জীবন গতিময় এবং এই গতি স্বভাবতই এক অনন্য গন্তব্য প্ৰত্যাশী। গতিকে প্ৰবহমান ৱেখে প্ৰাৰ্থিত্ব গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে শুরুতেই সুনিৰ্দিষ্টভাবে স্হিৱ কৱে নিতে হয় জীবনেৱ লক্ষ্য, না হয় পদে পদে ব্যাহত হয় জীবনেৱ গতি-আৱ শেষে নৈৱাজ্য পীড়িত ব্যৰ্থতায় ভৱা এক জীবন নিয়ে মধুময় এই ধৱণী থেকে বেদনাদায়ক বিদায় নিতে হয় মানুষকে।তাই বুঝি কোনো চিন্তাশীল সজীব মানুষ জীবনেৱ এমন করুণ পৱিণতিৱ কথা ভাবতেই পাৱে না। হয়ত সবাই জীবন বিকাশেৱ সুন্দৱতম ভাবনায় থাকেন সদাবিভোৱ।
আৱ এই নিৱন্তন বুনে যাওয়া স্বপ্ন ভাবনাকে সাফল্যমণ্ডিত কৱে তোলাৱ জন্যে সুনিৰ্দিষ্ট কল্পনাকে সামনে ৱেখেই শুরু হয় জীবন সাধনা।
সকলেই জানেন যে, বেচেঁ থাকাৱ অবলম্বন স্বপ্ন। স্বপ্ন-আশাই মানুষকে সাফল্যেৱ পথে এগিয়ে নিতে প্ৰেৱণা জোগায়। স্বপ্ন না থাকলে মানুষ তলিয়ে যেতো দুঃখেৱ সমুদ্ৰে। সুতৱাং, মানুষেৱ চোখ মুখ যেমন অন্তৱেৱ আয়না খেলা স্বরূপ তেমনি তাৱ সাথে সংযোগ আছে স্বপ্ন; স্বপ্নেৱ সাথে মিশে আছে 'আত্মা'।
আৱ আত্মাৱ সাথে মিশে ৱয়েছে মানুষেৱ জীবনেৱ 'উপলব্ধি'। স্বপ্ন-আশা, এবং জীবনেৱ উপলব্ধিই মানুষকে চিৱজীবন বাঁচিয়ে ৱাখে। দেয় পথ চলাৱ প্ৰেৱণা, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধিৱ আশ্বাস।
যাই হোক, জীবনেৱ উপলব্ধি ভূমিকা সম্পৰ্কে চিন্তাশীল সজীব মানুষ হিসেবে আমাৱ ও আছে জীবন বিকাশেৱ এক বৰ্ণিল স্বপ্ন। সেই উপলব্ধিকে ঘিৱে সফল বাস্তবায়নেৱ অভিপ্ৰায়ে আমি নিৱন্তন স্বপ্নেৱ জাল বুনেছি। আমাৱ সেই স্বপ্ন হলো একজন আদৰ্শবান লেখক হওয়া।
চাই দুঃখী মানুষদেৱ আপদে-বিপদে পাশে থাকা,
নিজেকে একজন শুদ্ধ মানুষ হিসেবে চাই,
আমি চাই দেশপ্ৰেম, চাই সুন্দৱ একটি সমাজ ও জাতীয় চেতনা উন্মেষ।
আমি স্বপ্ন দেখি আৱো কত কিছু হওয়াৱ। কিন্তু স্বপ্নতো স্বপ্ন, তা কি কখনো বাস্তব হয়?
