অতীত সূর্যউদয় সূর্যাস্তের মত পুরনো । অতীত চলতে চলতে পুরনো দিনের গানের মত থেমে যায়, কখনও আবার থেমে যাওয়ার মত করে থামতে পারে না ৷
যারা চলে গেছে, তারা অতীত যারা আছে তারাও অতীত যারা বিচূর্ণ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে ভাঙা রাজপ্রাসাদের ইটের মত ৷
তাঁরা পুরনো অতীতকে পুরনো করছে আমি তাদের কথাই বলবো ৷ কিম্বা বলবো না, অনেক জনের কথা হয় তো বা শুধু একজনের ,
সে অতীত ছিলো- সমবয়সীর চেয়ে দুবছরের ছোট আজ তা এসে দাঁড়িয়েছে পঁচিশ বছরে পঁচিশের বসন্ত প্রাচীতে ৷
যখন পূর্ণীমার চাঁদ মধুময় আকাশ , সূর্যের কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে থাকে ৷ তখনই শুরু হয় অবির আর রঙের খেলা ৷ চোখ তখন সৃষ্টি করে দর্শন শাস্ত্রকে আর মন! সৃষ্টি করলো ফ্রয়েড কিম্বা লর্ড বাইরণ কে ৷ যারা অতীত তারা সূর্যউদয় সূর্যাস্তের মত পুরনো ৷ তারা চলতে চলতে থেমে যায় পথের মাঝে শ্বাস কষ্টে দাঁড়িয়ে থাকে চোখ ভাঙা চাঁদের মত ৷ আজ তাঁদের কথাই বলবো
হে পাঠক! এক্ষণি বাজবে স্কেলিটনের ঘন্টা পথে মাঝে এসে ব্যাক্তিটি শ্বাস-কষ্টে দাঁড়াবে হ্যাঁ দাঁড়িয়ে আছে ৷ কাঁধে কী ছিলো? হ্যাঁ হ্যাঁ ছিলো ৷ কি যেনো ছিলো! একটা ঝোলা ৷ হ্যাঁ ঝোলা ঝুলছে ৷ ব্যাক্তিটি ওভাবে ঝোলায় হাতরে কি যেনো খুঁজচ্ছে ৷ তবে কি ঔষধ? না অন্য কিছু? আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ব্যাক্তিটিকে দেখছিলাম ৷ আমি শ্বাস কষ্টের অনেক রুগি দেখেছি ৷ এমন কখনও দেখিনি ৷ কী তার উৎপ্রেরণ, কি তার নিস্তল আবেগ ৷ কষ্ট তো কষ্টই ৷ হঠাৎ ভাবতেই… আমি চমকে উঠলাম ৷ এ- কি! ঔষদের বদলে বাঁশি! ! হ্যাঁ ব্যাক্তিটি ঝোলা থেকে ঔষধের বদলে একটি বাঁশি বের করলো ৷ আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না আমার মনের উৎবেগ ত্বরণের মতো এলো-মেলো হতে লাগলো ৷ এগিয়ে এলাম ৷ কাছে দাঁড়ালাম ৷ বাঁশের বাঁশি ৷ ব্যাক্তিটি বললো- খুউব কষ্ট ৷ বাঁশিতে একবার ফুঁ' দিয়ে তবেই শান্তি ৷
-শান্তি! বাঁশি বাজিয়ে! !
- হ্যাঁ গো ৷ বিহাগ না দরবারী! !
