কড়াই মোছা ভাত

মা (মে ২০২২)

শাহ আজিজ
  • 0
  • ২৩৯
অবাক চোখে তাকিয়ে দেখছি গরুর ভুঁড়িটা নিয়ে গরম পানি চুন দিয়ে ধুয়ে ফেলছে একজন । ওখানে কিছু পোকা ছিল । সেগুলো ধুয়ে ফেলা হল । কেমন একটা অদ্ভুত টেক্সচার গরুর ভুঁড়ির ভিতরে । কোরবানির দিনের ভরা সন্ধ্যায় খুকির মা বসলো সেই ভুঁড়ি কাটতে । ছোট ছোট করে কেটে পাত্রে রাখছে ।
মা ঘেঁষা আমি রাতের বেলা দেখলাম লোহার কড়াইতে কাটা মশলা দিয়ে সেই ভুঁড়ি চুলায় চড়িয়ে দিলেন আমার মা। ঘুম কাতুরে আমি বিছানায় গেলাম মায়ের হাতে ঝুলতে ঝুলতে । বালিশে মাথা রেখে বললাম তাড়াতাড়ি এসো কিন্তু । মা বললেন পানি শুকিয়ে গেলেই আমি আসব। আমার ছোটটি পালঙ্কের অপর পাশে ঘুমিয়ে । আমি মাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাই ।
দুদিন বাদে খেয়াল করলাম সেই ভুঁড়ি ভুনা সবাই খাচ্ছে । আমি বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলাম । মা বললেন ঝাল বেশি তুই খেতে পারবিনা । আমি যে পোকা দেখেছি তাতে আমার খাওয়ার ইচ্ছা একদম নেই । আমার কেমন যেন পেট গুলিয়ে উঠছে ।
মা বললেন পোকা মানে কৃমি আমাদের পেটেও আছে আর ওটা গরম পানি চুন দিয়ে ধুলে কিছুই আর থাকে না । বেশ তিনদিন বাদে আমি সবার সাথে টেস্ট করলাম , বাহ বেশ তো !
পরদিন দেখি মা আর খুকির মা কড়াইএ ভাত ফেলে মুছে তা তুলে আমার দিকে তাকাল । মা আমার মুখে এক লোকমা ভাত তুলে দিলেন । আরে এতো দারুন মজা । আমি কিনা বোকার মত একয়দিন খাইনি !
এই হল কড়াই মোছা ভাত খাওয়ার শুরু । শীতের দিনে এই যেমন এখন উত্তম সময় ভুঁড়ি ভুনা খাওয়ার । লোহার কড়াইয়ে দুদিন অল্প জ্বালে রেখে কষিয়ে তারপর খেতে হবে । ইচ্ছে হলে ভাত দিয়ে তলানি মুছে আমার মত হাভাতে খাওয়া খেতে পারেন । মা কবরে শুয়ে আছেন বাবার পাশে । অনেক কিছু পরিবর্তন এসেছে জীবনে । মাকে খুব মনে পড়ে , মনে পড়ে কষানো ভুঁড়ির কথা ।
দু চোখ ভিজে যায় ছয় দশক আগের কথা ভেবে । মা তোমায় ভালোবাসি এখনো ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মাইদুল সরকার সুন্দর স্মৃতিময় গল্প। ভোট দিলাম।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

মা যখন বিষয় তখন ছোটবেলাটা প্রাধান্য পায় । অজস্র ঘটনা চলে আসে মনে । চমৎকার রান্না আর খাওয়া দাওয়া বড্ড বেশি মনে পড়ে ।

০৮ মে - ২০১৫ গল্প/কবিতা: ৮১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