আমার একাত্তর

মুক্তিযুদ্ধ (ডিসেম্বর ২০১৫)

শাহ আজিজ
  • 0
  • ৬০
শামসুল কে তিনদিন ধরে খালিশপুর কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল । তাকে রাতের আঁধারে বাড়ী থেকে বিহারি ও পাক হানাদাররা ধরে নিয়ে এসেছে । পরদিন সকালে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হল শামসুলের । তার মুক্তিদের সাথে যোগাযোগ আছে । শামসুল অস্বীকার করল । সে দোকানদারি করে বিহারি কলোনির বাজার গেটে । তার দোকানটিই বিহারিদের মুল লক্ষ্য । মারধর শুরু হল । একপর্যায়ে শামসুল জ্ঞান হারাল । হুঁশ ফিরে পেতে অনুভব করল তার নড়ার ক্ষমতা নেই । রুটি দিয়ে গেল একজন । এই রুমটির মধ্যে আরও অনেক বাঙ্গালী বন্দী । কারো কারো অবস্থা খুব খারাপ । লাঠির মাথায় বেয়ারিং লাগিয়ে তাই দিয়ে মারা হয় । ছুরি দিয়ে চেরা তো স্বাভাবিক ব্যাপার । চোখ উঠিয়ে ফেলেছে কজনের । ওষুধ দেয়া হয়না । ব্যথায় চিৎকার করা যায়না , তাহলে কিশোর বয়েসি বিহারিরা এসে লাঠি দিয়ে বেদম পেটায় । ভয়ে সবাই চুপ থাকে । এখানে যারা আছে তাদের আত্মীয় স্বজনরা জানেনা ঠিক কোথায় তাদের প্রিয়জনকে রাখা হয়েছে । মোটা অঙ্কের রুপিয়া নিয়ে ছাড়া হয় কোন কোন বন্দীকে । তবে শামসুলের মতো যাদের দোকান বা বাড়ী আছে তা দখল নিতে তাদের হত্যা করা হয় এবং লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় । এলাকা ছেড়ে অনেকেই আগেভাগেই চলে গেছে । শামসুল ভেবেছিলো তার কিছু করবেনা হায়দার ভাই , বিহারিদের নেতা ,তার বয়েসি । কিন্তু সেই হায়দার ই শামসুল কে মুক্তি ট্যাগ লাগিয়ে ধরিয়ে দিলো।
দুর্ভাগ্য একেই বলে ।
তার সবাই বরিশালে থাকে । কেঁউ জানেনা তার এই বন্দী হবার কাহিনী ।
তিনদিন আগে দুপুরের পর সে নদীর ওপারে গিয়েছিল অবস্থা বোঝার জন্য । তার অনেক দেশী লোক ওখানে বাড়ীঘর করে বাস করে । ওরা সবাই নিউজপ্রিন্ট মিলে চাকরি করে । মিল কদিন আগে বন্দ হয়ে গেছে । প্রচুর পাক সেনা আসছে , তাদের জায়গা করে দিতে সব চুতিয়া বাঙ্গালকো ছুটটি দে দিয়া । ওদের ওপারে তেমন কিছু সমস্যা নেই যা আগে ছিল । ওপারের রাজাকাররা সন্ধ্যায় খালিশপুরের এপারে চলে আসে ।
রাতে এখন নদীর ওপার মুক্তিবাহিনীর দখলে ।
এই দেখা করতে গিয়েই শামসুল ধরা খেয়ে গেছে । তার সাথে কজন মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের কথা হয়েছে । শামসুলের বুকটা ফুলে উঠেছে ওদের কথা শুনে । ওরা জানালো বর্ডার থেকে খুলনা অঞ্চলের গ্রাম এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে । ওরা ইন্ডিয়ায় ট্রেনিং নিয়েছে । ওদের কাছে ডিনামাইট আছে মিল উড়িয়ে দেওয়ার জন্য , কিন্তু সুযোগ মিলছেনা বসানোর । ওরাও বলল সরে যান , এখানে ভীষণ যুদ্ধ হবে মিত্র বাহিনী আর পাকসেনাদের মধ্যে ।
