নীল নিশিতা

এ কেমন প্রেম (আগষ্ট ২০১৬)

মোঃ সাকিব চৌধুরী
মোট ভোট ২২ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.৫৮
  • ১৫
  • ৯২
আজ কতদিন হয়ে গেছে, তাই না? তিন বছর? চার বছর? নাকি এরও বেশি? আমার তো হিসাব রাখা হয়নি । তুমিও নিশ্চয়ই রাখনি?
ঐশী নামের মেয়েটার কথা মনে আছে তোমার? আরে ঐ যে সেই মেয়েটা প্রতিদিন বাবার অনেক দামী একটা গাড়িতে করে আসতো, আর মাথার চুল হেকে পায়ের নখ, শরীরের প্রতিটা অংশ থেকে যেন আলাদা আলাদা করে অহংকার ঝরে পড়ত । সত্যি বলি, প্রথমদিন একদমই ভালো লাগেনি আমার মেয়েটাকে ।
আনোয়ার স্যারের অংক কোচিং- এ প্রথম দেখেছিলাম মেয়েটাকে । স্যার সাংঘাতিক ভালো জিওমেট্রি আর ক্যালকুলাস করান- এই কথা শোনার পর আমিও কলেজের আরো অনেক ছেলের সাথে স্যারের ওখানে ভর্তি হয়ে গেলাম । প্রথমদিন মেয়েটা যখন স্যারের সাথে কথা বলছিল, সেদিন একটা ‘মেয়েমানুষের’ এমন চ্যাটাং চ্যাটাং কথা একদম ভালো লাগেনি আমার ।
আমার সেই সময়ের জীবনটা খুব বেশি পানসে ছিল জানো? ঢাকা শহরের নামকরা একটা কলেজে চান্স পেয়ে নতুন নতুন শহরে এসেছি, হোস্টেলে উঠেছি । চোখের সামনে শহরের ‘রঙ’ যা-ই দেখছি তা-ই হাঁ করে গিলছি ।
বন্ধুবান্ধব আমার একদম ছিল না । কেন ছিল না সেই কারণটা আমি নিজেও জানি না, কে জানে হয়তো আমার দোষেই কারও সাথে বন্ধুত্ব হয়নি । আমার নিজের ভেতরের সেই সময়কার ‘আমি’কে নিয়ে দারুণ কুণ্ঠাবোধ ছিল আমার । আমি আর সবার মতো কথার মাঝখানে ফটাফট কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দ বলতে পারি না, বিশুদ্ধ উচ্চারণে বাংলা বলতে পারি না, সিনেমা-টেলিভিশনের সুপারস্টারদের খবর দূরে থাক নামও ঠিকঠাক মতো জানি না, জানি না হালের ফ্যাশনে কোন খেলোয়াড়ের চুলের ছাঁট চলছে; এরকম আরো কত না পারা, কত না জানা ছিল আমার । এখন হয়তো ভাবলেই হাসি পায়; কিন্তু বিশ্বাস করো, সেই সময়ে এই ‘না পারা’ ‘না জানা’ গুলোকে রীতিমতো অপরাধ মনে হতো আমার কাছে ।
বিশুদ্ধ বাংলা-ইংরেজিতে আমি পাতার পর পাতা লিখে যেতে পারি । কিন্তু কথা বলতে গেলেই কী যে হয়! ভুলে দু’একটা আঞ্চলিক উচ্চারণ বের হয়ে যায়, আর তখন সেটাই হয়ে যায় বন্ধুদের হাসির প্রধান খোরাক । আমার প্রতিটা কথার প্যারোডি করা হয়, নিত্য নতুন নাম বের করা হয় আমার । বাধ্য হয়ে আমাকেও হাসতে হয়, হাসিও আমি । কিন্তু ভেতরে ভেতরে কষ্টে বুকটা ফেটে যায়, নিজের অপারগতায় নিজেকেই অপরাধী মনে হয় ।
কাজেই যা হবার তা-ই হলো । নিজেকে আস্তে আস্তে গুটিয়ে নিলাম, কলেজের বন্ধুদের আড্ডায় আর সময় দেই না, পারতপক্ষে কারও সাথে কোনো কথা বলি না ।
সকাল পৌনে আটটায় কলেজে ব্যাগ নিয়ে ঢুকি, আর দুপুর দেড়টায় বের হই । প্র্যাকটিক্যাল থাকলে বিকাল চারটা-পাঁচটা বেজে যায় । কলেজের পর দু’জন স্যারের বাসা ঘুরে সোজা হোস্টেল । এরপর বইয়ে মুখ ডোবানো, পাঠ্যবই কিংবা গল্পের বই ।
রাত যখন গভীর থেকে গভীরতর হয় তখন হোস্টেলে আড্ডা বসে । আলোচনা শুরু হয় কোন নায়িকা কোন পোশাক পরে কতটা ‘হট’ হয়েছে কিংবা নীল ছবি দেখে কে কত টাকার ইন্টারনেট ফুরিয়েছে । সেসব আলোচনায় যাই না আমি । বন্ধুরা অনেক অনুরোধ করে, ‘রাত জেগে কী এত বই পড়িস । চল না । একদিন গেলেই মজা পাবি, দেখবি আর উঠতেই ইচ্ছা করবে না ।’ বড় ভাইরাও ডেকে পাঠায় । তবুও যাই না আমি, যাওয়া হয় না । আমিও রাত জাগি, তবু কেন যাই না আমি?
