'আমি পাইলাম,ইহাকে পাইলাম'!

উপলব্ধি (এপ্রিল ২০১৬)

শাহরিন মাহাদি
  • ৪৩
এই ছেলে,তুমি মোড়ের দোকানে বসে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সিগারেট খাও!তাইনা?
আমি গুটিসুটি মেরে ভদ্র ছেলের মত সোফায় বসে ছিলাম।সামনে বসা ভদ্রমহিলার এরকম কথা আমার বসার মধ্যে একটা ছোটোখাট ঝড় বইয়ে দিল। আমার গুটিসুটি মারা পা আরও গুটিয়ে যেতে লাগলো,কপাল দিয়ে ঘাম ছুটে যায় যায় অবস্থা।
এই মুহূর্তে আমি যেসব বলব ভেবেছিলাম সেগুলো মুহূর্তের মধ্যে মাথা থেকে উবে গেল।ভদ্রমহিলা এক কথাতেই আমাকে ধরাশায়ী করে ফেলেছেন। এখানে আমার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।সুতরাং কাল বিলম্ব না করে আমার প্রস্থান করাটাই শ্রেয়। তবে ভদ্রমহিলার প্রশ্নের জবাব কি দেওয়া যেতে পারে সেটা একটা চিন্তার কারণ।
ভদ্রমহিলা আবার যোগ করলেন,'যে ছেলে সিগারেট খায়,সে কখনো ভালো হতে পারেনা।আমার ধারণা তোমার চরিত্রের দিকটাও ভালোনা।তোমাকে আমি প্রতিদিন মোড়ের দোকানে দেখি।তোমার চাহনিও সুবিধার না।'
ভদ্রমহিলার এমন বিষমাখা কথা আমাকে বাণের মত বিদ্ধ করছে।না পারছি কিছু বলতে,না পারছি কিছু না বলে চলে যেতে।শেষে সাহসী একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম।ইনাকে আমি দেখিয়েই দিব,মোড়ের দোকানে বসা ছেলের আর কি কি খারাপ গুন থাকতে পারে।
আস্তে করে বললাম,'আন্টি বাল্যবিবাহ আইন সম্পর্কে আপনার জানা আছে?'
ভদ্রমহিলা এবার নড়েচড়ে বসলেন।এতক্ষণ চুপ থাকার পর আমার এরকম কথা শুনে উনি খানিকটা বিস্ময় নিয়ে উত্তর দিলেন,'হ্যা জানি, কিন্তু এখানে বাল্যবিবাহ আসলো কোথা থেকে?'
আমি মুচকি হেসে বললাম,'আসছে,অনেক কারনেই আসছে।আপনি কি বলতে পারবেন,মেয়েদের বিয়ের সরবনিম্ন বয়স কত?'
'১৮'
'তাহলে তো আন্টী আপনি বাল্যবিবাহ আইনে ধরা খেয়ে যাবেন।'
'কেন? এখানে বাল্যবিবাহ আসলো কোথা থেকে আগে বল শুনি'
'আপনার মেয়ের বয়স কত?'
'১২, কিন্তু আমি তো আমার মেয়ের বিয়ের কথা বলিনি একবারও'
'সেকি!!! বলেননি? কি বলেন!'
ভদ্রমহিলা এবারে নড়েচড়ে বসলেন।আমার মুখে এরকম কথা শুনে উনি মনে হয় একটু ধাক্কাও খেলেন।কঠিন ভদ্রমহিলা তো,ধাক্কা সামলে জিজ্ঞেস করলেন,'আসলে তুমি কি বলতে চাচ্ছ?'
আমি এবার মুচকি হেসে বললাম,' আমারও তো একি প্রশ্ন, আপনি কি বলতে চান আমি বুঝতেছিনা। আমাকে বলা হয়েছিল এখানে একটা টিউটর নেওয়া হবে,কিন্তু এসে মনে হল জামাই খোজা হচ্ছে।'
'আমি তো টিউটর ই খুজছি আমার মেয়ের জন্যে।'
এবার আমি একটানে বুক ফুলিয়ে বলে দিলাম,'তাহলে আমার পার্সোনাল লাইফ নিয়ে চিন্তাটা না করলেই চলত।আমার পড়ানোর দক্ষতা,যোগ্যতা এগুলা দেখলেই হয়তো বিষয়টা ভালো হত। আচ্ছা আসি,আমার চাহনি সুবিধের না।বেশীক্ষণ থাকলে অসুবিধে হতে পারে। আসসালামু আলাইকুম'
বলেই আমি সোফা থেকে উঠে দরজা দিয়ে বেরিয়ে এলাম।এ বাসায় টিউশন আমার পক্ষে সম্ভব না। যতটুকু দিতে চেয়েছিলাম তার থেকে একটু কম হয়ে গেছে মনে হয়।সমস্যা নাই,এতেই কঠিন ভদ্রমহিলা দুইদিন কাইত হয়ে থাকবে।
***
আননোন নাম্বার রিসিভ করতেই,'বাবা আমি তোমার আন্টী বলতেছি'
'কোন আন্টি?'
'আরে,ওইযে সেদিন আমার বাসায় আসলে না,নাস্তা না করেই চলে আসলে।'
'ও ও! জী আন্টী। বলেন'
'তুমি একবার আমার বাসায় আসতে পারবা?'
আমি ফোনের স্ক্রীনের দিকে ভালো করে তাকালাম। 'ইহা আমি কি শুনিলাম'
তারিখ খেয়াল করে দেখলাম দুইদিন পার হয়ে গেছে।ভদ্রমহিলা কাইত থেকে সোজা হয়ে গেছে আজ।
মুচকি হাসি চলে আসলো ঠোঁট এ।'আমি পাইলাম,ইহাকে পাইলাম'!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রেজওয়ানা আলী তনিমা হা হা। মজার গল্প। তবে মেয়ের টিউটর হিসেবেও মানুষ সৎ লোকই খুঁজবে। যে দিনকাল পড়েছে!আর টিউটর হলেও শিক্ষক তো বটেই। শিক্ষকের চরিত্র ভালো হওয়াটা জরুরী।
মোহাঃ ফখরুল আলম ভাল লেগেছে। ভোট দিতে মন চায়। আমার কবিতা পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
কেতকী টিউশনি পাওয়ায় গল্পকারের মূল চরিত্রকে অভিনন্দন সহ ভোট রইল।
রুহুল আমীন রাজু ভালো লাগলো.শুভেচ্ছা.
ইমরানুল হক বেলাল ধন্যবাদ বন্ধু। ভালো লিখেছেন। আমার পাতায় আমন্ত্রণ।

০৯ মার্চ - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