স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।স্বপ্ন শুধু স্বল্পমাএ মস্তিষ্ক বিকাৱ।তবে সব বিষয়ে স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। কথায় আছে 'আকাশ- স্বপ্ন চিৱকাল আকাশেই থাকে, মাটিতে নেমেলোঁ আসে না কখনো।'তবে আমৱা যতো কিছুই স্বপ্ন দেখি না কেন, সৱবাগ্ৰে প্ৰয়োজন মানবিক মূল্যবোধেৱ উন্মেষ এবং কৰ্ম ব্যতীত মানব জীবনে সকল সুখেৱই আয়োজন ব্যৰ্থ হয়ে যায়। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মানবিক সংগঠন-পরিবার, সমাজ,রাষ্ট্র ও বিশ্বাব্যবস্থার মূল বুনিয়াদ,ঘুচে যায় মানুষে আর পর্ঞ্চেতে প্রবেদ। মানুষের মহওম বিকাশ সাধনে তাই মূল্যবোধের জাগরণই প্রথম এবং প্রধান শর্ত।
এ সময়ে স্বপ্ন ও কল্পনার যে বীজ বপন করা হয় তাই ভবিষ্যতে ফুলে ফলে বিকশিত হয়ে ওঠে। কিন্তু কেবল স্বপ্ন ও কল্পনার বীজ বপন করলেই হয়না-শ্রম, নিষ্ঠা,সাধনা, অধ্যবসায় ও দৃঢ় একাগ্রতা দিয়ে অনেক লালন, বর্ধন ও বিকশিত করতে হয়। তাই ভবিষ্যৎ জীবনের উপলব্ধির লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার জন্যে আমাকে ও এখনই জীবনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্বাচন করতে হয়েছে। আর সে গুলোতে চাই দেশব্রতী,মানবব্রতী অগ্রণিত আদর্শ। আমি যদি আমার মেধা ও কলমের শক্তিকে সাধ্যমতো কাজে লাগাতে পারি তাহলেই আমি জীবনকে স্বার্থক মনে করব। আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি,পরিভোগে সুখ নেই, মানবব্রতী, দেশব্রতী ভূমিকাতেই আমি প্রকৃত সুখ খুঁজে পাব।
কথায় বলে-'সুন্দর দিন সবার জন্যই অপেক্ষা করে।কেউ চেষ্টা করে আনে, কেউ আনে না। কথাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, চেষ্টা না করলে কখনো নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায় না। কারো প্রতি নির্ভর না করে নিজের কাজ নিজে করাই হলো স্বাবলম্বন বা আত্ননির্ভরশীলতা কিংবা উপলব্ধির পরিচয়। তবে একথাও সত্য যে একহাতে তালি বাজে না। তাই কোন কোন ক্ষেত্রে অন্যের প্রতি নির্ভর করতে হয়। কিন্তু সে নির্ভরতা অন্যের দ্বারাতেই হয়। যাঁরা অলস,বিলাসী, কর্মবিমুখ, তাঁরা অন্যের প্রতি নির্ভর করে বাঁচতে চায়।
ওরা শেষ পর্যন্ত দেহে ও মনে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। মানে আত্মনিরভরশীলতা হারিয়ে ফেলে। এ ধরনের মানুষ শেষ পর্যন্ত নিজের ওপর আস্হা হারায়।
এবং জীবনযুদ্ধে এক সময় পরাজিত হয়।
প্রকৃত অর্থে অন্যের প্রতি নির্ভর না করে নিজে করার অর্থই স্বাবলম্বন, কিংবা জীবনের উপলব্ধি। যেমন, যে হাত গুটিয়ে বসে থাকে, কোনো পরিশ্রম করতে নারাজ তাঁদের পক্ষে স্বাবলম্বী হওয়া,উপলব্ধি কল্পনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা জানি, প্রতিটি মানুষেরই মেধা,শক্তি ও সামর্থ্য রয়েছে।তার সাহায্যে অনেক কিছুই তার নিজের পক্ষেই করা সম্ভব। সমাজ জীবনে প্রত্যেক মানুষকেই নিজের ভূমিকা ও কর্তব্যটুকু পালন করতে হয়।
সেটা স্বেচছায়, সচেতনভাবে, নিষ্ঠার সাথে করার সামর্থ্য অর্জন করাটাই প্রকৃত অর্থে স্বাবলম্বন অতঃপর উপলব্ধির সার্থকতা।