ঠিক ধরেছো, ওদের সাথে সিনেমা-খেলার আলোচনায় পেরে উঠব না আমি, ‘হংস মধ্যে বক যথা’ হয়ে বসে থাকা লাগবে, তাই যাই না । তবে এটাও কিন্তু একমাত্র কারণ নয়; ততদিনে আমি বুঝে গেছি তোমাদের এই ঢাকাই স্মার্টনেসটা ঠিক আমি যেরকম ভাবি সে রকম নয়; এখানে শুদ্ধ ভাষা বললে সেটা আধুনিকতা হয় না, বরং শুদ্ধ প্রমিত ভাষায় কথা বললেই সে ‘খ্যাত’, এখানে বাংলাও বলতে হয় ইংরেজির মতো করে, টেনে টেনে ।
তাই কোনো আড্ডায় যাই না আমি, যাওয়া হয়ে উঠে না, মাঝে মাঝে ইচ্ছা করলেও সাহস করে যেতে পারি না । তিনশ’ বোর্ডারের হোস্টেলে থেকেও আমি সঙ্গীহীন । প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ছাত্রের কলেজে পড়েও আমি বন্ধুহীন । এই বিশাল শহরে প্রায় দু’কোটি মানুষের মাঝে থেকেও তাই আমি একা, অনেক একা ।

ঠিক সেই সময়ে আমার মুঠোফোনে একদিন একটা ক্ষুদেবার্তা এল, ‘কেমন আছো?’ আমি রীতিমতো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম । আমার মাত্র বারো শ’টাকায় কেনা ফোনে তো মোবাইল কোম্পানী ছাড়া আর কেউ বার্তা পাঠায় না, বাড়ির লোকের সাথে যা কথা হবার তা সরাসরিই হয়, মেসেজ-টেসেজ লাগে না । সেই আমাকে কে এসএমএস পাঠাল?
আমি প্রথমে কোনো উত্তর দেইনি । পরপর তিনবার সেই একই এসএমএস এল । চতুর্থ এসএমএস, ‘আমার সাথে কথা বলবে না?’
প্রায় আধঘন্টা পর আমি ভয়ে ভয়ে রিপ্লাই পাঠালাম, ‘কে আপনি? আমি কি আপনাকে চিনি? আপনি আমার পরিচিত?’
উত্তরে এল একটা হাসির ইমোটিকন । সাথে লেখা, ‘চিনতে চাইলেই চেনা যায় । পরিচিত ভাবলেই পরিচিত ।’
এই একটা এসএমএস-ই আমার বুকের ধুকপুকানি বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল । কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না, কেমন যেন ভয় ভয় লাগছিল, আবার সাথে সাথে মানুষটা কে তা জানার প্রবল কৌতূহলও দমিয়ে রাখতে পারছিলাম না ।
কে হতে পারে? কে! কে! অজস্রবার এই এক শব্দের একটা প্রশ্নই আমার মনে ঝড় তুলছে । পরিচিত কেউ? বন্ধুদের কেউ মজা করছে? কে সে?
উত্তেজনার বশে কৌতূহল শেষ পর্যন্ত দমন করতে পারলাম না, আগের চাইতেও কয়েক গুণ বেশি ভয় নিয়ে নাম্বারটাতে ফোন ধরলাম । রিংটোনের সমাপ্তির পর অপর প্রান্তে শুনতে পেলাম নারীকণ্ঠের রিনঝিন হাসির শব্দ । হাসতে হাসতেই বলল কণ্ঠটা, ভয় ভাঙল তাহলে? আরে ভাই, আমি বাঘ-ভাল্লুক না, তোমার মতোই মানুষ ।
হাসির রিনঝিন শব্দ, অপূর্ব মাতাল করা একটা কণ্ঠস্বর, কত সহজে অপরিচিত একটা ছেলেকে ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করে ফেলল মেয়েটা । তুমিই বলো, এরকম একটা মেয়েকে ভালো না লেগে পারা যায়? দু’টা চকচকে পাঁচশ’ টাকার নোট বাজি রেখে বলছি, আমার জায়গায় তুমি থাকলে আর তুমি যদি ছেলে হতে তাহলে তোমারও আমার মতো অনুভূতি হতো ।
শিরদাঁড়ায় শিহরণ তখনো কমেনি আমার, গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে, কোনো রকমে জিহ্বা দিয়ে মুখের ভেতরটা ভিজিয়ে নিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম, ‘কে আপনি?’
