"১ম পরিচ্ছেদ"
শিরোনাম---
শীতের মৃধু আবাস তখন সঞ্চলিত
বয়স তখন হইয়াছে তার ১১ ছুঁই ছুঁই।
ছেলেটির সবে বুদ্ধিমত্তা বিকাশ ঘটিতেছে।
আম্র মৃধু শুভাস লবিয়া চক্ষুচড়ক হইতাছে।
মায়ের ডাক খোকন খোকন,,
এই খোকন ওঠে পড়! অনেক বেলা হল যে।
খোকন চঞ্চলিত শরীরের তৃরিক্ষি মেজাজে,
উঠিয়া পরিল।
তখন সবে সূর্য লোক হতে প্লাবিত খানিক বিকিরণ বিকিরিত হইতাছে।
খোকন উঠিয়াছে ঠিকি,
কম্পিত মৃধু সুরে মারে ফের কহিল?
খানিক ঘুমাইতে চাই আরও খোকন।
উহু হইয়াছে নিদ্রা ঢের।
পাঠশালাই যাবার বেলা বহিয়া যাইবে।।
খোকন আবার মায়ের কহিত আগ্রাহ্য করে না।
সময় বহিয়া যাই।
এমনি চলিতে থাকে খোকনের দিন।
দেখিতে দেখিতে খোকন রইল না আর ছোটন।
খানিক জ্ঞানহর করিয়াছে খোকন।
মা তার এখনো রহিয়াছে সর্বশ্রেষ্ট স্নেহের মূলে, মা ও কম নাহি রহে্ কোন অংশে
এখনো রহিয়াছে পুত্র তার সেই ছোট্ট খোকন।।
খোকনের এখন জ্ঞাত হইয়াছে।
জীবন খানি নহে্ এত সরল,,
খোকনের রহিয়াছে খানিক অভাব-অনটল।
এখন আর পারে না খোকন, ছোট বেলার মত তিরিক্ষি করিতে এই মন।
যাইতাছে অনেক সন্ধ্যা আসিতাছে আবার রাত।
রাত পোহালেই প্রভাত।
খোকন ৯ম শ্রেণী করিছে উত্তীর্ণ।
১০ম শ্রেণী,, করিছে খানিক ভাবাপন্ন।
পারিবে কি খোকন,, করিতে আরো খানিক অধ্যয়ন।।
"২য় পরিচ্ছেদ"
বর্ণনা---
খোকন আজও করিতেছে অধ্যয়ন, তবে সারাক্ষন রহিয়াছে ভাবাপন্ন তার মন।
পারিবে কি খোকন?? পারিবে দূর করিতে মা এর দুঃখ।
মন আজি আর নাহি রহে অধ্যয়নে খোকনের।
এরি মধ্যে খোকনের জ্ঞাত হইয়াছে পারিবেনা সে আর অধ্যয়নে এগুতে।
"ত্যাগ" করিল এহনে খোকন অধ্যয়ন।
মা তার করিছে বিরল কষ্ট, সংসারের অনটলে রহিয়াছে মা দিব্য।
ছেলের সানিধ্যে নাহি রহেন মায়ের কিছু কহিবার!!
অঘর নিদ্রায় মা দেখিতো ছেলেরে সপনে।
পুত্র তার মানুষ হবে।
সে থাক যতই অভাব-অনটনে।
খোকন জানে তার, আর নাহি আছে কিছু করিবার।
তাইতো খোকন ছুটেছে নূতন পথে মা তার করিছে অনেক কষ্ট।
খোকন মায়ের কষ্ট টুকু খানিক নিজেতে লুটাইবার চাই।
এইভাবে কাটিলো কিছুটা দিন,,
খোকন এবার মুখ-ফুটে কইল তার মায়েরে
মাগো
আমি যাইবার চাই,
করিব আহরণ কিছু অর্থ।
মায় তারে কিছু কহিবার না পারে,, কেমনে ছারিবে তাহার আদরের পুত্ররে।
তবুও কিছু করিবার নাহি আছে!! হৃদয়ে খানিক স্নেহের কষ্ট লইয়ে মা তার বলিয়া উটিল এবার কথন??
