থেকে চোখ ফেরাতেই চমকে উঠল। সমস্ত গা যেন গুলিয়ে আসছে। দু'পা পেছনে নিল নিজের অজান্তেই। শরীরটা পুরো কাঁপছে। এক নিমিষেই পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে এল ওর। অবাক হয়ে মেয়েটাকে বেশ অবহেলায় জড়িয়ে থাকা লোকটার চেহারা দেখছে। এ তো ওর নিজের বাবা! হ্যা, নোমানের নিজের বাবা। তাহলে এই অপরিচিত মেয়েটা তাকে বাবা ডাকছে কেন? জড়িয়ে ধরে আছে কেন? নোমান কিছুই ভেবে উঠতে পারছে না।

আজ নোমানের জন্মদিন ছিল। এই প্রথমবার কোনো আয়োজন হচ্ছে না। ফোন দিয়ে সবাইকে আসতে না করে দেয়া হয়েছে। মেয়েটা এখন নোমানদের বাসায়। নোমানের রুমে। নোমানের অনুরোধেই ওর বাবা মেয়েটাকে এখানে রাখতে সায় দিয়েছে।
মেয়েটার নাম মায়া। খুব মায়াবী চোখ নিয়ে জন্মেছিল বলে নোমানের দাদু এই নাম রেখেছিল। নোমানের বাবার প্রথম স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। মায়ার জন্মের সময় ওর মা মারা যায়। এরপর থেকে দাদুর কাছেই থাকত। মায়ার বয়স যখন তিন বছর তখন সবাই খেয়াল করল ও সব কথা ঠিক মতো বলতে পারেনা। সবার কাছে যায়না। সবার সাথে খেলে না। একা একা থাকে। সামান্য বিষয়েই প্রচুর ভয় পায়। মুখ দিয়ে লালা পড়তে থাকে সব সময়। ডাক্তারের কাছে নেয়া হলে ডাক্তার জানায় মায়া অটিজমে আক্রান্ত। জন্মগত প্রতিবন্ধী। নোমানের বাবা এমনিতেই মেয়েকে তেমন একটা সহ্য করতে পারতেন না। মায়ার মায়ের মৃত্যুর জন্য ওকেই দায়ী করেন। আর মেয়ের এমন রোগের কথা শুনে একেবারেই সব দায়িত্ব থেকে হাত গুটিয়ে নিলেন। শহরে এসে বড় ব্যবসা শুরু করে নতুন বিয়ে করে শহরবাসী হলেন। নতুন ঘরে বছর দেড়েকের মধ্যে আসল নোমান। আর ফিরে তাকাননি মেয়ের দিকে। তবে নোমানের দাদুর মৃত্যু মায়ার দায়িত্ব নিতে বাধ্য করল তাকে। তবে প্রায় না নেয়ার মতোই নিয়েছিল। পুরোনো বাড়িতেই ওর একা থাকার ব্যবস্থা করলেন। সপ্তাহে একবার এসে খাবার দিয়ে আসতেন। আর মায়ার ছোট থেকে পছন্দ ছবি আঁকা। সেই জন্য দিতেন মোম রং।

ছয়মাস হয়ে গেছে মায়া নোমানদের বাড়িতে। নোমানের সাথে খুব বেশি না হলেও একটু আধটু সম্পর্ক গড়েছে। নোমানের নতুন একটা নীল শুভ্র আকাশ হয়েছে। মিলেছে নতুন এক পৃথিবী। যে পৃথিবীর বাসিন্দা ওরা দু ভাইবোন।
বাড়ির আর কারো সাথে কোনো কথা বলে না মায়া। নোমানের রুম থেকে তেমন বেরও হয়না। সব সময় বসে বসে ছবি আঁকে। নোমান মায়াপরী বুবুন বলে ডাকলেই নোমানের দিকে তাকিয়ে এক চিলতে হাসে শুধু। কোনো কথা বলে না। ভাই বোনের সম্পর্কে এই হাসিটুকুই একমাত্র যোগাযোগের সেতুবন্ধন।
মায়ার আঁকার খাতাটা নোমান হাতে নিয়ে চমকে উঠল। সব গুলো পাতায় একই ছবি আঁকা। চারিদিকে আলো ঝলমল একটা রুমে একটা ছেলে একটা মেয়ে বসে আছে। দুজনের মুখেই মায়াবী একটা হাসি। পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ যেন ওরা দুজন। ছবি দেখতে দেখতেই এমন একটা ছবি কোথায় যেন দেখেছে বলে মনে হল নোমানের। ঠিক মনে পড়ছে না। মাথা চুলকাতে চুলকাতে মনে পড়ে গেল ওর। হ্যা, মায়াপরী বুবুন যে রুমটাতে ছিল তার দেয়ালে। সবগুলো দেয়াল জুড়ে একই ছবি অনেকবার আঁকা ছিল। সকালে আলো-আঁধারিতে আবছা আবছা দেখেছিল। তবে ছবিটা একটু অন্যরকম ছিল। সেখানে চারিদিকে অন্ধকার একটা রুমের একটু লাল আলোর নিচে একটা মেয়ে গুটিসুটি দিয়ে বসে ছিল। তার চোখে রাজ্যের ভয়। কি জীবন্তই না ছিল সেই ছবি! নোমানের চোখের কোটরে একদিঘি বিষাক্ত জল। উপচে পড়তে চাইছে। নোমান হাতের তালুতে চোখ মুখে ওর মায়াপরী বুবুনের দিকে তাকিয়ে খাতাটা দেখিয়ে হাতের ইশারায় বলল খুব সুন্দর হয়েছে ছবি। মায়াপরী বুবুন বুঝে নিয়ে একরাশ হাসল। কিছু বলল না। খাতাটা নিয়ে আবার আঁকায় মন দিল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর যদিও গল্পের পরিণতিটা স্পষ্ঠ হল না, তবে বেশ করে মন টেনেছে শেষ পয্যন্ত যাওয়ার। তবে মা মরা প্রতিবন্ধী মেয়ের প্রতি অবহেলাটা ভাবটাতে ক্ষীণ ভাবে যুক্ত হয়েছে বলে প্রতিয়মাণ। অনেক শুভকামনা, ভোট আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী গল্পের ভাব বিন্যাস গুলো খুব অসাধারন ... ভালো লাগলো। ভোট দিলাম আর আমার পাতায় আপনার আমন্ত্রণ রইলো...।

২৭ মার্চ - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