আরে এত ব্যস্ত হচ্ছো কেন? বলছি... বলছি...আমি...আমি নিশিতা । নিশিতা আমার নাম । তুমি?’
‘তপু ।’
‘ব্যস হয়ে গেল!’
‘কী?’ অবাক হয়ে জানতে চাইলাম আমি ।
‘কেন? বন্ধুত্ব ।’
এত সহজেও বন্ধুত্ব হয়! ছোটবেলায় ‘ভাব’ বলে দু’জনে বুড়ো আঙ্গুল ছোঁয়ালেই বন্ধুত্ব হয়ে যেত । এখানে সেটুকুও লাগল না, শুধু দু’জন দু’জনের নাম জেনেই বন্ধুত্ব হয়ে গেল ।
এরপরের গল্পটা খুব সাধারণ । রাতারাতি বদলে গেল আমার জীবন । যেই আমি বই ছাড়া আর কিছুই বুঝতাম না, সেই আমার বইয়ে মন বসে না । এ এক অদ্ভুত অবস্থা! সারাদিন সব কাজ করছি, অথচ যেন কোনো কাজেই মন বসছে না । একটা ঘোরের মাঝে রয়েছি যেন আমি, নেশাগ্রস্তের মতো অবস্থা । সারাদিন শুধু মনে হতে থাকে কখন রাত এগারোটা বাজবে! কখন রাত এগারোটা বাজবে । সারাটা দিন এই রাত এগারোটা বাজার অপেক্ষায় থাকি । সারাটা দিন মোবাইল বন্ধ থাকে মেয়েটার । যতবারই ফোন দেই না কেন, একই কথা শোনা যায়, ‘দুঃখিত । এই মুহূর্তে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না ।’ শুধু রাত এগারটায় নাম্বারটা খুলে যায় । গভীর রাতে বন্ধ হয়, তারপর আবার সেই রাত এগারোটার প্রতীক্ষা ।

মাঝে মাঝে বুকের বাঁ’দিকটায় খুব সূক্ষ্ম চিনচিনে একটা ব্যথা অনুভব করি । মনে হয়, খুব সূক্ষ্ম একটা কিছু দিয়ে কেউ একজন খোঁচা দিচ্ছে । গোলাপকাঁটার মতো সূক্ষ্ম কোনো কিছুর খোঁচা । উঁহু, হলো না, এর চেয়েও সূক্ষ্ম খোঁচা । সোনামুখী সূচের খোঁচা । এই গোলাপকাঁটার খোঁচা, সোনামুখী সূচের খোঁচা- এই খোঁচাগুলোই কি প্রেম? এই অনুভূতিটাকেই ভালোবাসা বলে?
তাহলে আমিও প্রেমে পড়েছি, আমিও ভালোবেসেছি । নিশিতার প্রেমে পড়েছি আমি । নিশিতাকে ভালবেসেছি আমি । আগাগোড়াই নিশিতার মাঝে ডুবে আছি আমি ।
কোথা থেকে যেন শুরু করেছিলাম? ও! মনে পড়েছে, ঐশীর কথা বলছিলাম । আসলে আজকাল জীবনটাই এত অগোছালো হয়ে গেছে যে গুছিয়ে কোনো কথাই বলতে পারি না, সব গুলিয়ে ফেলি ।
আনোয়ারের স্যারের রোজকার অভ্যাস দেরি করে পড়াতে আসা, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের কমপক্ষে পঁচিশ মিনিট থেকে আধাঘণ্টা দেরি করে আসবেন । উনার এই অভ্যাসে অন্যদের খুব একটা অসুবিধা না হলেও আমার খুবই সমস্যা হতো । অন্যদের কথা বলার বিষয় কিংবা কথা বলার মানুষ কোনটারই অভাব নেই । আমি কী করব এই সময়টাতে? প্রথম প্রথম পড়ার বইয়ে মুখ গুঁজে সময়টা কাটানোর চেষ্টা করতাম আমি, কিন্তু চতুর্দিকে এত শব্দের মাঝে পড়াশোনা করা যায়, তুমিই বলো? কয়েকদিন যাওয়ার পর আমি নিজেও সময় কাটানোর একটা উপায় খুঁজে বের করে ফেললাম । খুব মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করে দেখলাম, নিজে কোনো আলাপে অংশ না নিয়েও অন্যদের আলাপ শুনতে খুব একটা খারাপ লাগে না । খারাপ লাগে না কী বলছি, বরং বলি ভালোই লাগে । কত বিচিত্র বিষয় নিয়ে আলাপ হয়! কী সব আমার অজানা নতুন নতুন শব্দ! শুনতে বেশ লাগে ।