বন্দীশালায় যে’কজন চলাফেরা করতে পারে তারা বাকিদের কাঁধে নিয়ে বাথরুম করাচ্ছে । এটি একটি স্কুল । তারের বেড়া দিয়ে ঘিরেছে এমনভাবে যে পালানোর কোন রাস্তা নেই । আগে এই নদীর ঘাটে নিয়ে গুলি করত , তাতে মরা লাশ ভেসে উঠত । তাই এখন অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয় । হয় ফরেস্ট ঘাট নাহয় গল্লামারী অথবা চান মারী । একজন ফিসফিস করে বলল এখন নিয়ে মারা হয় রূপসার পশু জবাইখানায় । ওখান দিয়ে রাতে ভাঁটার সময়ে লাশ সহজে সাগরের দিকে যায় ।
রাত কাটলো জেগে । সকালে ঘুমিয়ে থাকা যায় কিছুক্ষন । দিনে আবার জিজ্ঞাসাবাদ আর মারধরের ভয় ।
তিন দিনের মাথায় রাত দশটায় শামসুল ও আরও ১১জন কে চোখ বাঁধা হল শক্ত করে । পিছনে হাতমোড়া দিয়ে বাঁধল । সবাই দোয়াদরুদ পড়তে শুরু করল । শামসুল নিশ্চিত ছিল হায়দার ভাই তাকে দোকানটা নিয়ে ছেড়ে দেবে কিন্তু এখন তার বোঝা হয়ে গেছে এই বিহারি কুত্তার বাচ্চারা সব কিছু করতে পারে । তার বাঁধা চোখের অন্ধকারে ভেসে উঠছে মার মুখ খানি , বাবা , ভাই ভাবি আর পুতুলের মতো বাচ্চাটা গেল শীতে দেখে এসেছে । সে নিশ্চিত আর কখনো দেখা হবেনা তাদের সাথে । রাতে এভাবেই চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় খতম করার জন্য
শামসুল কথা বলে উঠলো “ ভাই , হায়দার ভাই কাহা”?
“কিউ বে গাদ্দার কে বাচ্চে, হাইদারকে সাথ কিয়ামত কে দিন মিল লে, আব তেরা মউত মানানা যা রাহে হাম, হাঁ হাঁ হাঁ” ।
হাসিতে বুঝে ফেলল ভাগ্যের পরিনতি। তবুও আবারো বলল “হায়দার ভাই কো কহো দোকান উস্কো দে দেঙ্গে” ।
“ আবে চুতিয়া, দোকান তেরা বাপকা কেয়া , ইয়ে পাকিস্তানকে জমিন হায় , তু ইনডিয়ামে দোকান বানা লিয়া কর, শালা মালাউন কাহিকা” ।
নাহ আর কোন আশা নাই , সেও দোয়া পড়তে লাগলো ।
ট্রাক চলল বেশ খানিকক্ষণ , প্রায় আধা ঘণ্টা । এরপর ওদের নামানো হল একে একে । টেনে নিয়ে মনে হলো একটা দুর্গন্ধ জাতীয় কিছুর মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হল । ওখান থেকে অতর্কিত চিৎকার তারপর গোঙ্গানি এর পর গো গো আওয়াজ । শামসুল কাঁপতে শুরু করল । তাদের অনেকেই চোখ বাঁধা অবস্থায় জোরে দরুদ আর কান্নাকাটির মাত্রা বাড়িয়ে দিলো। এবার চোখ খুলে দিলো একজন ।
একটা বড় উচু টিনশেড । এরপরের দৃশ্য রক্ত হিম করা ।
ঘরের শেষ মাথায় অনেক লাশ পড়ে আছে, সব গলা কাটা । জল্লাদ একজন , বয়স্ক । ছুরি নিয়ে প্রস্তুত এক
হাত পা বাঁধা বন্দীকে জবাই করার জন্য। তাদের আগমনে থেমে রইল কিছুক্ষন । শামসুলদের দলের দুজন মাটিতে পড়ে গেল এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে । দুজন মুখ ঢাকা বিহারি তাদের সরিয়ে শেষের দেওয়ালের কাছে ধাক্কা দিয়ে বসিয়ে দিলো । একজন পায়ে বাধার দড়ি রেখে ওদিকে গেল দুজনের হুঁশ ফেরাতে ।
জল্লাদ আবার প্রস্তুত , হাত পা বাঁধা লোকটি জীবন ভিক্ষা চাইছে , মা মা করে চিৎকার করছে , নড়ছে খুব জোরে । জল্লাদটি খুব মায়াভরা গলায় বলল “বেশী নড়াচড়া করলে আজাব বেশী হবে ,ঠাণ্ডা হয়ে চুপ করে শুয়ে থেকে আমাকে কাজ করতে দাও দেখবে আজাব কম হবে” ।
