দ্বিতীয় ভালোবাসা

ভালবাসার গল্প (ফেব্রুয়ারী ২০২৪)

মোকাদ্দেস-এ- রাব্বী
  • 0
  • ৫৫
রিং টোনের শব্দ পেয়ে পকেট থেকে ফোন বের করতেই হাত ফসকে গেল জিহানের। হাত ফসকে যাওয়া মানে তো নিচের দিকে পড়তে থাকা। কোন ভাবেই যেন মাটিতে পড়ে না যায় সেই চেষ্টা করতে গিয়ে অনেকটা রম্য টাইপের কান্ড ঘটে গেল। অনেকটা ডিগবাজির মতো। স্মার্ট ফোন বলে কথা। জিহান ফোন ধরার চেষ্টা করে সফল হলো। কিন্তু সেজন্য নিজের শরীরকে নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যেতে হয়েছে। জিহান হুড়মুড় করে পড়ে গেল মাটিতে। বইমেলার ভিতরে ডানে বায়ে সামনে পিছনে বইয়ের স্টল গুলোর সামনে যে কয়জন তরুণ-তরুণী ছিল। সবাই তখন জিহানের দিকে তাকিয়ে আছে ফ্যাল ফ্যাল করে। কেউ কেউ মুচকি মুচকি হেসে দিচ্ছে ওকে দেখে। জিহান চটপট উঠে দাঁড়ায়। ধুলোয় লুটোপুটি করছে পুরো শরীর। ডান হাত দিয়ে শরীরের ধুলো গুলো ঝাড়তে থাকলো ও। আর বাম হাত দিয়ে দেখলো রুপা ফোন দিয়েছিল। রুপাই যে ফোন দেবে তা আগে থেকে আন্দায করেছিলো ও। এজন্যই তো তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কান্ডটা ঘটে গেল। কল লগ’স থেকে নাম্বারটা বের করে ফোন দেয় জিহান।
অপর পাশের্^র সুরেলা কন্ঠে বলে উঠে, কি করো তুমি।
-ধুলো খাই।
-ধুলো খাও কেন?
-সারাদিন কিছু খাই নাই তো তাই।
-পকেটে টাকা নাই?
-টাকা আছে। তোমার ফোন পেয়েই তো আমাকে ধুলো খেতে হচ্ছে।
- কেন?
- আর বলো না। তোমার ফোন বাজতেছিলো আর ফোন বের করতে করতে হাত ফসকে পড়ে গেল। সেটাকে ধরতে গিয়ে আমিও পড়ে গেলাম। আর বই মেলায় তো ধুলোর অভাব নেই।
-মোবাইল তো হাত ফসকে যায় নাই। তুমি নিশ্চয় কোন তরুণীর দিকে তাকিয়ে পথ চলছিলে। আমি বুঝি না।
-আরে না। তা কেন হবে।
- আমি তোমাকে হাড়ে হাড়ে চিনি। চিনি না?
- হ্যা চেন। তবে এই চেনাটা শুধু তোমার ভুল চেনা।
- হু, তা তো বলবেই। তোমার কোন কথা শুনতে চাই না। তুমি এক্ষুনি বইমেলা থেকে বের হয়ে আসবে।
-আরে আরও একটু পড়ে বের হই। একটা বই খুঁজতেছি। পেলেই বের হয়ে যাব।
- কোন অজুহাত চলবে না। তুমি এক্ষুনি বইমেলা থেকে বের হয়ে রাস্তা মাপতে থাকো।
- গজ ফিতা সাথে নিয়ে আসিনি।
- ঠাট্রা মশকরা করার মতো কোন কথা বলিনি। এক্ষুনি বের হতে বলেছি এক্ষুনি বের হবে।
-আচ্ছা ।
এই বলেই ফোন পকেটে রেখে দেয় জিহান। নিজে তো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলো না অপরপক্ষ করলো কিনা তাও খেয়াল করলো না। সামনে এগুতেই বন্ধু নয়নের সংগে দেখা। নয়ন বলল,‘কী খবর বন্ধু তুমি তো দেখি প্রতিদিনই বইমেলায় আসেেতছো। বই কেন না দেখ কোনটা?
- দুটোই। জবাব দেয় জিহান।
-বই-ই দেখ নাকি অন্যকিছু?
-ধূরও কীসব বলো - - -।
-আচ্ছা বাদ দাও। আজ কী কী নেওয়া হলো।