ব্যস, এরপর থেকে সময় কাটাতে আমার আর কোনো অসুবিধাই হতো না । মাঝামাঝি একটা বেঞ্চে বসে সামনে উপন্যাস কিংবা নাটক এমন কোনো একটা বই চোখের সামনে খুলে এমন ভাব করতাম যেন খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছি, অথচ পড়া দূরে থাক, বইয়ের দিকে ভালো করেই তাকাতাম না আমি । ক্যান খাড়া করে শুনতাম অন্যদের আলাপ । কয়েকদিন আলাপ শুনেই বুঝে গেলাম, আনোয়ার স্যার আসার পূর্বের সময়টাতে ছেলে-মেয়েদের মাঝে সম্মিলিতভাবে যে আলোচনা হয় তার মূল মধ্যমণি ঐশী ।
মেয়েটা বিতর্ক করত, কলেজের ডিবেটিং ক্লাবের জেনারেল সেক্রেটারি, বিতর্কে তুখোড় । আমাদের কলেজের যেই ছেলেগুলো বিতর্ক করত তারা কি আর এই সুযোগ হারাতে চাইবে? এই সময়টাতেই ছোটখাট বিতর্ক হয়ে যেত । আমি অবাক হয়ে শুনতাম । কী দারুণ বাচনভঙ্গি! কত সুন্দর করেই না যুক্তি খন্ডন করে ঐশী নামের এই অহংকারী মেয়েটা! সেই সময় থেকে মেয়েটাকে আমার একটু একটু হলেও ভালো লাগা শুরু করল । মনে মনে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হলাম আমি, একটু বাচাল আর অনেকখানি অহংকারী হলেও মেয়েটা আসলেই অসাধারণ বিতর্ক করে ।
সবদিন বিতর্ক জমত না, কোনো কোনোদিন আলোচনা হতো হালের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে; সেদিন মুগ্ধ করত মেয়েটা আমাকে, সব বিষয়ে কী গভীর জ্ঞান তার!
এই যে মেয়েটা এত মুগ্ধ করত আমাকে; ওর হাত-পা নাড়া, চোখের ভাষা থেকে নিয়ে কথা বলার স্টাইল সব কিছু বিভোর হয়ে দেখতাম আমি, আর মনে মনে ভাবতাম মানুষ এতটা অসাধারণ হয় কী করে! এই মেয়েটাও আমি কিছুটা হলেও নিশিতার সাথে তুলনা করতাম । কেন করতাম নিজেও জানি না কিন্তু একটা জায়গায় হেরে যেত । হেরে যেত নিশিতার কাছে, আমার নিশিতার কাছে ।
জানি না কেন, এই একটা মেয়ের সাথেই ।
ঐশী নিশিতার মতো সুন্দর করে হাসতে পারে? নাহ!
নিশিতার মতো সুন্দর করে কথা বলতে পারে? না । কিছুটা হয়তো পারে, সবটা নয়, নিশিতা দশে সাড়ে নয় হলে এই মেয়ে পৌনে আট ।
নিশিতার মতো ভালো মেয়ে ও? প্রশ্নই আসে না! হিংসুটে আর অহংকারী ।
না, এই মেয়ে নিশিতার পায়ের নখের যোগ্যও না, নিশিতার ধারে-কাছেও যেতে পারবে না ঐশী । তবুও কেন আমি বারবার নিশিতার সাথে ঐশীর তুলনা করি? কেন মুগ্ধ হয়ে ওর কথা শুনি? নিজেকেই নিজে উত্তর দেই, কোনো একভাবে তো সময়টা কাটাতে হবে? তাই শুনি, তাই দেখি, হয়তো কিছুটা মুগ্ধ হই । এর চেয়ে বেশি কিছু না ।
আমার নিশিতা আছে, নিশিতা আছে, নিশিতা আছে । আর কী চাই?
একদিন নিশিতা ফোনে আমাকে বলল, ‘তুমি তো অনেক বই-টই পড়ো, তাই না?’
‘হ্যাঁ । তা পড়ি, কেন বলো তো?’
‘কবিতা পড়ো?’
‘পড়ি তো,’ উৎসাহী হয়ে বললাম আমি । ‘তুমি কবিতা শুনবে? জীবনানন্দ দাশ? নির্মলেন্দু গুণ? জয় গোস্বামী? নাকি পূর্ণেন্দু পত্রী’র কবিতা?’