কি ভয়ঙ্কর কথা । তবুও লোকটি লাফাচ্ছে । জল্লাদ ইশারা করল মুখ বাঁধা বিহারির দিকে । সে একটি লোহার পাইপ দিয়ে শুয়ে থাকা লোকটিকে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করল কোমরের হাড়ে । জল্লাদ ছুরি চালাল তড়িৎ গতিতে, শামসুল মুখ নামিয়ে চোখ বন্ধ রাখল , চিৎকার এবার কোরবানির গরুর গো গো আওয়াজে পরিনত হল । শামসুল শুনতে পাচ্ছে ওজ দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে । যে লোকটি পিটিয়ে জবাইতে সাহায্য করছিলো সে জবাই হওয়া ছটফট করতে থাকা মানুষটিকে অন্যান্য লাশের মধ্যে ফেলে দিলো । এরি মধ্যে বাইরে গাড়ির আওয়াজ , দুজন মুখ ঢাকা বিহারি দরজায় এগুলো । একজন পাকসেনা দরজা দিয়ে ভিতরে দেখল তারপর বাইরে চলে গেল । জল্লাদ বসে থাকলো । তার কাছা কাছি দুজনকে পা বেঁধে শুইয়ে রাখা হয়েছে । ওরা এসে জল্লাদের সামনে টেনে দিলে সে তার কাজ আবার শুরু করবে । সবাই কাপছে । দোয়া দরুদ আস্তে পড়ছে কেদে কেদে ।
শামসুলের বা পাশে লাশের সারি শুরু হয়েছে । এবার সে সাহস নিয়ে দেখল । রক্তের বন্যা বইছে ।
হটাৎ দরজায় এক মুখ ঢাকা বিহারি এসে বলল “চাচাজান জরা আইয়ে” ।
জল্লাদ বেরিয়ে গেল । কান্নার মাত্রা বেড়ে গেল । শামসুল তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল । তার সাথের সবাই চোখ বন্ধ করে হাটুতে মাথা গোজা , দরজায় কেঁউ নেই , আস্তে নিঃশব্দে শামসুল বা দিকের লাশটার উপর ছোট ডাইভ দিলো , মুহূর্তেই গড়াগড়ি দিয়ে রক্ত মাখিয়ে ফেলল তার সারা গায়ে ।
এরপর নড়চড় ছাড়াই শুয়ে থাকলো লাশের স্তূপে ।
মাত্র দশ কি বারো সেকেন্ডে কাজটা সারল, তার পাশে বসা লোকটি তেমনি মুখ গুঁজে বসে।
বেশ খানিকক্ষণ পর ওরা ঢুকল । সবার কান্নাকাটির আওয়াজ কমে গেল । আবার চিৎকার , গো গো , ওজ চলতে থাকলো । কোন দিকে না তাকিয়ে , বিনা নড়াচড়ায় সে বুঝতে পারল তাদের সাথীরা এখন মৃত্যুর লাইনে ।
কি চিৎকার মানুষের জীবনের জন্য , বাচার জন্য কি আকুতি, মিনতি, সব ধন সম্পদ দিয়ে দেবার ওয়াদা ।
কিন্তু এই জারজরা পাকিস্থান রক্ষায় বাঙ্গালী খতমে নেমেছে ।
প্রথমে লাশের গায়ে শুয়ে থাকতে ভীষণ ভয় আর অস্বস্তি লাগছিল এখন আস্তে ধীরে তা কেটে গেছে । খুব নীরবে ঠোট না নাড়িয়ে শামসুল তাকে রক্ষার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চাইতে লাগলো ।
তার হাত দুটো পিঠ মোড়া করে বাঁধা ।
পা বাধার আগেই সে ঝাপ দিয়েছে । পাদুটো লাশের নিচে ঢুকিয়েছে আস্তে আস্তে ওরা আসার আগেই । কেঁউ ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারবেনা যে এখানে একজন জীবিত মানুষ আছে । ওদের কাজ আজকের মতো শেষ বলে মনে হচ্ছে । মুখ ঢাকা বিহারি দুজন মুখের কাপড় সরিয়ে দরজার কাছে দাড়িয়ে সিগারেট ধরাল । অচিরেই শামসুল বুঝল ওরা গাঁজা খাচ্ছে । জল্লাদ কাজ শেষ করেই বেরিয়ে গেছে শুরুতেই ।
এখন অপেক্ষা কিসের ? কতক্ষন শুয়ে থাকবে সে , তাকে বাচতে হবে যে কোন মূল্যে ,বেচে তো গেছেই একবার ।
হাত দুটো বাঁধা না থাকলে ওদের দুজনকে সাইজ করে পালিয়ে যেত ।
জায়গাটা কোথায় ?