তুই হে,, মোর বেশ আদরের পুত্র কেমনে ছারিবো তোরে একলা,
এই বলিয়া মা খোকনেরে আর কিছু কহিবার না পারিল।
খোকন লক্ষ করিল মায়ের নেত্র কোনে মৃধু জল-
খোকন বিন্দুমাত্র দেরি না করিয়া,, লবিল তার স্নেহের মায়েরে বাহুডোরে।
দুই নেত্রে আর জল ধরিয়া রাখিতে পারলো না মা
গলগল করিয়া খোকনের বাহুডোর দিল ভাসাইয়া।
মা এই মা তুই কাদিস কেন শুনি?? ছেলে তোর এখন ছোট নহে্,,
হইয়াছে অনেক বড় (অনেক কষ্ট বুকে লইয়া বলিয়াছে খোকন কথাখান)। কহিয়া খোকন গেল ঘরে চলিয়া।
সন্ধ্যা গেল নিশি এল ফিরে,
মায়ের ডাক খোকন আয় খাবি আয়। এল খোকন!!
খোকনের এমন আচরন মা আজ দেখিছে প্রথমবার। যে খোকন তার মায়ের হাতে খাবার তুলে না দিলে আহার করিত না।
সেই খোকন আজ কিনা আপন হস্তে করিতাছে আহার।
মা তার কিছু বলিল না খোকন আপন হস্তে খাইয়ে, লেটিয়া পরিল ঘরে গিয়ে।
মায়ের আর আহার হইল না সে রাত্রী খোকন শুইয়ে আছে আর ভাবিতাছে। এহন কি আমি আধো ঠিক করিলাম।
ভাবিতে ভাবিতে খোকন গেল ঘুমাই।
( করিয়াছে এমনটি খোকন,,
চাই যে খোকন কমিয়ে নিতে,
মা পুত্রের এই পবিত্র বাধন।)
পরদিন সকাল উটিল খোকন মারে ডাকিলো মৃধু স্বরে -
খোকনের আজও সেই ১১ বছরের কথা মনে পরে।
মা আসিয়া পরিল কি হল খোকা ডাকছিলি কেন??
খোকা কানিক রাগান্বিত হয়ে বলিল তার মায়েরে বাজে এখন ক'টা?
মা মৃধু হাসিয়া বলিল খোকন তুই তো আজি যাবি চলে। তাই তোর লাগিয়া খানিক তোর প্রিয় মনোরম ভাপা পিঠা বানাতেছিলুম।
( আজ খোকন যাবে চলে। যাবে শহরে করিতে পুঁজি।)
মা টার আজিকে হাসি মুখ। খোকন জানে মা তার রাত্রে নিদ্রা দিয়াছে "ত্যাগ"।
ঝড়াইয়াছে কান্না সারা রাত্রী।
হইত আর নেই জল নেত্র থেকে বহিবার। আজ আরো একবার খোকনের সেই ১১ বছর মনে পরে।
এমনি ছিল তার মায়ের মুখ খানি,, তবে আজ পুহাতে হবে তার মায়েরে যত দূঃখের গ্লানি।
চলে গ্রীষ্ম বাহির খুবই রোদ্দুর, সবে অপ্রহান্ত! রোদ্দ তো খানিক রবেই। খোকনের যাবার সময় এখন, খোকন যাবে ছারিয়া - "খোকনের স্নেহের "মা" - রে।
মায়ের খোকন দিল পাড়ি, মা তার চাহিয়া আছে খোকনের যাবার দৃশ্য। খোকন তাকালো না আর পিছু ফিরে সোজা হাটিতেছে তো হাটিতেছে।
গ্রামের পাশে বয়ে গেছে মাঝারি বড় "মেঘনা" নৌকায় চলে পারাপার।
খোকন নদী করিল পার। ষ্টেশনে সময় মতন পৌছাইতে হইবে তার।
চা ভাই চা, এই নিন চা। নেত্রের ফাকে খানিক দেখিল খোকন।
মাঝ বয়সী একখান লোখ তার দিকে হাত বারাইয়া চা চা করিতেছে।
খোকা এখন রহিয়াছে ট্রেনে, মায়ের কথা ভাবিতে ভাবিতে ঘুমাইয়া পরিছে সে।
উটিল ঘুম থেকে খোকন। পাশের লোক ফের বলিলো চা চা। খোকন এবার বলিলো তারে,,,
নারে খাইবার নাহি পারিবো আমি তোমার চা,,
কেন??