‘আরে নাহ! অন্যদের কবিতা শুনে কী হবে?’
‘তাহলে?’ অবাক হয়ে জানতে চাইলাম আমি ।
‘তুমি বরং আমার জন্য একটা কবিতা লেখ । শুধু আমার জন্য । কি পারবে না?’
আমি বিমোহিত! নিশিতা আমাকে কবিতা লিখতে বলছে? শুধু ওর জন্য? পৃথিবীতে এর চেয়ে মধুর প্রস্তাবও কি আসে কারও কাছে?
পরপর তিনদিন আমি কোনো কাজে মন বসাতে পারলাম না, তিন রাত ঘুমাতে পারলাম না । নিশিতা আমাকে কবিতা লিখতে বলেছে! যে করেই হোক কবিতা লিখতে হবে আমায়, যে কোনোভাবে । অনেক তো কবিতার বই পড়েছি, একটা কবিতা লিখতে পারব না? অন্তত একটা কবিতা?
‘কেন পারব না?’ নিজেকেই যেন বললাম আমি । জীবনানন্দ দাশের ছিল বনলতা সেন । জয় গোস্বামীর মেঘবালিকা । আমার তো নিশিতা আছে । ওর জন্য শুধু একটা কবিতা লিখতে পারব না? তা কী করে হয়!
অবশেষে চতুর্থ রাত না ঘুমানোর ফসল হিসেবে দাঁড়িয়ে গেল বারো লাইনের একটা কবিতা ।
অনেক রাতের স্বপ্ন আমার, অনেকদিনের শখ
গহীন বনের ধারে, গভীর সমুদ্রের পাড়ে,
একটা কাঠের দোতলা কুটির বানাবো ।
নিচতলাটা শুধুই খুঁটি; উপরতলায় আমরা রবো;
নির্জনতা, নীরবতা সঙ্গী হবে সেই আমাদের
চার গোলাপের বাগান হবে, যত্ন মোরা করব তাদের ।

লাল, নীল, হলুদ, কালো; চার রঙেরই গোলাপ হবে
শালিকজোড়ার ভালোবাসা ঠোঁটের ফাঁকে টিকে রবে
পেজা তুলো মেঘ জমবে গভীর সুনীল ঐ আকাশে
সেই আকাশই রাঙবে আবার বিকেলবেলায় আবির রঙে

আমি শুধুই মুগ্ধ হবো, হারিয়ে যাব একটা আমি;
চতুর্দিকে জড়িয়ে রবে- শুধুই তুমি! শুধুই তুমি!

কবিতাটার নাম আমি দিয়েছি- ‘স্বপ্নকুটির’ । কেমন হয়েছে কবিতাটা? নিশ্চয়ই ভালো না, তাই না? তবুও নিশিতাকে নিয়ে লেখা কবিতা, একদম ফেলনা কিছুও কিন্তু নয় । আমার কাছে এই কবিতাটাই অনেক কিছু, পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর কবিতা ।
আরেক দিনের কথা । নিশিতা জিজ্ঞেস করল, ‘আচ্ছা তুমি কোন ব্র্যান্ডের সিগারেট খাও?’
‘আমি তোঁ সিগারেট খাই না ।’
‘একেবারেই খাও না? কোনোদিন খাওনি?’
‘না । কিন্তু কেন?’
‘এমনি । আসলে আমার কাছে কেন জানি সিগারেট না খাওয়া ছেলেদের ঠিক ম্যানলি মনে হয়না ।’
এই তাহলে ব্যাপার! অবশেষে নিশিতার কাছে ‘ম্যানলি’ হবার আশায় সিগারেটে প্রথম টান দিলাম আমি । একদিন কলেজ শেষে নিজ থেকে যেচে গিয়ে অংশু’র কাছ থেকে সিগারেট চেয়ে একটা টান দিয়ে দেখলাম । টান দিয়েই সে কী কাশি আমার! কাশতে কাশতে মরে জাবার দশা আমার, আর সহপাঠীরা আমার অবস্থা দেখে হেসেই বাঁচে না । অংশু অপ্রস্তুতের একশেষ, সবাইকে কোনোরকমে থামিয়ে সিগারেটটা আমার হাত থেকে নিয়ে নিল । বলল, ‘থাক, অনেক হয়েছে । আজকে বাদ দে, একদিনে বেশি না খাওয়াই ভালো ।’
এরপরও সিগারেট খেতাম আমি । তবে আর দলবল নিয়ে নয়, একা একা । প্রতিদিন দু’টা করে খেতাম । ব্ল্যাক, দশ টাকা দামের । নিশিতার কাছে ‘ম্যানলি’ হতে হবে না আমাকে!