জিহান কাধে রাখা ব্যাগটা একটু খুলে হাত ঢুকিয়ে বই গুলো দেখে নিয়ে বলল,নিলির ভালোবাসা নিলাম। মেঘবালিকাকে নিলাম ওটা নিতে গিয়ে যদি ভালোবাসা পাই পেলাম সেটাও নিলাম।
-বাহ্ বাহ। তুমি তো দেখি ভালোবাসার কাঙাল। খালি ভালোবাসাই নিচ্ছ।
-ভালোবাসা ছাড়া কিছু আছে বন্ধু? ভালোবাসার বাইরে কোন কিছুই নেই।
-হুম।
নয়নের হুম বলা শেষ হতে না হতেই পকেটে থাকা ফোনের রিং টোন বেজে উঠলো। বের করেই বুঝলো রুপা আবার ফোন দিয়েছে। রিসিভ করতেই হ্যালো বলার সুযোগ পেল না জিহান। অপর পক্ষ গড় গড় করে বলতে শুরু করলো,
-ভালোবাসা, ভালোবাসা! নাহ! নিলির ভালোবাসা মেঘবালিকার ভালোবাসা আরও ভাবছো ভালোবাসা যদি পাও। বইমেলায় প্রতিদিনই যাও এই জন্যে, না? সামনে আসো ভালোবাসার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করবো আমি।
একতরফা ভাবে বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলো রুপা। ও বুঝলো তখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাই হয় নাই। কিন্তু উল্টা পাল্টা শুনে রুপা কী এরকম করা ঠিক করলো। জিহান মনের দুঃখে নিজের ব্যাগে রাখা বই গুলোর দিকে তাকিয়ে বলল,‘এবার কী হবে তোমরাই বলো তো আমার প্রিয় ভালোবাসারা।
বই কী আর কথা বলে? ব্যাগ থেকে চোখ সরিয়ে কিছুটা মন খারাপ করে বাউন্ডুলের মতো ঘুরতে থাকলো মেলায়। ঠিক মিনিট ৩৫ এর মধ্যে রুপা এসে জিহানের সামনে হাজীর। নিজের ঘোর বিপদ দেখে চটপট ব্যাগ থেকে কয়েকটি বই বের করে মুখের সামনে ধরে মুখ ঢাকার চেষ্টা করলো ও। রুপা একটা একটা করে বই ওর হাত থেকে সরিয়ে নিয়ে মুখোমুখি হলো। রুপা প্রথমে যে বইটা হাতে নিলো সেটি হলো মোশতাক আহমেদ এর লেখা ‘নিলির ভালোবাসা’ ২য় আর ৩য় বইটি হলো ইমদাদুল হক মিলনের ‘মেঘবালিকা এবং যদি ভালোবাসা পাই।
রুপা বলল,তুমি আমাকে বুঝিয়ে বললেই পারতে।
-সে সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করলাম। পেলাম না তো। তাই কী করে তোমাকে বলব যে আমার ব্যাগে দ্বিতীয় ভালোবাসারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেগুলো হলো বই। আর তুমি তো আমার প্রথম ভালোবাসা। চাইলেই তোমাকে তো আর ব্যাগে ঢোকাতে পারি না।
-আচ্ছ বাবু,সরি। তবে তোমার দ্বিতীয় ভালোবাসা যেন বই-ই থাকে অন্য কিছু যেন না হয়।
একথা বলেই রুপা বইগুলো জিহানের ব্যাগে ঢুকিয়ে দিতে শুরু করে। জিহান অপলক চেয়ে রুপার মুখ দেখতে থাকে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
অথই মিষ্টি বাহ্ লেখক সাহেব ... মুগ্ধ হলাম
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় লেখক
ভালো লাগেনি ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

রিং টোনের শব্দ পেয়ে পকেট থেকে ফোন বের করতেই হাত ফসকে গেল জিহানের।

২০ নভেম্বর - ২০১৫ গল্প/কবিতা: ১৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