পয়সা নাহি আছে মোর,,
ভদ্রললোক আর খাড়াইলো না সোজা হাটিতে হাটিতে ফের, চা চা দিদি মণি চা লাগবো চা।
পয়সা বিনে দুনিয়া চলে না এইটুকুন জ্ঞাত খোকনের হইয়াছে।
বড্ড বেশী মনে আসিতেছে আজ খোকনের "মা"।
মন চাই ফের অহন মায়ের কাছে ছুইট্টা যাই। কিন্তু পারি না রয়েছে বাধাঁ হেন, "অভাব" টুটায়াছে এক রাশি স্নেহ।
পৌছাইতে খানিক রাত হইল এই খুঁজিয়া পাইব কি "শুক্লাচার" রে।
ও বলা হইনি আপোনাদের শুক্লাচার খোকনের বাবার বন্ধু ছিলেন বটে। বাবা যখন মারা গিছিলেন শুক্লা কাকু ভরসা দিছিলেন। এইসব মায়ের মুখ থেকে শুনিয়াছিলাম।
আরো শুনিয়াছি "শুক্লা" কাকু নাকি কাজ করে "দর্জির" শহুরে। ঠিকানা টা দিয়াছে পাশের বাড়ির "মৃধুল" কাকা। দিয়াছিলেন মাসখানেক হল। বাড়িতে আসিয়াছিল বেড়াইতে।
শুনিয়াছি কাকাও নাকি রয়েছেন এইহানে রাত্রী খানিক বেশী। হাটিতেছি কোথায় রয়েছে এই শুক্লাচার কে জানে।
ঠিকানা খানি আবার খনিক বাইর করিয়া দেখিতেছিলাম। পাশ দিয়া রহিয়াছে অনেক লোক। ডাক আমার- এই যে ভাইটি মোরে কনিক বলতো দেখি এই ঠিখানাটা।
ভদ্রলোক-
সোঁজা হাটিবেন,, খানিক টা পথ এগুলে দেখতে পাবেন রহিয়াছে একখানা মাত্র লিচিগাছ বাঁ দিক খানিক গিয়ে ফের ১ম বাঁ দিকের ছোট গলিতে প্রবেশ করিবেন।
আমিও শুরু করিলাম তার কথন মতন কাজ। হ্যা ঠিকই আছে। ঈস্হহ লোকটারে একখানি ধন্যবাদ দিতে পারিলাম না।
ঠিকানা বরাবর ৩৩৬৫নং বাড়ি।
শুক্লাচার কাকা একা রহিছে তার বাসায়, আমায় দেখিয়া চিনিছে। আরে "হিরক" (নাম আমার হিরক। মা আদর করিয়া ডাকিত "খোকন")
হ্যা!!
যাক কাকু আমারে পারিছে চিনিতে,
কাকু খানিক কি যানি ভাবিল,, পশ্চাত বলিলো। আছে কেমন মা'টি।
কহিলাম আছে ভালো। আমি বলিব এমন সময় কাকু চুপটি করিয়া মোরে বলিলো।
তোর কিছু বলিবার নাহি্ আছে, সেদিন আসিছিল মৃধুল বলিছে আমারে সব।
আয় ঘরে আয়। গেলাম টিপে মোর পা'টি। হাত মুখ খানিক ধুইয়াছি, অনাহারে ভুগিছে এখনো আমার গোধুলি।
কাকু বলিলো আয় খাবি আয়। খাবার শেষে কাকু বলিলো চল কানিক ডুবি নিদ্রায়। ভোর প্রভাতে যাইতে হইবে কাজে। পরদিন গেলাম কাজে খানিক অস্বস্তি লাগিতেছিল পরন্তু কিছু করিবার নাহি রহে্।
হইতে হবে অনেক বড় আমার, দিতে হইবে মা'রে খানিক সুখ।
কালকের সেই ছোট্ট খোকন এখন হইয়াছে বড়। চিটি পারাপার চলে মায়ের সাথে খোকনের।
খোকনের মনে আজও স্বর বাজেঁ মায়ের সেই চিরচেনা স্বর। আজও খোকনের নেত্র হইতে জল ঝড়িতে থাকে মায়ের লাগি।
এখন বড্ড সুখে খোকন আর তাহার "মা"র
৩টি বছর পেরুল খোকনের।
"শেষ পরিচ্ছেদ"
উপসংহার---