প্রায়ই তো নিশিতা আমার কাছে কিছু না কিছু আবদার করে, একদিন আমিই ওর কাছে আবদার করে বসলাম । ‘নিশিতা, আর কতদিন এভাবে ফোনের মধ্যে কথা বলে বলে কাটাবো?’
‘কেন খারাপ কী! ভালোই তো চলছে ।’ নিশিতার সহজ-সরল জবাব ।
‘উঁহু! মোটেও ভালো চলছে না । তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করে নিশিতা । চলো না একদিন দেখা করি ।’
‘কিন্তু...’ আমার সাথে দেখা না করার একশ’ একটা অজুহাত দেখাল নিশিতা । কিন্তু আমিও নাছোড়বান্দা, এইবার যেভাবেই হোক নিশিতার সাথে দেখা করব আমি, যেকোনো ভাবে । প্রয়োজনে পুরো শহর পায়ে হেঁটে এক চক্কর দিয়ে আসব আমি, জাহাজে চড়ে সমুদ্র পাড়ি দেব; তবুও নিশিতার দেখা চাই আমি ।
শেষ পর্যন্ত রাজি হলো নিশিতা । দেখা করবে সে আমার সাথে, এই শহরেরই এক উন্মুক্ত উদ্যানে, আগামী শনিবার ।
আমাকে তখন আর পায় কে! ভেতরে ভেতরে আনন্দে ফেটে পড়ছি । কবে কাটবে একটা সপ্তাহ । কবে আসবে আগামী শনিবার?
অবশেষে এল সেই দিন । আনন্দের চোটে আগের রাতে এক ফোঁটা ঘুম এল না আমার দু’চোখের পাতায় । সকাল থেকে উঠেই তৈরি হওয়া শুরু করলাম । দোকানে গিয়ে চুল কাটালাম, শেভ করলাম । নিজের সবচেয়ে দামি শার্টটা পড়ে রওনা দিলাম আমি । নিশিতার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে ।
টানা আড়াই ঘন্টা বসে থাকলাম আমি । সে এল না । শ্লথ পায়ে হোস্টেলে ফিরে আসলাম আমি, সঙ্গী এক প্যাকেট সিগারেট আর একটা একশ’ টুকরা হয়ে যাওয়া ভাঙ্গা হৃদয় ।
কেন এল না সে? কেন এল না? হয়তো দূর থেকে আমাকে দেখে পছন্দ হয়নি, তাই চলে গেছে । কিংবা মনেই নেই আমার সাথে দেখা করার কথা । এমন হাজার হাজার চিন্তা এসে জড়ো হলো আমার মাথা । নিশিতাকে নয়, বরং নিজেকেই অপরাধী মনে হতে লাগল আমার কাছে ।
সেই রাতেও ঘুম এল না আমার । উঠে গেলাম ছাঁদে । সারদিনের সব কষ্টগুলো নিংড়ে কান্না হয়ে বেরিয়ে এল । ধীরে ধীরে ছাদের কার্নিশের সামনে এসে দাঁড়ালাম । পাঁচতলা হোস্টেলের এই ছাঁদটা থেকে মাটি কত দূরে?
‘এই তপু! করছিস কী এখানে, পড়ে যাবি তো!’ খপ করে কে যেন আমার একটা হাতের বাহু ধরে ফেলল । ঘুরে তাকিয়ে দেখি, মাসুম ভাই ।
নিচে পড়তেই তোঁ চেয়েছিলাম আমি মাসুম ভাই! না এই কথাটা আর বলা হলো না ।
রুমে ফিরে এসে দেখি মোবাইলে নিশিতার সাতচল্লিশটা মিসড কল । ভেবেছিলাম ফোন ধরব না, কিন্তু ও নিশিতা । তার সাথে কি বেশীক্ষণ রাগ করে থাকা যায়? আটচল্লিশ নাম্বার ফোনটা অবশেষে ধরলাম আমি ।
‘তপু, আই অ্যাম স্যরি । ভেরি ভেরি স্যরি । আসলে আজ শনিবার ছিল না? ছুটির দিন । বাবা বাসায় ছিল, বের হবার আগে বাবার কাছে ধরা খেয়ে গেলাম...’

