আমার ক্ষরণগুলো খুব ধীরে হয় । টের না পাইয়ে পরনের পরিধেয় ভিজে যায় গোপনে নিঃশব্দে । একসময় বুঝতে পারি ক্ষরন হয়েছে । হু হু করে ব্যাথাগুলো চাগিয়ে ওঠে , শুরু হয় যুগলবন্দী একাকীত্বের আর তোমায় হারানোর । সারা দিন মান তোমার দিদিয়া অফিসে আর আমি দুঃখ চর্চায় অদৃশ্য শিল পাটা নিয়ে বাটতে থাকি দুঃখ নামের মেহেদী পাতা । অনেকগুলো অপবাদ দিয়েছ আমায় যা কিনা অসম্ভব । তোমার মায়ের কর্কট রোগ দুরারোগ্য ছিল । ডাক্তার তো প্রথমেই আমায় বলেছিল তিন তিনটি নেগেটিভ নিয়ে কারো আর আশা থাকে না । বোকার মত তাকিয়ে ডাক্তারকে বললাম তাহলে ----------? ডাক্তার বললেন কেমো চালিয়ে যাব , একটু থেমে বললেন যতদিন টেকে । তোমায় এটা বলা হয়নি তুমি প্রচণ্ড দুঃখ পাবে । তুমি তোমার মাকে কলকাতায় নিতে চেয়েছ , আমরা বাঁধা দেইনি , বাঁধা হয়েছিল অর্থ যা তোমার মামারা তোমার মায়ের সম্পত্তির বিনিময়ে দেয়নি । আমি জমা শেষ করে বড় অসহায় ছিলাম । কারো কাছে হাত পাততে শিখিনি তাই অর্থের সাশ্রয় হয়নি । তবু বাবার দেওয়া জমিগুলো বেচে চালিয়ে গেছি ব্যায়বহুল কেমো । একসময় কেমোর কাজ শেষ হয়ে গেল , তোমার মায়ের শরীর এতটাই দুর্বল হল যে রাত বিরাতে আমিই তাকে টয়লেটে নিয়ে যেতাম কাধে উঠিয়ে । তোমার মা লাইফ সাপোর্টকে পরাজিত করে পরপারে পাড়ি দিলো । তারপর তিন বছর বাদে হটাত এক দুপুরে তোমার দিদিয়া উদগ্রীব কণ্ঠে মোবাইলে তোমায় খুজল আমার কাছে । তোমার রুমে গিয়ে মনে হল সব কিছু পরিপাটি করে সাজানো কিন্তু অনেক কিছু নেই ঘরে । তুমি মেসেজ দিয়েছ আই অ্যাম লিভিং ইউ । হতবাক আমি । কোথায় গেলে তাও জানিয়ে গেলে না । আমি তোমায় সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দিয়ে গড়েছি । চন্দ্রিমা লেকের পাড়ে প্রায় প্রতিদিন হাটতে হাটতে তোমায় জীবনের কথা শুনাতাম । কি জানি হয়ত আমার কথা কাজে দেয়নি । আমি পরাজিত বাবা এক । আমাদের ভালোবাসা তোমায় ধরে রাখতে পারেনি । তুমি এই ঢাকা শহরে কোথাও আছ । কেমন থাকছ তুমি আমার পেটুক সন্তান জানিনা শুধু স্মৃতি রোমন্থন করে চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় দেখি না । জেনেছি তুমি বিদেশ যাবে উচ্চশিক্ষার জন্য , আমিও তাই চাইতাম , কত স্বপ্ন একেছি দুজন মিলে । বিদেশ গেলেও যদি মনের পরিবর্তন হয় , যদিতোমার মনে হয়- যাই বাবা আর দিদিয়াকে দেখে আসি ! তাওতো দেখতে পাব তোমায় আমার প্রিয় পুত্র , আমার বন্ধু তুমি । আমার ক্যানভাস , ইজেল , রঙ সব লুটো পুঁটি খাচ্ছে মেঝেতে ।
কি খাচ্ছ , কেমনে ঘুমাচ্ছ ? রাস্তায় সাইকেল সাবধানে চালিও । জীবনটা বড্ড কঠিন । জীবন থেকে শিক্ষা নিও । কি অপরাধে আমায় শাস্তি দিলে জানিনে ! একবার হলেও দেখে যেও তোমার পরাজিত বাবাকে ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
বিষয় আশয় সব গল্পেই লেখা আছে ।
০৮ মে - ২০১৫
গল্প/কবিতা:
৮১ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।