খোকন আজ একখান চিঠি দিল মারে--
চিঠির ধরন খানিক এরকম।
আমার স্নেহের "মা"
প্রথমেই সালাম নিও।
জানিনা তুমি রইয়াছ কি রকম,
তোমার ছেলে আজও রইয়াছে একি রকম।
মাগো তোমার কথা মনে পরে ভীষম, তবু পারিনা ছুটিয়া আসিতে তোমার পানে।
তবে ১০ই পৌষ আমি আসিতেছি "মা"।
দেখি না তোমায় হল ঢের দেরি।
সুস্ত থাকিও ভালো থাকিও।
ইতি,
আপনার একমাত্র স্নেহের পুত্র
খোকন (হীরক)
এখন কাটে না সময়। কবে খোকন যাইবে বাড়ি,,,
ভাংগিবে "মা" এর সাথে দেওয়া খোকনের এই ৩ বছরের আড়ি।
দেখিতে-দেখিতে আসিয়াছে সেই দিন
আজি ৯ই পৌষ।
প্রভাতে একখান মায়ের চিঠিপত্র আসিয়াছিল। এখন খানিক রাত্রী হইয়াছে।
মায়ের চিঠিখাম খুলিলাম। বেশ কিছু লিখেনি মা আমার।
লিখিয়াছে শুধু---
খোকন ও খোকন,,,
তুই ঠিক মতন আছিস বাপ!! তোর লাগি করিব আমি তোর পছন্দের ভাপা পিঠা।
ইতি,
---- তোর স্নেহের অভাগীনি "মা"
সত্যি চিঠি খান পড়িয়া দুই নেত্রের কোনে উষ্ণ জল্কনা আসিছে।
আমি বুজিতে পারিতেছি মায়ের অবস্তা।
পরদিন প্রভাতে জাগিয়া, রওনা হইলাম মোর গ্রামে। আহা কি মধুর সেই গ্রাম।
গাড়িটাতে আজি প্রছন্ড রহিয়াছে ভির,
জানিনা মন কেন আজি শুধুই করে অস্তির।
হঠাৎ গাড়ির সামনে হইতে আসিলো এক বিরল শব্দ,
বুঝেছি অন্য গাড়ির সাথে হইয়াছে বোধয় জব্দ।
তবে মূহুর্তে সব কেমন জানি শান্ত। চারিদিকে লোকালয় করিছে বিরল ছোটাছূটি। কারো গেছে হাত, কারো নেই পা। সব কিরম জানি ছিন্নবিন্ন।
আমি কোনমতে বেরুলাম।
কিছুদূর হাটিলাম। ঔইত দেখা যাইতেছে মেঘনা নদী --
নৌকা একখান যাইবো। সবে নোংর তুলেছে। সামান্য একটু দূরে ছিলুম আমি ও মাঝি ভাই খনিক দাঁড়ান। ও মাঝি ভাই ব্যটা দেখি শুনিয়াও না শুনিবার ভান করিতেছে।
কোনমতে হুড়ুমুড়ু করে উঠিয়া ব্যটা মাঝিরে কিছু কইবো!! না থাক আজ বেশ দিবা পরহিত, যাইতেছি মায়ের সহিত। মনটা বেশ ভালো।
পৌছাইছে আমার গ্রাম, খানিক বদলাইছে।
বাড়ির বড়ই গাছের নিচ দিগন্তে খাবার ঘরের সমীক্ষে বসিয়া রয়েছেন মা। সেই স্বাদের ভাপা পিঠা লইয়া।
ডাকলাম ---
"মা" আসিয়াছি আমি,, তোমার আদর-স্নেহের পুত্র খোকন। মা আমার দিকে খানিক পলক ভর দেখিয়া ফের চক্ষু ফিরিয়ে নিছিলো।
ভাবছিলাম হইত এত্তোদিনের রাগান্বিত "ক্ষোব" উসুল করিতেছিল।
কিন্তু নাহ্।
আমি যেই ক্ষনে "মা"রে স্পর্শ করিতে যাইবো ---
একি আমি তো রইলাম না আর আমাতে।
পরক্ষণেই বুঝিবার পারছি।
"প্রাণ পাখী আমার,
আর রইল না'গো খাচাই"
আমি তখন মৃত।। হইতবা প্রাণ খানি আসিয়াছিল "আমার স্নেহের মা'রে" একবার দেখিবার।।
( খোকন এর মৃত্যু হইয়াছিল গাড়ি এক্সিডেন্টে )