নিশিতার মোহে আচ্ছন হয়ে থাকার কথা তো অনেক বললাম, এইবার তার মোহ ভঙ্গ হবার গল্পটা বলি, শোনো ।
আর দিন কয়েক পরেই হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষা আমার, আনোয়ার স্যারের কোচিং এর শেষ দিন । স্যার আমাদের বিদায় জানানোর ছোটখাট আয়োজন করলেন । অনুষ্ঠান শেষে আমি চলে আসছিলাম, হঠাৎ পেছন থেকে কে যেন ডেকে উঠল, ‘এই তপু! একটু শুনে যাও ।’
পেছন ফিরে অবাক হয়ে দেখলাম দীপ্তি নামের কালো করে লিক্লিকে শুকনো মেয়েটা ডাকছে আমায় । এগিয়ে গেলাম আমি, ‘আমাকে ডেকেছ?’
‘হ্যাঁ ।’
‘কেন? কিছু বলবে?’
‘হ্যাঁ । শোনো, তোমার সাথে নিশিতা নামের একটা মেয়ের ফোনে কথা হয় না?’
‘হয়,’ ভীষণ অবাক হলাম আমি । ‘কিন্তু তুমি জানো কী করে?’
‘ও আজ থেকে তোমাকে আর ফোন দেবে না ।’
‘মানে? কী বলছো এসব? ঠিক করে বলতো, কী বলতে চাও?’
‘আসলে নিশিতা বলে কেউ নেই’ খানিকটা ইতস্তত করে বলল মেয়েটা । ‘তমার বন্ধুরা বলেছিল, তুমি নাকি কারও সাথে কথা বলো না, কারও সাথে মেশো না, এমনকি মেয়েদের প্রতিও কোনো আগ্রহ নেই । তাই ঐশী তোমার বন্ধুদের কাছে তোমার নাম্বার নিয়ে ফোনে নিশিতা সেজে কথা বলতো, জাস্ট ফর ফ্যান । দেখার জন্য মেয়েদের প্রতি তোমার আসলেই আগ্রহ আছে নাকি নেই ।’
আমি বিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম । কী শুনছি এইসব? নিজের কানকে নিজে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । জাস্ট ফর ফান! শুধু মজা করার জন্য! রূপকথার গল্পে মুনি-ঋষিদের ধ্যান ভাঙাতে স্বর্গের উর্বশীদের পাঠাতো শত্রুপক্ষ । আমি তো মুনি-ঋষি নই, কোনো ধ্যানও করিনি; তবু তুমি কেন এসেছিলে নিশিতা?
মেয়েটা আরো কিছুটা সময় চুপ করে থেকে বলল, ‘তুমি মনে হয় একটু বেশিই সিরিয়াস হয়ে গিয়েছিলে । ঐশী আমাকে পাঠিয়েছে তোমাকে বুঝিয়ে বলতে । যাই হোক, যা হয়েছে ভুলে যাও, এগুলো শুধু মজা করার জন্য করা, দ্যাটস ইট । ভালো করে পরীক্ষা দিও । তুমি ভালো ছাত্র, ভালো করে পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে, ভালো জায়গায় ভর্তি হতে পারবে । অল দ্যা বেস্ট ।’
দীপ্তি নামের মেয়েটা চলে গেল, দাঁড়িয়ে রইলাম আমি । আমার পৃথিবী তখন শুন্য, পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে । অতল এক চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছি আমি ।

নিজের কথা, নিশিতার কথা, ঐশীর কথা তো অনেক বললাম, এইবার একটা ছেলের গল্প বলি । ষোলো বছর বয়সী ছেলেটা বিশাল একটা নদীর ধারের ছোট্ট একটা শহরে থাকে । প্রায়ই তার মন খারাপ থাকে, তার মায়ের ভীষণ অসুখ । শরীরের একটা অংশ অবশ হয়ে গিয়েছে । ডাক্তার বলেছে, চিকিৎসা করলে সুস্থ হয়ে উঠবে । তবে এদেশে ভালো চিকিৎসা হবে না, বিদেশে নিয়ে যেতে হবে । ছেলেটার এই জন্যই মন খারাপ । বিদেশে নিয়ে যাওয়ার মতো এত টাকা তো নেই তার পরিবারের কাছে । তাহলে কী করে সুস্থ হবে তার মা?
একদিন উপায় পেল ছেলেটা । মা-ই উপায় বাতলে দিলেন, ‘তুই ঢাকায় যা বাবা । ঢাকায় গিয়ে মস্ত বড় কলেজে পড়ে একদিন বড় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবি । তারপর অনেক টাকা কামিয়ে মাকে চিকিৎসা করাতে দেশের বাইরে নিয়ে যাবি । পারবি নারে বাবা, মাকে সুস্থ করে তুলতে?’ ছেলেটা মায়ের হাত ধরে কথা দিয়েছিল সে পারবে ।
কিন্তু সে পারেনি, পারেনি সে তার মাকে সুস্থ করে তুলতে । বড় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার কী করে হবে, সে তো উচ্চ মাধ্যমিকও পাশ করতে পারেনি ।
একদিন স্বর্গের অপ্সরী যাকে ধোঁয়ার নেশায় আচ্ছন্ন করে দিয়ে গিয়েছিল আজ তার দিন কাটে রঙিন নেশার চোরাস্রোতে ।
না, তোমার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই । বেঁচে থাকতে হলে তো মানুষকে আনন্দ নিয়ে বাঁচতে হয় । আনন্দ পাবার জন্য তোঁ সে কত রকম খেলাই খেলে; এক্কা-দোক্কা, ফুলটোকা, বাঘবন্দী । তুমিও খেলেছো, খেলে আনন্দ পেয়েছ এই না অনেক!