- কেনো ! কেনো! ঔষধ না খেয়ে ৷ বেহাগ , দরবারী? ব্যাক্তিটি আর্তময়ূখে তাকিয়ে বললো- বুকে বড্ড বেশি অক্সিজেন জমেছে ৷ ভোরের মত ৷ হ্যাঁ, ভোরের মত ৷ ভোরের গন্ধের মতো ৷ হাসনা কিম্বা দোঁপাটির ৷ ভোরের একটা অতীত আছে ৷ আছে বর্ষবরণ ৷ যাকে আমরা প্রভাত বলি ৷ ভোরের অস্ত আছে ৷ কষ্ট আছে ৷ এমন কী গোধূলী ভোরও আছে ৷ শুধু নেই ভৈরবী ৷ তবে ব্যাক্তিটির কী আছে? জীঞ্জেস করলাম- কেনো কেনো? ব্যাক্তিটি বললো- বাঁশি যে অক্সিজেন খায় ৷ বুকের বিষ খায় ৷ কণ্ঠের রক্ত খায় ৷ মাথার মধ্যেকার শব্দ খায় ৷ শব্দ খায় ৷ হ্যাঁ শব্দ খায় ৷ অনাবিল আনন্দে খায় ৷ সে তো আমার কবিতাও খায় ৷ তবে ব্যাক্তিটির কী হতে পারে? আমার শব্দগুলো মাঝে মাঝেই আমাকে অন্ধ বৈরাগ্য করে দেয় ৷ হাড়িয়ে দেয় কবিতা ৷ হাড়িয়ে যায় হাত থেকে খসে পরা কলমের শব্দ ৷ ব্যাক্তিটি দরবারী ধরলো ৷ তানসেনের সেই বিচ্ছেদ- সুর ৷ বিচ্ছেদকে শুধু বিচ্ছেদ বললে ভুল হবে ৷ বিচ্ছেদেরও একটা মিলোন আছে ৷ সে মিলোন অপার- মিলোন ৷ আমি কান পেতে থাকি ৷ শব্দ খুঁজি ৷ ভোর খুঁজি ৷ আরও খুঁজি কোমল গান্ধার ৷ খুঁজতে খুঁজতে হারিয়ে না গিয়ে থেমে যায় পুরনো একটা বৃত্তের মধ্যে ৷ সে পুরনো অনেক পুরনো ৷ ঠিক পুরনো পোষাকের মত ৷ পুরনো বৃষ্টির মত ৷ পুরনো সূর্যের মত ৷ পুরনো নদীর মত ৷ আবার, সেই পুরনো পঁচিশ বছরের মত ৷ আমি বাঁশি শুনতে শুনতে আনমনে বলে ফেলি-- বাঃ! বাঃ! ! তুমি যে সেই হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা ৷ কি বিমর্ষ তাঁর শব্দ ৷ কী তীর ডাকার ভঙ্গি ৷ কী তাঁর উৎপীড়ন ৷ মন নীরব হয়ে যায় ৷ কেঁদে উঠে আকাশ বাতাস সূর্য্য ৷ চাঁদ ঔ চেয়ে থাকে ৷ সূর্যকে পিছন ফিরে ৷ ব্যাক্তিটিকে কিছু বলার আগেই দেখি ৷ পাশে একটি নারী ৷ ব্যাক্তিটি নারীটিকে দেখে , অশরীরী চোখে ৷ তারপর থামিয়ে দেয় বাঁশি ৷ তারপর স্থান ত্যাগ ৷ কেনো! কেনো! !
- এই ৷ শোন ………… শোনো ৷ আমি ভাষাটা ভুল ভেবে আবার বলি - এইযে শুনুন ৷
ব্যাক্তিটি আমার দিকে তাকিয়ে, নারীটির দিকে তাকালো ৷
নারী তাঁর পঁচিশ বছরের অতীত ৷ পুড়ে যাওয়া নদী ৷ বিবর্ণ নদী ৷ যে জমিতে শস্যের বদলে জন্মেছিল আগুন ৷ পুড়ে গিয়েছিলো মাটির গন্ধ রস হাড়িয়েছিলো নির্ভূল কল্পনার নির্মলতা এরজন্যই কি ৷ সেই পঁচিশ বছরের সূর্যউদয় সূর্যাস্তের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা ?
আমি বিব্রত হৃদয়ে নারীটির কাছে দাঁড়িয়েও কিছু বলতে পারলাম না ৷ ব্যাক্তিটি ততক্ষণে আমার কাধে হাত রেখে বললো- এ বাঁশি সবসময় বাজে না ৷ মনের উপচিত পরাধিনতার পর্দাটা সরতে সরতে একটা অস্পষ্ট মুখ বেরিয়ে আসে ৷ তখন বাঁশি তার অপন গতি ফিরে পায় ৷ হ্যাঁ হ্যাঁ সত়্যি বলছি ৷ অগ্নিদাহ জমি ৷ বিবর্ণ নদী এবুকটাকে অবহেলা করেছিল ৷ ( একটু থেমে) ৷ সেই পঁচিশ বছর আগে ৷
ব্যাক্তিটি মিলে যায় শব্দহীনতায় ৷ সূর্যাস্তের মত ষড়ঋতুর আবর্তনে ৷ ভেঙে যাওয়া স্বপ্নের আটপৌড়ে মনে৷৷
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোজাম্মেল কবির
কাব্যে গল্প বলা... ভিন্নতা আছে। বানানের ব্যাপারে একটু সতর্ক হতে হবে ।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।