ব্যক্তির মতো জাতিকেও হতে হয় স্বাবলম্বী। সে ক্ষেত্রে চোখ কান খোলা রেখে উপলব্ধি করতে হয়। কারণ চোখ বন্ধ রাখলে দুনিয়া আধাঁর।
যে জাতি পরমুখাপেক্ষী সে জাতি কালের যাত্রায় ক্রমেই পিছু হটতে থাকে।
আধুনিক বিশ্ব জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, সাহিত্য-সংস্কৃতিতে,ব্যবসা-বাণিজ্যে,উৎপাদন ও উন্নয়নে,খেলাধুলার প্রচন্ড গতি ও প্রতিযোগিতার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে যে জাতি স্বাবলম্বী হবে না,পরনির্ভরীল থেকে যাবে তার পিছিয়ে পড়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। জীবনের উপলব্ধি মহাপুরুষদের উদাহরণ অজস্র।প্রবল পরাক্রান্ত সম্রাট নেপোলিয়ন প্রথম জীবনে ছিলেন সাধারণ সৈনিক। পরিশ্রম ও কর্ম কর্মনিষ্ঠার বলে তিনি সাফল্যের শীর্ষে উঠেছিলেন। আর্কিমিডিস,গ্যালিলি ও নিউটন,মাদামকুরী, আইনস্টাইনের মতো বিজ্ঞানী; গ্যেটে, দান্তে,শেক্সপিয়র, তলস্তয়,রবীন্দ্রনাথ,নজরুলের মতো সাহিত্যক;বিটোভেন,মোজার্টের মতো সুরস্রষ্টা; লিওনার্দো দাভিঞ্চির মতো শিল্পী; লিংকন,লেনিন,মাও সেতুং-এর মতো জ্ঞানীরা জীবনে সার্থকতাকে অর্জন করেছেন স্বাবলম্বন আর উপলব্ধির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে। ব্যক্তিমানুষ ও জাতির সাফল্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে জীবনের উপলব্ধির ভেতরে।
এ সব উপলব্ধির মাধ্যমেই মানুষের বিজয় সূচিত হয়।তাতে ব্যক্তির কল্যাণ ছাড়া ও সমাজের অগ্রগতি সাধিত হয়।
সুতরাং, আমরা যাঁরা একই পথের পথিক।
আমাদেরকেই গড়ে তুলতে হবে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ।
সারাদিন লেখার চাইতে বরং ভাবনা,প্রকাশরীতি বা এ ধরনের কিছু না কিছু নিয়ে থাকি। ঠিক গোছালো নয়।
পরিভাষায় একে 'অনুপ্রেরণা' বলা যেতে পারে। এটাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে অথবা নিঃশেষ করে দেয় কিংবা শান্ত অথবা শূন্য করে তোলে। এ সব ভাবতে আমার ভালো লাগে। হয়তো সত্য ও মিথ্যা এই বিপরীত শক্তির আকর্ষণের মধ্যে দিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হয়। এটাই আমাদের চির সুন্দরের পথ। এ পথের শক্তি মানুষকে সৎ ও নির্লোভ, ত্যাগী জীবনের চালিত করে। যাঁরা স্বার্থলোভী, তারা এসব নিয়ে ভাববে না। একেই আমরা বলি সৎ, সত্য পথের সন্ধ্যান। অন্য দিকে মিথ্যা পথের পথিক কে আমরা বলি অসৎ, আজকালকার মানুষ এই পৃথিবীতে স্বার্থ ছাড়া কেউ কিছু করে না। মানুষ সত্যতা ও অসত্যতার দ্বন্দ্ব প্রচন্ডভাবে দুলছে আমাদের চারি পাশে পাপাচার এমন প্রচন্ড শক্তি নিয়ে সমাজ জীবনকে গ্রাস করতে চলেছে যে সৎ ও সরল মানুষ ত্রুমেই একঘরে হতে বসেছে। সত্যতার আদর্শ ও মহিমা থেকে বিচ্যুত হওয়ার লক্ষ্মণ মানুষের মধ্যে ত্রুমেই প্রকট হয়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ, আসুন আমরা আমাদের উপলব্ধির মাধ্যমে এই বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করে তৈরি করি মিত্রতার বন্ধন।
সূর্য উঠেছে দিন শুরু হয়েছে। সূর্য ডুবেছে দিনের শেষ।
আবার উঠবে এবং ডুববে প্রকৃতির নিয়মানুযায়ী অবিরাম বিরতিহীনভাবে। তবু ও চলবে পথ চলা,স্বপ্ন পূরণ আর আগামী প্রত্যাশার জন্য•••।