তবুও মাঝে মাঝে একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছা করে তোমাকে । কিন্তু কীভাবে চিঠি লিখি বলো তো? চিঠি তো লেখা যায় রক্ত-মাংসের মানুষকে । তুমি তো আমার কাছে শুধুই এক রহস্যময়ী স্বর্গের অপ্সরী । আমি তোমার একটা নামও রেখেছি- ‘নীল নিশিতা’ । জানতে চাও এই নামের অর্থ কী? বলছি । নীল আমার কাছে রহস্যের রঙ । যেই আকাশ সকালবেলায় ঝকঝকে হালকা নীল, সেই আকাশই দুপুরবেলা গাঢ় নীল ধারণ করে । বিকালবেলা যেই আকাশের আবির রঙে সাজে, সেই আকাশই ঝড়ের পূর্বাভাসে কালো হয়ে উঠে । আকাশের চাইতে রহস্যময় আর কী-ই বা আছে এই পৃথিবীতে? তাই তোমার তুলনা চলে শুধু ঐ আকাশটার সাথেই ।
তোমাকে চিঠি আর লেখা হয় না । তবুও মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছা করে, ভালো আছো, নীল নিশিতা?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Sohom Mallik Valo lakhani kintu .suru r sastar kamon jano Mana halo...sorry
ধন্যবাদ । 'কেমন যেন' মানে কী, ভালো না খারাপ??
ভালো লাগেনি ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬
মোঃ সাকিব চৌধুরী দেরিতে রিপ্লাই দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত । ভ্যারিফিকেশন নিয়ে সমস্যা হওয়ায় আগে রিপ্লাই দিতে পারিনি । সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ । :)
জয় শর্মা (আকিঞ্চন) এক কথায় গল্পটা দারুণ। অভিনন্দন সাথে!...
ভালো লাগেনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
পন্ডিত মাহী অভিনন্দন!
ভালো লাগেনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
কেতকী অভিনন্দন জানাতে এসেছিলাম, কিন্তু না পড়ে অভিনন্দন জানাই কেমন করে !... আগে একবার অফলাইনে কিছুটা পড়েছিলাম...আজ আবার পুরোটা পড়লাম। আমার গলার কাছে কষ্টেরা দলা পাকিয়ে উঠছে...। এতো আবেগ ঢেলে লিখেছেন, অবাক না হয়ে পারলাম না। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি অনেক বড় গল্পকার হোন। অনেক অভিনন্দন রইল।
ভালো লাগেনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
এত সুন্দর করে বলার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । শুভকামনা রইল :)
সেলিনা ইসলাম অনেক অভিনন্দন!
ভালো লাগেনি ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
শামীম খান অভিনন্দন জানবেন ।
ভালো লাগেনি ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
মাহবুব আলম দারুন। চমৎকার।
সূর্য মাঝে মাঝে ভাবি ভালবাসাটা আসলে কী? উত্তরটা একেক জনের কাছে একেক রকম। তপুর দিকে মায়ের ভালবাসার উষ্ণতা ছিল, অসুস্থ্য মায়ের আকুতি ছিল অন্য দিকে নিশিতা নামের না দেখা অপ্সরীর ছোঁয়া পাবার আকুলতা... আসলে মানুষ যা আপন করে নিজের করে পেতে চায় সেটাই সে ভালবাসা নামে প্রকাশ করে। তপু পারতো হয়তো বাংলা সিনেমার মতো বড় ডাক্তার হতে... সে পথে সে যায় নি। আর দশজন প্রেমিকের মতো বিরহে ভেংগে পড়েছে। ভাগ্যিস তপু এই সময়ের বিরহী না কে জানে হয়তো জংগীও হয়ে যেতে পারতো। লেখাটা ভালোই লেগেছে...
প্রান্ত স্বপ্নিল আধুনিকতার অভিশাপটাকে বেশ ফুটিয়ে তুলেছেন। লেখাই অনেক গভীরতা পেলাম।

১৮ মার্চ - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৪ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.৫৮

বিচারক স্কোরঃ ৩.৩৮ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ২.২ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