যেখানেই হোক সকালের আগেই ভাগ্য নির্ধারিত হবে । তার সাহস বেড়ে গেছে ।
গাঁজা শেষ করে কুকুর দুটি বেরিয়ে গেল ।
এক মিনিট দু মিনিট এবং সর্ব ইন্দ্রিয় খোলা রেখে শামসুল তাকাল পায়ের দিকে এবং মাথা উল্টিয়ে গেটের দিকে । সে নিঃশ্বাস নিল কেঁউ আসছে কিনা।
না , মনে হয় ওরা আরও সময় নেবে , এরি মধ্যে বেরুতে হবে এই কসাইখানা থেকে ।
খুব খারাপ লাগছে ওর সাথের মানুষগুলো ওর পাশেই শুয়ে আছে , মৃত । শুধু ভাগ্যের জোরে ও একা জীবিত । পায়ের দিকে একটা বড় ফাঁকা আছে । এটা দিয়েই কি লাশ বের করে দেয় ? জানা নেই , আবার তাকাল দরজার দিকে , এবার উপুড় হয়ে শুলো । এবং দরজায় নজর রেখে অন্যান্য লাশের ওপর দিয়ে ছোট ছোট ধাক্কায় নেমে যেতে থাকলো ।
পুরো রক্তে পিচ্ছিল হয়ে থাকা লাশগুলি তার নেমে যাওয়াকে সহজতর করে দিলো । সে ফাকার কাছে পৌছালো । ঠাণ্ডা বাতাস তাকে বুঝিয়ে দিলো এটা নদীর পাড়ে । শেষবার দরজায় চোখ রেখে সে নেমে গেল অজানা জায়গায় , অন্ধকারে , পানির ভিতরে ।
হ্যা ওদের আর দেখা যাচ্ছেনা । পানির সুত্র ধরে জোরে এগুতে থাকলো দু পা দিয়ে , লুঙ্গি খুলে গেছে , পা দিয়ে লাথি মেরে লুঙ্গি ফেলে দিলো ।
শামসুল এখন নদীতে ।
ডানে বায়ে তাকিয়ে সে সোজা পানি বরাবর দু পা দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে সামনে এগুতে লাগলো । কতদুর যাওয়ার পর পিছনে ঘুরে দেখল পাড় থেকে সে বেশ এগিয়েছে , এটা কোন নদী ?
