গল্প কবিতার এবারের অর্থাত এপ্রিল সংখ্যায় বিষয় নির্বাচিত হয়েছে, আমাদের বাংলা নতুন সনের প্রথম মাস “পহেলা বৈশাখ” আর বিশেষ সংখ্যার জন্য বিষয় “অবহেলা”।
গল্প কবিতার সু-চিন্তকদেরকে আমি অনেক সাধুবাদ জানাই, কারণ তাঁরা প্রতিমাসেই নতুন নতুন চিন্তার খোরাক যুগিয়ে দেন। চিন্তাগুলো ঝিমিয়ে পড়া মগজকে পুনঃকর্ষণ ক’রে অলস মগজকে কিছুটা হলেও সক্রিয় করে তোলে। “অবহেলা” একটি নিদারুণ কষ্টের শব্দ। যে শব্দটি তার নিজের কন্টকিত চরিত্রের গুণেই অবহেলিত ব্যক্তিকে বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে খতবিক্ষত করে চলে দিবারাত। এই অবহেলা জাতি ধর্ম বর্ণ গোষ্ঠীগতভাবেও হতে পারে। “অবহেলা” জমতে জমতে শব্দটি বিশাল একটা অভিমানে রূপ লাভ করে। এই অভিমান দেখা যায় শেষ পর্যন্ত কারও বা কোন কোন ক্ষেত্রে অন্তর্মুখি হয় অথবা কারও বিশাল বিস্ফোরন ঘটিয়ে ফেলে। সেটার উদাহরণ ১৯৭১এর ২৫ মার্চ এবং ২৬ মার্চের এই দিনগুলিই পুনঃস্মরণ করিয়ে দেয়। আমরাই সেই অবহেলিত জাতি, আমাদেরি ভিতর শাসক গোষ্ঠীর অবহেলা জমে জমে বিশাল বিস্ফোরন ঘটেছিলো। পৃথিবীতে অবহেলিত জাতি গোষ্ঠীই বলতে পারে অভিমানের কোন কোন অনুপরমানু অবহেলাকে অভিমান থেকে বিস্ফোরকে পরিণত করে। এসব কিছুর উপরে মারাত্মক অবহেলা হচ্ছে সময়কে অবহেলা করা। যা মানুষ মাত্রই কোনা না কোন সময় পার্থীব জীবনের বেঁধে দেয়া সময়ের পর্যায়গুলোকে অবহেলা করে নিজের ক্ষতি করে থাকে যা কোনদিন আর পুনরায় পূরণ করার জন্য ফিরে আসে না। এতো গেল সময় ও জাতিগোষ্ঠীগত অবহেলার কথা। রইলো পারিবারিক অবহেলা, ব্যক্তিগত অবহেলা, বর্ণগত অবহেলা। এই অবহেলাগুলোর কথা আমরা সমাজের যে কোন কৌনিক অবস্থান থেকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখলেই দারুণভাবে চোখে পড়বে, তাই আর বিস্তারিত বর্ণনায় যাচ্ছি না। এ জন্যই হয়তো আল্লাহ পাক বারবার করে বলেছেন - “তোমরা কেউই কারো চেয়ে শ্রেষ্ঠ নও, মনে রেখো তোমরা সকলেই একই আশরাফুল মাখ্লুকাত।”
তবে সম্মানীত পাঠক বিশ্বাস করুন প্রেমেতো দারুণ অবহেলা আছেই, যা প্রেমিক প্রেমিকাকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। অবাক হবেন না পিতৃ অপত্যে ও মাতৃ অপত্যেও চরম অবহেলা কোন কোন সন্তানের প্রতি বিঁধতে দেখা যায়। এ ধরণের অবহেলা সন্তানরা নিজের অক্ষমতাকে মেনে নিয়ে নীরবে সহ্য করে। আবার পিতা মাতাকে সন্তান কর্তৃক অবহেলার শিকার হওয়াতো আজকাল সর্বজন বিদিত। প্রত্যক্ষ ব্যাপার অবহেলার ব্যাপারটা প্রেমের ক্ষেত্রে এসে একটু অন্যরকম করে বলতে হয়। যেমন আমাদের জাতিয় কবির একটি গানের কলি বলার লোভ সামলাতে পারছিনা - আঁচলের ফুলগুলি করুণও নয়নে নিরাশায় চেয়ে আছে কার মুখ পানে প্রাণে যেন বিঁধিয়াছে কার অবহেলা। আমাদের সবার প্রিয় জাতিয় কবির রচিত এমন অনেক গান আছে যা কিনা পরকীয়া বা ঘরোয়া প্রেমিক যুগলকে অহোরাত অবহেলার মিষ্টি আগুনে ধিকি ধিকি পোড়ায়।
যেমন অপর পক্ষেও কবি স্বয়ং তাঁর প্রেমিকা নার্গীসের এক চিঠির উত্তরে একখানা গোটা গানই লিখে ফেললেন। গানখানির - “অন্তরা” অংশের চারখানি চরণ এরকম- আমি ফিরি পথে তাহে কার ক্ষতি, তব চোখে কেন সজল মিনতি, আমি কি কখনও কোনদিন তরে, আসিয়াছি তব দ্বারে?।
অবহেলার কথা আর কি বলবো? আমরা এ শব্দটি উচ্চারণ করতে আগে চরম শব্দটি যোগ করে বলি। এখন ঝঅ ঞঠ তে সিরিয়াল চলছে সেই বিখ্যাত ইউসুফ জুলেখার প্রেম। আপনারা হয়তো দেখে থাকবেন। জুলেখার প্রতি ইউসুফের অবহেলিত অবজ্ঞা জুলেখাকে কিভাবে দগ্ধ করছে।
পরিশেষে বলি আমরা মানুষরা বিড়ম্বিত ভাগ্য নিয়ে পরিতাপের স্বরে স্বয়ং আল্লাহ পাককেই বলে বসি হে পরোয়ারদেগার, হে মহামহিম কেন আমার প্রতি তোর এত অবহেলা?
-----------------
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
০১ ফেব্রুয়ারী - ২০১৬
গল্প/কবিতা:
২০ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।