ওপারের আলো নেই তাই পাড়ের নিশানাও নেই । আবারো পায়ের ধাক্কায় সামনে এগুনো । পা বাধা থাকলে এই সুবিধা পেতনা , আল্লাহ সহায় ।
এক সময় পায়ের নিচে মাটি ঠেকল । দাড়িয়ে ঘন নিঃশ্বাস নিয়ে তার দ্রুত গতির হৃৎপিণ্ডটাকে আয়ত্তে আনতে চাইল । চোখ দিয়ে ভালো ভাবে নজরদারি করল ।
নাহ পাড়ে কিছুই বোঝা যায়না । কোন আলোর নিশানা নেই , চাঁদও নেই আকাশে । অগ্রহায়নের শীত, কিন্তু তার শরীরে চৈত্রের দাহ । নভেম্বর মাস এটি । দম ফিরে পেয়ে ধীরে উঠলো পাড়ে চরের উপর , জোয়ার চলছে , এরপর যে ভাটা হতো তাতে ভাসিয়ে দিতো লাশগুলো ।
শামসুল এখন এগুলোর বাইরে এক নতুন জীবনে ।
পেছনের পিঠ মোড়া বাধন তাকে খুব কষ্ঠ দিচ্ছে নদী পেরুনোর ব্যাথায় । হটাৎ টর্চ লাইটের আলো, দূর থেকে আসছে নদীর চর দিয়ে কি দেখতে দেখতে । শামসুল লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ল চরের উপর । লাইটটি ঘুরে ফিরে কি খুজছে কে জানে ।
তার কাছাকাছি এসে আবার ঘুরিয়ে নদী থেকে চরের উপর টর্চ মেরে স্থির হয়ে গেল । এবার এগিয়ে এলো । পুরুষ কণ্ঠ ইন্নালিল্লাহে ---- পড়ছে ।
শামসুল এবার মুখ খুলল “ভাই আপনি যেই হন আমাকে বাচান” ।
লোকটি ভীষণ চমকে স্তব্দ হয়ে শামসুলের মুখে টর্চ মেরে কিছুক্ষন সময় নিয়ে বলল “আপনার কি হইছে”?
“ভাই আল্লাহর দয়ায় বাইচা আসছি “।
“আপ্নের বাড়ী বরিশাল “?
“জে”।
লোকটি বাধন খুলতে ব্যর্থ হয়ে বলল “খাড়ান ব্যাবস্হা হইতেয়াছে “।
পাশেই খেয়াল করল পর্ণ কুটির । হাক দিয়ে কাকে ডাকল । একজন বেরিয়ে এলে তাকে বলল “জলদি দা লইয়া আয়” । বাধন কেটে মুক্ত হয়ে শামসুল নিজেই চেষ্টা করল মালিশ দেওয়ার কিন্তু তার হাত জমে গেছে । ওরা দুজন মিলে হাতে মালিশ দিয়ে সুস্থ করে তুলল ।
তারপর বলল চলেন আগে আপনারে নিরাপদ করি । ঐ বাতেন একটা লুঙ্গি টুঙ্গি থাকলে লইয়া আয় ।
লুঙ্গি গরীবের একটাই হয় তবে ছেড়া শাড়ি মিলল ।
সামনে এগুতেই বুঝল এটা রূপসা ট্রেন স্টেশন । লোকটি বলতে শুরু করল “আমার কাজ হইতাছে চরে বাইধা থাকা লাশ ভাটিতে ভাসাইয়া দেয়া কিন্তু আপনে কেমনে কি “?
“বাইচ্চা আসছি , আগে পানি পান কইর্যান লই তারপরে কাহিনী” ।
“হ, চলেন আরও নিরাপদ জাগায় লইয়া যাই আপনেরে “।
কোথা থেকে একটা ভ্যান জোগাড় হয়ে গেছে । ওরা দুজন চড়লো ভ্যানে , শামসুল ক্লান্তিতে শুয়ে পড়ল আর অগ্রহায়নের বাতাস কেটে ভ্যান এগুলো রেল লাইনের পাশের রাস্তা ধরে ।
------------------------------------------------------------------
৭১এর একটি সত্যি ঘটনার বিবরন ।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ইমরানুল হক বেলাল অসাধারণ লিখনি, মনে হলো আপনি একজন মুক্তিযুদ্ধার সন্তান দেশের প্রতি আপনার অনেক ভালবাসা শুভেচ্ছা রইল ভোট রেখে গেলাম আমার পাতায় আমন্ত্রণ
ভালো লাগেনি ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ১৪ বছরের কিশোর। আমাদের গ্রামের বাড়িটা সুচনা পর্বে অস্ত্র ও সমর নেতাদের আস্তানা ছিল। আমার দুজন সহপাঠী যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। বয়স ১৮র নিচে হলে সাধারনত চর, রেকি , ডিনামাইট বহন ইত্তাদির কাজে দিত। আমি যুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি তবে আমাদের পুরো পরিবার টাকা সাহায্য দিয়েছে গোপনে দেশে আসা যোদ্ধাদের। বিশাল এক গল্পের ভাণ্ডার আমার কাছে, লিখেছি এখন ছাপানোর অপেক্ষায় । ধন্যবাদ।

০৮ মে - ২০১৫ গল্প/কবিতা: ৮১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